
বুধবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে বন্দর ডাক বাংলোয় এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী বলেন, "তিনটি জেটিতে কাজ শুরু হয়ে গেছে। আশা করছি, অন্য জেটিগুলোতেও রাত ৮টার মধ্যে কাজ শুরু হবে।"
মূল বন্দর এলাকায় ১৬টি জেটির মধ্যে ১০টি কন্টেইনার জেটি এবং ছয়টি সাধারণ জেটি। এর মধ্যে ডক বন্দর শ্রমিকদের সঙ্গে বার্থ অপারেটরদের দ্বন্দ্বের জের ধরে সোমবার ছয়টি কন্টেইনার জেটি ও সাধারণ ছয় জেটিতে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এর মধ্যে তিনটি সাধারণ জেটিতে পণ্য খালাস শুরু হয়েছে বলে মন্ত্রী জানান।
মঙ্গলবার থেকে বুধবার বন্দর কর্তৃপক্ষ, বার্থ অপারেটর ও শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেও সমস্যার সমাধান করতে না পেরে সকালে মন্ত্রী সেনা মোতায়েনের কথা জানান। বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে সেনা সদস্যরা বন্দরে অবস্থান নেয়।
শাজাহান খান বলেন, "বন্দরের নিয়ম অনুযায়ীই জেটিগুলোতে কাজ চলবে। সেনা সদস্যরা শৃঙ্খলা রক্ষায় সহায়তা করবে।" বন্দর সচলের জন্য সেনা সদস্যদের সহায়তা করতে শ্রমিকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
এর আগে দুপুরে বন্দরে মিছিল-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে পুলিশ। চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার আবুল কাশেম সাংবাদিকদের জানান, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে।
তবে নিষেধ উপেক্ষা করে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে 'ডক শ্রমিক-কর্মচারী সমন্বয় পরিষদ'র ব্যানারে আন্দোলনরত শ্রমিকরা মিছিল বের করলে রবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে এবং লাঠিপেটা করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ।
বন্দর এলাকায় পৌনে এক ঘণ্টা ধরে চলা সংঘর্ষের সময় আটক করা হয় বেশ কয়েকজন শ্রমিককে। বিকাল সোয়া ৫টার দিকে শ্রমিকদের হটিয়ে দেয় পুলিশ।
মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার তানভীর আরাফাত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "কয়েকজন শ্রমিককে আটক করা হয়েছে। তাদের বন্দর থানায় রাখা হয়েছে।" কতজনকে আটক করা হয়েছে, তার সঠিক সংখ্যা জানাতে পারেননি তিনি।
সেনা মোতায়েনের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে ডক বন্দর শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, "এটা সরকারের ব্যাপার, সরকার সিদ্ধান্ত নেবে। আমরা চাই, আমাদের দাবিগুলো মানা হোক।"
দাবি পূরণের আশ্বাস মন্ত্রী দিয়েছেন বলে তিনি জানান।
শ্রমিকদের দাবিগুলো হচ্ছে- বন্দর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক তাদের পরিচয়পত্র দেওয়া; তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের মধ্যে যাচাই-বাছাইয়ের পর যাদের নিয়োগের উপযুক্ত বিবেচনা করা হয়েছে, তাদের পুনর্বহাল; শ্রমিক কল্যাণে বিভিন্ন সুবিধা বাড়ানো।
তবে এতদিন ডক শ্রমিক ফেডারেশনের ব্যানারে আন্দোলন চললেও এখন 'ডক শ্রমিক-কর্মচারী সমন্বয় পরিষদ' গঠন করে মিছিল-সভা করছে শ্রমিকরা। ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল আহাদ মঙ্গলবার শ্রমিকদের হাতে লাঞ্ছিত হন। শ্রমিকদের অভিযোগ, দুই নেতা বার্থ অপারেটরদের 'স্বার্থ' দেখছেন।
বার্থ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেন সেলিম মঙ্গলবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম বলেন, "তারা (শ্রমিকরা) কোনো নেতাকে মানছেন না।"
স�প্রতি বন্দরে ছয়টি বার্থ অপারেটর প্রতিষ্ঠানকে সরকার কাজের অনুমতি দেয়। তবে শ্রমিকরা তাদের কাজ করতে বাধা দিয়ে আসছে। মঙ্গলবার বিকালে বার্থ অপারেটররা কাজ শুরু করতে চাইলেও শ্রমিকদের বাধায় ব্যর্থ হয়।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এমসি/এজে/এমআই/১৮২৪ ঘ.
---------------------------------------------------------------------
সবাই ডান্ডা বুঝে।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




