আমি আর তুমি ঈশ্বরের সেই খেলার পুতুল,
যাদের তিনি নিজ হাতে গড়েছিলেন সৃষ্টির প্রথম সকালে।
তারপর মাটির পুতুল দুটির মাঝে প্রাণের সঞ্চার করলেন।
আমাদের মাঝে যখন প্রাণের স্পন্দন সৃষ্টি হল
আমরা চোখ পিটপিট করে তাকালাম একে অন্যের দিকে
বিধাতা বললেন,দুজন কেবল দুজনার।
তারপর আমাদের ছেড়ে দিলেন স্বর্গের পবিত্র উদ্যানে।
আর বললেন,দুজন দুজনকে এমন ভাবে চিনে নাও যেন সহস্র
শতাব্দী পরেও চিনে নিতে পারো একে অপরকে।
আমরা স্বর্গের উদ্যানে লুকোচুরি খেলতাম;
তুমি কখনও এমন জায়গায় লুকাতে যে আমি তোমাকে খুজে পেতাম না,
আবার কখনও আমি তোমাকে ফাঁকি দিয়ে লুকিয়ে থাকতাম স্বর্গের কোনো দ্বারের পিছনে।
আর সেই বিধাতা আমাদের লুকোচুরি খেলা দেখে শুধু হাসতেন।
কে জানে কি ছিল বিধাতার মনে?
অতপর বিধাতা একদিন আমাদের স্বর্গদ্বারে নিয়ে এসে বললেন-
যাও,ওই সোপান বেয়ে মর্ত্যের বুকে নেমে যাও।
আমরা একই সাথে স্বর্গের সোপান বেয়ে মর্ত্যে নামছিলাম,
কিন্তু হঠাৎ খেয়াল করলাম তুমি আর আমি বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছি!
আশ্চর্য,বিধাতা এ কোন খেলা শুরু করলেন আমাদের নিয়ে?
তারপর থেকে এই নিঃসঙ্গ আমি মর্ত্যের বুকেই আছি।
এই কঠিন মাটির বুকে আমি আজো আমার হৃদয়টা সংরক্ষণ করেছি।
আমি কিন্তু তোমাকে এই পৃথিবীতে একদম খুজে বেড়াই না!
আমি জানি,যে বিধাতা আমাদের বিচ্ছিন্ন করেছিলেন,
তিনিই আমাদের আবার মিলিত করবেন।
পৃথিবীটা বড্ড ছোটো আর গোলাকার,
হয়তোবা এই বিবর্ণ পৃথিবীর কোনো পথ ধরে
তুমি আর আমি দু’জনই হেঁটে যাই,
কিন্তু আমরা একে অপরকে দেখিনা।
কি অদ্ভুত এই পৃথিবী বাস!
আমি তোমার জন্যে ভীষনভাবে প্রতীক্ষা করি,হয়তো তুমিও।
হয়তো বিধাতার এই খেলা একদিন সাঙ্গ হবে,
হয়তোবা তিনি আবার আমাদের একত্র করবেন।
আমি সেদিনেরই অপেক্ষায় আছি।