প্রথম দৃশ্য
রিয়াদঃ আমি অফিসে যাচ্ছি।
সুমিঃ ঠিক আছে দেখে শুনে যেয়ো ( তারপর সুমি জানালার পাশে দাড়িয়ে দেখতে লাগল। অফিস শেষ
করে আসতে রিয়াদ সাহেবের রাত হয়ে গেল )
সুমিঃ কি ব্যাপার আজ এত রাত হল কেন।
রিয়াদঃ আর বল না কাজের চাপ বেশী, সামনে ঈদ নতুন ড্রামা তৈরি করতে হবে- আমার মাথায় কোন
গল্পই আসছে না খুবই চিন্তিত। (জুতা খুলতে খুলতে)
এ যাবৎ শুধু কাল্পনিক গল্প তৈরি করছি এবার একটা বাস্তব ঘটনা রচনা করতে চাচ্ছি ।
সুমিঃ কিভাবে?
রিয়াদঃ আরে বুঝলে না বাস্তব জীবনে ঘটে যাওয়া কিছু বেদনাদায়ক ঘটনাকে কেন্দ্র করে নাটক তৈরি
করবো। ( রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ল দুজন)
দ্বিতীয় দৃশ্য
ডিরেক্টরঃ রিয়াদ সাহেব গল্প পাইছেন।
রিয়াদঃ আরে বস্ চিন্তা কইরেন না গল্প হয়ে যাবে।
ডিরেক্টরঃ কবে হবে? ঈদ তো বেশী দিন নাই- কাজ করতে হবে না।
রিয়াদঃ জি আপনি আগামীকাল গল্প পেয়ে যাবেন- আমি আজ আসি।(রিয়াদ অফিস থেকে বের হয়ে থানায় ওর বন্ধুর সাথে দেখা করবে।)
ডিরেক্টরঃ আরে আপনি এই মাত্র আসলেন এক্ষুনি কোথায় যাবেন।
রিয়াদঃ থানায়, আমার গল্প থানায় অপেক্ষা করছে- সেখানে একটা ইভটিজিং মামলার আসামী আছে, তার
জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনা হবে এবারের ঈদের বিশেষ নাটক। চলি বাই ( হাসতে হাসতে )
ডিরেক্টরঃ সুপার হওয়া চাই।
তৃতীয় দৃশ্য
রিয়াদঃ হাই- আমি নাট্যকার রিয়াদ হাসান। আমি কি আপনার সাথে কথা বলতে পারি।
ইমনঃ আরে ভাই আমি একজন আসামী মানুষ- আমার সাথে আপনার কি কথা থাকতে পারে।
রিয়াদঃ আপনি কিভাবে ইভটিজিং এর আসামী হলেন এটা কতটুকু সত্য মিথ্যা আমাকে যদি জানাতেন
আমি বিষয়টা নিয়ে নাটক তৈরি করতাম।
ইমনঃ (হেসে) কারো সর্বনাশ কারো পৌষ মাস। আপনাদের জীবনটাই জীবন আমাদের জীবনটা জীবন
নয় নাহ ( রেগে বলল)
রিয়াদঃ (ভয়ে বলল) আপনার জীবনে কিভাবে প্রেম এল আবার সেই প্রেম সর্বগ্রাসী হয়ে সবকিছু ভেঙ্গে
দিল- এই ঘটনা টা নাটক হলে আপনার বিবেগহীনা প্রণয়ীনি দেখলে নিজের ভুল বুঝতে
পারতো।
ইমনঃ (আবেগে) ও আমাকে আগের মতো ভালবাসবে। আমাকে শাসন করবে আমার ওপর অভিমান
করবে। আপনি জানেন না আমি ওকে কতটুকু ভালবাসি।
আমি ওকে ভালবাসিনি ওই আমাকে ভালবেসেছে তারপর আমি ওকে।
প্রেমের কারণে আজ অপরাধী সেটা কিভাবে তাহলে শুনুন।
* সব ঘটনা শোনার পর নাট্যকার রিয়াদ খাতায় নোট করে নিবে এবং বাসায় ফিরে সুমিকে পড়তে বলবে।
চতুর্থ দৃশ্য
সুমিঃ কই তোমার লেখা বাস্তব প্রেমের কাহিনী- মন গড়া কি সব বলছে তুমি লিখে আনছো ।
রিয়াদঃ (পাশের ঘর থেকে বলবে) দেখ ওটা টেবিলের ওপরে।
(সুমি নোট বুকটা হাতে নিয়ে গুন গুন করে পড়তে লাগলো - আজ থেকে প্রায় ১১ মাস আগে
আমি একটা রাস্তার পাশ দিয়ে হাটছি হঠাৎ আমার সামনে একটা ট্যাক্সি ক্যাব একট রিক্সাকে
ধাক্কা দিল। রিক্সায় একটা মেয়ে ছিল সে আর কেউ নয়- আমার সেই ভাললাগা ভালবাসার
অনন্যা সুমি।
(সুমির পড়ার শব্দ নীরব হয়ে গেল তার চোখ দুটি জল জল করতে লাগল আর কল্পনায় সেই দৃশ্য ভাবতে লাগলো।
রিক্সা থেকে সে ছিটকে পড়ে চিৎকার করে উঠল- পা ধরে কাঁদছিল। আমি দৌড়ে সামনে গেলাম। আমি তার দিকে হাত বাড়ালাম আমার হাত ধরে উঠে দাড়াল কিন্তু পায়ের ব্যাথায় দাড়িয়ে থাকতে পারল না আমার কাধে ভর করে দাড়াল। আমি ওনার মুখের দিকে তাকালাম সেও আমার দিকে তাকালো-
সুমিঃ ভাইয়া আপনি আমাকে একটু হেল্প করতে পারেন।
ইমনঃ কেন নয় অবশ্যই বলেন কি করতে হবে।
সুমিঃ এই পাশেই একটা পার্ক আছে আমাকে সেখানে নিয়ে যাবেন?
ইমনঃ অবশ্যই নিয়ে যাব তার আগে আপনার হসপিটালে যেতে হবে আপনার ট্রিটমেন্ট প্রয়োজন।
সুমিঃ ট্রিটমেন্ট পরে হবে- আগে আমার ওখানে যাওয়া প্রয়োজন আমার জন্য একজন অপেক্ষা করছে।
ইমনঃ কে ? বয় ফ্রেন্ড।
সুমিঃ হু।
ইমনঃ জীবণ আগে না প্রেম আগে।
সুমিঃ প্রেম ছাড়া জীবন চলে না, প্রেমই আগে।
ক্স সুমি ইমনের কাধে ভর করে সুমির বয় ফ্রেন্ড শোভনের কাছে যাবে। সুমির সাথে ইমনের এই অন্তরঙ্গ অবস্থা দেখে সুমির বয়ফ্রেন্ড শোভন সুমিকে ভুল বুঝবে। সুমি শোভনকে পরিচয় করিয়ে দেবে।
সুমিঃ শোভন এই ভাইয়া আমাকে না নিয়ে আসলে আমি এখানে একা আসতে পারতাম না, ভাইয়ার
নামটা কি জানা হল না।
ইমনঃ জি, আমি ইমন।
সুমিঃ আমি সুমি আর ও শোভন ইসলাম।
(শোভন ইমনের সামনেই সুমির সাথে রাফ্ ব্যবহার শুরু করবে)
শোভনঃ খুব মজা নাহ্ (একটু গম্ভীর ভাবে)
সুমিঃ কোনটা ? ( হাসি খুশি ভাবে)
শোভনঃ এই পর পুরুষের কাধে ভর করে হাটা।
সুমিঃ তুমি এতদুর চিন্তা করছো আমি ভাবতেই পারি না আমাকে নিয়ে তোমার মনে একটা বাজে প্রশ্নের
উদয় হবে।
শোভনঃ বাজে নয়- আমার এটা দেখে মোটেও আমার ভাললাগার কথা নয়।
ইমনঃ আরে ভাই আপু হাটতে পারছিল না তাই।
শোভনঃ ভাই আপনে এর মাঝে কথা বইলেন নাতো- আপনার বিষয়টা ভাল লাগতে পারে আমার লাগেনি
আমার কষ্ট লাগছে কারণ আমি ওকে ভালবাসি।
ইমনঃ ভাইয়া আপনি ভালবাসার কথা বলছেন- যাকে আপনি বিশ্বাসই করতে পারছেন না হু আবার
ভালবাসার কথা বলছেন, বিশ্বাসে ভালবাসা হয় আর অবিশ্বাসে ভেঙ্গে যায়।
শোভনঃ এই তুই কি প্রেম বিশারদ হয়ে গেলি নাকি একদম খুন করে ফেলব।(রেগে)
সুমিঃ এই তোমরা থামবে?
শোভনঃ উকিল আনছো কোথ থেকে অনেক সাহস আছে।
সুমিঃ ভাই আপনে প্লিজ চলে যান কিছু মনে করেন না। ( ইমন চলে যাচ্ছে ) প্লিজ জান তুমি এরকম কর
না দেখ ওনাকে আমি চিনি না ওনার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নাই তুমি আমাকে এত অবিশ্বাস
কর ( ব্যাগ থেকে একটা দামি ঘড়ি বের করে বলবে) দেখ আমি তোমার জন্য একটা গিফ্ট
আনছি।
শোভনঃ ঘুষ নাকি। আমাকে ঘুষ দিয়ে খুশি করা যাবেনা (সুমি ঘড়ি হাতে পড়াতে লাগবে শোভন সেটা
ঢিল মেরে ফেলে দিবে) দেখ আমি সিরিয়াসলি বলছি তোমার মনে আমার জন্য জায়গা একটু
কমই আছে। তুমি এর আগেও একটা দোকানে খালাত ভাই হিসেবে আমার পরিচয় দিয়েছো।
তোমাদের মত মেয়েদের চেনা মুশকিল সো গুডবাই। তোমার মত স্বর্থান্বেষী মেয়ে থেকে দুরে
থাকাই ভাল। (শোভন চলে গেল সুমি ঘড়িটা তুলে কাদতে লাগল।
পঞ্চম দৃশ্য
মাঃ কিরে তুই এখানে একা একা বসে কি ভাবছিস খেতে যাবি না।
সুমিঃ না মা আমি পরে খাব- কিছু ভাবছি না, এমনিতেই মন খারাপ।
মাঃ সকালে বাবা বকছে বলে মন খারাপ। তাড়াতাড়ি খেতে আয়।
সুমিঃ যাও আমি আসছি।
ষষ্ঠ দৃশ্য
সুমিঃ এই রিক্সা দাড়ান। আরে আপনি এদিকে।
ইমনঃ আমি তো এদিক দিয়েই যাতায়াত করি- তো কেমন আছেন।
সুমিঃ যথেষ্ঠ খারাপ। আপনার সময় হবে ? আপনার সাথে আমার কিছু কথা আছে।
ইমনঃ সময় তো হবেই আমার একটা কাজ ছিল।
সুমিঃ কাজ পড়ে কইরেন- আসুন তো আপনে ( ইমন রিক্সায় উঠবে )
ইমনঃ দেখেন শুধু আমার কারণে আপনার ভালবা.......।
সুমিঃ বাদ দেন তো আপনি, ঐ সব ফালতু লোকের সাথে সম্পর্ক করাই উচিৎ না। ( দুজন রিক্সার ওপড়
কথা বলতে যাচ্ছে এমন সময় পাশের দোকানে শোভন সিগারেট ধরাচ্ছে সুমির সেদিকে চোখ
পড়ল সুমি শোভনকে দেখিয়ে ইমনের হাত মোলায়েম ভাবে ধরল,ইমন অবাক হয়ে হাতের দিকে
তাকিয়ে রইলো অনেক্ষণ শোভন হাসল আর বলল তুই এত খারাপ সিগারেট ফেলে দিল, তারপর
দুজনে পার্কে পৌছাল।)
সুমিঃ ইমন আমার জীবনে কি হয়েছে না হয়েছে তুমি বেশ ভাল করেই জানো আমি তোমাকে তুমি করে
বললাম কারণ আমি তোমাকে ভালবেসে ফেলেছি তোমার আপত্তি না থাকলে তুমি হ্যা বলে দিতে
পার।
ইমনঃ ( অবাক ভাবে তাকিয়ে কোন কথা নাই মনে হচ্ছে ওকে দুনিয়ার সমস্ত সম্পত্তি ওর নামে উইল
করে দেয়া হয়েছে ।)
সুমিঃ কি ব্যাপার তোমার মুখে কোন কথা নাই কেন এভাবে কি দেখছো।
ইমনঃ( মনে মনে অবাকভাবে তাকিয়েই সুন্দর খুব সুন্দর আমাকে কেউ কোনদিন এভাবে ভালবাসার
কথা বলে নাই) । হ্যাঁ আমি রাজি। ( ভয়েস অফ) অনেক্ষণ রিক্সায় দুজন ঘুরে বেড়াল।
সপ্তম দৃশ্য
রুমমেটঃ ভাই আপনাকে অনেক খুশি খুশি লাগছে। আপনি কি অনেক টাকার
লটারী পাইছেন ?
ইমনঃ আরে টাকা না- আচ্ছা তোদের মনে টাকার কথা আসল কেন।
রুমমেটঃ আমাদের মত বেকার ছেলেদের কাছে খুশির কারণ একটাই হতে পারে সেটা হল টাকা, কেন
ভাই আপনে কি অনেক অনেক টাকা পাইছেন নাকি।
ইমনঃ আরে বোকা টাকা পাই নি কিন্তু আমার কাছে টাকার চেয়ে মুল্যবান জিনিস যেটা সেইটা
পেয়েছি........
রুমমেটঃ কি কি আশ্চর্য প্রদীপ টদ্বীপ পাইছেন নাকি।
ইমনঃ (রেগে) আরে ধুর তোদের সাথে কথা বলাই আমার ভুল ।
রুমমেটঃ আরে ভাই আপনে না বললে আমরা বুঝবো কেমন করে আমাদের জানতে হবে না।
ইমনঃ আমাকে একটা মেয়ে ভালবাসে।
রুমমেটঃ আপুর নাম কি? কেমন দেখতে ....।
ইমনঃ নাম সুমি... খুব সুন্দর দেখতে কিন্তুু............(ভয়েস অফ)।
অষ্টম দৃশ্য
সুমিঃ হাই কেমন আছো।
ইমনঃ গুড ভাল, তুমি।
সুমিঃ হ্যাঁ আমিও ভাল আছি- তুমি বোধ হয় অনেকক্ষণ ধরে এসেছো।
ইমনঃ না তেমন বেশীক্ষণ নয় মাত্র ১ঘন্টা ধরে অপেক্ষা করছি।
সুমিঃ সরি,বোঝই তো মেয়ে মানুষ যখন তখন বাড়ি থেকে বের হতে পারি না।
ইমনঃ নাহ ঠিক আছে কোন ব্যপার না।
সুমিঃ চোখ বন্ধ কর তো ।
ইমনঃ কেন ?
সুমিঃ আরে করই না- একটা সারপ্রাইজ আছে।
* সুমি ইমনের হাতে সেই ঘড়ি পড়িয়ে দিবে*
ইমনঃ খুব সুন্দর তো – ফাইন নাইস থ্যাঙ্কস ইউ।
সুমিঃ তোমার পছন্দ হয়েছে।
ইমনঃ হবে না কেন তুমি দিয়েছো না।
* সুমি ইমনের বুকে একটু মাথা এলিয়ে দিয়ে কিছুক্ষণ কথা বলবে*
নবম দৃশ্য
***বর্ণনা ঃ-
ইমন সুমির জন্য পার্কে অপেক্ষা করতে থাকবে এমন সময় একটা অপরিচিত
মেয়ে ইমনের কাছ দিয়ে হেটে যাবে মেয়েটাকে ইমন একনজর দেখে ঘড়ির দিকে
তাকাবে সুমির জন্যে অপেক্ষা করছে ইমন। হঠাৎ ইমনের নজর সেই মেয়েটার
দিকে গেল- মেয়েটা ফোনে কথা বলার ছলে তার থেকে তার পার্স পড়ে গেল
মেয়েটা বুঝতেই পারল না।
ইমন সেটা লক্ষ করল এবং সেটা তুলতে তুলতেই দেখে মেয়েটা অনেক দুরে
চলে গেছে- ইমন ডাকতে লাগল,এক্সকিউজমি হ্যালো এক্সকিউজমি আপু। সেই
অচেনা মেয়েটা জানার আগেই সুমি সেখানে উপস্থিত হল।
সুমি দেখতে পেল ইমন একটা মেয়েকে ডাকতে ডাকতে পেছনে ছুটছে। সেটা
দেখের সুমির রাগ হল, এবং সুমি ইমন কে ভুল বুঝল। অচেনা মেয়েটা ইমনের
ডাক শুণতে পেয়ে দাড়াল। পেছন ফিরে তাকিয়েই তার চোখ পড়ল ইমনের
হাতে থাকা তার পার্সের দিকে-
সংলাপঃ
ইমনঃ- এক্সকিউসমি আপু আপনার পার্স।
অচেনা আপুঃ সরি,আমি একদম খেয়াল করিনি- এ্যবসেন্ট মাইন্ডেড ছিলাম। আপনি এটা কোথায়
পেলেন।
ইমনঃ ঐ ওখানে পড়েছিল।
অচেনা মেয়েঃ তা হলে তো আপনি এটার জন্য অনেকখানি হেটে এসেছেন।
ইমনঃ হ্যা তা তো বটেই। (একটু হেসে, সুমি দুর থেকে সেটা লক্ষ করছে) আচ্ছা আপু আপনার নাম টা
জানতে পারি। ( মেয়েটা শুনতে পেল না) হ্যালো আপু আপনার নামটা জানতে পারি।
অচেনা আপুঃ ওহ সরি- আমার খেয়ালটা অন্যদিকে ছিল- আমার নাম শোভা- শোভা সরকার। আপনার
নাম।
ইমনঃ জি আমার নাম ইমন মোঃ ইমন। আপু আপনাকে দেখে অন্য মনস্ক লাগছে তারপরও হাসিখুশি
মনে হচ্ছে ব্যাপারটা কি।আসলে কারো পারসোনাল বিষয়ে ইন্টারফেয়ার করা উচিৎ নয়
তারপরও জানতে চাচ্ছি বলা যাবে।
শোভাঃ- বলা যাবে না কেন। আমার খুব খুশি লাগছে আমার এই খুশি চেচিয়ে সবাইকে বলতে ইচ্ছে
করছে। আমার ভেঙ্গে যাওয়া স্বপ্ন জোড়া লাগছে- আমি যাকে ভালবাসি, সে অভিমান করে চলে
গেছিলো সে আমাকে ফোন করে সরি বলল আমার সাথে দেখা করতে চায়। আমি আপনাকে
বোঝাতে পারবনা আমি ওকে কতটা ভালবাসি(কেদে ফেলল)
ইমনঃ- (মনে মনে হায়রে প্রেমরে আমার প্রেম সেই কখন থেকে অপেক্ষা করছি কোন খবর নাই)। আপু
দোয়া করি আপনাদের প্রেম পূর্ণতা পাক, আল¬াহ পাক আপনাদের স্বপ্ন স্বার্থক করুক- আমিন।
আচ্ছা আপু তাহলে আসি অন্যদিন কথা হবে- বাই ।
শোভাঃ- ওকে বাই।
* ইমন পুনরায় সেই গাছের নিচে বসল সুমির টিকি পাত্তা নেই বিরক্তের ছাপ মুখে নিয়ে ইমন সুমিকে ফোন দিল সুমি ব্যাগ থেকে ফোন বের করে দেখে ইমনের ফোন রাগ ভাব নিয়ে ফোন রিসিভ করে বলল-
সুমিঃ- হ্যালো সম্রাট শাহজাহান- আপনার প্রেম করা হইছে।
ইমনঃ- এই এটা কি ধরনের পাগলামী কি বল এসব- তুমি কই তোমার জন্য সেই কখন থেকে অপেক্ষা
করছি ।
সুমিঃ- হ্যাঁ দেখলাম তো তোমার অপেক্ষা করা। এই জন্যেই তুমি অনেক আগেই পার্কে আস অন্য
মেয়েদের সাথে প্রেম করতে। এক ঢীলে দুই পাখি শিকার করবে নাহ পাখি চালাক হয়ে গেছে
সম্ভম না।
ইমনঃ- ( মনে মনে কী ব্যাপার সুমি এখানে আসছিলো নাকি- মনে হয় ঐ আপুর সাথের কথা বলা সুমি
দেখে ফেলেছে) এই সুমি তুমি এখন কোথায় প্লিজ আমাকে ভুল বুঝনা।
সুমিঃ- তোমার প্রেমে ডিস্ট্রাব না করে চলে যাচ্ছি । আমি একটা মেয়ে হয়ে অন্য একটা মেয়ের স্বপ্ন নষ্ট
হতে দিতে পারি না। (কেদে বলল)
* ইমন মনে মনে ভাবে ওদিকে ভেঙ্গে যাওয়া প্রেম জোড়া লাগে আর আমার জোড়া লাগা প্রেম ভাঙ্গে। হায়রে কপাল আমি এখন কি করি। *
আবার ফোন দিলাম দেখি সুইচ অফ।
ইমন পার্ক থেকে বের হল মেইন রাস্তায় অনেকক্ষণ হাটল খুব দ্রুত সুমিকে খুজে পেতে হবে ওকে সব খুলে বলতে হবে তারপর ইমন সুমিকে দেখতে পেল দৌড়ে কাছে গেল পেছন থেকে গিয়ে হাত ধরল
ইমনঃ- সুমি প্লি¬¬জ আমাকে ভুল বুঝনা তুমি কি দেখেছো, না জেনে এরকম করা তোমার উচিৎ নয় ( অনুনয় করে বলল)
সুমিঃ- হাত ছাড় বলছি- এক টান মেরে সুমি হাত ছাড়িয়ে নিল। তোমরা সব ছেলেরাই এরকম সবাইকেইচেনা আছে।
ইমনঃ- ও তাই বল। কথায় আছে যার মনে যা লাফ দিয়ে ওঠে তা।
সুমিঃ- তার মানে তুমি কি বলতে চাও।
ইমনঃ- তুমি আমাকে পার্কে কার সাথে দেখলে, তুমি যাচাই না করে এধরনের মন্তব্য কর কি করে ঐ মেয়েটা আমার বোন বা খালা ফুফু হতে পারতো।
সুমিঃ- হতে পারতো! হয়নি তো না। উনি কি আসলেই তোমার খালা ফুফু ছিল?
ইমনঃ- তা ছিল না ওনাকে আমি চিনি না। উনি ওনার পার্স ফেলে চলে গিয়েছিল সেটা দেয়ার জন্যই
আমি ওনার কাছে গিয়েছিলাম।
সুমিঃ- আর তাতেই প্রেম হয়ে গেল। তোমার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নাই যাও।
ইমনঃ- সামান্য একটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে তুমি সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা বলছো । ওহ সরি আমিই ভুলেই
গিয়েছিলাম আসলে ভাঙ্গা গড়াই তোমার স্বভাব। হু আমার কপালটাই যে খারাপ ঐ আপুর প্রেম
জোড়া লাগে আর আমার টা ভাঙ্গে। তোমাকে ছাড়া বাঁচতে পারব একটু কষ্ট হবে । যাই হোক
সব সম্পর্ক নষ্ট কর না আমাকে ভালবাসতে বলছি না- এরপর যাকেই ভালবাস তাকে হৃদয়ের
এইখান থেকে ভালবাসার চেষ্টা কইরো। কারণ সম্পর্ক নষ্ট করলে কষ্ট লাগে একজনের। দেখ
সুমি মানূষ মানুষকে উপকার করলে মনে রাখে না কিন্তু অপকার করলে মনে রাখে।
সুমিঃ-তোমার এতসব কথা শোনার জন্য আমি আসি নাই তুমি আমাকে আর বিরক্ত করো না।
ইমনঃ- নাহ্ নাহ্ নাহ্ আমি আর তোমাকে বিরক্ত করবো না।
* কথাগুলো বলতে বলতেই ঘুরে উঠেই একটা চড় বসিয়ে দিল সুমির গালে সুমি চিৎকার করে কেদে উঠল স্থানীয় কিছু লোকজন চলে আসল- ম্যাডাম কি হয়েছে এই লোক আপনাকে ডিস্ট্রাব করছে। ইমন রেগে বলল- এই ভাই এখান থেকে জান তো আমাদের দুজনের ব্যাপার আমাদের দুজনকে বূঝতে দিন।
লোকজনঃ আমাদের বুঝতে দেন মানে একটা মেয়েকে মারধর করছেন আবার বলেন আমাদের বুঝতে
দেন।
ইতোমধ্যে পুলিশ পাশ দিয়ে যাচ্ছিল লোকজনের ভীর দেখে কাছে আসল।
পুলিশঃ এখানে কি হয়েছে ?
লোকজনঃ এই ছেলেটা এই মেয়েকে বিরক্ত করছে।
পুলিশঃ ও ইভটিজিং হচ্ছে আমার এলাকায় ইভটিজিং নাহ্ এই ওকে গাড়ীতে তোল তারপর ওকে মজা
দেখাচ্ছি।
ইমনঃ স্যার স্যার আমি কোন অন্যায় করিনি ওর সাথে আমার সম্পর্ক আছে ও আমাকে ভালবাসে।
( ইমন সুমির দিকে তাকাল করুন চাহনিতে। সুমি চোখ নামিয়ে নিল।)
পুলিশঃ ওনার চোখ তো সেটা বলছে না কী ম্যাডাম ওনাকে চেনেন।
সুমিঃ আমি ওনাকে চিনি না।
বিঃদ্রঃ এখানে সুমির পড়ার দৃশ্য দেখাতে হবে আর ও জলে ভেজা চোখ দুটি।
( আমার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ল, আমি কাদতে লাগলাম। পৃথিবী অনেক নিষ্ঠুর আমার বুঝতে বাকি রইল না। পুলিশ আমার কলার চেপে ধরে গাড়ীতে উঠালো। গাড়ীতে ওঠার সময় আমার ফোনটা পড়ে গেল। আমি বুঝতে পারিনি। আমি কারো সাহায্য পেলাম না। আমার খোজ নেয়ার মত এমন কেউ ছিল না। অবশেষে কোর্ট আমাকে ৬ মাসের সাজা শুনিয়ে দিল। )
রিয়াদঃ এই সুমি তোমার কি হয়েছে।
সুমিঃ কিছু নাতো।
রিয়াদঃ আমার মনে হয় তুমি গল্পটা পড়ে কাদছো।
সুমিঃ এই গল্পের নায়িকার নাম আর নাম সেইম তাই না।
রিয়াদঃ শুধু নাম সেইম নয় আমি জানি সেই সুুমি আর তুমি সুুমি একই।
সুমিঃ ( সুমি কেদে বলবে) আমাকে ক্ষমা দাও আমি আসলে বুঝতে পারি নি- যে এত বড় ঘটনা হবে।
রিয়াদঃ দেখ তুমি তো আমার কাছে কোন ভুল করনি- ভুল করেছো ইমনের কাছে ক্ষমা চাইলে ইমনের
কাছে চাইতে হবে।
সুমিঃ আমি ওকে কোথায় পাব ওকি এখনো জেলের মধ্যে।
রিয়াদঃ হ্যাঁ কাল সকাল ১০ টায় ওকে মুক্তি দেয়া হবে।
সুমিঃ আমি ওর সাথে একটু দেখা করতে চাই শুধু একবার ওর কাছে আমার ক্ষমা চাইতে হবে না হলে
আমি নিজেকে ক্ষমা করতে পারবো না।
রিয়াদঃ আচ্ছা ঠিক আছে সকালে দেখা হবে এখন ঘুমাও।
শেষ দৃশ্য
ওসিঃ কিরে বন্ধু তুই এত সকাল সকাল এখানে। ওহ ভাবী ও আসছে- ভাবী আসসালামু আলাইকুম-
কেমন আছেন।
সুমিঃ হু ভাল।(গম্ভীরভাবে)
রিয়াদঃ আমরা আসছি ইমনের সাথে দেখা করতে।
ওসিঃ সরি বন্ধু তোর নাটক পুর্ণাঙ্গ হল না ।
রিয়াদঃ নাটক তো শেষ- কেন কি হয়েছে, ওকে ছেড়ে দিয়েছে ১০টা তো বাজেই নি।
ওসিঃ ওকে আর কি ছাড়বে ওই তো ছেড়ে চলে গেছে।
রিয়াদঃ কি বলছিস খুলে বল।
ওসিঃ ইমন আর বেচে নেই। কাল রাতে হঠাৎ (ভয়েস অফ)
সুমিঃ আমার আর ক্ষমা চাওয়া হল না- আমি মরেও শান্তি পাব না (কেদে ফেলল)
রিয়াদঃ তুমি কান্না করো না কপালে লেখা যা হবে তা। তুমি অনেক কষ্ট দিয়েছো ওকে এই ভেবে তোমার
যদি অনুশোচনা হয় যদি তোমার ভুল ভেঙ্গে যায় যদি তোমার চোখ জলে ভিজে যায় তাহলে বুঝে
নিও ও তোমাকে ক্ষমা করে দিয়েছে। আর হুট করেই কোন সম্পর্ক ছিন্ন করতে হয় না- ভুল
হতেই পারে।
( সুমি জল ভরা চোখ নিয়ে রিয়াদের বুকে আশ্রয় খুজল)
তারপর দুজনে গিয়ে ইমনের সমাধিতে ফুল দিয়ে দোয়া করলো।
************ সমাপ্ত ************
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৩:৪৫