নীলাঞ্জনা,
ওকি, এমন করে রেলিং ধরে কে দাড়িয়ে আছে। কে তুমি, বড্ড চেনা চেনা লাগছে। তুমি কি আমার সেই। নাহ আমি কি ভূল দেখছি, পাগল হয়ে যাচ্ছি নাকি। মনে পড়ছে, হ্যা তাইতো, ওভাবে তো নীলাঞ্জনা ছাড়া কেউ দাড়াতে পারে না। তুমি তাহলে আমার নীলাঞ্জনা।
কথা বলছ না যে, তুমি জান, সুহাসিত সেই লজ্জা মাখা নির্বাক দুটো চোখ আজও আমাকে তাড়িয়ে বেড়ায়। জানি না সেই দূটো চোখ আজ কার ছায়াতলে কেমন শান্তিতে আছে? এখনো কানে বাজে তার রিমজিম বৃষ্টিঝরা সাতকাহন। নাহ মনে করতে পারছি না, ওগুলো কি কবিতা ছিল না গান। চঞ্চল যে পাখিটা আমার আত্মার আত্মিয় ছিল, কোথা থেকে যেন পৃথিবীর সবটুকু সুখ এনে ঢেলে দিত আমার চরনতলে। মনে আছে, আমার আমার একটুখানি লুকোচুরি কতটা বিহবল করত তাকে... সে হিসেব আজও মিলাতে পারিনি। মুখভার করা সিদুর লাল চোখ আর ভেজা পাপড়ির ও দুটো চোখ আমাকে কেমন যেন অস্থির করে দিত।
ও ভাবে তাকিয়ে আছ কেন? এ দৃষ্টিতো আমার বেশ পরিচিত। তবে কি তুমি আমার সেই। আচ্ছা, তাহলে তুমিই তো বলতে পারবে আমার সেই কেমন আছে? কাদছ নাকি। চোখদিয়ে তার মুক্তোর মত করে ব্যাথার স্রোত বইত। তুমিই তাহলে আমার সেই। তুমি কেমন আছ।
ওমন করে তাকালে কেন, তুমি জান না তোমার ওই দৃষ্টি আমাকে ভষ্ম করে দেয়। আজ এই এতটা বছর পরে হঠাত ঘুমভাংগা মাঝরাতে তোমার স্মরণ কেন জানি আমায় প্রচন্ড চঞ্চল করে তুলছে। মুখ ঘুরাচ্ছ কেন? আমার চোখের দিকে তাকাও, দেখ, কতটা বছরের জমাট বাধা মেঘ জমে আছে এই ছোট্ট হৃদয়ে। কিভাবে বোজাব কতটা ব্যাথায় আজ এই বুক পাতর। আজ এই এত বছর পর, তোমাকে দেখতে চাওয়ার ইচ্ছের কথা শুনতে চাও? এক পশলা বৃষ্টির অপেক্ষায় কতটা পথ পেরিয়েছি তা যদি তোমায় দেখাতে পারতাম। আজ এই শেষ মুহুর্তে তোমার এক চিলতে হাসিই পারে এই জনাট বাধা হৃদয়ে বৃষ্টি নামাতে।
ও কি উঠে পড়লে নাকি? যাবার আগে শুধু বলে যাও তুমি আবার আসবে তো। সেদিনের সেই নিয়তির তরে আমার তোমার হাত কতটুকু। ওভাবে সেদিন তোমায় পেতে চাইলে সময়ের অবগাহন আর নিয়তির দর্শন কি আমাদের এক মুহুর্ত ছাড় দিত।
নীলাঞ্জনা,
ভাবনার অতল সাগরে ডুব দিয়ে আজ যে মুক্তোর দেখা মিলল, সেই দিনের সেই নিয়তির সাথে হাত না মেলালে কেমন করে পেতাম বল? নীলাঞ্জনা, তুমি ভাল আছ তো।
আর বসবে না, যাবার আগে একটাবারের জন্য হলেও বলে যাও আবার আসবে তো তুমি কোন এক ঘুমভাঙা মাঝরাতে।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই নভেম্বর, ২০১০ সকাল ৯:৪৬