somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শাহজালাল ভার্সিটির কম্পু সাইন্সের হেড শহীদুর রহমান----ছাগু, নাকি অন্য কিছু?

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অনেকেই হয়ত খেয়াল করেছেন, শাবির ৫১ জন শিক্ষকের একটা বিবৃতি বের হয়েছে, যেখানে তারা প্রস্তাবিত স্বাধীনতা ভাস্কর্য তৈরীর বিরোধিতা করে বিবৃতি দিয়েছেন, ইসলামের সাথে "মূর্তি নির্মাণ সঙ্গতিপূর্ণ নয়" এই উছিলায়।

খবরের লিংক

আমি শাবির অনেককাল আগের ছাত্র, তাই ওখানের কয়েকটা নাম দেখে অবাক হয়নি, তবে ধাক্কা খেয়েছি শহীদ স্যারের নাম দেখে, তার ছাত্র ছিলাম, তাকে অনেক পছন্দও করতাম, কম বেশী সবারই তিনি প্রিয় শিক্ষক, সবার সাথেই হাসি ঠাট্টা করছেন, আবার কাজেও সিরিয়াস, এইতো মাসখানেক আগেই তিনি নতুন হেড হলেন, সেই নিয়ে ডিপার্টমেন্টে বেশ আনন্দময় পরিবেশ, জাফর স্যারও খুশী, তিনি তাঁর সেই রুম, যেটাকে আমরা সারাজীবন জাফর স্যারের রুম বলে জেনে এসেছি, সেটাও ছেড়ে দিচ্ছেন নতুন হেডের জন্য, এমনকি শহীদ স্যারের মানাও তিনি শুনছেননা----এইসব মনভালোলাগা খবরের মধ্যে হঠাৎ করে এই ভাস্কর্য তৈরীর বিরোধিতায়, শহীদ স্যারের নাম দেখে বিনা মেঘে বজ্রপাত!

ভাস্কর্যের বিরোধিতা করা ছাগুদের অত্যন্ত প্রিয় একটা কাজ, এটা কমবেশী সবাই জানেন। তবে কী শহীদ স্যার ছাগু?

আমার মতামত---না, স্যার তাতে ছাগু হয়ে যাননা।

ছাগু বলতে আসলে কী বুঝি, সেটা আরেকবার রিভাইস করি, খুব সংক্ষেপে। জামাত-শিবির, ধূর্ত ধর্ম ব্যাবসায়ী। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ত্যানা প্যাচায় যারা। যুদ্ধাপরাধ এর বিচারটাকে যেকোনো মূল্যে বিতর্কিত করতে চায় যারা। ধর্মের নাম নিয়ে নিজের স্বার্থ উদ্ধার করে, যুক্তির প্যাঁচে চেপে ধরলে এরা বাইন মাছের মত পিছলায়। এই ব্লগে ৫ বছর ধরে আছি, ছাগু দেখলেই আমার গা চিড়বিড়ায়, চামড়ায় কুটকুট করে।

শহীদ স্যার তাবলীগ করেন। আমরা যে ৬ বছর (কেন ৬ বছর সেইটা আরেক ছাগু কাহিনী, এইখানে একটু ইঙ্গিত আছে) স্যারকে দেখেছি, কখনো জামাত শিবিরকে স্যার প্রশ্রয় দিতেছেন এরকম কিছু দেখি নাই, কোথাও প্যাঁচ লাগানোর চেষ্টা করতেছেন এরকমও দেখিনাই---মোটামুটি স্ট্রেটফরওয়ার্ড মানুষ, তার কাজেকর্মে কখনৈ আমরা চামড়া কুটকুট করে নাই।

তাহলে স্যার কীভাবে স্বাধীনতা-স্তম্ভ তৈরীর বিরোধিতা করেন? আমার জবাব, স্যারের কনজার্ভেটিভ ইসলামিক মাইন্ড। খিয়াল কৈরা, এইটা কিণ্তু ছাগুগিরি থেকে আলাদা। স্যার তাবলীগ করেন, আমার ইসলাম বোধ থিকা উনারটা অনেক কনজার্ভেটিভ হবে, সেটাই স্বাভাবিক। আমি জানি, অনেকেই বলবেন (এবং তারাই হয়ত ঠিক) যে ইসলামে ভাস্কর্য নির্মাণ মানা করা নাই, কারণ এইটাতো আর পূজা করার জন্য বা আইডলশীপের জন্য বানানো হয় নাই! তবে মনে রাখতে হবে, আমার ইসলামী বোধ আপনার থেকে আলাদা হইতে পারে, আপনি মনে করতেই পারেন যে সবধরনের ভাস্কর্যই ইসলামে নিষিদ্ধ। শুধু সেই কারণেই কিন্তু আপনারে আমি ছাগু বলতে পারিনা!

ছাগুদের ভাস্কর্য বিরোধিতা আর কনজার্ভেটিভ ইসলামী মাইন্ডেড দের ভাস্কর্য বিরোধিতা ২ টাএকটু আলাদা জিনিস। ছাগুদের ভাস্কর্য বিরোধিতার আরো কিছু ক্লাসিক লক্ষণ বলি---ইনায়ে বিনায়ে মূর্তি ভেঙে ফেলার হুমকী দিবে, আস্তে কইরা সরকাররে ইসলামি-বিরোধী বানানোর ট্রাই করবে, তারপর পুরা ব্যাপারটা নিয়া জল ঘোলা কইরা ফায়দা লুটার চেষ্টা করবে, ওয়াজে এইটা নিয়া মুখে ফেনা তুলে জিহাদের ডাক দিবে, আর আরো বেশী তেল হইলে মাদ্রাসা-ছাত্রদের মূর্তি টেনে নামানোর উস্কানি দিবে । আর অন্যদিকে, বেশী ধার্মিকেরা এইটার বিরোধিতা কইরা কথা বলবে, কিন্তু বাকী লক্ষণ গুলা তাদের কাজে কর্মে পাবেননা।

শহীদ স্যারের ক্লাসমেট আলমগীর স্যার/ভাই এর তরফে জানলাম, শহীদ স্যার বলেছেন "দিস ইজ মাই পার্সোনাল স্ট্যান্ড, সরি ইফ ইট হার্টস ইউ।" ছাগু হইলে এইটাইপ কথাকেউ বলতোনা বলেই মনে হয়, ভালো করে ভেবে দেখেন। শহীদ স্যারের সহকর্মী শিক্ষকদের মন্তব্যে বুঝেছি, তাদের অনেকেই ব্যাপারটায় মনক্ষুণ্ন হলেও শেষপর্যন্ত স্যারের পার্সোনাল স্ট্যান্ডএর (স্যার তাবলীগ করেন, এইটা মনে রাখা দরকার) একটা প্রকাশ হিসাবে মেনে নিয়েছে। এবং স্যার এই ইস্যু নিয়ে অন্যান্য দিকে জল ঘোলা করা শুরু করছেন, এমনও কিছু শুনিনি।

তবে একটা কথা হইল, জীবনে অনেক ভালো মানুষকেই পল্টি খেতে দেখছি। শহীদ স্যার কি তাহলে পল্টি খেলেন? এই দুনিয়ায় কিছুই অসম্ভব না। তবে, লক্ষণ বিচারে, শহীদ স্যার ছাগু না বলেই মনে হয়, অন্তত আজ পর্যন্ত যতটুকু জেনেছি, বুঝেছি।

দুঃখ একটাই, স্যার হয়তো বোঝেন নাই যেতার এই বিবৃতি ছাগুদের পালেই জোরালো হাওয়া যোগাবে। সিলেটে ধর্মীয় অনুভূতির স্থান বেশ ওপরে, তাই ছাগুর দল এটাকে কাজে লাগিয়ে পলিটিক্স করে, এটা ওখানকার পুরোনো স্টাইল। ছাগুদের সেই ধর্মানুভূতির রাজনীতির এক ক্লাসিক উদাহরণের চাপে পড়ে আমার ভার্সিটি জীবনের মূল্যবান ৭টি মাস এক ধাক্কায় হারিয়েছিলো, ছাগুগুলাকে তাই ২ চোখে দেখতে পারিনা। শহীদ স্যার একটু বুঝে শুনে এইধরনের কাজ করবেন ভবিষ্যতে, এটাই আশা করি।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:১২
১৯টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পাগলের প্রলাপ' যখন সত্যি হয়......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:১৯

'পাগলের প্রলাপ' যখন সত্যি হয়......
[/সব

আমার এক মামা ততকালীন পূর্ব পাকিস্তানে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে জব করতেন হোটেলের শুরু থেকেই। সেই মামা মাঝেমধ্যে আমাদের জন্য হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল থেকে মুখরোচক কেক, পেস্ট্রি ছাড়াও বিভিন্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তার চাওয়া পাওয়ার কিছু ছিল না, তবুও

লিখেছেন খাঁজা বাবা, ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:৩২



শেখ হাসিনার নাকি বায়ক্তিগত চাওয়া পাওয়ার কিছু ছিল না। শেখ মুজিবের বেয়ে নাকি দুর্নীতি করতে পারে না। সে এবং তার পরিবার যে হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি করতে পারে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশের বর্তমান পরিস্থিতি সংক্রান্ত বিষয়ে সামু কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি

লিখেছেন সাড়ে চুয়াত্তর, ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৬

ছাত্র-জনতার সম্মিলিত অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গত ৫ আগস্ট, ২০২৪ তারিখে ফ্যাসিস্ট হাসিনা এবং তার দলের পতন ঘটানো হয়। এটা আমাদের একটা জাতীয় গৌরবের দিন। এটা নিয়ে কারও সন্দেও থাকলে মন্তব্যে লিখতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জ্বীনভুতে বিশ্বাসী বাংগালী ও ঢাকায় ৫০ হাজার ভারতীয় একাউন্টটেন্ট

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৩




ব্লগার সাড়ে চুয়াত্তর ব্লগে লিখেছিলেন যে, উনার ভগ্নিপতিকে জ্বীনেরা তুলে নিয়ে গিয়েছিলো; ২ সপ্তাহ পরে ভগ্নিপতিকে দিয়ে গিয়েছে; এই লোক, সামুর কাছে আমার বিরুদ্ধে ও অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

বেছুর নিজস্ব একটি জ্বীন ছিলো!

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:২৪



আমাদের গ্রামের খুবই সুশ্রী ১টি কিশোরী মেয়েকে জংগলের মাঝে একা পেয়ে, প্রতিবেশী একটা ছেলে জড়ায়ে ধরেছিলো; মেয়েটি ঘটনাকে সঠিকভাবে সামলায়ে, নিজের মাঝে রেখে দিয়েছিলো, এটি সেই কাহিনী।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×