somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি আজগুবি জন্মদিন !!!!!!

১১ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১১:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ছোটোবেলা থেকেই আমার একটু পালিয়ে বেড়ানোর স্বভাব আছে। একটা সময় কিছু হলেই বাসা থেকে পালিয়ে যেতাম। এরকমও হয়েছে, বাসার ছাদে পানির টাংকির নিচে পালিয়ে আছি, আর আমাকে সারা দুনিয়া তোলপাড় করে খোজা হচ্ছে। অনেক কষ্টে খুজে পাওয়ার পর আবার আম্মু ধরে দুই তিনটা কিল বসিয়ে দিত। বড় হওয়ার সাথে সাথে অভ্যাসটা যাওয়ার কথা ছিল। হয়তো কিছুটা গিয়েছিলোও। কিন্তু এখনও কেউ কিছু বললে আর সেই সব লোকের মুখোমুখি হতে ইচ্ছা করে না। যে কারণেই হোক, ব্লগটা ছেড়ে দেবার চিন্তা করছিলাম।

ব্লগ ছাড়াতে সবচেয়ে বেশী কষ্ট পেয়েছিল সম্ভবত চানাচুর আর অয়ন। এই দুই লোক, সময় পেলেই সাড়ে চার হাত লম্বা দীর্ঘশ্বাস ফেলে ব্লগে আসতে বলে। আমারো ব্লগ ছাড়ার মাসখানেকের ভিতর বেশ হাসফাস লাগা শুরু করল। কিন্তু ফিরতে লজ্জা লাগে। কেন লজ্জা লাগে জানেন? আমার ফেসবুকের অনেক বন্ধুকে দেখি হঠাৎ স্ট্যাটাস মেরে বলে, “ বিদায় বন্ধুরা, বিদায়! এটাই ফেসবুকে কাটানো আমার শেষ দিন।” কিন্তু ২৪ ঘন্টা না কাটতেই দেখা যায় আবার ফেসবুকে আবার একটিভ হয়ে গিয়েছে। এই ধরনের লোকগুলোকে আমার বেশ হাস্যকর লাগে। কিন্তু দুঃখের ব্যাপার হল, আমি সেই হাস্যকর লোকদের দলভুক্ত হতে না চাইলেও আমাকে হতে হচ্ছে। আমি এই একটা কাজই বেশ আনন্দ নিয়ে করি। এটা থেকে আমি আলাদা হতে পারছিলাম না।
তারউপর চানাচুর আমার জন্মদিন উপলক্ষে এমন পোস্ট দিয়েছে আর তাতে অনেকে যে কমেন্ট দিয়েছে তাতে মনে হচ্ছে ব্লগ ছেড়ে আসলেই বেকুবি হয়েছে। নিজেকে চরম এগ্রিকালচার টাইপ মানুষ মনে হচ্ছে।

যা হোক, আমার এবারের জন্মদিনের বিস্তারিত জানিয়ে ফেলি।

১।এই প্রথম আমি আম্মুকে ছাড়া জন্মদিন করলাম। এত বড় ধাড়ি মেয়ের এইসব কথা ন্যাকামী লাগতে পারে। কিন্তু ঘটনা আসলেই সত্য। আম্মু তার কাজিনদের সাথে কুমিল্লা বেড়াতে গিয়েছিল। সকাল বেলা আম্মুর কাছ থেকে উইশ নিতে ফোন দিয়ে শুনি সে আর তার কাজিনরা কচি খুকির মত চিৎকার-চেচামেচি করছে। আমি আর কিছু না বলে ফোন রেখে দিলাম। ঘন্টাখানেক পর সে ফোন দিয়ে উইশ করল আর সাথে এই দাবীও জানালো যে আমার জন্মদিনের ব্যাপারটা নাকি তার আগেই মনে ছিল। X((

২। চানাচুরে সাথে আজ চাওমিন খাওয়ার প্লান ছিল। ভেবেছিলাম বসুন্ধরা সিটিতে খাব আর সিনেমা দেখব। ওখানে গিয়ে দেখি বন্ধ। :-*দুই গাধী ভাবলাম নিউ মার্কেটে গিয়ে কিছু কেনাকাটা করি। একবারও মাথায় ঢুকল না যে আজ ওটাও বন্ধ। নিউ মারকেট বন্ধ দেখে ভাবলাম ধানমন্ডি সাতাশের দিকে যাই। যেই ওদিকে যাওয়ার জন্য রিক্সায় উঠলাম ওমনি দেখি ঢাকা কলেজের ঐদিকে বিশাল গন্ডগোল শুরু হয়েছে।:-* রিক্সাওয়ালা মামা অনেক ঘুরিয়ে ফিরিয়ে আমাদের সাতাশ নম্বরের দিকে নিয়ে চলল। সাতাশ নম্বরে গিয়ে চানাচুরকে বললাম- এইবার গাধার সার্টিফিকেটটা কোথাও থেকে জোগার করা দরকার। :Pকারণ সাতাশ নম্বরেও বেশীর ভাগ দোকান বন্ধ। আর পিৎজা হাট-কেএফসিতে খেয়ে আমার বা চানার কারোরই ভালো লাগে না। দামের সাথে খাবারের সামঞ্জস্য পাইনা ঐ জায়গাগুলোতে।
আবার রিক্সা ঘুরিয়ে সিটি কলেজের ওখানের স্টারে গেলাম। কাচ্চি বিরিয়ানী অর্ডার দিলাম। সেই জঘন্য কাচ্চি। এত জঘন্য কাচ্চি আমি গত তিন বছরে খাইনি। কিন্তু চানাকে দেখলাম বেশ আমোদ করেই খাচ্ছে। বেচারী হয়তো সারা দুনিয়া ঘুরে বেশ ক্লান্ত ছিল। খেয়েদেয়ে মনে হল যে পরিমানে খেয়েছি তাতে নিশ্চিত দুই কেজি ওজন বেড়ে যাবে। তাই দুইজন হাটা শুরু করলাম। হেটে হেটে স্টার থেকে ধানমন্ডি লেকে পাড়ে এসে বসলাম। ও আল্লাহরে ধানমন্ডি লেকে কি বাতাস!!!! :D লেকের বাতাসে পেটের বিরিয়ানী হজম হল। ভাবলাম, মামার বাসায় কিছু কাজ আছে, ওটা সেরে আসি। আবার চানার সাথে হাটা শুরু করলাম। কথা বলতে বলতে হাটতে-হাটতে খেয়াল হল আমরা আবার ধানমন্ডি সাতাশ নম্বরে চলে এসেছি। এত গাধামী এক দিনে কিভাবে একটা মানুষ করে?X((
যা হোক, একটা রিক্সা নিয়ে মামার বাসায় গিয়ে মামীর সাথে পটপট করে আবার বের হয়ে আসাদগেট আসলাম। আড়ং থেকে কিছু কেনাকাটা করে বাসে ঝুলে ঝুলে বাসায় ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা বেজে গেল।

এত বিস্তারিত বলার কারণ যেটা সেটা হল- আজকের জন্মদিনের মত আজগুবি আর বেকুবমার্কা জন্মদিন আর পালন করিনি।:D সারাটা দিন যেখানেই গিয়েছি সেখানেই ঝামেলা হয়েছে। তারপরেও কেন জানি সেগুলি গায়ে লাগেনি। বরং কেমন এডভেঞ্চারাস লেগেছে। B-)

সব কিছু আনন্দময় ছিল, অনেক বন্ধুদের মেসেজে ফোন ইনবক্স ভরে গিয়েছে। কিন্তু তারপরেও একজন ভাল বন্ধুকে খুব মিস করেছি। গত জন্মদিনের সবচেয়ে সুন্দর উইশটা যে বন্ধু করেছিল সে হয়তো এবার ভুলেই গিয়েছে যে আজকে আমার জন্মদিন।
যাই হোক, বন্ধুটি ভালো থাক। সব বন্ধুরা ভালো থাক। সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ শুভেচ্ছা জানানোর জন্য। বিশেষ করে চানাচুরকে যে জন্মদিনের প্রথম প্রহর থেকে শুভেচ্ছা আর ভালোবাসার ভেলায় ভাসিয়ে নিয়েছে । আইলাভিউ চানাভাই!!!!!








সর্বশেষ এডিট : ১১ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১১:৪১
৪০টি মন্তব্য ৪০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিচারের জায়গা না পেলে মানুষ প্রেত হয়ে ওঠে

লিখেছেন শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু, ১২ ই মে, ২০২৫ সকাল ১১:৩৯


(সামাজিক অবিচার, রাষ্ট্রীয় অনুপস্থিতি এবং আন্ডারওয়ার্ল্ড কাঠামোর মধ্যে সাধারণ মানুষ কীভাবে হারিয়ে যায়।)

মানুষ যখন বারবার অবিচারের শিকার হয়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

=একদিন এসো সন্ধ্যে ফুরোলেই=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১২ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৩:৪৫



ভালোবাসা ছড়ানো পাতায় পাতায়, সবুজাভ স্নিগ্ধ প্রহর আমার
এখানে উঁকি দিলেই মুগ্ধতারা চুয়ে পড়ে টুপটাপ;
ধূসর রঙ প্রজাপতিরাও এখানে রঙিন ডানায় উড়ে,
কেবল অনুভূতির দোর দিতে হয় খুলে, চোখগুলো রাখতে হয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

চীনের জে-১০ যুদ্ধবিমান কোনো চকচকে ল্যাব বা বিলাসবহুল ফ্যাক্টরিতে জন্মায়নি

লিখেছেন নাঈম আহমেদ, ১২ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৪:২৬

চীনের জে-১০ এর পেছনেও রয়েছে সেই ত্যাগ আর সংকল্পের গল্প—
১: গবেষণা ও উন্নয়ন (R&D) দলের অক্লান্ত পরিশ্রম।
২: বাইসাইকেলে চেপে কাজে যাচ্ছেন প্রধান প্রকৌশলী সু চিশৌ।
৩: প্রথম উড্ডয়নের পর কেঁদে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Bangladesh bans ousted PM's Awami League under terrorism law

লিখেছেন মেঠোপথ২৩, ১২ ই মে, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৫৬





হায়রে এরেই বলে কর্মফল। ১৭ টা বছর গুম , খুনের মাধ্যমে এক ভয়ের রাজ্য তৈরী করে কেড়ে নেয়া হয়েছিল মানুষের বাকশক্তি। চোখ, কান, মুখ থাকতেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিন গেলে আর দিন আসে না ভাটা যদি লয় যৌবন

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১২ ই মে, ২০২৫ রাত ১০:২৬


এমন কোনো ইস্যু আছে, যা নিয়ে জাতি পুরোপুরি একমত? ৫০%ও একমত এমন কোনো বিষয় চোখে পড়ে না। একপক্ষ রবীন্দ্রনাথের গান জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে মনেপ্রাণে ধারণ করে, আরেক পক্ষ বদলাতে চায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×