somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার হাহাকারময় শিক্ষাজীবন X( :((

০৩ রা অক্টোবর, ২০১৪ রাত ৯:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার মগজ হচ্ছে শয়তানের বসবাস। অলস মগজ নিয়ে জ্ঞানী জাতির এটাই ধারনা। তাদের ধারনা মোটেও ভুল নয়।

তাবত দুনিয়াতে এমন কোনো বিষয় নেই যার সাথে আমার মতের মিল আছে। এই গরমিল জগতে কিভাবে বেঁচে আছি সেটা আমিই জানি।

বাচ্চাকালে পাটিগণিত পর্যন্ত ঠিক ছিল। এটা দরকারি শিক্ষা। পিতার বয়স ৪৭ হলে পুত্রের বয়স কত সেটা অত্যন্ত সহজভাবে বের করা সম্ভব পাটিগণিত দিয়ে। কিন্তু বীজগণিত, ত্রিকোণমিতি, পরিমিতি আর জ্যামিতি শিক্ষার প্রয়োজন আজও বুঝতে পারলাম না। একটা বাঁদর এক তেলতেলে লাঠি বেঁয়ে উপরে উঠার চেষ্টা করছে, সে লাঠির আগায় উঠতে কতক্ষণ লাগবে। এরকম পরিমাপ পরিমিতির মাধ্যমে করা যায়। এখন আমি কি করব এই পরিমাপ জেনে? আমি কেন মাপতে যাব সুর্যের আলোয় কোনো লাঠির ছায়া সকালে এইখানে থাকলে সেটা ৮০ ডিগ্রী ঘুরে বিকালে কোন জায়গায় গেল?
ত্রিকোণমিতি আরো অস্বাভাবিক শিক্ষা। cosθ + sinθ= কত? আজগুবি কথা! সংখ্যা যোগ করা যায়, কিন্তু ইংরেজী শব্দ কেন যোগ করা যাবে।
জ্যামিতি সর্বাধিক ভয়াবহ ব্যাপার। অন্তত ৭০ ভাগ শিক্ষার্থী ইম্পর্ট্যান্ট দেখে সম্পাদ্য, উপপাদ্য মুখস্থ করে ফেলে। নানানরকম রেখা টানাটানি করে, এক রেখার সমান করে অন্য রেখা কাটিয়া লইয়া একটা গোলমাল বানানো হয়। এরপর প্রমাণ করা হয় যে যেই চিত্রটা আঁকা হয়েছে সেটা অকারণে আঁকা হয়নি। কিন্তু আমি এখনো পুরো ব্যাপারটার মাধ্যমে কি প্রমাণ করার চেষ্টা হয়েছে বুঝি নাই।

আমার মত অনেকেই এসবের কারণ খুঁজে পায়নি। একটা কারণ ছিল এসব শেখার পেছনে তা হচ্ছে পরীক্ষায় পাশ করা। এর বাহিরের কোনো কারণ থাকলে তা শুধু মেধাবী ও মেধাবিনীরাই জানে। আচ্ছা, মেধাবী ও মেধাবিনী যারা আছে তারাও বিজ্ঞান বিভাগে না পড়লে সহজে বুঝেনা এসব। যারা আর্টস বিভাগ নিয়ে পড়ালেখা করে তাদেরতো বীজগণিত জানার দরকার নেই, তাদের কেন পড়তে দেয়া হবে এসব? ব্যবসায়ের শিক্ষার্থীরা ত্রিকোণমিতি জেনে করবে কি? এসব হয়রানির কোনো অর্থ হয় না।

তারপর আছে বাংলা ব্যাকরণ। এরকোনোই মানে হয় না। কারক, বিভক্তি, দ্বিগু সমাস, ছাগু সমাস এসব কেন? ব্যাকরণ হচ্ছে এমন এক কেতাব যার মাধ্যমে কোনো ভাষা শিখা যায়। আমরা জন্ম থেকে বিল্ট-ইন বাংলাভাষী। এমন কোনোদিন হয়নাই যে, কোনো বাংলাভাষীর ঘরে বাচ্চা হয়ে তার বুলি ফোটার পর, সে বাংলা না বলে আমেরিকান একসেন্টের ইংরেজীতে কথা বলছে। আর যদি কেউ সত্যিই এরকম বলে থাকে তাহলে শুধুমাত্র তাকেই বাংলা ব্যাকরণ শিক্ষা দেয়া প্রয়োজন। যারা আগে থেকেই বাংলা ভাষায় কথা বলে তাদের একই কথা অন্য সুরে বলে কনফিউজড করা কেন? এই বিড়ম্বনা কি জন্যে?

মাঝখানে এফ.এম ম্যাথড নামে একটা ম্যাথড বের হল। এই ম্যাথডের সাহায্য নিলে নাকি ইংরেজী গ্রামার শিখা ছাড়াই মানুষ ইংরেজী শিখে যাবে। আমার কৌতুহলশক্তি অত্যন্ত অল্প। তবুও ফিরোজ মুকুলের(এফ.এম) বড়বড় কথা শুনে কিতাবটা পড়ার ইচ্ছা হল। পড়ার পর বুঝলাম উনার মাথায় ব্যাপক পরিমানে পোকা আছে। উনি অসুস্থ এবং মানুষকে তিনি বিড়ম্বনায় রেখে মজা নিতে পছন্দ করেন। তিনি বিশ বছর সাধনা করার পর নাকি এই ম্যাথড আবিষ্কার করেছেন। মানুষকে বিড়ম্বনায় ফেলার জন্য বিশ বছর সাধনা করা লাগে না। অনেক ব্যাপার আছে বিশ সেকেন্ডেই মানুষকে বিড়ম্বিত করে ফেলতে যথেষ্ট।

কলেজে এসে খেয়াল করলাম হৈমন্তি, কুবের-কপিলা জুটি, মুন্নু বেগদের। এরা কোথায় কি বলেছে, কেন বলেছে, যেটাই বলেছে তার পেছনে হৃদয়ের গভীরে যে ব্যাথা ফুটে উঠে দুমড়ে মুচড়ে প্রতিটি ফোটা সবুজের নির্মম আহাজারিতে যাদের আহবান কন্টকময়তার অচির নিদর্শন প্রসব করেছে তার ব্যাখা দিতে হবে। কেন দিতে হবে আমাদের এই ব্যাখা? আর এই অবোধ্য বাংলা শব্দের বেগতিক প্রয়োগের মানেটা কি? সব হচ্ছে এক একটা গল্প বা উপন্যাস। এসব বিষয়ের উপর পরীক্ষা নেয়ার কি হল? গল্প, উপন্যাস জাতীয় জিনিস লেখা হয় যাতে মানুষ এসব পড়ে আনন্দ নিতে পারে। পরীক্ষার জন্য কেউ কেন গল্প উপন্যাস পড়বে? আর নাটক? একটা নাটক কিভাবে পাঠ্যবই করা হয়? নাটক লেখা হয় যাতে এটা ইনডোর স্টেজে বা বৃহৎ পরিসরে সকল চরিত্র অভিনয় করতে পারে এমন করে। এটা কেন পাঠ্য কেতাব হবে? আচ্ছা এবার কবিতা, এটা ভাল ব্যাপার। তবে কলেজ লেভেলের আগে স্কুলে যেসব কবিতা ছিল সেগুলো মুখস্ত করা লাগত। যেকোনো টাইম পরীক্ষায় প্রশ্ন আসতে পারে, "তমুক কবিতার প্রথম দশ লাইন মুখস্থ লিখ।" সবচেয়ে 'সোনার তরী' কবিতা ইম্পর্ট্যান্ট। এটা কি ব্যাপার হল! কবিতা কেন মুখস্থ করবে কেউ? মানুষের সত্যিই বিবেকবুদ্ধি নাই। কেউ কিছু বলেও না। আমাদের কাছে এসব কেন স্বাভাবিক হয়ে গেছে?

প্রাইভেট ইউনিভারসিটিতে বিবিএ'তে ভর্তি করানো হল আমাকে। কারণ আমি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর ভর্তি পরীক্ষায় কামেল প্রমাণিত হতে পারি নাই মেয়েঘটিত মানষিক যন্ত্রণায়। আচ্ছা এই যে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির প্রশ্নগুলো, এগুলো অনেক ভাল কোয়ালিটির প্রশ্ন। একজনের মেধা সত্যিই এগুলো বিবেচনা করতে পারে অনেক ক্ষেত্রে। তবে কিছু প্রশ্ন আসে অত্যন্ত আজগুবি। "বাংলাদেশে সার কারখানা কয়টি?", "কোনটি দ্বিগু সমাসের দ্বিতীয় কারকে তৃতীয় বিভক্তি?", "হৈমন্তির পিসির নাম কি ছিল?" শুধু অযথা কিছু জিনিস জানলেই মানুষ জ্ঞানী হয়ে যায় না। এসব জিনিস গুগলের উপর ছেড়ে দিয়ে, অন্য কিছুর দিকে নজর দিতে হবে।

আচ্ছা আমার ইউনিভারসিটি, বিশাল পাগলের কারখানা এটা। এ টু জেড সবাই পাগল এইখানে। তাই ইউনিভারসিটির নাম বলছি না। আচ্ছা বলছি একটু পরে। ভার্সিটির নাম "আন্তর্জাতিক ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম"। সুতরাং আমিও একজন পাগল এই ভার্সিটিতে পড়ার কারণে। আমাদের যেসব লেকচারার আছেন তাদের বেশিরভাগেরই শিশুসুলভ চেহারা। বেশি দেরী হয়নি তারা তাদের এমবিএ টাইপ ডিগ্রীলাভ করেছেন। অনেকে শুধুমাত্র গ্রাজুয়েশন করেই পোস্ট গ্রাজুয়েটদের পড়ান। শিক্ষকদের অনেকেই আবার তাদের গ্রাজুয়েশন আমাদের ভার্সিটিতেই করেছেন। আবার কিছু শিক্ষক আছেন বিশেষ করে আরবী যারা পড়ান, তারা অতি বৃদ্ধ। পাগল বৃদ্ধ ক্লাস করাতে আসলে ব্রিফকেইস সাথে নিয়ে আসেন। একজন টিচার আছেন যাকে আমরা আদর করে ঘেটুপুত্র টিপু বলে ডাকি। তিনি টুকটাক ইংরেজী বলতে পারেন দেখে অনেকে তাকে বিবিসি জানালা বলেও ডাকতে শোনা যায়। তার ইংরেজী বলার উদাহরণ দেই। একদা তিনি পরীক্ষা হলে এসে উত্তেজনা শুরু করলেন যেন তার পেছনের রাস্তায় কৃমি উৎপাত করছে। সেদিন তার ডায়লগ সবাই আজীবন মনে রাখবে। "ইজ ইট হট টুডে? গরম হ্যা? শুড আই টার্ন অন দ্যা এসি এন্ড টার্ন অফ দ্যা ফ্যানস? ক্লোজ দ্যা উইন্ডোজ বয়েজ। জানলা বন করে দাও।" সবাই সব কিছু রেখে ওনার দিকে হাঁ করে তাকিয়ে তার উত্তেজনা দেখছিলান। তার সাথে আমার দুইবার বৃহদাকার ক্ল্যাশ হয়েছিল।

আর এখানে যেসব ছাত্র আছে তাদের বেশির ভাগই হল ক্ষ্যাত। একজন ভাবে সে সালমান খান। তার দাঁতে প্রচুর ময়লা। আজগুবি জায়গায় জিম করে শরীরের গঠন বেগতিক করে ফেলেছে। আরেকজন আছে তার দাঁতে মরিচা ধরেছে। সে কোনো প্রকারের ড্রাগ চর্চা করে। কিছু ছেলে অতি লাজুকলতা। কিছু আছে পীর বংশের। একজনকে স্যার জিজ্ঞেস করল, "তোমার বাবা কি করেন?" ছাত্র বলল, "আমার আব্বা আওলিয়া।" বেশিরভাগই চট্টগ্রামের সাতকানিয়া বা নানান কাছাকাছি জেলার বাসিন্দা। তাদের কেউই কথা বলতে পারেনা স্বাভাবিক ভাবে। চট্টগ্রামকে বলে ছট্টঘ্রাম। আর সবাই পুরানো কাপড়চোপড় পরে। দেখে মনে হয় দুর্ভিক্ষপীড়িত। সবার সাথে আমিও পুরান কাপড় পরি। আমিও কেমন জানি হয়ে যাচ্ছিলাম।

আকাড(ACAD) এর এব্রেভিয়েশন আমি জানতাম। এখন ভুলে গেছি। আকাডে গোটা ভার্সিটির সমস্ত হিসাব নিকাশ, এক্সাম কন্ট্রোল সংক্রান্ত কাজ করা হয়। এখন সেমিস্টারের টাকা কত দিতে হবে সেটা জিজ্ঞেস করার জন্য যেতে হবে সেখানে। গেলে আইডি নাম্বার বলার পর মৃতপ্রায় পুরান কাপড় পরা মুখে মেছতাওয়ালা এক লোক জবাবদিহি করবে। সম্পূর্ণ ভার্সিটির ছাত্র ও ছাত্রীদের এই ভদ্রলোকই জবাবদিহি করেন বলে তার মানসিক বিকৃতি ঘটেছে। আচ্ছা এখন ছাত্রীরা আলাদা বিল্ডিং এ ক্লাস করে। কারণ এটা ইসলামিক ব্যাপার। কিন্তু সেমিস্টারের ফী কত এটা জানতে হলে সবাইকে এই ভদ্রলোক হিসাবরক্ষকের কাছে জামায়াতে আসতে হবে। একটুকু জায়গায় ছেলেমেয়ে সবাই ঘষামাজা করে দাঁড়িয়ে নিজের হিসাব জেনে যায়। এটা বড়ই ইসলামিক?

এই ভার্সিটির সবাই কামেল লোক। এক দাঁতালো ছাত্র একাউন্টেন্টকে বলল, "প্রো-ভিসি চলে গেছে। সিগ্ন্যাচার নিতে পারি নাই।" একাউন্টেন্ট রাগের স্বরে ছাত্রকে বলল, "প্রোভিসি কি? প্রোভিসি স্যার বল।" আল্লাহতালার নির্মিত পাগল। এক টাকওয়ালা পিওন আছে। সে সকল কাজে কারবারি দেখাবে। এক্সাম কন্ট্রোলারের কাছে গেলাম এডমিট ছাপানোর কাজে। আমার পরীক্ষার এডমিট ভুলে ছাপানো হয় নাই। পিওন আগেভাগে বলে, "কি কাজ? আমাকে বলেন। স্যারের কাছে আসছেন। এদিকে দেন এটা এপ্লিকেশন?" আমার হাতে ছিল একটা খাতা। ইচ্ছা করে নিম গাছে তুলে বেঁধে রাখতে। সেদিনই এক্সাম কন্ট্রোলার সাহেব আমার সব দেখে এবার আমার এডমিট ছাপাবে এমন সময় জানা গেল প্রিন্টারের কালি শেষ। কালি আনতে গেছে কেউ। আমি বললাম, "বসব কিছুক্ষণ? না কাল আসব?" তিনি বললেন, "কাল আস।" কাল এলাম কিন্তু কন্ট্রোলার নাই। খবর নিয়ে জানা গেল, উনি কোথাও দাওয়াতে গেছেন।

এখানে প্রত্যেক সেমিস্টারে এক একটা আরবী সাবজেক্ট আছে। আমি পড়ছি বিবিএ, এর মধ্যে আরবীর কাজটা কি? কেন আমাকে জানতে হবে "বাইতু" মানে "ঘর"? আচ্ছা এটা একটা ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়। সুতরাং আরবী থাকতেই পারে সাবজেক্ট হিসাবে। কিন্তু ভর্তির আগে কেন বলা হল না যে, তোমাদের মাদ্রাসা থেকে একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড থাকতে হবে। পাক-কোরআনের আয়াত লেখা লাগে পরীক্ষায়। ভুল হলে নাম্বার পাব না, এর চিন্তার আগে আখিরাতের কথা মাথায় আসে। এসব সেন্সেটিভ ধর্মীয় ব্যাপার জোরপূর্বক কেন আমাদের লিখতে হবে?

আচ্ছা এখন দেখা যাচ্ছে আমাদের ভার্সিটি ইউজিসি'র ব্ল্যাকলিস্টে আছে। কি কারণে সেটা জানি না। এই যে ইউজিসি, সকল ভার্সিটির মাইবাপ। এটা হচ্ছে আরেক কুলাঙ্গার। ব্ল্যাকলিস্ট করে কিন্তু ব্যান করে না কিছু। ব্যান করলেও আবার আনব্যান করে দেয়। পাগল।

আমার একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড খুবই খারাপ। এস.এস.সি পরীক্ষায় ৪.১৩ আর এইচ.এস.সি পরীক্ষায় ৩.৯০। আর ইউনিভারসিটি এসে এখন আমার ৭ সেমিস্টার চলছে। তবে আমি অনেকটা ড্রপআউটের পর্যায়ে। সব মিলালে অত্যন্ত লজ্জাকর রেজাল্ট। রেজাল্ট খারাপের পেছনে কারণ আছে। হিসাব বিজ্ঞান আর ইংরেজীতে সাবজেক্টে উভয় ক্ষেত্রেই আমার এ প্লাস থাকলেও অন্যান্য সাবজেক্টে কঠিনদশা। কারণ অন্য সাবজেক্টগুলোতে বেশির ভাগ জিনিসই ছিল বেদরকারি। তবে ব্যবসায় উদ্যোগ, পরিচিতি, নীতি, ব্যাংক ও বীমা বইগুলো তথ্যবহুল ছিল।

কলেজে পড়েছিলাম শাহীন কলেজে। বড় বাকোয়াজ কলেজ। আরেকটা পাগলের আড্ডা। চুল বড় হলে শঙ্কর নামের এক টিচার মাথার মাঝখানের চুল আগা গোড়া কেটে হেঁসে বলে, "এইবার হয়েছে গাজিনি স্টাইল, হ্যা?" জুতা পরানো হয় সাদা কালারের ইউনিসেক্স জুতা। সাদা জুতা হালতে ময়লা হতেই পারে। কিন্তু ময়লা জুতা হলে কলেজের সামনে দাঁড় করিয়ে রাখবে শঙ্কর স্যার। পাগল। কলেজের ড্রেস যেটা আছে এর "দারোয়ান ড্রেস" নামে বিশেষ ক্ষ্যাতি আছে। আর ভার্সিটিতে আরবী শিক্ষা, ইসলাম শিক্ষা, মেয়ে শিক্ষার্থী না থাকা, শিশুসুলভ শিক্ষক, হিসাবরক্ষন বিভাগের হয়রানি সবমিলিয়ে পড়ালেখার ইচ্ছা শেষ।

পড়ালেখার ইচ্ছা শেষ হলে আমার গ্রাজুয়েশনের সার্টিফিকেট পাওয়া যাবে না। তার মানে আমি এইচ.এস.সি সার্টিফিকেটেই থাকতে হবে। কোথাও জব নেয়া যাবে না। এই সার্টিফিকেটই কেন সব হবে? একটা কাগজ একটা মানুষের জ্ঞান কিভাবে রিপ্রেজেন্ট করতে পারে? ধরা যাক, কেউ বড়সড় গোল্ডেন এপ্লাস সার্টিফিকেটওয়ালা স্টুডেন্ট। এদের অনেকেই আছে যাদের সম্পূর্ণ গঠন হয় নাই। তাদের কেতাবি জ্ঞান অনেক। তাদের যদি জিজ্ঞাসা করা হয়, "বাংলাদেশের কোন জেলায় প্রথম সার কারখানা স্থাপন করা হয়? " সে এর উত্তর করে দিবে। কিন্তু তাদের অনেকেরই ক্রিয়েটিভিটি লেভেল খুবই বাজে। একজন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট জিজ্ঞেস করল, " আচ্ছা, তুমি যে এন্টারনেট ইউছ কর, এটা ওয়াইফাই। না? তাহলে এঈটা কোত্থেকে আসতেছে আমার মোবাইলে?" আমি তার প্রশ্নই বুঝি নাই তখন। এখনো বুঝি না। আরেক ছেলে ঢাকা ইউনিভারসিটি পড়ে বিবিএ। আচ্ছা সে এক মেয়েকে প্রপোজ করল ইংরেজী ভাষায় প্যারাগ্রাফের মত করে। একলা রাস্তায় ফিনিক্স সাইকেল থেকে নেমে মেয়ের সামনে দাঁড়াল। এরপর এ টু জেড সব কিছু ইংরেজীতে মুখস্থের মত বলে গেল। মেয়ে পরে হাসে। এটা যদিও কিউট ব্যাপার। কিন্তু অনেক কাজ আছে যেগুলো শুধু সার্টিফিকেট থাকলে হয় না, ক্রিয়েটিভিটিও থাকা লাগে। এখন ক্রিয়েটিভিটির সার্টিফিকেট হয় না। কিন্তু এই ব্যাখ্যা কেউই মানবে না। আমার ক্রিয়েটিভিটি নিয়ে আমার কোনোই সন্দেহ নাই, হয়তো আমাকে শুধুমাত্র একাডেমিক মিসগাইডেন্সের কারণে ড্রপড আউট হতে হচ্ছে। আমি নিজেও কনফিউজড।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নারী

লিখেছেন এসো চিন্তা করি, ০২ রা এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১২:৪৭


"নারী "
এ. কে . এম. রেদওয়ানূল হক নাসিফ

মন খারাপ কেন বসে আছো কেন হতাশ
ওহে আজ নারী তুমি ,
কি হয়েছে তোমার এতো , সবসময় ভাবছো কি এতো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ওহীর বাইরে রাসূল (সা.) ও সাহাবার (রা.) সিদ্ধান্ত সঠিক হয়নি, অন্য কারো সিদ্ধান্ত কিভাবে সঠিক হবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা এপ্রিল, ২০২৫ ভোর ৬:২৫



সূরাঃ ৮ আনফাল, ৬৭ থেকে ৬৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৬৭।দেশে ব্যাপকভাবে শত্রুকে পরাভূত না করা পর্যন্ত বন্দী রাখা কোন নবির উচিত নয়। তোমরা পার্থিব সম্পদ কামনা কর। আল্লাহ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফ্যাসিবাদের কবলে ইসলামিক ফাউন্ডেশন: ধর্মীয় বইয়ের বদলে দলীয় প্রচার

লিখেছেন নতুন নকিব, ০২ রা এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ১০:০৮

ফ্যাসিবাদের কবলে ইসলামিক ফাউন্ডেশন: ধর্মীয় বইয়ের বদলে দলীয় প্রচার

ছবি অন্তর্জাল থেকে সংগৃহিত।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান, যার মূল লক্ষ্য ইসলামী জ্ঞান, গবেষণা ও সচেতনতা প্রচার... ...বাকিটুকু পড়ুন

সংস্কার VS নির্বাচন

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ০২ রা এপ্রিল, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৪২



সোস্যাল মিডিয়ায় এখন ডক্টর ইউনুসের কমপক্ষে পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার পক্ষে জনগন মতামত দিচ্ছে। অন্তবর্তী সরকার এক রক্তক্ষয়ী অভ্যূত্থানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা গ্রহন করেছে। তাই এই সরকারের কাছে মানুষের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কী অপেক্ষা করছে বাংলাদেশের জন্য

লিখেছেন হিমন, ০২ রা এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৯:৪৫

বাংলাদেশে সাড়ে খোলাফায়ে রাশেদিন- ইউনুসের সরকার আসার পর থেকে আজ অব্দি দেশ নিয়ে এখানে সেখানে যা অনুমান করেছি, তার কোনটিই সত্যিই হয়নি। লজ্জায় একারণে বলা ছেড়ে দিয়েছি। এই যেমন প্রথমে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×