অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পর পিওন বউয়ের সাথে গল্প করছে।
‘শোনো, আসলে অফিসে আমিই সবচেয়ে ক্ষমতাবান। আজ এমডি সাহেবরে ৫ মিনিট রুমের বাইরে দাড় করাইরা রাখছি। দেরিতে রুম খুলছি। আমার ক্ষমতা দেইখ্যা এমডি সাহেব ঈর্ষায় জ্বলছিল, কটমট কইরা আমার দিকে তাকাইতে ছিল।’
বলো কি? চোখ বড় বড় করে তাকালো গ্রামের কিশোরী। ওর নাম লজেন্স, ওর বড় বোনের নাম চকলেট। পিওনের সাথে বিয়ের পর কিছুদিন হয় শহরে এসেছে। এমডি সাহেবের প্রকান্ড গাড়িটা দেখে প্রথমে ভ্রাম্যমাণ বাড়ি মনে করে ফেলেছিল সাধাসিধা মেয়েটি। এবার সে ক্ষমতার গন্ধ পাচ্ছে। মদের মতো কটু গন্ধ, অথচ টানছে।
‘তাইলে এক কাজ করো, এমডির চেয়ারে বইস্যা পড়ো। গাড়িটায় কইরা ঘুইর্যা ঘুইর্যা আমি শহর দেখতে চাই।’ সহজ-সরল বউয়ের এই অস্বাভাবিক উচ্চাকাংখায় মুগ্ধ হলেন পিওন সাহেব। চমকে উঠলেন। ছক কষতে লাগলেন।
এমডি সাহেব ক্রসফায়ারে মারা গেলেন। চেয়ার দখল করেছেন অফিসের সিরিয়র বসরা। পিওনও প্রমোশন পেতে পেতে চিফ সিকিউরিটি অফিসার। একদিন ভোরে যখন অফিসের বসদের মধ্যে কূটনীতি-রাজনীতি চরমে, সুযোগ বুঝে এমডির চেয়ার দখল করে বসলেন সাবেক পিওন, প্রমোটি চিফ সিকিউরিটি।
তার সততার সুনাম দুনিয়াজুড়ে ছড়িয়ে পড়লো। এমডি হলে যা হয় আর কি! এক ক্রসফায়ারে তিনিও মারা গেলেন। ঘরে বউ, দুই ছেলে আর একটা ভাঙা সুটকেস।
অনেক অনেক দিন পর...
তার গুণধর ছেলে দাবি করলেন, পিওনই ছিলেন অফিসের প্রথম এমডি। এমডি সাহেব অফিসে আসার আগে তার বাবা চুরি করে হলেও ওই চেয়ারে বসতেন!