যখন বাবা বেত দিয়ে মেরে শাসন করতো তখন মায়ের আচলে গিয়ে লুকতাম। আর যখন মা শাসন করতো তখন দাদুর কাছে চলে যেতাম। আম মায়ের নামে নালিশ করতাম। আর দাদু আচ্চা করে ঝাড়ি দিয়ে দিত।
দাদু যখন দিন দিন বৃদ্ধ হচ্ছিল তখন দাদুকে সবাই দেখতে আসত। দাদুর জন্য নিয়ে আসত বিভিন্ন ফল। দাদু আগে আমাদের দেওয়ার আগে কখনোই এই গুলো খেতেন না। আমাদেরকে দিয়ে তারপর তা মুখে দিতেন।
আমার কবুতর পোষার শখ সেই ছোট কাল থেকেই। অনেক কান্নাকাটির পর বাবা আমায় এক জোড়া কবুতর কিনে দিয়ে ছিলেন। সেই জোড়া কবুতর থেকে একটি পালিয়ে যায় অন্য কবুতরনীর হাত ধরে । আমি সেই দিন খুবই কান্নাকাটি করছিলাম। আম্মু মনে মনে খুশি হয়ে ছিল, কারন কবুতর গুলো পুরো বাড়ি পায়খানা করে নষ্ট করে ফেলত। আমার দাদী আমার কান্না দেখে নিজেই বাজারে গিয়ে আর একটি কবুতর কিনে আনলেন । আমাকে দিলেন । আমি শুধু কৃতজ্ঞতার চোখে দাদীর দিকে তাকিয়ে ছিলাম। আর দাদী আমার মাথায় হাত বুলাচ্ছিলেন।
দাদী যখন খুবই অসুস্থ হয়ে পড়ে ছিল। একদম বিছানা থেকে উঠতে পারতো না। তখন আমাদের ডেকে অকারনে হলেও পাশে বসিয়ে রাখতো। অনেক সময় হারিয়ে যাওয়া যৌবনের কথা মনে করে আমাদের তার গল্প শোনাতো। আমরাও বিভিন্ন প্রশ্ন করতাম। মাঝে মাঝে বিরক্তি বোধ করতাম। এখন বুঝতে পারছি তিনি আমাদের কতটুকু ভালবাসতেন। আমরাও তাকে কতটুকু ভালবেসে ফেলেছি।
পুন্শত:- গত ১ তারিখ আমার দাদী এই দুনিয়া ছেড়ে চলে গেছেন। তার চলে যাওয়ার পর প্রচন্ড এক শূন্যতা অনুভব করছিলাম । সেটা হয়ত কারও কোন অনেক আপন কেউ চলে গেলেই অনুভব করে। আপনাদের কাছে আমার দাদীর জন্য দোয়া চাইছি। আমার দাদীকে আল্লাহ জান্নাতুল ফেরদাউস নছীব করুন।