আল-বদর বাহিনীর প্রধান জল্লাদ আশরাফুজ্জামানের ডায়রিতে উল্লেখ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দালাল শিক্ষকদের তালিকা ধরে যখন অনুসন্ধান করা হলো, তখন দেখা গেলো এর সঙ্গে জড়িত আছে অনেক শিক্ষক নামের কলঙ্ক। ১৯৭১ সালের ১৯ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে ড. সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেনকে নিয়োগ দেয় পাকিস্তান সরকার। তার এ নিয়োগের মূলেই ছিলো পাকিস্তান প্রীতি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষককে হত্যার মাধ্যমে বাঙালির স্বাধীনতার চিরন্তন বহ্নিশিখাটিকে নিভিয়ে দেয়া। সাজ্জাদের মতো হাড়-হারামিরা সেদিন টিক্কা খান কর্তৃক গঠিত শিক্ষা সংস্কার কমিটির সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলো। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দালাল ছিলো রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে। গোলাম ওয়াজেদ চৌধুরী, ড. রশিদুজ্জামান, ড. এ কে এম শহিদুল্লাহ, এ কে জালালউদ্দিন মোস্তফা এবং ড. হাসান জামান। কিন্তু সবচেয়ে বড়ো কষ্টের জায়গাটি হলো ড. আবদুল জব্বার; ফার্মেসী বিভাগের এ রাজাকার দালাল আজো বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাশ নিয়ে যাচ্ছে। কেবল আবদুল জব্বারই নয়; এ দালালদের আরেকজন হলো এ কে এম আব্দুর রহমান; গণিত বিভাগে এখনো অধ্যাপক হিসেবে কাজ করছে। বিজ্ঞান অনুষদের বিভিন্ন পরীক্ষায় এ রাজাকার আসে পরীক্ষার হল পরিদর্শনে। আরেক রাজাকার, যে কিনা পাপের ভারে নুব্জ্য হতে হতে মারা গেছে- অথচ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে মরতে দিতে নারাজ- সে হলো আতিকুজ্জামান খান। পাঠক, আপনি যদি একবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে গিয়ে ঘুরে আসেন, দেখবেন, সেখানে আতিকুজ্জামান খানের নামে একটি সেমিনার লাইব্রেরি করা হয়েছে। সত্যিই সেলুকাস, কী বিচিত্র এ বিভাগটি। এছাড়া আরো যারা আছে তাদের মধ্যে রয়েছে
ড. কাজী দীন মুহাম্মদ (বাঙলা বিভাগ)
ড. মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান (আরবী বিভাগ)
মোঃ আফসার উদ্দিন (সমাজবিজ্ঞান বিভাগ)
ড. মীর ফখরুজ্জামান (মনোবিজ্ঞান বিভাগ)
ড. মোঃ শামসুল ইসলাম (পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ)
ড. মাহবুব উদ্দিন আহমেদ (পরিসংখ্যান)
মোঃ ওবায়েদউল্লাহ (পরিসংখ্যান, আসকার ইবনে সাইখ নামে পরিচিত)
আব্দুল কাদের মিয়া (শিক্ষা ও গবেষণা ইনিস্টিটিউট)
ড. শাফিয়া খাতুন (শিক্ষা ও গবেষণা ইনিস্টিটিউট)
ড. আফতাব আহমেদ সিদ্দীকি (উর্দূ ও ফার্সী বিভাগ)
নুরূল মোমেন (আইন বিভাগ)
ড. এস এম ইমামুদ্দিন (ইসলামের ইতিহাস বিভাগ)।
এ রাজাকারদের মধ্যে যারা এখনো বিশ্ববিদ্যালযের বিভিন্ন দায়িত্বে রয়েছে, তাদের কী করা উচিত আর যারা তাদের এখনো দায়িত্বে রেখেছে তাদের কী করা উচিত আপনারাই সিদ্ধান্ত নিন পাঠক।
(চলবে)
গোলাম রসূল মারুফ
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই অক্টোবর, ২০১০ রাত ১১:৫৭