মডার্ন ওয়ারফেয়ার ৩ কভার
মডার্ন ওয়ারফেয়ার এবং মডার্ন ওয়ারফেয়ার ২ এর কাহিনীর ধারাবাহিকতায় আসলো কল অফ ডিউটি সিরিজের সর্বশেষ গেম মডার্ন ওয়ারফেয়ার ৩। আগের দুইটা সম্পর্কে বলার কিছু নাই, দুইটাই ছিল সময়ের সেরা শুটার গেম। মডার্ন ওয়ারফেয়ার ৩ ও এর ব্যতিক্রম না। অসাধারন কাহিনী, গেমপ্লে, ব্যাকগ্রাউন্ড সাউন্ড এই গেমকে, তথা সিরিজ কে নিয়ে গেছে অন্য রকম উচ্চতায়। মুক্তি পাওয়ার ২৪ ঘন্টার মধ্যেই ইউ.কে. এবং ইউ.এস.এ. তে ৬.৫ মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়ে মডার্ন ওয়ারফেয়ার ২ (৪.৭ মিলিয়ন) এর রেকর্ড ভাঙ্গা গেমটি সম্ভবত সিরিজের শেষ গেম।
আগের পর্বগুলোর মতই গেমের কাহিনী ২-৩ ধারায় চলতে থাকে। একদম শুরুতে দেখা যায় আহত ক্যাপ্টেন 'সোপ' ম্যাকটাভিশকে নিরাপদ স্থানে সরানো হচ্ছে। এরপরেই দেখা যায় আমেরিকার একটি শহরকে রাশিয়ান বাহিনীর হাত থেকে দখলমুক্ত করার প্রচেষ্টারত আমেরিকান বাহিনীর 'ডেল্টা ফোর্স' এর কতিপয় সৈন্যকে, এমনই একজন ডেল্টা ফোর্স সদস্য ডেরেক 'ফ্রস্ট' কে নিয়ে আমেরিকান সেনাবাহিনীর মিশন গুলো খেলতে হবে। অপর দিকে ক্যাপ্টেন প্রাইস এবং সোপ যথারীতি ম্যাকারভ এর খোঁজে ব্যস্ত থাকবে। এদের সাথে থাকে এই গেমের নতুন চরিত্র ইউরি। এভাবে করেই গেমের কাহিনী আগাতে থাকে।
গেমের কাহিনী বেশ প্যাচালো এবং প্রতিটা মূহুর্তই বেশ উত্তেজনাপূর্ণ। একদিকে ডেল্টা ফোর্সের আমেরিকাসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে, অপরদিকে টাস্ক ফোর্স সদস্যদের ইন্ডিয়া থেকে শুরু করে সিয়েরা লিওন, সোমালিয়া,দুবাই ইত্যাদি জায়গাতে অভিযান চালাতে হয়। রাশিয়ান প্রেসিডেন্টকে কিডন্যাপ এবং তাকে উদ্ধার করা, আইফেল টাওয়ারের নিচে দাড়িয়ে যুদ্ধ করা, ভোক নামের একজন সাইন্টিস্টকে ধরার জন্য চালানো অভিযান এবং ম্যাকারভকে কব্জা করার মিশন অর্থাৎ শেষ মিশন সহ প্রায় প্রতিটা মিশনই অনেক এক্সাইটিং। একবার শুরু করলে শেষ না করে উঠা বেশ কষ্টকর।
রাশিয়ার আক্রমনে নিউইয়র্ক শহর
আইফেল টাওয়ারের নিচে যুদ্ধ
AC-130 গানশিপ থেকে গ্রাউন্ড ফোর্সকে কভার দেয়া
হোটেল ওয়াসিস (বুর্য-আল-আরব) এ যুদ্ধ
আগের পর্বগুলোর মতই ক্যাম্পেইন মুড তিনভাগে বিভক্ত। এই তিন ভাগের মধ্যে সবগুলো মিশন সাজানো হয়েছে। একইভাবে এইবারও গেমটিতে যুক্ত হয়েছে স্পেশাল অপারেশন মুড। এই মুডে কিছুটা নতুনত্ব আছে। আগে স্পেশাল অপারেশন মুডে কিছু মিশন থাকতো যা কমপ্লিট করে পরবর্তী মিশন আনলক করতে হত। কিন্তু এবার স্পেশাল অপারেশন মুড এ আরো যুক্ত হয়েছে সারভাইভাল নামে আরেকটি মুড, যাতে সৈন্যদের অজস্র ওয়েভ আসতে থাকবে। এদের মেরে আপনাকে সারভাইভ করতে হবে। প্রতিটি সৈন্য মারলে পয়েন্ট পাওয়া যাবে যা দিয়ে অস্ত্রসহ বিভিন্ন ধরনের আপগ্রেড কেনা যাবে। প্রায় ২৬ ঘন্টা খেলে আমি এখন লেভেল ৪৯ এ আছি।
গেমের অস্ত্রভান্ডারের উন্নতিও চোখে পড়ার মত। নতুন ধরনের কিছু লাইট মেশিনগান ( MK46, M60E4, PKP) , সাব-মেশিন গান (PP-90M1, MP7, PM-9), রকেট লন্চার (SMAW) সংযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়াও রয়েছে রিমোট কন্ট্রোলারের সাহায্যে বিভিন্ন যুদ্ধযান (UGV) নিয়্ন্ত্রন করার সুবিধা।
মডার্ন ওয়ারফেয়ারের অস্ত্র-সস্ত্র
গেমের ভাল দিকের কথা প্রায় সবই বললাম, খারাপ দিকের মধ্যে আছে গেমের গ্রাফিক্স। ২০০৭ সাল থেকে প্রায় একই ধরনের গ্রাফিক্স দিয়েই সিরিজটি এখন পর্যন্ত চলছে। সমসাময়িক অন্যান্য শুটার গেমগুলোর তুলনায় এই সিরিজের গ্রাফিক্সের মান বেশ নিচু। গেমের কাহিনী বেশ ভাল কিন্তু কিছু জায়গাতে অতিরন্জিত মনে হয়েছে। এছাড়া আর তেমন কোন সমস্যা আমার চোখে পড়ে নাই।
গেমের আরেকটি সুবিধা যা না বললেই নয় তা হল বেশ লো-কনফিগারেশন পিসিতে খেলা যাবে এই গেমটি। কোর-টু-ডুয়ো প্রসেসর, ২ জিবি র্যাম আর পিক্সেল শ্রেডার ৩ সাপোর্টেড ২৫৬ মেগা গ্রাফিক্স কার্ডই যথেষ্ট গেমটি চালানোর জন্য
ডাউনলোড লিন্ক
টরেন্ট লিন্ক
যারা নতুন তাদের জন্য-
গেম রিভিউ-১ : Call of Duty 4: Modern Warfare
গেম রিভিউ-২ : Call of Duty: Modern Warfare 2
যারা মডার্ন ওয়ারফেয়ার ৩ গেমওভার করেছেন তারা ঢুকতে পারেন
গেম বিষয়ক যেকোন আলোচনার জন্য- গেম বিষয়ক মুক্ত আলোচনা : সবাই আমন্ত্রিত !!!!
পরবর্তী রিভিউ- ব্যাটলফিল্ড ৩