করোনা নিয়ে কোনো তথ্য, কোনো নির্দিষ্ট সতর্কতা, চিকিৎসা, ঔষধ কোনো কিছুই ঠিক থাকছে না এখন পর্যন্ত। একদম প্রথম দিকে হুজুরদের মাধ্যমে আমরা জেনেছিলাম, মুসলমানের করোনা হবেনা। সরকারি মাধ্যমে মানে প্রধানমন্ত্রীর কথায়ও আমরা জেনেছিলাম সবার মাস্ক পরার দরকার নাই। আর এখন? ইহুদি, বৌদ্ধ, হিন্দু, খ্রিষ্টান, মুচি, মেথর, ডাক্তার, শিল্পপতি, গর্ভবতী, পুলিশ সবাই আক্রান্ত এবং মৃতের তালিকায়। আর এখন? মাস্ক না পরলে সারকারিভাবে জরিমানা এবং শাস্তিরও বিধান করা হয়েছে।
করোনা আমরা ভয় পাইনা, কিন্তু করোনা আক্রান্ত কাউকে বা করোনা আক্রান্ত কেউ মারা গেলে তাকে আমরা এমন ঘৃণা করি যা কখনো কাউকে করতাম না। নিজের রক্তের বন্ধনকেও আমরা চিনছিনা, নিচ্ছিনা। যে ধর্ম সার্বজনীন সেই ধর্মও মৃত্যুর পরের সৎকার কিংবা দাফনে বাধা দিচ্ছে ধর্মের দায়িত্বশীলরা।
বুধবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত সংবাদ বুলেটিনে মৃত ব্যক্তির লাশ দাফন সম্পর্কে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) নাসিমা সুলতানা বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তির শরীরে তিন ঘণ্টা পর আর ভাইরাসের কার্যকারিতা থাকে না। একই সঙ্গে করোনায় মৃত হিসেবে আলাদা কোনো কবরস্থান নির্দিষ্ট করার দরকার নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলেছে, এটা প্রমাণিত হয়নি মৃত ব্যক্তির কাছ থেকে অন্য ব্যক্তির দেহে করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে। মৃতদেহ সৎকার করতে তিন-চার ঘণ্টা সময় লেগেই যায়। তিন ঘণ্টা পর মৃত ব্যক্তির শরীরে এই ভাইরাসের আর কার্যকারিতা থাকে না। সে জন্য মৃতদেহ থেকে ভাইরাস ছড়ানোর কোনো আশঙ্কা নেই।
কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তির সৎকার যেকোনো জায়গায় করা যাবে উল্লেখ করে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক বলেন, মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা কবরস্থানে কিংবা পারিবারিক কবরস্থানে মৃতদেহ দাফন করতে পারবেন। অন্য ধর্মাবলম্বীরাও তাঁদের বিধি অনুযায়ী যেকোনো জায়গায় মৃতদেহের সৎকার করতে পারবেন। তিনি বলেন, ‘করোনায় মৃত ব্যক্তির দাফন, সৎকার বা ব্যবস্থাপনার নির্দেশনা স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তরের (ডিজিএইচএস) ওয়েবসাইটে রয়েছে। তবু বিশেষভাবে সবার অবগতির জন্য বলতে চাই, মৃতদেহ নিজ নিজ ধর্মীয় বিধি অনুযায়ী সতর্কতা অবলম্বন করে দাফন বা সৎকার করা যায়। নিয়ম অনুযায়ী মৃতদেহের সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে বডি ব্যাগ বা তা না পাওয়া গেলে পলিথিনে মুড়িয়ে মনোনীত কবরস্থান বা পারিবারিকভাবে নির্ধারিত স্থানে দাফন করা যাবে। শুধু করোনায় মৃত হিসেবে আলাদা কোনো কবরস্থান নির্দিষ্ট করার দরকার নেই। পারিবারিক কবরস্থানেই এই মৃতদেহ দাফন করা যাবে এবং অন্য ধর্মের জন্য সৎকার করা যাবে।'
এ ব্যাপারটা আগে হতে জানা থাকলে অনেক সম্পর্কের বিভৎস রুপ আমাদের দেখতে হতোনা, যদিও অনেক দেরি হয়ে গেছে তবুও হয়তো ফেরার পথ আছে যদি এই তথ্যটার প্রচার আমরা যথাযথভাবে করি।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুন, ২০২০ রাত ১০:৫৮