উড়োচিঠি
প্রায় প্রতিদিনই আমার নামে একটা উড়োচিঠি
আসতো, আজেবাজে কথা, নানান অপবাদে ভরা
পাশে বসে গম্ভীর মুখে সে চিঠি পড়ে শোনাতো
আমারই ঘনিষ্ঠ বন্ধু। একদিন বন্ধুটি ধরা খেলো-
রোজ রোজ সেই আমার নামে উড়োচিঠি লিখে পাঠাতো
সেই থেকে আমাদের বন্ধুত্ব হারিয়ে গেলো।
ব্লগেও আমার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু এখন আর সামনে
দাঁড়াতে পারেন না। কয়েকটা মাল্টিনিক খুলে প্রতিদিন
আমাকে খোঁচাতেন, ঘৃণা ছড়াতেন পরতে পরতে।
আমি শুরুতেই বুঝেছিলাম, এটা এ ঘনিষ্ঠ ব্লগারেরই কাজ।
সবগুলো নিক খুইয়ে এখন বড্ড মুষড়ে পড়েছে তিনি।
ভেবে পাই না, কীভাবে মুখ দেখাবেন কখনো
সামনাসামনি দেখা হলে?
আপনার নোংরামিই বন্ধুত্ব নষ্টের মূল কারণ।
পুত্রবধূরা
একজন ‘স্বামী’ লুকিয়ে তার মা-বাবাকে টাকা পাঠাতো
লুকিয়ে কেন? স্ত্রীর ভয়ে।
সেই স্ত্রীর মা-বাবা এখন অনাহারে, অর্ধাহারে
মানবেতর জীবন কাটান। কারণ- স্ত্রীর ভাইয়েরা তাদের
স্ত্রীদের ভয়ে মা-বাবার ভরণ-পোষণ পরিত্যাগ করেছেন।
আপনার শ্বশুর-শাশুড়িকে পুত্রসেবা থেকে বঞ্চিত করবেন?
বাড়িতে আপনার মা-বাবাকেও প্রস্তুত রাখুন; ভ্রাতৃ-বধূরা
আপনাকেই অনুসরণ করছেন।
এবং নিজেও যথাযথ প্রস্তুতি নিন – একদিন তো
আপনিও শাশুড়ি হবেন, পালাবেন কোথায়? আপনার
কর্ম আপনাকেই প্রতিফল দেবে।
খাঁচা
সংসারটাকে খাঁচা বানাবেন না। যে-চোখে মেয়েকে দেখেন
সে-চোখেই দেখুন পুত্রবধূকে।
আপনার পুত্রবধূ আপনার আরেকটা কন্যা, আপনার
বাসার ‘চাকরানি’ না। তেমনি সে নয় আপনার ‘সেবাদাসী’ও।
আপনার পুত্রবধূরও মা-বাবা আছেন; তাদের দেখতে
মন চায়। যেতে দিন। আপনার ঘরে
কি কোনো কন্যাসন্তান নেই? তাহলে মনে রাখুন,
সেও একদিন শ্বশুর বাড়ির খাঁচায় আটকে যেতে পারে,
সেও হয়ে উঠতে পারে একজন ‘রহিমা খালা’। কেমন লাগবে?
খোঁজ নিয়ে দেখুন, আপনার তল্লাটে
এমন পরিবারও আছে, যারা পুত্রবধূকে বাবার বাড়িতে
পাঠানোর আগে মাসখানেক ধরে
বৈঠক করতে থাকেন, অনুমতি দেবেন কী দেবেন না-
আর নিজের কন্যা ফুরত ফুরত প্রতিসকালে আসছে,
যাচ্ছে সন্ধ্যায়। এমন পাষাণের ঘরে কোন মেয়ে বউ
হয়ে টিকতে পারে?
ক্ষণস্থায়ী বন্দোবস্ত
রূপ, যৌবন, ক্ষমতা ও সম্পদ নিয়ে আমাদের
অহঙ্কার সবচাইতে বেশি, অথচ এগুলো খুবই ক্ষণস্থায়ী।
‘মেধা’ ও ‘প্রতিভা’ নিয়েও আমাদের আস্ফালন কম নয়
কিন্তু, আমরা ভুলে যাই, ওস্তাদেরও একজন ‘ওস্তাদ’
রয়েছেন, আর আমার ‘জ্ঞানে’ও রয়েছে প্রচুর ঘাটতি
ও ফাঁকি।
মানুষের মন
মানুষের মন হলো নদীর স্রোতের মতো, যেদিকে ঢালু
সেদিকে গড়ায়। ভালোবাসার মানুষকে বিরতিহীন
ভালোবাসুন, আপনার অনুপস্থিতিতে আপনার জায়গাটি
চলে যাবে অন্যের দখলে।
শিক্ষক
একজন শিক্ষকের আচরণ কখনো উদ্ধত হবে না। তিনি
বিনয়, জ্ঞান ও নৈতিকতার প্রতীক। তিনি অন্যায়
করেন না, প্রশ্রয়ও দেন না- তিনি ‘প্রতিবাদী’, কিন্তু মার্জিত।
ইদানীং শিক্ষকদের নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে প্রচুর;
কিছু শিক্ষকের ‘উদ্ধত’ ও অসদাচরণই এর কারণ; এরা
শিক্ষক নামের ‘কলঙ্ক’। এদের উচিত নিজেদের ভুলগুলো
শোধরানো; কেউ নিজেকে পরিশুদ্ধ করতে ব্যর্থ হলে
তাকে ‘প্রত্যাহার’ করাই সর্বোত্তম পন্থা।
২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:৪১