বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম।
একটা কথা বোধহয় চোখ বন্ধ করে বলা যায় - দেশে ধনী আর গরীবের ব্যবধান ক্রমাগত বাড়ছে। কারণ, দিন-দিন অ্যাপোলো হসপিটালের রোগী যেমন বাড়ছে, তেমনি ঢাকায় বাড়ছে বস্তিবাসীদের সংখ্যা। ব্যাপারটা কি কোনভাবে চেক দেওয়া যায় না?
আমরা এই যে মুক্তিযুদ্ধের উপরে ফি-বছর এত সভা-সমিতি-পদযাত্রা করছি, সবার মুখে বুলি একটাই - এর দ্বারা নাকি স্বাধীনতার চেতনা সমুন্নত হবে। কিন্তু, আমরা এই সরল বাক্যটার প্রতি কি আসলেই আন্তরিক? একটা চিন্তা কি আমাদের মাথায় আসে না?- দেশটা ৭১ এ স্বাধীন হয়েছে কেন? এদেশের মানুষদের উপরে পশ্চিম পাকিস্থানীদের ক্রমাগত শোষণের বিরুদ্ধে তো, নাকি?
এখন হঠাৎ যদি লাখে লাখে বস্তিবাসী বা ভিক্ষুক মুক্তিযোদ্ধারা আবার আরেকটা যুদ্ধে নামে নিজেদের অধিকার আদায়ের জন্য, ইটের দালানে বাস করা আমি-আপ্নি কি তাদের দোষ দিতে পারবো? তাদের এইসব দুর্দশার জন্য কারা দায়ী?
আজকে খবরে শহীদ মিনার সাজানোর দৃশ্য দেখতে দেখতে একটা সমাজতান্ত্রিক সলুশন চিন্তা করলাম (দ্রষ্টব্যঃ গালি দিতে অভ্যস্ত যারা আমার রাজাকারী পরিচয় জানে, তারা পড়ুন - একটা কাস্টমাইজড যাকাত ব্যবস্থা)ঃ
দেশে সরকারী/বেসরকারী যত চাকুরীজীবী আছে (ব্যবসায়ীদেরটা কেম্নে ক্যাল্কুলেট করা হবে, তা জানি না, তাই আপাতত বাদ) যাদের বেতন ১০০০০ টাকার উপরে, সবাই, তাদের মাসিক মূল বেতনের ১% প্রতিবছর রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিবে। যার মাসিক আয় ১০০০০ টাকা, সে দিবে ১০০ টাকা, বেতন ২০০০০ হলে ২০০ টাকা - এভাবে।
টাকাটা অল্প মানুষদের দেওয়া হবে যাতে তারা যথেষ্ট পুঁজি পায়, আর পরের বছর তাদের হাত না পাততে হয়। কিন্তু কথা হল এই টাকা কারা পাবে? কোন জায়গার মানুষ পাবে? সবটাই হাসিনার জেলা নাকি খালেদার জেলা? আমাদের নৈতিক চরিত্র যেহেতু রাজনৈতিক, সেহেতু সলিউশন হবে এরকমঃ
প্রতিটা রাজনৈতিক দল যাদের জাতীয় সংসদে অন্তঃত একটা আসন আছে, তারা একটা করে জেলার নাম প্রস্তাব করবে। ধরুন যদি পাঁচটা জেলার নাম আসে, তাহলে টাকাটা পাঁচভাগে ভাগ হয়ে দলীয় তত্ত্বাবধানে তৈরীকৃত লিস্টের সর্বনিম্ন-আয়ের মানুষদের কাছে দেওয়া হবে। (এই লিস্টটা চেক করতে পারে দুদক, আসলেই ওদের চেয়ে গরীব কেউ বাদ পড়তেছে কিনা)
স্বার্থত্যাগ করা লাগছে বছরে মাত্র একবার। গায়ে কি খুব লাগবে?
ওই পরিমাণ ইচ্ছা না থাকলে বোধহয় ফি-বছর মেকী চেতনা দেখাবার জন্য শহীদ মিনারে/ স্মৃতিসৌধে না যাওয়াই ভাল। এরচে বিশেষ দিনে বাসায় বসে জমজমাট একটা ফিস্ট দেন - দেশের পোল্ট্রি ব্যবসায়ীদের অন্তঃত লাভ হবে।
আমরা কেন বুঝতে চাই না - ৫২/৭১ এ যারা শহীদ হয়েছেন, তারা বৃহৎস্বার্থের জন্য ব্যক্তি স্বার্থকে বিসর্জন দিয়েছিলেন। তাদের এই শিক্ষার কি কোনই মূল্য নেই আমাদের কাছে?