বন্ধু,
সেই স্কুলে শেষ দেখা তোর সাথে।তোর বাবা থাকেন নিউইয়র্ক।তুই,তোর মা-ভাই-বোন দেশে।হঠাৎ মৃত্যুর কালো ছায়া নেমে আসে তোর ঘরে।তোর হাত থেকে ছিনিয়ে নেয় এক টুকরো আঁচল।তোর মায়ের আঁচল।
তুই অনেক কষ্ট পেয়েছিস।বুঝতে পারি কিন্তু অনুভব করতে পারিনা।যদিও আমার বাবাও মারা গেছেন আরো কিছুদিন পরে।অতি আপনজনের লাশ কাঁধে বয়ে মাটির কোলে রেখে আসা অনেক কষ্টের জানি।তবু জীবন থেমে থাকেনা।চলতে হয়,এগিয়ে যেতে হয় অবশ্যম্ভাবী পরিনতির দিকে।তোকে আমাকে সবাইকে।
তুই দেশ ছাড়লি।তোর বাবার সাথে চলে গেলি পৃথিবীর ঠিক অপর পাশে।আর যোগাযোগ হয়নি আমাদের।তোর আর আমার ঘড়ির কাঁটা একই একই রকম থাকে সবসময়।শুধু তোর যখন এ.এম. তখন আমার পি.এম. । এক এক করে কতগুলো বছর কেটে গেল।সময়তো থেমে থাকে না।
ভাবতেও পারিনি তোর সাথে আবার কথা হবে।কিন্তু কি আশ্চর্য্য- তুই যখন আমাকে ফেইসবুকে ফ্রেন্ড রিকোয়েষ্ট পাঠালি আমি অবাক না হয়ে পারলাম না।ওয়াও! আমি আমার হারিয়ে যাওয়া একটা বন্ধুকে ফিরে পেয়েছি।আমি যেন ফিরে গেলাম আমার স্কুল জীবনের শেষ ক'টা দিনে।তোর হাসিমুখ আমাকে নষ্টালজিক করে দিল।তখন আমি অফিসে।
কাল দুপুরে তুই ফোন করলি।লংটাইম কথা হলো।জাবর কাটলাম দু-বন্ধু ফেলে আসা অতীত নিয়ে।তারপর কিছু আলোচনা নিজেদের ক্যারিয়ার নিয়ে।তুই খুব খুশি হলি আমি জব করছি জেনে।
তোর সাথে কথা বলতে পেরে অনেক খুশি লাগছিল আমার।ইচ্ছে হচ্ছিল কোথাও বসে আড্ডা দেই।কিন্তু তুইতো অনেক দুরে।তুই কি আসবি আর? কখন আসবি?
তোর কাছেই শুনলাম এর মাঝে একবার এসেছিস তোর বোনের বিয়েতে।
তুইতো পালিয়ে গেলি।আমারো যে পালাতে ইচ্ছে হয় ইধানিং খুব বেশি বেশি।কি করি বল!
শেকড় ছেঁড়ার ইচ্ছেটা এত প্রবল কেন?আমরা সবাই এত পালাতে চাই কেন?
এমন কেন লাগেরে...?
ভাল থাকিস অনেক অনেক।
-বন্ধু
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে মার্চ, ২০১৬ সকাল ৮:৩৬