চারজনের কাহিনী শেয়ার করছি শুরুতেই ,
প্রথম ঘটনা: ভার্সিটির শুরুতেই চমৎকার সাত ফ্রেন্ড এর একটা গ্রুপ তৈরি হয়ে যায় । হাসি আনন্দে কেটে যাচ্ছিল বেশ । গ্রুপের একজন ছেলে হঠাৎ করেই গ্রুপের একজন মেয়ের প্রেমে পড়ে যায় । দিন রাত পিছনে পিছনে ঘুরা , নানা ভাবে চেষ্টার পর তাকে পটাতে সক্ষম হয় । প্রেম দারুন ভাবে চলে যাচ্ছিল। কখনো অভিমান করলেই মেয়ের বাড়ির সামনে ছেলের ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকা , ফোনের পর ফোন দেয়া । অদ্ভুত দিক ছিল ম্যানেজ করতে না পারলে নিজের হাত কেটে রক্তাক্ত করা ।
একসময় মেয়ের পরিবার জানাজানি হলে ছেলে তার চাচা নিয়ে আসেন ,বাবাকে ম্যানেজ করছেন বলেন আরও অনেক কাহিনীর পর বিয়ে ঠিকঠাক , শপিং করা শেষ , ছেলেকে নিয়ে শেরোওয়ানি , সেন্টার সব ভাড়া করা শেষ । তারপর বিয়ের মাত্র দুইদিন বাকি , তখন জানতে পারে ছেলে তার বাবা কে এখনও জানাননি । ওনাদের বাসায় কেউ জানেনা । অথচ ছেলের মা আর চাচা এসে ঠিক করে গেছেন ।
প্রোগ্রাম ক্যানসেল । এই ছেলের সাথে কিছুতেই বিবাহ হবেনা । যার কথার ঠিক নেই তার সাথে কিছুতেই মেয়ের বিয়ে না । অবশেষে ছেলের পাগলামি তে ঘরোয়া ভাবে বিয়ে সম্পূর্ণ হলো ।
বিয়ের পর মেয়ের মাথায় হাত । ছেলে তাহার পরিবার আর অবস্থান সম্পর্কে শতকরা ষাট ভাগ মিথ্যা বলেছেন । দুই বছর শেষে তিন বছর হলো তাদের তুলে নেওয়ার নামগন্ধ নেই । বাবার বাড়ি থাকলেও মেয়ে তাহার শুশুড়বাড়ির দায়িত্ব পালন করে আসছিল । ধীরে ধীরে প্রেমিক বর তাহার রূপ পাল্টালো । ওনি যা বলবেন মেয়েটাকে তা করতেই হবে ,না হলে হুলস্থুল কান্ড কারখানা শুরু হয় । শাশুড়ি অপবাদ দিচ্ছেন রিসেন্টলি , মেয়েই নাকি তার ছেলেকে জোর করে বিয়ে করেছেন । তার ছেলে চাননি ।
দ্বিতীয় ঘটনা : এই গল্পের নায়িকা হাসি আর দুষ্টুমি তে জীবন পাড় করছিলেন , হঠাৎ করেই সমবয়সী এক ছেলের প্রেমে পড়ে যান । ছেলের সাথে যতই কথা বলতে চাইতেন ছেলে ততই ভয়ে সরে যেতো । আর মেয়ে ততই প্রেমে পড়তে থাকে । একসময় ছেলেও পটে যান । নায়িকার হাসি পাগলামি সবকিছুকেই ভালোবেসে ফেলেন অবশেষে ।
ওনাদেরও অনেক কাহিনীর পর বিবাহ ঠিক হয় । ঘরোয়াভাবে বিয়ে সম্পূর্ণ হয় ।
বিয়ের পর পর ছেলে চাকরি ছেড়ে দুইজন মিলে এমবিএ শুরু করলেন । শুশুর এর টাকাতেই ছেলের বড় বোনের সাথে ওনারা হানিমুন এ গেলেন । ফিরে এসে ননাশের কাছে ওনাদের তোলা ছবিগুলো চাইলেন ননাশ কিছুতেই সেই ছবি দিলেন না ।
বর এর সাথে তার থাকা শাশুড়ি মানতে পারছেন না । রাতে ফোন দিয়ে গল্প জুড়ে দেন । একদিন বিয়ের শুরু তে মেয়ে শুশুড়বাড়ি থেকে গেলেন । কোন এক আত্মীয় এসে হাজির । তার জন্য কেউ রুম ছাড়তে রাজি না , অবশেষে বর আর বউ রুম ছেড়ে দিলেন , ড্রয়িং রুমে থাকলেন ।
ননাশ কাজের লোকের মতো অর্ডার করা শুরু করলো , মেয়ে শেষের দিকে মানতে পারছিল না । অবাক ব্যাপার হচ্ছে , একদিন ননাশ চাওমিন খাচ্ছিলেন , সেদিন মেয়েটি শুশুড়বাড়ি কোন এক কাজে আসেন , ননাশ খাওয়ার পর শাশুড়ি চাওমিন ফ্রিজে রেখে দিলেন । বউ কে একবারও স্বাদলেন না ।
ননাশের বিয়ে ঠিক হলো ,ছেলের বউকে বিয়ের আগের দিন জানালেন আসার জন্য । সবার জন্য অনেক শপিং করা হলো ,ছেলের বউর জন্য করেননি ।
ছেলে যথেষ্ট ভালো ভদ্র , তবে তার কিছু বলার নেই ,ইনকাম ও কম ,বউ চালানো র সামর্থ্য নেই , যদিও মেয়ে চাকরি করেন ।
ওনারোও উঠিয়ে নেয়ার খবর নেই কারোও ।
তৃতীয় ঘটনা : একসাথেই দুইজন গ্রাজুয়েশন সম্পূর্ণ করেন ।
একদিন ছেলেটি পছন্দের কথা জানান দেন । ছেলে মেয়ের পরিবারকে রাজি করিয়ে ফেলেন নানা প্রচেষ্টায় । ধুমধাম করে বিয়ে সম্পূর্ণ হয় ।
অপরদিকে মেয়ের শুশুড়বাড়ির প্রোগ্রাম অতি ঘরোয়া ভাবে হলো । বউকে কারোও সাথে পরিচয় করানো হলোনা । মেয়ে বাড়ির লোকজন মন খারাপ করে ফিরলেন , গ্রামের বিয়ে মজার ভেবে অনেকেই গিয়েছিলেন ।
দুই জন মাত্র চাকরি তে ঢুকেছেন ,টুনাটুনির সংসার । বাসা ভাড়া দিয়ে আর তেমন টাকাই বাঁচে না । কেউ আসতে চাইলে বাসায় বাজার থাকে না । নানাভাবে না করতে হয় । ঝগড়া ও বেড়ে চলল দুইজনের মাঝে ।
চতুর্থ ঘটনা : স্কুল থাকাকালীন মেয়ের প্রেমে পড়েন ভার্সিটিতে পড়ুয়া ছেলে , দীর্ঘ প্রেমের পর মেয়ের পরিবারের অখুশি তে বিয়ে সম্পূর্ণ হয় । বিয়ের বছর খানিক এর মাঝেই ছেলে চাকরি ছেড়ে দিলেন ,অনেক চেষ্টা করেও চাকরি পেলেন না ।
মেয়ে সবে গ্রাজুয়েশন শেষ , অনলাইনে বিজনেস শুরু করলেন । মেকআপ আর্টিষ্ট হিসেবেও ভালোই চলছিলেন । বরের পছন্দ হলোনা যাচ্ছে তাই বলে থামিয়ে দিতেন ।
শুশুড়বাড়িতে শাশুড়ি রান্না ঘর দখল হবার ভয়ে রান্না ঘরে বউকে ঢুকতে দিতেন না । কাজের লোক রান্না করলেও ,রান্না ঘর হারানোর ভয় পেতেন ।
মেয়ে কিছু করতে না পেরে প্রেগনেন্ট হলেন , সবার এখন সুনজর পড়েছে ওনার উপর । এই ভালোবাসা কতোদিন থাকবে সেটাই দেখার বিষয় ।
বি:দ্রঃ ঘটনা গুলো পরিচিত মানুষের ,খুব কাছ থেকে দেখা ।
সবাই এখন আফসোস করছেন ।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১১:১৩