হীরা যাই…
জানিনা এ ধরনের লেখা আপনাদের কেমন লাগবে। জীবন চলার পথে মায়ার বাধন যে কতটা ঠুনকো তা যেন আমাকে বিধাতা আরো একবার আমাকে বুঝিয়ে দিয়ে গেলেন। না, আর কারো দ্বারা নয়, এটা আমারই একমাত্র ছোটবোন ভাল করেই বুঝিয়ে দিয়ে গেল। ২১শে সেপ্টেম্বর থেকে ২৬ শে সেপ্টেম্বর ওর বিয়ের নানা অনুষ্ঠানে ব্যাস্ত ছিলাম। তখনো এমন করে হয়ত কিছু বুঝিনি। শুধু ওকে যেদিন বিদায় দিলাম ও দিন কেন যেন চোখ দিয়ে দরদর করে পানি পড়তে লাগল। হলুদের আগের দিন থেকে খেটেছি। সবাই মজা করেছে আমি দেখেছি আমার ভালই লাগছিল। নিজে ছবি উঠানোরও খুব একটা সময় পাইনি। জানেন তো এই ধরনের একটা অনুষ্ঠান এক হাতে ওঠানো খুবই কষ্টকর।
যা হোক বিদায়ের সময় পর্যন্ত ঠিকই ছিলাম। কিন্তু সবার দোয়া নিতে নিতে আমার কাছে এসেই একেবারে ভেঙ্গে পড়ল। কানে কানে বলল, “জীবনে অনেক কষ্ট দিয়েছি তোকে আমাকে মাফ করে দিস...মাফ করে দিস”। হঠাত যে আমার কি হল। তারপরেও ওকে ঠিক করার জন্য বললাম, “কাদিস না কাদলে তোর মেকাপ নষ্ট হয়ে যাবে, আমার ন’হাজার টাকা গিয়েছে।” ও যেন আরেকটু ভেঙ্গে পড়ল। কিন্তু আমার বোনকে আমি চিনি তো ও অনেক শক্ত। একটু পরে নিজেই নিজেকে গুছিয়ে নিল। উপহারসমগ্রীসহ সবকিছু বাবার হাতে বুঝিয়ে দিয়ে আমি মাকে বললাম তোমরা যাও আমি পরে আসছি। অনেক জোর করল কিন্তু আমি তাদের বাসায় পাঠিয়ে দিলাম। পরে একটা রিক্সা নিলাম। কেন জানিনা নিজের চোখটাকে আর থামাতে পারলাম না। না কোন শব্দের অনুরনন হয়নি। এ কেবলি আমার চোখের জ্বলের ধারা।
পরের দিন ওদের বাসায় গেলাম সকালবেলা শুধু ওকে দেখার জন্য। আমি কোন আনুষ্ঠানিকভাবে যাইনি। শুধু দেখতে গিয়েছিলাম ও কেমন আছে দেখার জন্য। ওর হাসি মুখ দেখে মন কিছুটা হাল্কা হল। চলে আসবার পথে শুধু ওকে বললাম
“হীরা যাই”। মনে হল এই শব্দসমষ্টিগুলো নতুন। কেমন যেন অচেনা লাগল। ও মুখের দিকে আর তাকাইনি। ওভাবেই চলে আসলাম। আসার পথে শুধুই মনে বাজল....”হীরা যাই”।।