দাসত্বের সংজ্ঞা হচ্ছে “কোনো মানুষকে জোরপূর্বক শ্রম দিতে বাধ্য করা, এবং এক্ষেত্রে কোনো মানুষকে অন্য মানুষের অস্থাবর সম্পত্তি হিসেবে গণ্য করা হয়। কাউকে তার ইচ্ছার পরিবর্তে দাস করা যেতে পারে। এটি হতে পারে তার আটক, জন্ম, ক্রয় করা সময় থেকে। দাসদের অনুমতি ব্যতিরেকে স্থান বা মালিককে ত্যাগ করা, কাজ না করার, বা শ্রমের মজুরী পাবার অধিকার নেই। কিছু সমাজে নিজের দাসকে হত্যা করা আইসঙ্গত, এবং অন্যান্য স্থানে এটি একটি অপরাধ হিসেবে বিবেচিত”।
আসলে দাসত্ব বিষয়ে আমি লিখতে বসিনি,যে বিষয়ে লিখতে বসেছি তার জন্য এই দাসত্ব টার্মটা জানা জরুরী বলেই এমন প্ররম্ভিকার অবতারনা।সেদিন আইএমডিবিতে ঘুরতে ঘুরতে পেয়ে গেলাম টুয়েলভ ইয়ারস এ স্লেভ নামের এই ছবিটি। মুভিটি আমেরিকাতে মুক্তি পায় ৮ ই নভেম্বর ২০১৩ সালে যার বর্তমান রেটিং ৮.২।আমার এই ক্ষুদ্র অভিজ্ঞতা বলে আইএমডিবিতে যে মুভির রেটিং ৮ এর উপর মরে যাবার আগে সুযোগ পেলে তা দেখা উচিত।লিঙ্ক সার্চ করে ডাউনলোড করে ফেললাম। পুরো ছবিটা দেখার পর বুঝতে পারলাম যে,আমরা যে সভ্যতার উপর দাঁড়িয়ে আছি তার অতীত কখনোই ভাল ছিল না।কত শত মানুষের রক্তে,ঘামে,শাসন,শোষনে আজকের এই পৃথিবী, আজকের এই আধুনিক সমাজ। হয়তো একদিন আসবে উত্তোরাধুনিক মানুষগুলো আমাদের দেয়া বর্তমানের শ্রমগুলোকেও এমনি ভাবে দাস হিসাবেই ট্রিট করবে। সে অন্য কথা থাক।
দাস প্রথা বিশ্বের প্রায় সকল দেশেই ছিল। পন্যের মত কেনা বেচা হত মানুষ।এক্ষেত্রে শক্তি সামর্থবান পুরুষদের দাম ছিল বেশী তাছাড়া উচ্চ বিত্তরা তাদের দাসদের দিয়ে বিভিন্ন কাজ করাতেন ।যেমন :হালচাষ,সেচ এর পানি,মাটি উবর কারানো,গবাদী পশু পালন,তাদের রক্ষনাবেক্ষন ইত্যাদি কাজ করতো ।দাসীদের সাধারণত রাখা হতে যৌন লোভ লালসা পূরণ করার জন্য ।তাদের উপপত্নি করে রাখা হত এবং তাদের সন্তানদেরও দাস রুপে রাখা হত বা বিক্রি করা হত।আর কোন কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করা না হলে তাদের উপর নেমে আসতো অমানুষিক নির্যাতন। মাঝে মাঝে মালিকের ইচ্ছাকৃত নির্যাতনের স্বীকার ও হতে হত।
টুয়েলভ ইয়ারস এ স্লেভ মুভিটি দেখলে উপরের বিষয়গুলিই আপনার সামনে ধরা দেবে পরিচালক স্টিভ ম্যাককুইন এর পরিচালিত এই মুভিতে।এবং আপনারা যে গল্পটি দেখবেন তা কিন্তু সত্যিকারে একজন মানুষ সোলমন নর্থহাপ এর জীবন কাহিনী। একজন মুক্ত মানুষের ১২ বছর দাসত্ব করার ঘটনা। মুভিটি এত পুরষ্কারে ভূষিত হয়েছে যে তার তালিকা বিশাল বড় চাইলে দেখে নিতে পারেন এখান থেকে
মুভিটির গল্পের বৈচিত্রতা মুভিটিকে নিয়ে গেছে অনন্য উচ্চতায় কিন্তু কিছু নুডিটি দৃশ্য গল্পের প্রয়োজনে যেভাবে পরিচালক উপস্থাপন করেছেন তা আমার কাছে খুব একটা প্রয়োজনীয় বলে মনে হয় নি।যারা সরল মনের অধিকারী তাদের বলব দেখার আগে মনটাকে শক্ত করে মুভিটি দেখতে হবে।
তাহলে ব্লগারগণ হাতে সময় থাকলে দেখতে পারেন টুয়েলভ ইয়ারস এ স্লেভ মুভিটি আশা করি খারাপ লাগবে না।
ডাউনলোড লিঙ্ক
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৫৪