somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাঙ্গামাটিতে মেডিকেল কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের বিরুদ্ধে সন্তু লারমা : উপজাতীয়কোটা বাতিল করা হোক

২৩ শে মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রাঙামাটি মেডিকেল কলেজে ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে ছাত্রছাত্রী ভর্তি হবে এমন একটি ঘোষণায় পার্বত্যবাসী তাদের সন্তানদের উচ্চ শিক্ষার ব্যাপারে আশায় বুক বেঁধেছিল। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) নেতা সন্তু লারমা হুঙ্কার ছেড়েছেন যে সেখানে মেডিকেল কলেজ স্থাপন করতে তিনি দিবেন না। শুধু হুঙ্কার দিয়েই তিনি ক্ষান্ত হননি, দলীয় নেতাকর্মীদের লেলিয়ে দিয়েছেন রাঙ্গামাটিতে মেডিকেল কলেজ স্থাপনের কার্যক্রম স্থগিত করার দাবীতে বিক্ষোভ মিছিলে। শুধু মেডিকেল কলেজ নয়, রাঙ্গামাটিতে একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্রথমবার ক্ষমতায় আসা আওয়ামী লীগ সরকার। পরে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় এসে তার কার্যক্রমও শুরু করেছিল কিন্তু সন্তু লারমা এবং তার নেতৃত্বে জেএসএস বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে। ফলে সেটি আজ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়নি। রাঙ্গামাটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিকেল কলেজ স্থাপনে বাধা দেওয়ার ব্যাপারে সন্তু লারমাদের পক্ষে কিছু উদ্ভট যুক্তি নিয়ে হাজির হয়েছেন সৈয়দ আবুল মকসুদসহ আমাদের দেশের কিছু বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী।
সন্তু লারমা রাঙ্গামাটি মেডিকেল কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের আগে শান্তিচুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন দাবি করেছেন, যদিও শান্তিচুক্তির সাথে এর কোন সম্পর্ক নেই। তবে সন্তু লারমাদের আসল উদ্দেশ্য হলো, তারা পার্বত্য চট্টগ্রামে যে ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম করে বেড়ান, তার অনেক কিছুই আমাদের সমতলের মানুষজন জানেন না। বরং আমাদের দেশের বামঘেঁষা মিডিয়ার আনুকূল্যে তারা অসহায়, নীরিহ, অবোধ জাতি হিসেবেই পরিচিত। কিন্তু যদি রাঙ্গামাটিতে মেডিকেল কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয়, তাহলে সেখানে উচ্চ শিক্ষিত জনগোষ্ঠী শিক্ষতা, গবেষণাসহ নানা কাজেই যাবেন। তাছাড়া সমতলের অনেক ছাত্রছাত্রীও সেখানে লেখাপড়া করতে যাবেন। এর ফলে এই উচ্চ শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর সামনে তাদের সন্ত্রাসী মুখোশটা উন্মুক্ত হয়ে যাবে। তাই সন্তু লারমা চান না যে, সেখানে কোন ধরনের উচ্চ শিক্ষার প্রতিষ্ঠান স্থাপিত হোক। কারণ তাদের সন্ত্রাসী মুখোশ উন্মোচিত হয়ে গেলে আজীবন ক্ষমতায় টিকে থাকা সম্ভব হবে না। তাছাড়া এটাও চায় না যে অপেক্ষাকৃত দরিদ্র পরিবারের সন্তানরা শিক্ষিত হোক। কেননা সাধারণ মানুষ উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হলে অভিজাতদের সম্মানহানিরও আশঙ্কা থাকে। এই অযুহাতে পার্বত্য চট্টগ্রামের কয়েকশ বছরের ইতিহাসে এমন অনেক উদারণই আছে যে, অভিজাতরা কোন প্রকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনেরই বিপক্ষে ছিলেন অভিজাতরা। অতীতেও পার্বত্যাঞ্চলের সাধারণ মানুষের উচ্চ শিক্ষার পথ রুদ্ধ করার পাঁয়তারা হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। তবে সেটা একেক সময় একেক যুক্তিতে হয়েছে- এই যা।
পার্বত্য চট্টগ্রামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠায় একশ্রেণীর নেতাদের কাছ থেকে সবসময়ই প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়েছে। আর এসব প্রতিবন্ধকতা তৈরির পেছনে যে ভাল কোন উদ্দেশ্য কখনো ছিল না ইতিহাসই তার প্রমাণ। তাই রাঙ্গামাটিতে বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠায় বাধা আসবে, এটাই স্বাভাবিক। আর এ বাধা প্রদানও যে পার্বত্যবাসীর কল্যাণে নয় তাও স্পষ্ট। তাই এসব বিরোধীতার জন্য রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিক্যাল কলেজ প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত স্থগিত কিংবা বাতিল করে সাধারণ মানুষকে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করার অধিকার কারও নেই। তাছাড়া আরো একটি বিষয় গুরুত্বের সাথে বিবেচনার দাবী রাখে। সেটা হলো ইতোপূর্বের সরকারগুলো এসব বাধা টপকে পার্বত্যাঞ্চলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছিল বলেই আজ পার্বত্যাঞ্চলের মানুষ কিছুটা হলেও শিক্ষার আলো পেয়েছে। একইভাবে বর্তমান সরকারকেও উদ্যোগী হয়ে রাঙ্গামাটিতে মেডিকেল কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কাজ দ্রুত শুরু করতে হবে। আর যদি সন্তু লারমার বাধার কারণে রাঙ্গামাটি মেডিকেল কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা না যায়, তাহলে সারা দেশের বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ এবং অন্যান্য উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উপজাতীয় কোটা রয়েছে, সেসব বন্ধ করে দিতে হবে। তাহলেই বীর বাহাদুর এবং নিখিল কুমার চাকমাদের মতো অনেকেই এগিয়ে আসবেন, রাঙ্গামাটি মেডিকেল কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে। আর এতে সন্তু লারমার উপর সামাজিক ও রাজনৈতিক চাপও তৈরি হবে। ফলে রাঙ্গামাটি মেডিকেল কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হবে। সহজ হবে সাধারণ পার্বত্যবাসীদের উচ্চ শিক্ষা লাভের
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪৯
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

এখানে সেরা ইগো কার?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪






ব্লগারদের মাঝে কাদের ইগো জনিত সমস্যা আছে? ইগোককে আঘাত লাগলে কেউ কেউ আদিম রোমান শিল্ড ব্যবহার করে,নাহয় পুতিনের মত প্রটেকটেড বুলেটপ্রুফ গাড়ি ব্যবহার করে।ইগো আপনাকে কোথায় নিয়ে গিয়েছে, টের পেয়েছেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবং আপনারা যারা কবিতা শুনতে জানেন না।

লিখেছেন চারাগাছ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮

‘August is the cruelest month’ বিশ্বখ্যাত কবি টিএস এলিয়টের কালজয়ী কাব্যগ্রন্থ ‘The Westland’-র এ অমোঘ বাণী যে বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এমন করে এক অনিবার্য নিয়তির মতো সত্য হয়ে উঠবে, তা বাঙালি... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মার্কিন নির্বাচনে এবার থাকছে বাংলা ব্যালট পেপার

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:২৪


আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাংলার উজ্জ্বল উপস্থিতি। একমাত্র এশীয় ভাষা হিসাবে ব্যালট পেপারে স্থান করে নিল বাংলা।সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর খবর অনুযায়ী, নিউ ইয়র্ক প্রদেশের ব্যালট পেপারে অন্য ভাষার সঙ্গে রয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×