আজকে বিকালে বউরে নিয়া গেছিলাম শাড়ি কিনাইতে।শাড়ির দোকানে ঢুইকা দেখি ভার্সিটি লাইফের এক বান্ধবী তার বাচ্চা আর স্বামীরে নিয়া শাড়ি কিনতে আসছে।কুশলাদী শেষে বান্ধবীর বাচ্চাকে কোলে নিয়া কইলাম,"চিনো আমাকে?,বল তো আমি কে?" ত্যাদড় পিচ্চি কিছুক্ষন আমার দিকে তাকায় থাইকা কয়,"আব্বু"।পিচ্চির কথা শুইনা ফিট খায়া পইড়া যাইতে যাইতে বউয়ের মুখের দিকে তাকায় দেখি তার মুখ আলকাতরার মতো কালো হয়া গেছে।আর ঐদিকে বান্ধবীর স্বামীও ফিট খাইতে খাইতে কোনরকমে সামলায় নিছে।বান্ধবী কোনরকমে কাষ্ঠ হাসি দিয়া বাচ্চারে কইলো,"এইটা তোমার আব্বু না,আংকেল হয়",বলো আংকেল"।পিচ্চি আবার কিছুক্ষন আমার দিকে বড় বড় চোখে তাকায় থাইকা গলা জড়ায় ধইরা আবার কয়,"আব্বু"।পিচ্চির মুখে দ্বিতীয়বার আব্বু ডাক শুইনা আমার বউয়ের ধপাস কইরা দোকানের ফ্লোরের উপর প্রায় শয্যা নেওয়ার উপক্রম।কোনরকমে তারে একহাতে টাইনা তুইলা অন্য হাতে পিচ্চিরে সামলাইলাম।বেচারা বান্ধবীর স্বামী পিচ্চিরে আমার হাত থেইকা প্রায় ছিনায় নিয়া তার বউরে কইলো,"চলো বাসায় যাই"।আমার বউও দেখি কিছু না কইয়া দোকান থেইকা বাইর হয়া গাড়ীতে উইঠা বইসা রইলো।আমি কইলাম,শাড়ী কিনবানা?"।বউ কিছু না কইয়া মরা মুরগীর মতো ঝিম মাইরা রইলো।বুঝলাম এইটা আরেকটা ঘুর্ণীঝড়ের পুর্বাভাস ।বাসায় পৌছায়া বউ সোজা রুমে ঢুইকা বিছানায় উপুর হয়া শুয়া পড়লো।আমি পাশে বইসা কিছু কওয়ার আগেই ক্ষীপ্রবেগে বিছানা থেইকা উইঠা ঘরের একপাশে সইরা গিয়া বললো,"ইতর,বদমাইশ,ছোটলোক।তোমার যে একটা বাচ্চা আছে এইটা কখনো কও নাই কেন?' আমি কইলাম, 'আমার যে বাচ্চা আছে এইটঐ তো আজকে প্রথম জানলাম"!।বউয়ের উত্তর,তোমার কোন বিশ্বাস নাই,ঐ বাচ্চার সাথে তোমার নাকের মিল আছে,ওটা তোমার বাচ্চা না হয়া যায় না"
তিন ঘন্টা ধইরা বুঝানের পর সে শান্ত হইলো।কিন্তু মুখ আষাঢ়ের আকাশের মতো কালো রইলো যে এক নং পঁচা লন্ড্রী সাবান দিয়া মুখ ধুইলেও ঐ মুখ আর ফর্সা হওয়ার কোন চান্স নাই।
মান-অভিমান পর্ব শেষে রাত্রে ঘুমানের আগে বিছানায় বইসা টিভি দেখতেছি।এমন সময় বউ আয়নার সামনে বইসা চুল আচড়াইতে লাগলো।চুল আচড়ানি দেইখা বউয়ের পিছনে দাড়ায়া গভীর প্রেমময় দৃষ্টিতে তা পর্যবেক্ষন করতেছিলাম।এমন সময় বউ পিছন ফিরা আমার মুখের দিকে তাকায় কইলো,"এমন লুলের মতো তাকায় আছো কেন?,লজ্জ্বাশরম নাই?" :-&
সাতাশ বছরের জীবনে কেউ লুল ডাকে নাই।অথচ বিয়ার পর বউয়ের কাছে থেইকা লুল উপাধি পায়া গেলাম।বিয়ার পর কোন মেয়ের দিকে একবারের বেশি দুইবার তাকাই নাই।ভূলক্রমে দুইবার তাকায়লেও সাথে সাথে চোখ সরায় নিছি।এই সততার বিনিময়ে আজ কিনা বউ আমারে লুল ডাকলো
ভাবতেছি সন্ন্যাস নিয়া হিমালয়ে চইলা যাবো।শরীরে ছাই মাইখা,লাল রঙের নেংটী পইড়া রেডী হয়া আছি।দুইজন সেবাদাসী,ল্যাপটপ,ধ্যানে বসার জন্য বোস এর হোম থিয়েটারের ,সোফিয়ার রিমিক্স এ্যালবাম,ত্রিশূল আর বদনা ও যোগাড় হইছে এখন ভালো একটা দিন দেইখা ইষ্টনাম জপ কইরা হিমালয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দিবো।
বিয়ার আগেও একবার সন্ন্যাসী হইতে চাইছিলাম।বিমা ভাইও আমার সাথে যাইতে চাইছিলো।কিন্তু ঐবার বিমা ভাই আমারে ফাঁকি দিয়া ষোড়শী এক কন্যার সাথে লং ড্রাইভে চইলা যাওয়ার কারণে সন্ন্যাস নিতে পারি নাই।কিন্তু এইবার আর কেউ আমাকে ধইরা রাখতে পারবে না।আমাকে কেউ ফিরানোর চেষ্টা করবেন না দয়া করে।কেউ পিছু ডাকবেন না..................
আমায় ডেকো না, ফিরানো যাবে না।ফেরারী পাখিরা নীড়ে ফিরে না।
বিদায় সবাইকে..........................
ইয়ে দুনিয়া,ইয়ে মেহফিল মেরে কোয়ি কাম কি নেহি.................
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুন, ২০০৯ ভোর ৪:০৬