ব্লগে কিছুদিন আগে দেখলাম একজন ইসলাম ধর্মের ব্যাপারে ৬০ টি প্রশ্ন করেছেন। এই প্রশ্ন ৬০x৬০ হতে পারত বা তারও বেশি, যেমন আমাকে একজন মশার কামড়ে ত্যক্তবিরক্ত হয়ে বলেছিল “মশা গুলা আল্লাহ কেন বানাইছে?” উত্তর দিব কি, আমি নিজেও চিন্তিত। আর একবার সে কোন একটি নিউজ দেখে বলল “একটা টমেটোতে আল্লাহ লেখা পাওয়া গেছে”। আমি মনে মনে তৃপ্তির ঢেকুর তুললাম। একদল শুধু প্রশ্ন করে যাচ্ছি আর একদল শুধু মিরাকল খুজছি, এই প্রশ্নের কি কোন শেষ আছে? আজ আমাদের যত টুকু intelligence আছে তাই নিয়ে প্রশ্ন করছি, আজ থেকে শত বছর পরে নতুন নতুন প্রশ্নের উদ্ভব হবে না? এই মহাবিশ্বের যদি কোন শ্রষ্টা থেকে থাকেন তিনি কি এই প্রশ্নের উত্তর দিতে বাধ্য? অথবা এই Total Integrated System এর একটা Component হবার পরেও মানুষ সব প্রশ্নের জবাব (total system defination) আজকের মধ্যেই বুঝতে সক্ষম হবে? তিনি কি তবে মানুষ যখন যে শ্রেনীতে আছে সে শ্রেনীর প্রশ্নের জবাব উম্মুক্ত করতে ইচ্ছুক নয়? আমরা কেন প্রশ্ন ফাসের জন্য মরিয়া হচ্ছি? তিনি কি চাচ্ছেন না মানুষ নিজেই প্রশ্নের উত্তর দিয়ে পাশ করুক? মানুষের এ যাবৎ যা মহান আবিষ্কার তা কি fundamental creation নাকি শ্রষ্টা লব্দ জ্ঞান এর explore এর বহিপ্রকাশ?
আমরা অনেকেই পারিবারিক ধর্ম রীতি পাই কিন্তু বিশ্বাসের উপলব্দিটা নিয়ে কি চিন্তা করি? টমেটোতে আল্লাহ লেখাটাই মিরাকল নাকি টমেটো নিজেই মিরাকল ভেবে দেখেছি? এখন Discovery channel এ একটা টমেটোর বড় হওয়া দেখে কি গভীর ভাবে চিন্তা করি? (এই প্রসংগে বলে রাখি কোরাআনে এই বৃক্ষের Systematic process নিয়ে ছিন্তা করতে বলা হয়েছিল) আজ থেকে হাজার বছর আগে কেউ হয়ত ছিন্তা করেছে এটাতো আল্লাহ যেভাবে করেছেন সে ভাবে হয়। আবার কেউ হয়ত কেন ও কিভাবে এই দুটি প্রশ্নের জন্য রাতের ঘুম হারাম করেছেন, কোন সমাধান না পেলে হয়ত বলেছেন “It’s just be”. (“It’s just be” / “এ শুধু আছে/হয়” এই চমৎকার বাক্যটি বিখ্যাত বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং(নাস্তিক) ব্যাবহার করেছিলেন বিগব্যাং এর আগে মহাবিশ্বের রহস্য উদঘাটনে আপাত ব্যর্থ হয়ে। এ ক্ষেত্রে হকিং কি বিশ্বাসের আশ্রয় নিলেন না? যদিও শীর্ষ বিজ্ঞানীদের মধ্যে কিন্তু অনেক আস্তিক আছেন। যারা শ্রষ্টার ব্যাপারে “It’s just be” বলে থাকেন)
আমাদের চারিদিকে দিকে যা রয়েছে তা কি মিরাকল নয়? চোখ কিভাবে function করে, কান কিভাবে function করে, এখন আমরা জানি। যেই শ্রষ্টা এই process সম্পরকে জানার জন্য ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তিনি কি এখন খুশি নন? কিছুদিন আগে আমার বন্ধু আমাকে একটা পেন ড্রাইভ দিয়ে fun করে কিছ গন্ধ দিতে বলেছিল, শুরুতে অবাক হলেও বললাম আজকে না পারলেও একদিন ঠিকই পারবো, যহেতু আল্লাহ আমাদের সম্মানিত করেছেন। জন্মের পর থেকে যাই দেখি তাই ভিডিও করি, (except যদি সিস্টেম standby (ঘুম) অথবা fail না হয়) এই store করা যখন শিখেছি ওটাও পারব।
“আমরা অবশ্য আদম সন্তানদের মর্যাদা দান করেছি, আর আমরা তাদের বহন করেছি স্থলে ও জলে এবং তাদের রিযেক দান করেছি উকৃষ্ট বস্তু দিয়ে আর আমরা যাদের সৃষ্টি করেছি তাদের অনেকের উপর তাদের (মানুষদের) প্রাধান্য দিয়েছি শ্রেষ্টত্তের সাথে।“ (সুরা বনী-ইস্রাইল আয়াত ৭০)
আবার আমরা যখন পড়ি
“যারা অবিশ্বাস পোষন করে তারা কি দেখে না যে মহাকাশমন্ডলী ও পৃথিবী উভয়ে একাকার ছিল তারপর আমরা দুটিকে বিচ্ছিন্ন করে দিলাম আর পানি থেকে আমরা সৃষ্টি করলাম প্রানবন্ত সবকিছু তারা কি তবুও বিশ্বাস করবে না?” (সুরা আল-আম্বিয়া আয়াত-৩০)
কেউ হয়ত এটা নিয়ে ভাবি কেন? কিভাবে? কে? আবার কেউ হয়ত ভাববেন শুধু কেন ও কিভাবে? আজ থেকে শত বছর পরে কেন ও কিভাবে হয়ত জানা যাবে তখন এটি সাধারন ঘটনা মনে হবে। আর তখন কেউ যদি এই ঘটনার ইংগিত কারিকে শ্রষ্টা মেনে নিয়ে জীবন যাপন করেন তখন কি তাকে আস্তিক বলে গালি দিতে হবে?
আসলে বিজ্ঞান ও ইসলাম এর মধ্যে মৌলিক পাথক্য একটি প্রশ্নে তা হল “কে?” বিজ্ঞান জানতে চাই কেন? কিভাবে? আর ইসলাম জানতে বলে কে?, কেন?, কিভাবে?
উপলব্দির ব্যাখ্যা নিয়ে এক একজন ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি পোষন করেন। আমার নিজের একটা উপলব্দি বলি। (ব্লগাররা বিরক্ত বোধ করবেন না, প্রাসংগিক বলেই বলছি।) ২০০২ সালে একটা ERP (Enterprise Resource Planning এক ধরনের Generic Business Software applications যা ভিন্ন ভিন্ন business organization এর various business function কে handle করতে পারে।) প্রজেক্টের Architect Team জয়েন করে কাজ শুরু করলাম। ৩ বছর পর first version release এর পর আরও ৩ বছর বেশ কিছু Organization এ implement করলাম। অভিজ্ঞতাটা ছিল ভয়াভহ, আবার আনন্দেরও। user দের সাথে আমাদের সরাসরি কোন সম্পর্ক নাই, মাঝখানে একটা implementation team কাজ করে যারা technical ব্যাপার অত জানেন না কিন্তু business function ভাল বুঝেন, তার উপর তাদের সাথে একটা চমৎকার user manual দিয়ে দিই। কিছু user যেভাবে implementer যেভাবে বলেছেন সেভাবে কাজ করে successful হচ্ছেন। আর implementer এর দায়িত্ত শেষ হয়ে গেলে user manual এর সাহায্য নিচ্ছেন। আবার কিছু user এর প্রশ্ন তার প্রয়োজনের cost calculation method বাদে বাকি method গুলো কেন? implementer তাকে যতই বুঝাক যে এটা হয়ত তার জন্য লাগবেনা কিন্তু অন্য কোন organization এর লাগবে অথবা এমন হতে পারে ভিন্ন কোন পরিস্থিতিতে হয়ত তারই লাগতে পারে। কিন্তু তিনি বুঝতে চান না। আবার হয়ত একটা restriction আছে যেটা হয়ত সরাসরি software এর সাথে সম্পর্ক নাই কিন্তু Operating system এর environment এর জন্য এর জরুরী। এটা বলার পরেও সে বলে এর সাথে Operating system এর সম্পর্ক কি? এর মধ্যে এক রাতে implementer ফোন দিল একটা organization এর balance sheet এ production inventory ভুল আসছে, এটা নিয়ে top management এ তুলকালাম চলছে। পরে জানা গেল production module এর একটা setting (যে setting টি এই ধরনের production এর জন্য নয় এবং user manual এ setting টি পরিবর্তন না করার জন্য বলা আছে) production manager পরিবর্তন করেছেন। কেন করেছেন? তার বক্তব্য করলে অসুবিধা কি? আর এখানে change করলে balance sheet এ change আসবে কেন? আমার প্রচন্ড রাগ হল, ভাবছি কিভাবে এই User দের বুঝানো যাবে একটা integrated system এর জটিলতা, এর বিশাল technical architecture যদি তাদের দিয়ে দিই তাহলে তারা বুজতে পারবে?
এই সব ভাবছি তখনি উপলব্দি করলাম এই রকম প্রশ্ন কি আমিও প্রতিনিয়ত করছি না স্রষ্টা ও তার সৃষ্টি নিয়ে? এই মহাবিশ্বের তুলনায় আমাদের এই সৃষ্টি কি পরমানুরও অধম নয়? এই মহাবিশ্বের স্রষ্টার ব্যাপারে এই সব প্রশ্ন করে আমি কি নিজের প্রতি অবিচার করিনি? আমি সিজদায় অবনত হলাম, চোখে নেমে এল অশ্রুধারা আর সেই সব implementer দের জন্য হ্রদয় ভরে উটল ভালবাসায়, যারা এই পৃথিবীতে এসেছিলেন চমৎকার user manual নিয়ে, অথচ কত লাঞ্চনা তাদের সইতে হয়েছে।
এখন আমি ঘোড়া দেখে বলি না “it’s just be”. এখন বলি ঘোড়া একটি চমৎকার যান। সমতল ও দুর্গম পাহাড়ে আরোহন এর জন্য এর চেয়ে ভাল যান আমরা এখনও বানাতে পারিনি। যেটার energy source natural আর তার reproduction এবং disposal আমাদের environment এর কোন ক্ষতি করে না। ভবিষ্যতে এর ব্যাবহারে আমারা বাধ্য হব না এর কোন guaranty আছে? একি ভাবে চন্দ্র, সুর্য কি generic system নয় যে কোন পরিস্তিতে সময় নির্ধারনে?
“আর আকাশ ও পৃথিবী এবং এই দুইয়ের মধ্যে যা কিছু আছে সে সমস্ত আমরা খেলাচ্ছলে সৃষ্টি করিনি” (সুরা আল-আম্বিয়া আয়াত ১৬)
এখন আমি ধর্মের বিধি নিষেধ মেনে চলার চেষ্টা করি। কারন নিষেধ গুলো মানাটা আমার জন্য জরুরী হোক বা নাহোক নিশ্চয় পৃথিবীর environment (Operating system) এর জন্য জরুরী। তাই যদি না হত তাহলে কেন কিছু বিনোদন শুধু পৃথিবীতে নিষেধ করা হয়েছে যা বেহেশ্তে অনুমোদন রয়েছে। দিনে পাচবার antivirus program চালাই, এতে জ়ীবন কি একটু slow হয়েছে? তাতে কি যখন এটা security issue তখনতো মেনে নিতেই হবে। virus attack যে কোন সময় হতে পারে।
একটু ভেবে দেখুনতো ইসলামে ভোগবিলাস, বেলাল্লোপনা এর উপর যে সব restriction আছে, আমরা সবাই যদি সেগুলো মেনে চলতাম তাহলে global warming কি এই পর্যায়ে আসতো? অনেকেই এইসব restriction কে মুক্তচিন্তার বাধা বলেন, পৃথিবীর সবচেয়ে মুক্তচিন্তার দেশ আমেরিকা এবং উন্নত দেশগুলো কি global warming এর সবচেয়ে বেশি দায়ী বলে বিবেচিত হচ্ছে না? আবার ঐ সব ব্যাক্তিরাই বিবেক ব্যাবহারের জন্য বলে থাকেন। কিন্তু এই বিবেক কি শ্রষ্টা প্রদত্ত default settings নয়? একটি intelligent system তৈরী করতে গেলে intelligence এর programming হতে পারে আগের কোন ঘটনার অভিজ্ঞতার programming কে পুনরায় call করা, কিন্তু প্রশ্ন হল অভিজ্ঞতা শুন্য কোন সিস্টেম এর First action কি হবে তাহলে? সে ক্ষেথ্রে কিছু default setting কি দিয়ে দেয়া লাগবে না?(Artificial intelligence (AI) নিয়ে যারা কাজ করেন তারা যদি কেউ যদি এই ব্যাপারে লিখেন খুশি হব)। আসুন একটা উদাহরনের মাধ্যমে বিশ্লেষণ করা যাক, ধরুন আপনি খুব মনযোগ দিয়ে একটি বই পড়ছেন, হটাৎ পিটের উপর একটা মশার কামড় দিচ্ছে কি দিচ্ছে না মহুর্তেই আপনার একটি হাত মশাটি পিষে ফেলল। যদি মনে করেন “it’s just be” তাহলে ভাবলেন না। আর যদি ভাবেন তাহলে দেখবেন কি চমৎকার programming, কি করতে হবে সে instruction দিয়েছেন কিনা আপনিই জানেন না কিন্তু intelligence তার আগের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েছে, মশার কামড়ের ধরন এবং পিষে ফেলতে গেলে উল্টা আপনার কোন ক্ষতি হবে কিনা এই তথ্য store করা ছিল যা সে টিক সময়ে কাজে লাগিয়েছে। যদি কামড়টা এমন হত যার অভিজ্ঞতা আপনার ছিল না, তাহলে নিশ্চিত ভাবেই এই ঘটনা ঘটত না। হয় আপনি বই ফেলে লাফালাফি করতেন অথবা আপনার হাত জিনিসটি সরিয়ে দিতে চাইতেন। এবার আসুন কান্নার programming নিয়ে চিন্তা করা যাক। জন্ম হওয়ার পর যে কান্না দিলেন তার অভিজ্ঞতা কোত্থেকে? আসে পাশে যারা ছিল তারতো আশা করি হাসছিল। genetic? তাহলে প্রথম মানব শিশুর (যারা ডারউইন মতবাদ মানেন তারা বানর শিশু ধরে নিতে পারেন, বানর শিশু কাদে কিনা আমি জানি না) কান্না কোত্থেকে এল? এটা কি একটা default settings নয়?
যারা ইসলাম ধর্মের আর বিজ্ঞানের বিরোধ তৈরী করেন তারা কি লালসালু উপন্যাসের মজিদের মত আচরন করছেন না? মজিদ যেমন ধর্মের ভয় লাগাত একি ভাবে আপনারা কি বিজ্ঞানের ভয় লাগাচ্ছেন না?
আর সেই সব মুসলিম নামধারীগন!!! যারা মেয়েদের স্কুল বোমা মেরে উড়িয়ে দেন, শক্তির দাপট দেখান তারা কি শ্রষ্টার চেয়ে বেশি জ্ঞানী হয়ে গেলেন? তাহলে আল্লাহ কেন মানুষ সেরা এটা প্রমানের জন্য আদমকে ফেরেস্তাদের সামনে শক্তি প্রদর্শন করতে বলেননি? কেন তিনি আদমকে বলেছিলেন ফেরেস্তাদের সামনে কিছু বলতে, কিছু information দিতে? কেন জ্ঞানের প্রদর্শনী করতে বলেছিলেন? তবে কি আপনারা সেই জ্ঞানার্জনে বাধা হবেন?
প্রিয় পাঠক, আমাদের চারিদিকে ছড়িয়ে আছে miracle/নিদর্শন।
“মহাকাশমন্ডলী ও পৃথিবীকে আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন সত্যের সাথে। নিঃসন্দেহ এতে তো এক নিদর্শণ রয়েছে বিশ্বাসিদের জন্য।“ (সুরা আল-আনকাবুত, আয়াতঃ৪৪)
আসুন না আমরা ইসলাম নামক চমৎকার, সহজ এই জীবন ব্যবস্থাকে জটিল না করে উপভোগ করি। শুধু নিজের অপছন্দের কারনে এর সমালোচনা না করি। আপনাদের সবাইকে এই সুন্দর জীবন ব্যবস্থায় আসার invite করছি। invitation গ্রহন করবেন কিনা তা আপনাদের উপর, কিন্তু যারা এই জীবন ব্যবস্থা উপভোগ করছেন তাদের দয়া করে অশ্রদ্দা করবেন না।
“তুমি বল- ‘তোমাদের প্রভু কাছ থেকে সত্য;’ সে জন্য যে ইচ্ছা করে সে যেন বিশ্বাস করে, আর যে চাই সে অবিশ্বাসই করুক............ (সুরা আল-কাহফ, আয়াত ২৯)
*** প্রিয় পাঠক, এটি আমার ৪র্থ ব্লগ। এর আগের লেখার মান নিয়ে অনেকেই সমালোচনা করেছিলেন। লেখার মান বাড়ানোর জ়ন্য চেষ্টা করেছি কিন্তু এই সম্পর্কে আমার জ্ঞান একদম নেই, ব্লগের অন্য লেখা থেকে যে শিখব সে সুযোগও কম। এমন একটা profession এ আছি ব্লগে নিয়মিত হওয়া অসম্ভব। ব্লগে যে কেউ লেখার অধিকার রাখেন, শুধু এই অযুহাতে লেখার মান ও বানানের ব্যাপারে ক্ষমা করবেন আশা করি।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:৩৬