এই সেদিন শাহবাগ দিয়ে কাঁটাবনের দিকে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ চোখ আটকে গেল বিশাল এক বিলবোর্ডে। আমাদের দেশের গর্ব , বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার , সাকিব আল হাসান হাসিমুখে দাড়িয়ে আছে একটি নাম না জানা বিস্কুটের প্যাকেট হাতে! খুব হাসি পেল। বাসায় ফিরে টিভি দেখতে বসে দেখলাম এরকম আরও অনেক নাম না জানা ব্র্যান্ডের হাস্যকর বিজ্ঞাপনেও সাকিব আল হাসানের সরব উপস্থিতি! কেমন যেন একটা কৌতূহল হওয়ায় ল্যাপটপ নিয়ে বসলাম আর আবিষ্কার করলাম সাকিব নাকি প্রায় ৫০ টি ব্র্যান্ডের এম্বাসেডর!!
আমি বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিবের বিশাল ভক্ত। সেই ২০০৬ এর জিম্বাবুয়ে সিরিজ অথবা ২০০৮ এ নিউজিল্যান্ড সিরিজে সাকিবের পারফরমেন্স দেখেছে পুরো বিশ্ব। তৈরি হয়েছে তার বিশাল এক ইমেজ। সাকিব এখন পাড়ার অথবা ঘরোয়া লিগের কোন খেলোয়াড় না যে শুধু টাকার জন্য নাম না জানা বিস্কুট, টুথব্রাশ এইসব প্রোডাক্ট এর প্রচারণায় অংশ নেবেন। এটা যেমন তার ইমেজ এর সাথে জড়িত তেমনি দায়িত্বহীনতারও প্রমাণ।
মনে পড়ে গেল শচীন তেন্ডুলকার কে নিয়ে প্রচলিত একটি গল্প। ভারতের খুব নামকরা এবং জনপ্রিয় একটি ব্র্যান্ডের বিজ্ঞাপনে অংশ নিতে অনুরোধ করা হয়েছিল তাকে। অনেক টাকা অফার করা হয়েছিল কিন্তু তিনি না করে দিয়েছিলেন। কারণটা হল ওই ব্র্যান্ডের প্রোডাক্ট নাকি তিনি ব্যবহার করেছেন কিন্তু তার ভাল লাগেনি!! এটাই হল দায়িত্বশীলতা। এটা ঠিক যে সব মানুষেরই অধিকার আছে স্বাধীনভাবে অর্থ উপার্জন করা কিন্তু সাকিবের মাথায় রাখা উচিত যে সে এখন দেশের সম্পদ এবং অনেক অনেক মানুষের রোল মডেল। তার নিজের ব্যক্তিত্ব এবং ইমেজ তার নিজেরই তৈরি করতে হবে এবং তা ধরেও রাখতে হবে।
এবার একটা উদাহরণ দেয়া যাক। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের প্রায় সবগুলো বুথে গেলেই দেখা যায় সাকিবের ছবি। এই ব্যাংকটি একটি মাল্টি-ন্যাশনাল ব্যাংক এবং তারা বাংলাদেশে Instabuys, Card Cheque এরকম আরও অনেক নতুন নতুন আধুনিক সেবা চালু করেছে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও। সাকিব যদি স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের ব্র্যান্ড এম্বাসেডর হয়ে থাকে তবে সে আবার কিভাবে নাম না জানা বিস্কুটের হাস্যকর বিজ্ঞাপন করতে পারে!!
সাকিবের একজন বড় ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে আমার আশা থাকবে সাকিব তার নিজের ইমেজ বজায় রাখবেন এবং শুধু কিছু অর্থের জন্যে নিজের এই ইমেজটা নষ্ট করবেন না।