এ গানটি নিয়ে এটি আমার তৃতীয় পোস্ট। আগের পোস্ট বা আগের গানের লিংক আগেই দিলাম না; কেন, জানেন? আগের অভিজ্ঞতায় দেখেছি, সবাই আগে আপলোড করা গানটাই শোনেন, যে গানটাকে নিয়ে সর্বশেষ পোস্টটা দেয়া হলো, সেই গানটা পর্যন্ত অনেকেই পৌঁছেন না, আবার অনেকেই ঠিক ঠাওরও করতে পারেন না, সর্বশেষ গান কোনটি তাই আগেই বলে নিলাম, সর্বশেষ আপলোড করা গানটি পাওয়া যাবে এই লিংকে - আমি তো ফিরে ফিরে আসবো তোকে জ্বালাতে। এ গানটি এর আগে আরো দুইবার গেয়ে আপলোড করা হয়েছিল, তবে এবারের গানটা আগের গুলোর চাইতে অনেক মেলোডিয়াস হয়েছে বলে আমার মনে হয়েছে। আগে আপলোড করা গানগুলোর লিংক নীচে পাবেন
সবসময় কণ্ঠে সুর তুলে রাখা, গুনগুন করতে থাকা আমার অভ্যাস, অনেকবারই বলেছি। শুনলে অবাক হবেন যে, এই গুনগুনানির মধ্যে আমার নিজের গানও থাকে গত দুইদিনে দুইটি নতুন গান তৈরি করেছি। এবং দুইদিন ধরেই বারংবার ব্লগার মিরোরডডলের লেখা এবং আমার সুর করা ও গাওয়া 'আমি তো ফিরে ফিরে আসবো' গানটির সুর আমার কণ্ঠে চলে আসছিল। গলা সবসময় ভালো থাকে না, আবার কণ্ঠের মাধুর্যও সবসময় পাওয়া যায় না। গত সপ্তাহ খানেক ধরে কণ্ঠের মিষ্টতা বেশ ভালো পাচ্ছি। গত দুইদিনে এ গানটা আমি তিনবার রেকর্ড করেছি এবং তিনবারই চমৎকার মেলোডিয়াস হয়েছে। সর্বশেষ রেকর্ডটিই ফাইনাল করে ইউটিউবে আপলোড করেছি।
আমি তো ফিরে ফিরে আসবো
তোকে জ্বালাতে
জ্বালাতে আমার ভীষণ ভালো লাগে
নইলে মনে রাখবি না তো
তুই দেখিস,
আমি আবার ফিরে আসবো
আসবো, তোকে জ্বালাবো, পোড়াবো
পুড়িয়ে ভস্ম করবো তোকে
তারপর চলে যাব বহু দূরে
কী ভাবছিস?
সময়ের সাথে ভুলে যাবি আমাকে?
না,
যখন আরশিতে চোখ রাখবি
দেখবি পোড়া দগদগে ঘা
কী ভাবছিস?
সময়ের সাথে ভুলে কি যাবি আমাকে?
যখন আরশিতে চোখ রাখবি
পোড়া দগদগে ঘা দেখবি
তখনই তোর মনে পড়বে আমাকে
তুই যে তখন ভীষণ কষ্ট পাবি
বুঝলি, পাগল?
দূরে থেকে তৃপ্ত হবো আমি
তোকে পোড়ানোর মাঝেই আমার সকল আনন্দ
০২ মার্চ ২০২২
কথা : ব্লগার মিরোরডডল
সুর, মিউজিক ও কণ্ঠ : খলিল মাহ্মুদ
মিউজিক কম্পোজিশন গাইড : বেবি লাবিব
গানের লিংক : প্লিজ ক্লিক করুন - আমি তো ফিরে ফিরে আসবো তোকে জ্বালাতে।
এ গানটি নিয়ে আমার আগের পোস্ট
এ গানটির আগের ভার্সন : আমি তো ফিরে ফিরে আসবো তোকে জ্বালাতে
এর আগে খালি গলায় গাওয়া এ গানটি এ পোস্টে শেয়ার করেছিলাম। খালি গলায় গাওয়া এ গানটার উপর এবার মিউজিক যোগ করে ঐ পোস্টে শেয়ার করা হয়েছিল।
মিউজিক কম্পোজিশনের উপর আমার ছেলেরা, বিশেষ করে ছোটো ছেলের স্কিল খুব ভালো। যে-কোনো কম্পোজিশনে ওর পরামর্শ নিতে চেষ্টা করি। সে আবার খুবই ব্যস্ত মানুষ তো, তাই সবসময় তার অ্যাপোয়েন্টমেন্ট পাওয়া ভার যে-কোনো গান ইউটিউবে আপলোড করার পর ছেলেকে নিয়ে স্মার্ট টিভিতে 'প্রিমিয়ার শো' করি একই মিউজিক একেক ডিভাইসে আবার একেক রকম আসে, সেটা একটা সমস্যা। পিসিতে একরকম, স্মার্ট টিভিতে বেশ চেঞ্জ হয়ে যায়, আবার মোবাইলে অন্য রকম। আমি স্মার্ট টিভির সাউন্ড দেখে মিউজিকের সাউন্ড অ্যাডজাস্ট করি।
আগের ভার্সনের প্রিমিয়ার শো করেছিলাম এক শ্যালক, শ্যালকের স্ত্রী ও ওদের ছেলে এবং আমি। লাবিবকে ডাকাডাকি করেও পাওয়া যায় নি, সে একটা কাজে ব্যস্ত ছিল তো, গান শুনে তো সবাই থ আই মিন, সবাই হাততালি দিয়েছিল আপনারাও কিছু হাততালি বরাদ্দ রাখিয়েন
খালি গলায় গাওয়া গানের ইউটিউব লিংক :
অডিও ভার্সন-১। আমি তো ফিরে ফিরে আসবো তোকে জ্বালাতে
অডিও ভার্সন-২। আমি তো ফিরে ফিরে আসবো তোকে জ্বালাতে
অডিও ভার্সন-১
অডিও ভার্সন-২
সারাদেশ বিশ্বকাপ জ্বরে ভুগছে। ঐদিকে বাংলাদেশ-ভারতের ক্রিকেট সিরিজ চলছে। ৫ ডিসেম্বরে বাংলাদেশ-ভারতের ১ম ওডিআই যারা দেখেন নি, বাংলাদেশের একটা গৌরবময় ও অবিস্মরণীয় ম্যাচ মিস করেছেন তারা। খেলাধুলায় আনন্দ উপভোগের মাত্রা একেক জনের কাছে একেক রকম। ক্রিকেটে বাংলাদেশের কোনো জয়ে যতখানি আনন্দ পাই, ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা যতবারই ফুটবলে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হোক না কেন, তা কোনোদিনই বাংলাদেশের জয়ে যে আনন্দ পাই, তার ধারেকাছে আসবে না। বাংলাদেশ ফুটবলের সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় যে আনন্দ, তা অন্য কোনো দেশের বিশ্ব-চ্যাম্পিয়ন হওয়াতেও কোনোদিন পাব না। এটাই প্রতি দেশের প্রতি নাগরিকের মূল বৈশিষ্ট্য, ব্যতিক্রম শুধু বাংলাদেশ - যেখানে বাঙালিরা ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার জয়ে 'আল-হামদুলিল্লাহ, জিতে গেছি' বলতে বলতে মুখে ফেনা তুলে ফেলে। এটা নিতান্তই আদেখলেপনা, আদিখ্যেতা। অথচ, বাংলাদেশের কোনো জয়ে এদের কোনোদিন 'আল-হামদুলিল্লাহ, জিতে গেছি' বলে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখি না। অন্য দেশকে নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশে আমাদের সংযত হতে হবে।
যাই হোক, ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা বলতে আমরা খুবই পাগল। যতক্ষণ এটা নির্মল আনন্দ উদ্যাপনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে, ততক্ষণ ঠিক আছে। কিন্তু, ভিন্ন উপমহাদেশের দুটি ভিন্ন দেশকে সাপোর্ট করতে যেয়ে আমাদের মধ্যে মুখ কালাকালি, মনোমালিন্য, ঝগড়া-ফ্যাসাদ, এমনকি, খুনাখুনি পর্যন্ত করে ফেলাটা নিতান্তই অপ্রত্যাশিত, অনভিপ্রেত। এগুলো আমাদের বর্বরতা ও মানসিক বৈকল্যের পরিচায়ক। আমি ব্রাজিল সাপোর্ট করি, আপনি আর্জেন্টিনা সাপোর্ট করেন বলে আপনার উপর আমার চোখ রাঙানি দেখাতে হবে কেন? আমার ভালোবাসা আমার, আপনার ভালোবাসা আপনার। এবং আমি নেইমারের প্রশংসা করলে আপনার যেমন উত্তেজিত হওয়াটা অমূলক, আপনি মেসির প্রশংসা করলে তেমনি আমার উত্তেজিত হওয়া অন্যায়। এটা যার যার ভালোলাগা, বিবেচনা।
আরেকটা জিনিস খুবই ঘৃণার সাথে লক্ষ করেছি। আমরা যারা ফুটবল খেলা দেখি, তারা ম্যাক্সিমামই কোনো দেশকে সাপোর্ট করছি দেশগুলোর আগের সুনাম শুনে, তাদের খেলা দেখে সাপোর্ট করতে শিখি নি। কোনো দেশের খেলা দেখে সেই দেশকে ভালোবাসলে আমাদের পছন্দের তালিকায় যুক্ত হতো স্পেন, হল্যান্ড, ক্রোয়েশিয়া, জার্মানি, ইংল্যান্ড, সেনেগাল, ক্যামেরুন, নাইজেরিয়া, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, সউদি আরব, পর্তুগাল বা ফ্রান্সের নামও এবং এই নামগুলোর ভিড়ে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা হয়ত অনেকের কাছে চাপাই পড়ে যেত। এবং খেলাধুলার উপর আমাদের সাধারণ মানুষদের টেকনিক্যাল নলেজ একেবারে শূন্যের কোঠায়। কিন্তু, যখন কোনো ফুটবল বোদ্ধা কোনো একটা টিমের কিছু টেকনিক্যাল ত্রুটি নিয়ে পোস্ট দিলেন, দেখা গেল, সেই সমালোচনা যদি আমার প্রিয় ব্রাজিল বা আর্জেন্টিনার উপর হয়, আমরা তাকে কুৎসিত ভাষায় আক্রমণ শুরু করলাম। দেখুন, ঐ সমালোচনাকারী, যিনি শুধু টেকনিক্যাল ত্রুটিগুলোর কথা বলেছেন, তিনি হলেন আমাদের বাংলাদশের লোক, আর আপনারা সেই ভিন্ন মহাদেশের ভিন্ন দেশকে সাপোর্ট করতে যেয়ে বকাবকি, আক্রমণ শুরু করলেন আপনারই এক দেশজ ভাইয়ের উপর, যিনি হয়ত নিজেও একজন গর্বিত ফুটবল তারকা। আপনাদের নিজের দিকে ফিরে তাকাতে হবে, কেন এই নির্বোধের মতো ঘৃণ্য কাজগুলো করছেন।
আবারো মনে রাখুন, ব্রাজিল্প-আর্জেন্টিনা অ্যাপনার নিজের কোনো দেশও না, নিজের মতাদর্শের কোনো রাজনৈতিক দলও না যে তাদের সমর্থনে জান কোরবান করে ফেলতে হবে।
দেশের প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টি করুন। দেশকে ভালোবাসতে শিখুন, দেশের পতাকাকে সম্মান করতে শিখুন। যেদিন বাংলার মাটিকে আপনার ভালো লাগবে, সেদিন দেখবেন, ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার পতাকা আপনার বাসায়, গাড়িতে কোথাও স্থান পাবে না।
ভালোবাসি বাংলার মাটি, বাংলার গান
ভালোবাসি বাংলার পতাকা, বাংলাই আমার প্রাণ।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২২ বিকাল ৫:৪১