আমার এই ব্লগের বয়স প্রায় চার বছর, তবে বেশ কিছু দিন আগেই আসা বন্ধ করে দিয়েছি, তার মূল কারন হল ব্লগে অনেকেই একে অপরের পিছে লাগতে পছন্দ করে, অহেতুক তর্ক কে কোন ছোট দোষ করল তারে ধোলাইয়ের আয়োজন, কেন সালোয়ারের বদলে প্যান্ট পরে মানুষ নামল রাস্তায় তা নিয়ে আলোচনা । কারোর প্যান্টের কালার হলুদ না হয়ে নিল হল কেন । এমনকি কেউ যদি একটা ভালো মনে একটা ধর্মীয় পোস্ট দেয় তারে ছাগু বলা হয় কোন সময় আবার কেউ হিন্দি মুভি নিয়ে কথা বললে ইন্ডিয়ার দালাল হয়ে যায় । এর কারন আমার যেটা মনে হয় বেশিভাগ মানুষের ই কাজ কাম নেই, আর এরা এগুলা করেই মজা পায় হুজুগে নাচে না জেনেই অনেকের কথায় কান দিয়ে লাফাইতে শুরু করে । কারোর মনে কষ্ট দিয়ার জন্য না পোষ্ট টা অনেক কষ্ট পেয়েই লিখতে বসেছি ।
গত কিছুদিন ধরে জাগোর নামে ইচ্ছা মত অপপ্রচার চলছেই এবং মানুষ জন সঠিক না জেনে এই নিয়ে লাফালাফি । আরে ভাই আপনারা যদি আসলেই ভালো চান এই ব্যপার গুলা তাদের জানান, খারাপ দিক সম্পর্কে তাদের কে বলেন, আপনার পরামর্শ দিন তাইলেই হয়ত বা পরিবর্তন আসবে, একটা উদাহরন দেই যেই ছবি টা নিয়ে এত লাফালাফি যে কয়েকটা একটা বাচ্চা কে নিয়ে মজা নিচ্ছে এটা আসলে
গত বছরের ছবি এমনকি এর সাথে আরেকটা ছবি ছিল যেখানে এই বাচ্চা হাসছিল তবে এই ব্যপারে জাগোকে ঝানা হলেই তারা এব্যপারে ব্যবস্হা নেন এবং এর পরের বছর এমন কোন ঘটনা আর ঘটে নাই । কিছু বদ মানুষের খারাপ আচরনের জন্য পুরা ফাউনডেশন এবং সব মানুষের দোষে দিয়ে লাভ কি ? এগুলা তো মনে হয় আপনারা একটা ভালো কাজ কে পুরাপুরি ভাবে বন্ধ করতে চান, ভালো কাজের খারাপ দিক গুলা কে নয়। আমরা কেউ ই দুধে ধোয়া না ব্যপার টা হল জাগো চেষ্টা করছে । আমি বলব না সবাই খুব ভালো ওখানকার তবে এদের মাধ্যমে যদি ৬০০ বাচ্চার থাকা খাওয়ার ব্যবস্হা হয় তবে খারাপ কি ? এমন তো না জাগো তাদের চুরি ডাকাতির পয়সায় খাওয়াচ্ছে ঐ বাচ্চাদের ।
জাগোর ইতিহাস নিয়ে নতুন করে লিখব না তবে যারা জানেন না তারা রাহাত ভাইয়ের নোট টা থেকে জেনে নিতে পারেন, নিচে তার কিছু অংশ দিয়া হল।
''গত ৩রা নভেম্বর বিশ্ব শিশু দিবস বা Universal Children's Day উপলক্ষে জাগো ফাউন্ডেশন এর পক্ষ থেকে একটি ইভেন্টের আয়োজন করা হয়। শুধু এবারই নয়, গত তিন বছর ধরেই এটা তারা এটা আয়োজন করে আসছে। সামনে কিছু বলার আগে জাগো সম্পর্কে একটু ধারনা দিয়ে দেই। সংক্ষেপে বলা যায় জাগো হচ্ছে পথশিশু/সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য একটা ফ্রী স্কুল যেখানে শুধু ফ্রী শিক্ষা দানই করা হয়না, তাদের প্রয়োজনীয় শিক্ষা উপকরণ ছাড়াও ফ্রি চিকিৎসা, নিয়মিত খেলাধুলা ও সংস্কৃতি চর্চার ব্যবস্থা, ইউনিফর্ম, ইউনিফর্ম পরিস্কার রাখার জন্য সাবান, সুস্বাস্থ্যের জন্য পুষ্টিকর খাবার, পেস্ট, ব্রাশ ইত্যাদির ব্যবস্থাও করা হয়। এমনকি জাগোর শিক্ষার্থীদের মা-বাবাদের জন্য কাজের সুযোগও তৈরি করে দেয়া হয়। সে ব্যাপারে বিস্তারিত একটু পরে জানাচ্ছি। তবে তার আগে আবার সেই ইভেন্টের কথায় আসা যাক, এদিন তিন হাজারেরও বেশি সুবিধাবঞ্চিত শিশু যারা পথে পত্রিকা, ফুল ইত্যাদি বিক্রি করে তাদের ওয়ান্ডারল্যান্ড নিয়ে যাওয়া হয়। ফ্রী রাইডসহ তাদের টি শার্ট, সুস্বাদু খাবারের ব্যবস্থা তো করা হয়ই সাথে তাদের আনন্দের জন্য বিভিন্ন অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়। নিঃসন্দেহে পুরো দিনটিই তাদের আনন্দে কাটে। আর তাদের জায়গায় দশটি জেলায় পথে নামে সাত হাজার জাগোর ভলান্টিয়ার। তারা সেই সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মতই পথে পথে ফুল ও পেপার বিক্রি করে ফান্ড কালেক্ট করে যেই ফান্ড সেই সুবিধাবঞ্চিত শিশু, তাদের পরিবার এবং জাগো স্কুলের কাজেই ব্যবহার করা হবে । সারাবছরই জাগো এমন ইনোভেটিভ কিছু ইভেন্টের মাধ্যমে ফাণ্ড কালেক্ট করে থাকে।
কিন্তু ইভেন্টটা শেষ হতে না হতেই কিছু ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে কিছু মানুষ এমন মহৎ একটা উদ্যোগের বিরুদ্ধেও কথা বলতে শুরু করে। আর হুজুগে বাঙালির মত সঠিক তথ্য না জেনে আমাদর মতই অনেকে এসব পোস্ট শেয়ার করছে। সাধারনত সমালোচনা করা ছাড়া এসব মানুষের কোন কাজ থাকেনা। সঠিক তথ্য জানার কোন ইচ্ছাই তাদের নাই, সমালোচনা করতে পারলেই যেন তারা পরম আনন্দ পান। আর সঠিক তথ্য জানবেনই বা কী করে, ঘরে পিসিতে বসে নেট থেকেই কিছু ছবি কালেক্ট করে এসব ফাকা বুলি উড়ানোর মাঝেই তাদের সীমাবদ্ধতা। যে বা যারা এসব লিখছে তাদের সবাই বাইরে নেমে প্রতক্ষ্যভাবে ভলান্টিয়ারদের কাজ করতে দেখেছে কিনা সেটা নিয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। যাই হোক, এই ব্লগ পোস্টটার জবাব দেয়ার জন্যই আমার এই নোটটা লেখা।
এজন্য প্রথমেই জাগোর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস দিয়ে শুরু করি, আশা করি পুরো ইতিহাস জানার পর একটু হলেও আপনাদের বোধদয় হবে। আমাদের মতই একজন তরুণের ব্যক্তিগত ইচ্ছা থেকেই জাগো ফাউন্ডেশন এর শুরু, সেই তরুণের নাম Korvi Rakshand। একজনের ব্যক্তিগত ইচ্ছা থেকে যে কত বড় কিছু হতে পারে তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ এই জাগোই। মাত্র সাতজন ভলান্টিয়ার ও সতের জন সুবিধাবঞ্চিত শিশু নিয়ে জাগোর পথচলা শুরু। বিভিন্ন দেশী ও বিদেশী প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির সহায়তায় রায়েরবাজারে জাগো স্কুলের প্রথম ভবনটা গড়ে তোলা হয়, সেটা রং ও করা হয় এবং একটা পূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা হয়। এভাবে সবার সহায়তায় শিক্ষার্থীদের ফ্রী শিক্ষা উপকরণও দেয়া হয়। শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়তে থাকে, অনেকেই সহয়তার হাত বাড়িয়ে দেয়। এমনি করে একজন ব্যক্তি একদিন বেশ ভালো এ্যামাউন্টের টাকা ডোনেট করে। যেহেতু স্কুল ভবনও হয়ে গেছে এবং সব শিক্ষা উপকরণেরও ব্যবস্থাও করা হয়ে গেছে তাই সেই টাকা দিয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য ইউনিফর্মের ব্যবস্থা করা হলো। নতুন ইউনিফর্ম পেয়ে সব বাচ্চাসহ জাগো টিমের সবার মুখে হাসি ফুটে ওঠে। কিন্তু সপ্তাহখানেক পড়ই তা অনেকটাই মলিন হয়ে যায় কারন বেশিরভাগ শিক্ষার্থী নোংরা ইউনিফর্ম পরে আসতে শুরু করে। বাচ্চাদের সাথে কথা বলে জানা যায় ওরা দু বেলা ঠিকমত ভাতই খেতে পারেনা, ইউনিফর্ম পরিস্কার রাখার সাবান কোথায় পাবে? এই সমস্যার সমাধানে ভলান্টিয়ারদের সহযোগিতায়ই বাচ্চাদের ইউনিফর্ম পরিস্কার রাখার জন্য সাবানের ব্যবস্থা করা হয়। এরপর থেকে ওদের নিয়মিত সাবান দেয়া হয়। ''
পুরা নোট টি পড়তে এই লিংকে ক্লিক করুন : Click This Link এই নোটটি তে ভালো ভাবেই এই পোষ্টের জবাব দিয়া আছে Click This Link
ইভেন্ট টা শেষ করে আসার কিছুক্ষন পরেই দেখলাম এর বিরুদ্ধে অনেক লেখালেখি, কষ্ট পেলাম যখন এসব শুনতে হল রোদে দারিয়ে থেকে এসব কাজ করার পর। অনেকেই দেখলাম বলল যে এসব দেখান কাজ কারবার আবার কেু বলল যে এসব পয়সা দিয়ে তারা শিশা টানে অথবা খারাপ কাজে বিলুপ্ত হয়। ভাই রে দেখানোর শখ থাকলে আরো অনেক যায়গায় আছে এসব স্টুডেন্টদের খেয়ে কাজ নেই রোদে ফুল বিক্রি করার কোনই বা প্রয়োজন নেই, টাকাও এদের সবারই যথেষ্ট পরিমান আছে এমনকি আমরা অনেকেই নিজেদের পকেট থেকে টাকা দিয়েছি। হ্যা আপনি হয়ত বা একটা ছবি দেখেছেন, তবে এই একটা ছবি দেখে কি পুরা টিম কে খারাপ হিসেবে বিবেচনা করা যায় ?
কেন আপনারা কেউ এই ছবি গুলা শেয়ার করছেন না ?



অনেকের মুখেই শুনলাম এরা ফ্যাশন শো করছে জাগোর মেয়ে ছেলেরা, আপনারা কি জানেন আমাদের অনেক বন্ধু বান্ধব ঐ স্কুলে পড়াচ্ছেন বিনা পয়সায় এখন আপনি কি বলতে চান এগুলাও তারা করছে মানুষ দেখানোর জন্য ?
ইউসিডি করার মূল উদ্দেশ্য হল জাগো সম্পর্কে মানুষ জে জানানো, এই স্কুল গুলা কে সঠিক ভাবে চালানো এবং সামনের বছর আরো কিছু স্কুল করার জন্যই ফান্ড কালেক্ট করা। শুধু একদিন পথ শিশুদের পার্কে নিয়ে যাওয়া নয়। প্রত্যেক সিগনালে পয়েন্টের ভলিন্টিয়ার ভালো করেই জানে কত কালেক্ হয়েছে সে এলাকা থেকে, কয়দিন পর একটি প্রোগরাম করে এগুলার খরচের বিস্তারিত এবং পরবর্তি পরিকল্পনা জানানো হয়। শুনা যায় এটা নাকি পিকনিক ছিল অনেকের মতে তবে বাস্তবে রোদের মধ্যে মানুষ কে ইউসিডি সম্পর্কে বলা টাকা কালেক্ট করার চেষ্টা ছারা আর কিছুই না । নানান মানুষের বাজে ব্যবহারের ও শিকার হতে হয় এমন কি অনেককে ২০ মিনিট ধরে বুঝানোর পর ও বলে, পরে দেখা হবে।
মূলত জাগোর জন্য কাজ করার সিদ্ধান্ত নেই ওদের ওয়ার্কশপ তারপর তাদের স্কুল দেখেই, আপনারা যাদের জাগো সম্পর্কে পুরাপুরি ধারনা নেই তাদের আমি বলব একবার ঘুরেই যান এদের স্কুল কোন প্রশ্ন থাকলে করুন কোন কিছু ভালো না লাগলে তাদের জানান অবশ্যই এ ব্যাপারে তারা ব্যবস্হা গ্রহন করবে । অথবা তাদের ওয়েবসাইট ঘাটুন না জেনে এত লাফালাফি করার কোনই কারন দেখি না।
