somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একজন মুক্তমনা স্মার্ট ও জনৈক ইসলামিক মনের মানুষের কথোপোকথন (বাসে জ্যামে আটকা পড়ে), না পড়লে মিস করবেন। )

১২ ই এপ্রিল, ২০১২ সকাল ১১:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(ট্র্যাফিক জ্যামে আটকে পড়া একটি বাসে...) -

মুক্তমনাঃ শালার মানুষ আর মানুষ! মানুষে গিজগিজ করছে। এই হুজুরগুলা যত বদমাইশ! বলে যে মুখ দিবেন যিনি, আহার দিবেন তিনি। এখন বুঝো ঠ্যালা! বেকুব ধর্মান্ধগুলা একটার পর একটা পয়দা করে, আর দেশের যত সমস্যা!

ইসলামিক মনের মানুষঃ ভাই, আপনি বলতে চাচ্ছেন, জনসংখ্যা বেড়ে গেছে, এর জন্য ইসলাম দায়ী?

মুক্তমনাঃ তা নয়ত কি?

ইসলামিক মনের মানুষঃ কিন্তু... আপনার কথা সত্য হলে ত আরবের লোকসংখ্যা পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি হওয়ার কথা। কারণ ইসলাম ত প্রথম ঐদেশেই শুরু হয়েছে। অথচ দেখেন, বাংলাদেশের চেয়ে ১০ গুনের বেশি বড় হওয়া সত্ত্বেও, সউদি আরবের লোকসংখ্যা ৩ কোটিও নয়। অন্য আরব দেশগুলোর অবস্থাও তাই!

(ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলেন মুক্তমনা... PUBLIC এর কান খাড়া!)

ইসলামিক মনের মানুষঃ আমি বলি কি, এই উপমহাদেশে ত হিন্দু ধর্মের প্রভাব ছিল দীর্ঘদিনের। হিন্দুদের মূর্তিগুলোই কিংবা মন্দিরের ভাস্কর্যগুলোই দেখেন! মা কালীর মূর্তি অর্ধউলঙ্গ। আর কৃষ্ণের মামীকে পটানোর কথাও ভুলবার নয়। ধর্মের কোন প্রভাব থাকলে সেটা হিন্দু ধর্মের হতে পারে, ইসলামের নয়। কামাসুত্রের প্রভাবেই এ অঞ্চলের মানুষরা অবাধ যৌনাচার করে বেশি মানুষ পয়দা করেছে, কি বলেন?

মুক্তমনাঃ আপনাদের মোল্লাদের এই এক সমস্যা। ইসলামের কোন সমালোচনাই শুনতে পারেননা। অন্য ধর্মকে গালাগালি করেন।

ইসলামিক মনের মানুষঃ গালাগালি করলাম কই, আপনি ধর্মের প্রভাব খুঁজলেন, আমি শুধু কোন ধর্মটার প্রভাব থাকতে পারে সেটা খোঁজার চেষ্টা করলাম।

মুক্তমনাঃ আচ্ছা বলেন, ইসলামে বলা আছেনা, সবাইর রিযিক আল্লাহর হাতে?

ইসলামিক মনের মানুষঃ হ্যাঁ।

মুক্তমনাঃ তাহলে বাংলাদেশের মানুষ, আফ্রিকার মানুষ না খেয়ে মরে কেন?

(PUBLIC এবার নড়েচড়ে বসল)

ইসলামিক মনের মানুষঃ আচ্ছা আপনি কখনও শুনেছেন, একটা কাক না খেয়ে মারা গেছে, বা দেখেছেন কোন প্রাণী না খেয়ে মারা গেছে, বাঘ, পিঁপড়া? দুর্ভিক্ষের কথা আলাদা।

মুক্তমনাঃ কখনও শুনিনি অবশ্য।

ইসলামিক মনের মানুষঃ অনেক প্রাণী মানুষের চেয়ে সংখ্যায় বেশি, তারপরেও এদেরকে ক্ষুধায় কষ্ট পেতে হয়না, তাইলে মানুষ না খেয়ে মরে কেন, বলুন ত?

মুক্তমনাঃ সেটাই তো আপনাকে জিগ্যাস করছি। (pinch মেরে) কোরানে না সব উত্তর দেয়া আছে??

(তার কথায় কান না দিয়ে)

ইসলামিক মনের মানুষঃ মানুষ যে অভুক্ত থাকছে এর কারণ এই না যে, আল্লাহ রিযিক দেয়নাই, কিংবা কম দিছে, বরং আল্লাহ প্রয়জনের চেয়ে অতিরিক্ত রিযিক দিছেন। মানুষের কাছে খাবার পৌছায়না SYSTEM এর অব্যবস্থাপনার কারণে। ফখরুদ্দিনের সময় বাংলাদেশে খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছিল, কিন্তু সেই বছরই বাংলাদেশ পাকিস্তানে চাল রপ্তানি করেছিল, অথচ দেশের মানুষ চাল পায়না। ভারত চাল নিয়া চালবাজি করল। সে বছর সোমালিয়ার মানুষ মাটির পিঠা খেয়ে ক্ষুধা মিটিয়েছিল। ২০০৭ সালে বিশ্বে খাদ্য উৎপাদন হয়েছিল, ২.১৩ বিলিয়ন টন, আর চাহিদা ছিল ১.০১ বিলিয়ন টন। তাও মানুষ না খেয়ে ছিল কেন??? কারণ বড় বড় কোম্পানি গাড়ির বিকল্প জ্বালানি তৈরির জন্য আন্তর্জাতিক বাজার থেকে খাদ্য শস্য সরিয়ে ফেলেছিল, আপনার নিশ্চয়ই মনে আছে, ঐ সময় তেলের দাম বেড়ে গিয়েছিল? আর ২০০৮ সালে ধারনা করা হয়েছিল যে খাদ্য উৎপাদন হবে ২.৩ বিলিয়ন টন যেখানে চাহিদা ছিল মাত্র ১.৫ বিলিয়ন টন। জাতিসংঘের FAO এর তথ্যমতে পৃথিবীতে যে পরিমাণ মাটি, পানি, বায়ু আছে, তা সঠিকভাবে কাজে লাগালে এখনকার জনসংখ্যার ১০ গুণ মানুষের খাদ্য উৎপাদন সম্ভব। এই হল কাহিনী। এবার বলেন এটা কি আল্লাহর দোষ, না মানুষের? আল্লাহ তো ঠিকই মানব্জাতির জন্য পর্যাপ্ত খাবার দিয়েছেন, সে খাবার সঠিকভাবে বণ্টনের জন্য ইসলামী অর্থনৈতিক ব্যবস্থাও দিয়েছেন, কিন্তু মানুষ পুঁজিবাদী ব্যবস্থার কারণে খাবার না পেয়ে স্রষ্টাকে দোষ দেয়। লোভী পুঁজিবাদী মানুষগুলার কারণে এবং ক্ষমতাশীলরা নিজের স্বার্থের জন্য এই হতভাগা মানুষগুলার মৃত্যুর জন্য দায়ী। ইসলামী খিলাফত ব্যবস্থা থাকলে কোন মানুষকে না খেয়ে মরতে হতনা।

(ব্যঙ্গ করে)

মুক্তমনাঃ তাই নাকি? খিলাফতে মনে হয় সবাই শান শওকতে ছিল??

ইসলামিক মনের মানুষঃতা ছিলনা, কিন্তু at least না খেয়ে মরে নাই, খলীফা উমর ইবন আব্দুল আযিয যাকে ২য় ওমর বলা হয়, তার সময়ে যাকাত নেয়ার মত লোক খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মুক্তমনাঃ ঐ সময় মানুষ কম ছিল, তাই খাওয়ার সমস্যা হয়নি, এই যুগে মানুষ বেশি, জমি কম।

ইসলামিক মনের মানুষঃমানুষ কোন সমস্যা না! এই যুগে আল্লাহ Technology দিয়েছেন, যার ফলে মানুষ ১ মণের জায়গায় ১০ মণ উৎপাদন করতে পারে। প্রত্যেক যুগেই তো আগের যুগের চেয়ে লোক বেশি ছিল। শায়েস্তা খাঁর গল্প আমরা শুনি। তো তার যুগের লোক ও তো আগের যুগের চেয়ে বেশি ছিল, তাহলে? আসল ব্যপার হচ্ছে ব্যবস্থা। আর তাছাড়া আরবে তো কৃষিজমির চেয়ে মরুভুমি বেশি, তাহলে? ওরা তো ঠিকই রিযিক পাইত, আজকে আফ্রিকার মানুষ এই উপমহাদেশের চেয়ে কম, জমিও আমাদের চেয়ে বেশি, সম্পদও বেশি, কিন্তু আমাদের অবস্থা তো তাদের চেয়ে ভাল।সুতরাং জনসংখ্যা কোন factor না। আসল ব্যপার হল, ইসলামী অর্থনৈতিক ব্যবস্থা মানুষের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানের নিশ্চয়তা দেয়। পুঁজিবাদী গণতন্ত্র আর সাম্যবাদী সমাজতন্ত্র মানুষের সাথে ধোঁকাবাজি করে।

মুক্তমনা (রেগেমেগে): আরবের কথা বাদ দেন! বাংলাদেশের জনসংখ্যা সমস্যা Islam দিয়ে সমাধান করবেন ক্যামনে?

ইসলামিক মনের মানুষঃ আল্লাহ কি ‘বাংলাদেশ’ নামক কোন রাষ্ট্র শেইখ মুজিব বা জিয়ার নামে রেজিস্ট্রি করে দিছে?

(ভ্যবাচ্যাকা খেয়ে) মুক্তমনাঃ মানে?

ইসলামিক মনের মানুষঃ মানে, আল্লাহ কি বলছেন যে, ১ লাখ ৪৭ হাজার ৫৭০ বর্গ কিমির এই জায়গা বাংলাদেশ নামে মুজিবরে দেয়া হল, যার জনগণ হতে হবে ১৬ কোটি, এর বেশি হওয়া যাবেনা?

মুক্তমনাঃ কি বলতে চান?

ইসলামিক মনের মানুষঃ বলতে চাই, আল্লাহ এ পৃথিবী মানবজাতির জন্য বানিয়েছেন। তিনি কাউকে ভাগজোখ করে কোন দেশ দেন নাই। পৃথিবীতে অনেক খালি জায়গা পড়ে আছে। আজ যদি মুসলিম দেশগুলাই সব এক থাকত আর ইসলামী ব্যবস্থা থাকত, যেরকম খিলাফতের সময় ছিল, চিন্তা করেন একবার, মরক্কো থেকে ইন্দোনেশিয়া, তাহলে তো মনে হয়, আমি আপনি কয়েক বিঘা জমির মালিক থাকতাম। জনসংখ্যা নিয়ে tension করতে হতনা।

মুক্তমনাঃ আপনি কি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে? রাষ্ট্রদ্রোহের মত কথা বলছেন!

ইসলামিক মনের মানুষঃ আপনি সমাধান চাইলেন দিলাম, এখন এ কথা বলছেন ক্যান? আমাদের সমাধান দরকার। অন্ধ আবেগ নয়। আবেগ দিয়ে গত ৪০ বছর অনেক ধোঁকাবাজি হয়েছে। এবার বাস্তবতা অনুধাবন করুন।

মুক্তমনাঃ আপনি বাংলাদেশের অস্তিত্বে বিশ্বাস না করলে এই দেশে আছেন ক্যান? আরবে চইল্লা যান। (বিড়বিড় করে) মেজাজটাই খারাপ করে ......

ইসলামিক মনের মানুষঃ জি চলে যাব, যদি আপনি এমন জায়গায় যান, যেটা আল্লাহর তৈরি করা নয়।

মুক্তমনাঃ মানে?

ইসলামিক মনের মানুষঃ আপনি তো ইসলাম মানেননা। অথচ এই জমিন আল্লাহর। উনার জমিনে থাইকা যদি উনার বিদ্রোহ করতে পারেন, আমিও বাংলাদেশে থেকে রাষ্ট্রদ্রোহী কথা বলতেই পারি। এখন আপনি যদি এমন জায়গায় যেতে পারেন যেটা আল্লাহর তৈরি করা নয়, তাহলে কথা দিচ্ছি আমিও এই দেশ ছেড়ে চলে যাব...
৬২টি মন্তব্য ৪০টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×