কি সুন্দর আমাদের এই পৃথিবী । আহা, এই পৃথিবী সব সময় এই রকম থাকবে না, পরিবেশ ধ্বংস নিয়ে যতই আমরা আন্দোলন করি না কেন । আমাদের সূর্য, যা আমাদের আলো আর শক্তি দেয় সে কি এই রকম থাকবে সব সময়, সূর্য মামার বয়স যখন ৫.৬ বিলিয়ন বছর হবে , মানে আজ থেকে মাত্র ১.১ বছর পর, তিনি তার তীব্র ক্ষোভ থেকে ১০% বেশী উজ্জ্বলতা প্রকাশ করবেন । আর তাতেই আমাদের এই সুন্দর পৃথিবীর বারোটা বেজে যাবে । অধিক থেকে অধিক উত্তপ্ত হবে আর পানি বাষ্পে পরিণত হতে থাকবে দ্রুত গতিতে , ভূমির বেশীর ভাগ প্রাণী মারা যাবে , সাথে আমরাও । তবে ঐ সময় আমাদের জন্য মায়া কান্না করার কেউ থাকবে না মনে হয় । কিছু অনুজীব চরমজীবি প্রাণী আর মহাসাগরের স্বল্প কিছু জীব থাকবে হয়ত । তাহলে আমাদের কাহিনী ওইখানে শেষ । কিন্তু আমরা ভাগিনারা না থাকলে কি হবে, সূর্য মামা ঠিক ই থাকবেন । উনার বয়স যখন ৯ বিলিয়ন বছর হবে , মানে আজ থেকে ৪.৫ মিলিয়ন বছর পর ভাগিনা হারানোর দুঃখে বর্তমানের চেয়ে ৪০% বেশী উজ্জ্বলতা প্রকাশ করবেন । আর তাতেই পৃথিবীর বাকি প্রানী গুলিও খতম হয়ে যাবে । আর তাতে সূর্যমামা আরো ক্ষেপে যাবেন আর তাই এতদিনের কষ্টের জমানো হিলিয়াম ব্যবহার করা শুরু করবেন । তখন সূর্য মামার বয়স হবে ১০.৯ বিলিয়ন বছর । বয়স বাড়ার সাথে সাথে উনার সাইজ ও বড় হয়ে যাবে, তিনি বর্তমানের চেয়ে ১.৫ গুন বড় হয়ে যাবেন ।
পরবর্তিতে ৭০০ মিলিয়ন বছর পর্যন্ত উনার তাপমাত্রা একই থাকবে , কিন্তু উনার বড় হয়ে উঠা থামবে না । যতক্ষণ পর্যন্ত উনার সারফেইস কিছুটা ঠাণ্ডা হওয়া শুরু না হয় । কিন্তু ততক্ষণে তিনি ২.৫ গুন বড় হয়ে যাবেন ।
কিছুকাল পর, উনার বয়স যখন ১১.৬ হলে তিনি প্রায় ছোট-খাট দানব নক্ষত্রে পরিণত হবেন । দানব হয়ে ওঠার পর উনার আর ছোট থাকতে মন চাইবে না, তাই তিনি দ্রুতগতিতে বড় হতে থাকবেন । তাতে কিছুটা বাধ সাধবে ঝড় । ১২.১ বিলিয়ন বছর বয়সে ঐ ঝড় গুলি উনার ৩০% ভর সোলার সিস্টেমে ছড়িয়ে দেবে । তবুও সূর্য মামার বড় হওয়া থেমে থাকবে না । উনি দ্রুত লাল দানব নক্ষত্রের সর্ব্বোচ্চ সাইজ অর্জন করবেন । তখন উনার বয়স হবে প্রায় ১২.২ বিলিয়ন বছর । তিনি এই সময় কিছুটা রেস্ট নিবেন , তখন উনার উজ্জ্বলতা বর্তমানের চেয়ে প্রায় ২৩০০ গুন বেশী হবে । তিনি প্রায় ১১০ মিলিয়ন বছর এই অবস্থায় থাকবেন । তারপর উনার হিলিয়ামের অবস্থা টাইট হয়ে যাওয়ায় , অক্সিজেন আর কার্বন ব্যবহার করা শুরু করবেন , আর তাই আবারো দ্রুত বড় হতে থাকবেন । মাত্র ২০ মিলিয়ন বছরে লাল দানবের ২য় পর্যায়ে চলে যাবেন । তখন তিনি প্রায় ৮০ গুন বড় হবেন , ৩০০০ গুন উজ্জ্বল হবেন । আস্তে আস্তে পেলেন্টারি নেবুলাতে পরবেন বা হবেন । তারপর বিভিন্ন প্রক্রিয়া পার হয়ে ঠাণ্ডা আর কালো হয়ে শেষ হবেন । এর ভিতর মামার আরো কাহিনী আছে , কিন্তু এত কিছু তো বলা সম্ভব না । যাইহোক, এর ভিতরে আমাদের বেচে থাকার কিছু সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে । মঙ্গল গ্রহের তাপমাত্রা একটা সময় পৃথিবীর তাপমাত্রার কাছাকাছি হবে । তখন যদি আমরা সেখানে পালিয়ে যাই, তাহলে কিছু কাল সেখানে থাকতে পারবো । কিন্তু মঙ্গল ও আমাদের মামার কবলে পরবে, তখন হয়তো সোরজগতের বাহিরে কোন গ্রহ অথবা চাদে থাকতে পারি । কিন্তু শেষ মেষ আমাদের বেচে থাকা হবে না , অপেন ইউনিভার্স আর ক্লোজ অথবা ফ্লেট ইউনিভার্স যাইহোক ।
রব্রট ফ্লোরস্ট বলেছেন , “Some say the wrold will end in fire, some say in ice” . ক্লোজ ইউনিভার্স হলে তা আগুনে গিয়ে শেষ হবে, অপেন বা ফ্লেট হলে আইসে গিয়ে শেষ হবে । এটা কে বলা হয় বিগ চিল ।
এই বিশাল বিশ্ব এ সময় বলে আসলে কিছু নেই , সময় হইতেছে জগতের গতি । এই মহাবিশ্ব এ কেন বুদ্ধি (মানুষ) সৃষ্টি হবে এই স্বল্প সময়ের জন্য , কেন আদিল ভাই কিংবা ফুয়াদ হবে । তাই আমি মনে করি এখানে আল্লাহ সুবাহানাতালার হাত আছে । সবাইকে ধন্যবাদ । আমার লেখায় ভুল কিংবা বানান ভুল থাকতে পারে । এ জন্য দুঃখিত ।
Reference : 1 Astronomy By Cynthia Phillips Ph.D, and Shana Priwer
2 Encyclopedia of astronomy Edited by Paul Murdin & Margaret Penston
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে নভেম্বর, ২০০৯ রাত ৯:৪৬