আজ ১৬ ডিসেম্বর ২০১৪ খ্রিস্টাব্দ। আজ আমাদের মহান বিজয় দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে কি হয়েছিলো তা আজ আর কারো অজানা নয়। অন্তত যে যে এই পোস্ট খানা দেখবেন তাদের অজানা নয়। যদিও মুক্তিযুদ্ধ এখন দলীয় শক্তিতে রুপান্তরিত হতে চলেছে। অনেক দেশেই ধর্ম নিয়ে রাজনীতি হয়। আর বাংলাদেশে হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে। পক্ষে বিপক্ষে হাজারো মত দ্বিমত প্রকাশিত হচ্ছে। এখন চলছে ইতিহাসকে অদস্বীকার করার যুগ। সবারই এক দাবী আমরাই সত্যিকারের ইতিহাস চলছি। তাই ইতিহাসের কচকচানি থাক। দেশ গড়ার বড় বড় গাল ভরা অঙ্গীকার আজ তোলা থাকুক। শুধু মনের মধ্যে বিজয় দিবসের আনন্দ আসুক। সেই ছেলেবেলার মত। যখন আওয়ামী, বিএনপি রাজনৈতিক মুক্তিযুদ্ধ বুঝতাম। বুঝতাম বিজয় দিবস। বুঝতাম পাকিস্তানী হানাদারদের হারিয়ে বিজয় অর্জন। মনের মধ্য অজানা আনন্দ আঁকুপাকু করতো। ভোর হতেই আম্মুকে বলতাম, জলদি ভাত দাও। স্কুলে যেতে হবে। বিজয় দিবসের মিছিলে। কোন মতে নাকে মুখে দুটো গুঁজে স্কুলে ছুটতাম। বাড়ি থেকে আমার হাই স্কুল দুই কিলোমিটার দূরে। পায়ে হেঁটেই যেতাম আসতাম।
স্কুলে যাওয়ার পর পিটি স্যার সবার রোল কল করতেন মাঠে দাঁড় করিয়ে। তারপর সারি বেঁধে লাইন ধরে উপজেলার মাঠে যাওয়া। সেখানে আশপাশের সব স্কুলের ছেলে মেয়েরা চলে এসেছে। একেক স্কুলের একেক ড্রেস। সার বেঁধে মাঠে দাঁড়িয়ে আছে। সামনে সামিয়ানা টাঙানো। উপজেলার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা দাঁড়িয়ে আছে। জাতীয় পতাকা উত্তোলন। শত শত কন্ঠে জাতীয় সংগীত গাওয়া। রক্তে কাঁপন ধরিয়ে দিতো।এই দেশ প্রেম তো ছোট বেলাই শিখেছি। একে একে গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বক্তব্য দেয়া শুরু করলেন। কি বললেন তা মাথায় উপর দিয়েই গেলো। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পা ব্যাথা হবার জোগাড়। আমি কর গুনি কয়জন আর বক্তব্য দিতে বাকী আছে। চেয়ারে বসা মানুষ গোণার চেষ্টা করি।
সবার ভাষণ শেষ হলে স্যালুট করার পালা। স্যালুট শেষ হলে কেক পাউরুটি বিলি করা হয়। এরপর বিভিন্ন রকমের ক্রীড়া প্রতিযোগীতার আয়োজন করা হতো। দুপুরে খেয়ে বিকেলে আবার যেতাম। সন্ধ্যায় সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হতো। সেখানেও থাকতাম আমি। রাত দশটা বাজলে বাড়ি ফিরে খেয়ে দেয়ে ঘুমোতে যেতাম। ঘুম আসতে বেশী সময় লাগতো না।