এই লাল সবুজ পতাকাটার জন্যই যুদ্ধ করেছি । মা-বাবা ছেড়ে ভারতে চলে গিয়েছিলাম সশস্ত্র প্রশিক্ষন নিতে । এই পতাকাটার জন্যই রাতের পর রাত , মাইলের পর মাইল যুদ্ধ ক্ষেত্রে সশস্ত্র অবস্থায় দাপিয়ে বেড়িয়েছি । বুকে ছিল লাল সবুজ পতাকা । এই পতাকাটা ছিল আমার জীবনের চেয়ে ও অনেক মূল্যবান । ২/৩ দিন ভাত না পেয়ে শুধু চিড়া, চাল ভাজা,মুড়ি খেয়ে মুক্তিযুদ্ধ করেছি শুধু মাত্র এই লাল সবুজ পতাকাটার জন্য। রনাঙ্গনে শত্রুকে গুলি করে ঝ্ঝড়া করে ফেলেছি শুধু েএই লাল নীল পতাকাটার জন্য । এই পতাকাটাকে আমি এত ভালবাসি যে, তা লিখে বুঝাতে পারবো না । এই লাল সবুজ পতাকা আমার দেশ , আমার অহংকার, আমার গর্ব, আমাদের সার্বভৌমত্ব , আমাদের বেচে থাকার শক্তি । পতাকাটার জন্য যুদ্ধ ক্ষেত্রে আহত হয়ে নিজের শরীর থেকে রক্ত ঝরিয়েছি , আহত হয়ে কাতরাতে কাতরাতে অজ্ঞান হয়ে যেতাম । সঠিক সময়ে চিকিৎসা পাইনি । সব কিছু সহ্য করেছি এই লাল সবুজ রং এর পতাকার জন্য । নিজে আহত হয়ে পড়ে রয়েছি, কিন্তু লাল সবুজ পতাকাকে মাটিতে ফেলে দেই নাই । তাকে রেখেছি আমার মাথার উপর বা আমার বুকের উপর ।
এই লাল সবুজ পতাকা ছিল যুদ্ধ করে যাওয়ার অঙ্গীকার, আমার শক্তি । আমার মায়ের ভালবাসা । পতাকার দিকে তাকালেই আমার মা বাবার প্রতিচ্ছবি দেখতে পেতাম । যুদ্ধ করার সাহস পেতাম ।
স্কুলের ছেলে মেয়েরা এসেম্বলীতে যখন পতাকা উড়িয়ে “ আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি “ বলে জাতীয় সঙ্গীত গায়, তখন আমি দূর থেকে হাসি আর কাদি ।
আমার জীবনে জাতীয় সঙ্গীত ছিল উর্দুতে.... পাক ছার জমীন ছাত বাত.... আর তোমরা পেয়েছো, আমার সোনার বাংলা, সাথে একটি গর্বিত লাল সবুজ পতাকা ।
এবার তোমরা বলো, এই পতাকাকে কিভাবে রাখবে ? কোথায় রাখবে ? কিভাবে সম্মান দিবে ?