"আজব সময় চলছে এখন
আজব কর্ম এই দেশে,
দেশ প্রেমটাও মুখে মুখে
অভিনয়ে নানান বেশে!"
..............- ইব্রাহীম রাসেল
আচ্ছা চিন্তা করুন তো আজ ঘুম থেকে উঠার পর এখন পর্যন্ত পরিবেশবান্ধব কতটি কাজ আপনি করেছেন ??
সিগারেট খেয়েছেন ? না না লজ্জার কিছু নাই,আমিও খাই । সিগারেট খাওয়া নিয়ে কোন লংমার্চ হয় না , সো সিগারেট খাওয়া খারাপ কিছু না ।
তবে সিগারেট যদি খান তাইলে পরিবেশ রক্ষার আন্দোলন আপনাকে মানায় না । আপনি মনে হয় জানেন না যে, যে সিগারেটটা আপনি আয়েশ করে জ্বালাচ্ছেন তা অক্সিজেন পুড়িয়ে কার্বন ডাই অক্সাইড সহ ২৩ টি বিসাক্ত গ্যাস ছাড়ছে বাতাসে । যার কারনে আপনার পরিবারের মানুষ গুলো সমেত আপনার পোষা বিড়ালটিও বিষ পান করতে বাধ্য হচ্ছে ।
জানেন না বোধ হয় ... আহারে...
ভাই কার্বন ডাই অক্সাইড শুধু কয়লা পোড়ালেই বের হয় না,সিগারেটের ধুঁয়া ফুঁকলেও বের হয় । যাই হুক আমি ধরে নিচ্ছি আপনি আজ থেকে সিগারেট খাওয়া ছেড়ে দিয়ে পরিবেশ বান্ধব লং মার্চ অব্যাহত রাখবেন ।
কি ভাবতেছেন আমি একটা অন্যায় দিয়ে আরেকটা অন্যায়কে যাস্টিফাই করতে চাচ্ছি ?? ভাবতে পারেন...
আচ্ছা বুকে হাত দিয়ে বলুন তো একবিংশ শতাব্দীতে মানুষের কোন কাজটা পরিবেশের ক্ষতি করছে না ? আপনার বাসার এসি , টাকা আছে ঠান্ডা বাতাস খাচ্ছেন কিন্তু আপনি কি জানেন এসিতে যে কোলিং এজেন্ট ক্লোরোফোরো কার্বন বা হাইড্রোক্লোরোফ্লোরো কার্বন ব্যবহার করা হয় তা প্রতিনিয়ত আমাদের ওজন স্তর নষ্ট করে দিচ্ছে ।ওজন স্তর ফোঁটা হলে কিন্তু একদিন না একদিন সুন্দরবন সহ পৃথিবীর যাবতীয় সব বনই নষ্ট হয়ে যাবে ।
ঢাকার বাতাসে সীসার পরিমান জানেন নিশ্চই ?? রামপালে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে চিমনি দিয়ে যে ক্ষতিকর গ্যাস নির্গত হবে তার প্রত্যেকটাই আপনার আমার গাড়ি অথবা মোটর বাইক থেকে এক্সোস্ট গ্যাস আকারে বের হচ্ছে ।
কি অন্যায়!! তাহলে সব কিছু জেনেশুনেও কেন এতোদিন ধরে পরিবেশ দূষিত করে আসছেন?
জবাব আমি দিচ্ছি !
আমাদের বেঁচে থাকতে হবে ,এসির বাতাসই বলুন আর গাড়ি/মোটর বাইকের ধুয়াই বলুন ক্ষতিকর দিক গুলা জানার পরেও আমাদের এইগুলো ব্যবহার করতে বাধ্য । আর মানুষ যতদিন পৃথিবীতে বেঁচে থাকবে ততোদিনই পরিবেশের ক্ষতি হবে । তবে ক্ষতির পরিমান কতটুকু মিনিমাইজ করা যায় আমাদের চিন্তা ভাবনা সেদিকেই থাকা উচিত ।
রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র কেন পৃথিবীর যেকোন বিদ্যুৎ কেন্দ্রই পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর । আপনি কাপ্তাই জলবিদ্যুতের কথা চিন্তা করেন , তখনও কিন্তু পরিবেশ দূষন হবে,ঐ এলাকায় ইকোল্যজিকাল আনব্যালেন্স তৈরি হবে বলে আন্দোলন হয়েছিলো ।
আন্দোলন উপেক্ষা করেও তখন জলবিদ্যুৎ হয়েছিলো ,যার ফলে সে সময়কার পার্বত্য চট্রগ্রাম এলাকার একমাত্র দ্বিতল ভবন চাকমা রাজবাড়ী পানির নিচে তলিয়ে যায়, ১৮,০০০ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়, জলজ উদ্ভিদ, মাছসহ পানির অভ্যন্তরের জীবচক্রের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
এতো বছর পর এখন কিন্তু মানুষ জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কথাই মনে রেখেছে , পরিবেশ দূষণের কথা না । কারণ জাতীয় গ্রেডে যুক্ত হওয়া ২৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ !
যাই হুক যেটা বলতে চাচ্ছিলাম , রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র চাইনা আন্দোলনটা এই ইস্যুতে না হয়ে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ফলে পরিবেশের উপর যাতে ক্ষতিকর প্রভাব কম পড়ে আন্দোলন সেই ভিত্তিক হওয়া উচিত ।
আর এই ব্যপারে আন্দোলন করারও কিছু নাই , সরকারের ঠেকা পড়ে নাই শেষ সময়ে আইস্যা আপনাগোরে বিদ্যুৎ দেওনের লাইগ্যা সুন্দরবন ধ্বংস কৈরা দলের লালবাত্তি জ্বালাইবো ।
চলবে............
২য় পর্বঃ প্রস্তাবিত আলট্রা সুপার ক্রিটিকাল টেকনোলোজি বাস্তবায়ন হলে যেভাবে পরিবেশ দূষনকে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নামিয়ে আনা যাবে ।
রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে ব্লগার হাসান কালবৈশাখী এর চমৎকার তথ্যনির্ভর পোস্টঃ রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র, সুন্দরবন ধ্বংশ হবে না