মনে করুন যেকেউ আপনার বা আপনার পরিবারের কারো ক্ষতি করতে পারে বা ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ,কেউ আপনাকে সরাসরি বা কোন মাধ্যমে হুমকি দিয়েছে, আপনার মূল্যবান কোন কিছু হারিয়ে গিয়েছে বা হারানোর আশংকা হচ্ছে এমন পরিস্থিতিতে আপনি আইনের সহায়তার জন্য উক্ত আশঙ্কার বিবরণ দিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য থানায় দরখাস্ত দিলেন আর সেটাই হল জেনারেল ডায়েরী বা সাধারণ ডায়েরী (জিডি)।
এর জন্য থানায় গিয়ে কর্তব্যরত পুলিশ অফিসারের নিকট ঘটনাটা মৌখিকভাবে বা লিখিতভাবে জানাতে পারেন। জিডি করার জন্য থানাতে কোন টাকা দিতে হয় না। এর জন্য কোন ফি নেই।
যেখানে ঘটনা সংঘটিত হয়েছে তার নিকটবর্তী থানায় গেলেই দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা জিডি লিপিবদ্ধ করবেন। সংশিষ্ট বিষয়ের উপর সঠিক ও প্রয়োজনীয় বিবরণ দরখাস্ত আকারে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে সম্বোধন করে লিখে থানায় জমা দিলে হবে। জিডির বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক আইনানুগ বেবস্থা গ্রহনের জন্য আবেদন করতে হবে।
জিডিতে সাধারণত ঘটনা সংঘটিত হওয়া স্থানের নাম, সময়, সাক্ষী, সন্দেহকারী ব্যক্তির নাম, ঠিকানা, সন্দেহের কারণ ইত্যাদি উল্লেখ করতে হয়। আর শেষে থাকবে জিডিকারীর নাম, স্বাক্ষর, পিতার নাম, ঠিকানা ও তারিখ।
পুলিশের সাহায্য নিয়েও জিডির জন্য দরখাস্ত লিখে নিতে পারেন। প্রতেক জিডি এন্ট্রির একটি নির্দিষ্ট নাম্বার ও তারিখ থাকে। লিখিতভাবে জিডি করার ক্ষেত্রে লিখিত দরখাস্তটির তিনটি অনুলিপি থানায় দাখিল করা হলে, কর্তব্যরত পুলিশ কর্মকর্তা এগুলোর একটি অনুলিপি থানায় রেকর্ড হিসেবে সংরক্ষণ করবেন। অপর একটি অনুলিপি জিডি এন্ট্রির নাম্বার ও তারিখ প্রদান মোতাবেক সিলমোহরাঙ্কিত অবস্থায় দরখাস্তকারীকে ফেরৎ দিবেন। তৃতীয় অনুলিপিটি তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তাদের জন্য রাখা হয়।
প্রত্যেক জিডি এন্ট্রির বিষয়কে গুরুত্ব অনুযায়ী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত করার নিয়ম আছে। তবে যে সব জায়গায় অনেক বেশি পরিমাণে জিডি হয়ে থাকে সে সকল স্থানে থানার পক্ষে সব জিডির বিষয় তদন্ত করা সম্ভব হয় না। তবুও থানায় কোন জিডি করার পর যদি কোন অপরাধ সংঘটিত হয় সে ক্ষেত্রে জিডি এন্ট্রিটি অপরাধীর বিরদ্ধে অপরাধ প্রমানে অত্যন্ত সহায়ক ও উপযোগী হিসেবে বিবেচিত হয়।
যাহোক, মনে রাখবেন জিডি করা মানে কোন মামলা করা না। মামলা হয় কোন অপরাধ ঘটে গেলে। আর কোন ঘটনা বা অপরাধ এখনো সংঘটিত হয়নি কিন্তু ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে বা কাউকে হুমকি দেওয়ার কারণে শান্তি বিনষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিলে সে ক্ষেত্রেই জিডি এন্ট্রি করা আবশ্যক হয়ে পরে যাতে অপরাধ সংঘটনকারী এটা থেকে সতর্ক হয়ে যায়।
জিডি হল আইন সহায়তাকারী সংস্থার সাহায্য পাবার প্রথম পদক্ষেপ।