সিজিপিএ(CGPA) কত হলে জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়া সম্ভব?
“ভাইয়া…আমি এসএসসি আর এইচএসসিতে জিপিএ ৫.০০ পেয়েছি। আমার ব্যাচেলর অমুক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তমুক সাব্জেক্টে। আমার ব্যাচেলরের সিজিপিএ xx.xx। আমি কি তমুক জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাব? প্লিজ ভাইয়া… প্লিজ……একটু হেল্প করেন…নাহলে আমি কিন্তু হারপিক খেয়ে আত্মহত্যা করব !!!”
প্রায় প্রতি দিন-ই এই ধরণের ২-৪ টা ম্যাসেজ ফেসবুকের আদার্স ফোল্ডারে দেখতে পাই। আবার মাঝে মাঝে গ্রুপেও এই ধরণের প্রশ্নের দেখা পাই। হারপিক খাওয়ার ব্যাপারটা (!!!) না থাকলেও বাকিটুকু কমবেশি একি থাকে।
আর এই সকল প্রশ্নের চমৎকার একটা উত্তর দিয়েছেন সা’দ বিন এমরান ভাই…প্রসঙ্গ ঠিক রাখার জন্য তার উত্তরের ২-১ জায়গা পরিমার্জিত করেছি। যাদের সিজিপিএ(CGPA) কত হলে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়া যাবে, এটা নিয়ে হাজারো প্রশ্ন, তাদেরকে একটু মনযোগ দিয়ে পড়ে দেখার আনুরোধ জানাচ্ছি।
“বিশ্ববিদ্যালয়ে এডমিশান/স্কলারশীপ/বৃত্তি হল অনেকটা রেস এর মত।
চান্স পাওয়া না পাওয়া রেসে তোমার পজিশানের উপর নির্ভর করে।
টাইসন গে ৯,৭০ তে দৌড়ায় ও ফার্স্ট হইতে পারে নাই গত ওয়ার্ল্ড মিটে, কারন উসেইন বোল্ট রেসে ছিল, যে ৯,৬৯ সেকেন্ড এ রেস শেষ করসে। আবার বাংলাদেশের জাতীয় এথলেটিক্স এ ১১,৫ সেকেন্ডে দৌড়ায় মানুষ জন গোল্ড মেডেল পায়।
কারন এখানে বোল্ট বা গে রা দৌড়াইতে আসে না।
অতেব রেসে না নামা পর্যন্ত যেমন রেজাল্ট জানার উপায় নাই, তেমন ভাবে ইউনিভার্সিটি কমিশনের লোকজন এর জাজমেন্ট ছাড়া ভবিষ্যতবানী করা সম্ভব না যে কে চান্স পাবে কিংবা পাবে না (শুধুমাত্র সিজিপিএ এর উপর ভিত্তি করে)।
স্কলারশীপ/এডমিশানের পেইজে যদি সিজিপিএ নিয়ে কিছু না বলা থাকে (উদাহরনঃ “৩.৫০ এর নীচে সিজিপিএ দের এপ্লাই করার দরকার নাই”), তাইলে সিজি কম বেশি নিয়ে মাথা না ঘামায় ভাল মত আইএলটস দিয়ে, ভাল রেকমেন্ডেশান নিয়ে এপ্লাই করে ফেলা উত্তম।”
সো, ইযো ব্রো এন্ড সিস… শুধু চান্স পাবার চিন্তা না করে পছন্দের কোর্সে এপ্লাই করে ফেলুন। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়, শহর, সিজিপিএ সবকিছুর চেয়ে বেশি ইম্পোর্টেন্ট হল, সাবজেক্টটার প্রতি আপনার ইন্টারেস্ট কতটুকু। অনেকেই দেখা যায়, কোর্স সম্পর্কে না জেনে এখানে চলে আসে এবং পরবর্তীতে বিপদে পড়ে যায়। তাই পরবর্তী বিপদ/ঝামেলাপূর্ণ ব্যাপারগুলো এড়ানোর জন্য বুঝে শুনে কোর্সে এপ্লাই করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ।
আর হ্যা… সিজিপিএ অবশ্যই একটা বড় ম্যাটার…কিন্তু তাই বলে হতাশ হবার কিছু নাই। সিজিপিএ কম থাকলে আপনাকে একটু বেশি জায়গায় এপ্লাই করতে হবে। তাহলে চান্স পাবার প্রবাবিলিটি বেশি থাকবে…
শেষ করছি একটা ছোট অভিজ্ঞতা দিয়ে……এটা একদম-ই আমার জীবন থেকে নেয়া…
আমি যে-ই সাবজেক্টে মাস্টার্স করছি, সেটাতে চান্স পাওয়ার জন্য একটা এপটিটিউড টেস্টে (স্কাইপ/ফোন ইন্টারভিঊ) অংশ নিতে হয়। এপটিটিউড টেস্টে পাস করলেই শুধু ইউনিভার্সিটিতে ভর্তির সুযোগ দেয়। আর এপটিটিউড টেস্টে অংশগ্রহনের জন্যও আপনার একটা মিনিমাম সিজিপিএ থাকতে হবে… এখন প্রশ্ন হল সিজিপিএটা আসলে কত?
আমি যেই বছর চান্স পাই, ওই বছর আমার জানামতে আমার এক ক্লোজ ফ্রেন্ড এপটিটিউড টেস্ট দেয়ার সুযোগ পেয়েছিল, যার ব্যাচেলরের জিপিএ ছিল ৩.৪-৩.৫ এর ঘরে। পরবর্তী বছরে, আমার আরেক ফ্রেন্ড এপ্লাই করে, যার সিজিপিএ ৩.৯ এর ঘরে।
কিন্তু শেষপর্যন্ত সে এপটিটিউড টেস্টের জন্য ডাক-ই পায়নি !!! চান্স পাওয়া তো পরের কথা।
আসল ব্যাপারটা হল, ওই ফ্রেন্ড, সেই বছরের রেসে জিততে পারেনি… হয়তো তার সাথে উসাইন বোল্ট- টাইপের লোকজন অনেক বেশি এপ্লাই করেছিল !!!
যাই হোক, ভাল ভাবে এপ্লাই করুন। সবার জন্য শুভ কামনা।
লেখা সূত্র-http://www.germanprobashe.com/archives/8182
******************************
জার্মানিতে জার্মানিতে উচ্চশিক্ষা নিয়ে সামুতে লেখা আগের পোস্টগুলো-
view this link
******************************
জার্মানিতে এপ্লাই করার ধাপসমূহ (Steps To Apply At A German University ) view this link
*****************************
জার্মানিতে উচ্চশিক্ষা - পর্ব - #১
মোটিভেশন / উৎসাহ
লিংক : http://goo.gl/ztZXL7
***********************
জার্মানিতে উচ্চশিক্ষা - পর্ব - #২
কোর্স, ভাষা, সেমিস্টার, খরচ, স্কলারশিপ
লিংক : http://goo.gl/kncGxY
***************************
জার্মানিতে উচ্চশিক্ষা - পর্ব - #৩
রিকোয়ারমেন্টস, প্রোফাইল, শহর
লিংক : http://goo.gl/BzWo8k
***************************
জার্মানিতে উচ্চশিক্ষা #৪ -এপ্লাই করা এবং তারপর- Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০৬