হঠাৎ করেই তিন দিনের ছুটি পেয়ে গেলাম। আগে কখনো যাওয়া হয়নি বলেই বন্ধু শোয়েবের সাথে পরামর্শ করে সিলেট ট্যুরের প্ল্যান করে ফেললাম।
"বিড়ম্বনা" এই শব্দটির সাথে করমর্দন করেই যাত্রার শুরু। অনলাইন টোকেন নিয়ে তিনবার টিকেট কাউন্টার থেকে প্রত্যাক্ষিত হওয়ার পর অবশেষে টিকেট কেটে ট্রেনে গিয়ে যখন দেখলাম যে দুই জনের সিট্ দুই জায়গায় বিড়ম্বনার ষোলোকলা যেন সেখানেই পূর্ণতা পেলো।
যাই হোক - অনেক চড়াই-উৎরাই পাড়ি দিয়ে দুই বন্ধু একসাথে বসে সিলেটের পথে রওনা দিলাম। অদ্ভুত এক আনন্দ কাজ করছিলো। হুট্ হাট ট্যুরের চিল যেন পুরোপুরি ই টের পাচ্ছিলাম।
প্রথম প্রথম গরম লাগলেও যতদূর এগোচ্ছিলাম ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছিলো। কিছুক্ষন গল্প, ফেসবুকিং, গান শুনা শেষে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম টের পাই নি। মাঝ রাতে ট্রেনের শো শো শব্দে ঘুম ভেঙে যায়। বাইরে তখন গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। বুঝতে পারলাম কোনো গভীর জঙ্গল ছেদ করে এগিয়ে চলছে উপবন এক্সপ্রেস। সিলেট নামক অপরিচিত গন্ডির ভেতর ঢুকে পড়ছি ভেবে ভালো লাগছিলো।
ভোর সাড়ে পাঁচটা। সিলেট স্টেশনে পৌছুলাম। ভোরের আলো তখন খুব ভালো ভাবে ফোঁটেনি। ট্রেন থেকে নেমেই এক ঝাঁক পাখির কিচির মিচির শব্দ শুনতে শুনতে মন্ত্রমুগ্ধের মতো সামনে এগিয়ে যাচ্ছিলাম।
সিলেটে ধর্মঘট , তাই সাথে সাথেই ফিরতি টিকেট কেটে নিলাম। সেখান থেকে ব্যাটারি চালিত রিক্সা নিয়ে ভোরের স্নিগ্ধ বাতাসে কীন ব্রিজ যখন পার হচ্ছিলাম মনে হচ্ছিলো প্রকৃতি যেন নিজ থেকেই আমার ভেতরটা বিশুদ্ধকরণ কাজে লেগে পড়েছে। সরাসরি চলে গেলাম দরগাহ গেট। দু চারটা হোটেল দেখে একটা মাঝারি মানের হোটেলে উঠে পড়লাম।
গোসল সেরেই নিচে নেমে নাস্তা করলাম। দরগাহ গেটে গাড়ি পার্কিং এ নতুন স্টাইল আমার বেশ ভালো লেগেছে। এখানকার গাড়ি বলেন রিক্সা বলেন সবগুলোই রাস্তার একদম মধ্যিখানে পার্ক করা থাকে। আর তার দুই পাশ দিয়ে চলন্ত যানবাহন যাতায়াত করে। এর ফলে এখানে যানজট লাগেনা বললেই চলে।
এখান থেকেই একটা সি এন জি রিজার্ভ করে নিই। প্ল্যান হচ্ছে সারাদিন এই সি এন জি দিয়ে ই ঘুরবো। . নির্ধারিত লোকেশন হচ্ছে প্রথমে বিছানাকান্দি এবং পরে রাতারগুল। ড্রাইভার এর নাম শাহবাজ মিয়া। শাহবাজ মিয়ার সাথে গল্প করতে করতে ই গন্তব্যের দিকে ছুটে চললাম। ,.....................................চলবে
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৪:০৬