somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মন্ত্রীসভায় দিন বদলের ছোঁয়া কিন্তু আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার মন্ত্রীসভায় প্রতিশোধের বিচ্ছুরণ

১০ ই জানুয়ারি, ২০০৯ সকাল ৯:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আকাঙ্খিত জাতীয় নির্বাচন কেন্দ্রিক উত্তেজনা থিতিয়ে এসেছে তোমধ্যেই, এখন অনাগত সম্ভাবনা খতিয়ে দেখার সময় এসেছে।
নতুন সরকারের মন্ত্রীসভা কাজী নজরুল ইসলামের যৌবনের গানকে মনে করিয়ে দেয়। প্রায় সব মুখই শিক্ষিত, স্মার্ট, নতুন এবং তার মধ্যে আবার তারুণ্যের আধিক্য। এই প্রণোচ্ছল, উদ্দীপনাময় মুখগুলো দেশের জন্য নতুন নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দেবে; আম জনতার একজন হিসেবে সে আশায় আমিও আশান্বিত।

কিন্তু আওয়ামী লীগ সভানেত্রী তাঁর নিজের জন্য যে মন্ত্রীসভাটি বেছে নিলেন, সামগ্রিকভাবে মানুষের আশা এবং আকাঙ্খার সাথে সেটি কতটুকু সঙ্গতিপূর্ণ তা ভেবে দেখার বিষয়।
অসাংবিধানিক সরকারের মাইনাস টু ফর্মুলার প্রণোদনায় দেশের প্রধান দুটি দলের মধ্যে গজিয়ে ওঠা সংস্কারের পক্ষে যারা সে সময় হাত উঁচু করেছিলেন, খালি চোখে তাদেরকে সুবিধাবাদির বাইরে কোন কিছুই ভাবা যাচ্ছিল না। দলে সংস্কার হতেই পারে এবং গণতান্ত্রিক দলে কোন সদস্যের দলের যে কোন বিষয়ে দ্বিমত থাকতেও পারে। কিন্তু সেটা হতে হবে নিদৃষ্ট দলীয় ফোরামে, নিদৃষ্ট পদ্ধতিতে। সংস্কারপন্থীরা সে ধারণার বাত্যয় ঘটিয়ে দল যখন চরম সংকটময় পরিস্থিতি অতিক্রম করছে, বিশেষ করে দু নেত্রী যখন রাজনৈতিক চিপায় খাবি খাচ্ছে সেসময় সংস্কার আন্দোলন শুরু করায় খুব সহজেই নিজেদের সুবিধাবাদী চরিত্র উম্মোচিত করেছেন। এটা সত্য। তবুও এর পেছনে কথা থেকে যায়। তা হলো, আমাদের দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল দুটির অভ্যন্তরীন গনতান্ত্রিক পরিবেশ কতটুকু উদার? দলের ভেতর থেকে এখানে দলীয় প্রধানের বিরুদ্ধে কথা বলে কেউ কি টিকে থাকতে পেরেছে? কাদের সিদ্দিকী বা বদরুদ্দোজা চৌধুরীর ইতিহাস আমাদেরকে সে কথা বলেনা। দলীয় ফেটিশ এর বিপক্ষে কথা বলায় তাঁরা উভয়েই এখন রাজনৈতিকভাবে দেওলিয়া হয়ে গেছেন।
এরকম উদাহরণ আরো আছে। আওয়ামীলীগ নেত্রী শেখ হাসিনার বর্তমান মন্ত্রীসভাও সেই রাজনৈতিক ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা রক্ষা করেছে মাত্র।

সংস্কারবাদীদের ক্ষেত্রে দু'দলের প্রধান একই পদক্ষেপ নিলেও শেখ হাসিনা রাজনৈতিক চতুরতায় এক্ষেত্রে এগিয়ে আছেন যোজন যোজন। আবেগের কাছে পরাজিত এবং চারপাশে থাকা চাটুকার শ্রেণীর প্রতি অন্ধ বিশ্বাসে খালেদা জিয়া যেখানে খুব দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে মান্নান ভূঁইয়াসহ অন্যান্য উচ্চমাত্রার নেতাকে বহিষ্কার করে ফেললেন সেখানে শেখ হাসিনা অত্যন্ত বুদ্ধিমত্তার সাথে নির্বাচন বৈতরণী পার হওয়ার স্বার্থে তাঁর দলের সংস্কারপন্থীদের নিজের সাথেই রাখলেন এবং তাদের ভেতরে আস্থা সৃষ্টি করতে সক্ষম হলেন। এই আপাত ঐক্যবদ্ধ আওয়ামীলীগ নির্বাচন পার করল অভূতপূর্ব ফলাফল নিয়ে, তারপরেই শেখ হাসিনা তাদেরকে জানিয়ে দিলেন, আমি আসলে কিছুই ভুলিনি। একই সাথে শেখ হাসিনা উত্তরকালে শেখ পরিবার থেকে যে নেতৃত্ব আওয়ামীলীগের হাল ধরবে, তাঁর আনুগত্যের উপর হুমকি আসতে পারে এরকম বয়জ্যোষ্ঠদেরও বিভিন্ন অভিযোগে মন্ত্রীসভার বাইরে রেখে দিলেন।

দল ক্ষমতায় থাকাবস্থায় শক্তির ভরকেন্দ্রে না থাকতে পারা এইসব উচ্চশক্তিমানসম্পন্ন নেতৃবৃন্দ অতিদ্রুতই দৃশ্যপটের বাইরে চলে যাবেন এবং আবির্ভাব ঘটবে এমন এক ক্ষমতাসম্পন্ন শ্রেনীর যারা ভয়ে বা ভালবাসায় নিরংকুশভাবে শেখ পরিবারের প্রতি আনুগত্যশীল। তা না হয়েও উপায় নেই। নতুন মন্ত্রীসভা গঠনের মধ্য দিয়েই তাদের কাছে এই বার্তা পেঁৗছে দেয়া হয়েছে যে আনুগত্যে ঘাটতির পরিণাম কত ভয়াবহ!
শেখ হাসিনা এমন একটি মন্ত্রীসভা বানিয়েছেন যারা শুধুমাত্র আওয়ামীলীগ সভানেত্রী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গুনগান এবং তার সিদ্ধান্তের বাস্তবায়নই করবে।
দেশের চেয়ে দলীয় প্রধানের প্রতি অতিমাত্রায় আনুগত্যশীল এই মন্ত্রীসভা শেষ বিচারে সম্ভাবনার পরিবর্তে শুধু আতংকই ছড়াচ্ছে।


মতামত একান্তই লেখকের নিজস্ব পর্যবেক্ষণ।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জানুয়ারি, ২০০৯ সকাল ১০:৫১
৬টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ট্রাম্প ভাইয়ের প্রেসিডেন্সিয়াল টিমের সদস্য এর মধ্যে এই তিন জন সদস্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

লিখেছেন অতনু কুমার সেন , ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:৪৮

প্রথম জন হলো: জেডি ভান্স, উনি মেবি ভাইস প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন। ভদ্রলোকের বউ আবার ইন্ডিয়ান হিন্দু। ওনার নাম উষা ভান্স। পেশায় তিনি একজন অ্যাডভোকেট।

দ্বিতীয় জন হলো বিবেক রামাস্বামী। এই ভদ্রলোক আরেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশে ইসলামি আইন প্রতিষ্ঠা করা জরুরী?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:০২



বিশ্ব ইসলামের নিয়মে চলছে না।
এমনকি আমাদের দেশও ইসলামের নিয়মে চলছে না। দেশ চলিছে সংবিধান অনুযায়ী। ধর্মের নিয়ম কানুন মেনে চললে পুরো দেশ পিছিয়ে যাবে। ধর্ম যেই সময় (সামন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসল 'আয়না ঘর' থাকতে রেপ্লিকা 'আয়না ঘর ' তৈরির প্রয়োজন নেই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩৮


স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের জুলুম থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ৫ই আগস্ট সর্বস্তরের জনতা রাস্তায় নেমে এসে। শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। দীর্ঘ ১৫ বছরের শাসন আমলে অসংখ্য মানুষ কে... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি হাজার কথা বলে

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:৫৩

আগস্টের ৩ তারিখ আমি বাসা থেকে বের হয়ে প্রগতি স্মরণী গিয়ে আন্দোলনে শরিক হই। সন্ধ্যের নাগাদ পরিবারকে নিয়ে আমার শ্বশুর বাড়ি রেখে এসে পরদিনই দুপুরের মধ্যেই রওনা হয়ে যাই। আগস্টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। নিজের বানানো টেলিস্কোপ দিয়ে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯






ঢাকায় নিজের বাসার ছাদ থেকে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি তুলেছেন বাংলাদেশি অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার জুবায়ের কাওলিন। যে টেলিস্কোপ দিয়ে তিনি এই ছবি তুলেছেন, সেটিও স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×