আপনি বই পড়ছেন, পাশের লোক নিজের বই
রেখে বার বার আপনার বইয়ে চোখ রাখছেন;
তিনি ভাবছেন আপনি রসে টইটুম্বুর ‘রসময়গুপ্ত’
পড়ছেন।
নিজের অপরূপা সুন্দরী বউ নিয়ে পার্কে ঘুরছেন।
শত শত পুরুষের চোখ আপনার স্ত্রীকে গিলে
খাচ্ছে। আপনার চোখ ফালি ফালি করছে অন্য
রমণীর বুক। এগুলো নতুন কিছু নয়, মানুষের
জন্মগত খাসালত।
একজন মানুষের ৫০০ বছরের পূর্ব-পুরুষ ‘হিন্দু’
ছিলেন; তিনি মুসলমান হয়েছেন বলে আফসোসে
তার বুক ফেটে যায়, অথচ তিনি পূর্ব-ধর্মে ফেরত
না যেয়ে বর্তমান ধর্মের কুৎসা রটনায় মশ্গুল -
এটাও খাসালত।
আপনার নিজের রাসূল বা কোরান সম্পর্কে জ্ঞান
নাই। কোনোদিন পড়ার তাগিদও হয় নাই। কিন্তু,
অন্য ধর্মের আদ্যোপান্ত মুখস্থ করে বসে আছেন,
তারপর নিজের রাসূল আর ধর্ম নিয়া কটু কথা
ছড়াচ্ছেন। এ হলো আহাম্মকি। নিজেরটা আগে
পড়তে হবে, তারপর ভালোমন্দ পার্থক্য ধরা যাবে।
রবিগুরু ঠিকই বলেছিলেন, নদীর এপাড়ে নিশ্বাস
ছেড়ে কহেন, অপর পাড়ে সমস্ত সুখ জড়ো হয়ে
আছে। নিজের ধর্ম ভালো না লাগলে অন্য ধর্মে
যেতে পারেন, এটা মৌলিক অধিকার। কিন্তু নিজের
রাসূল আর ধর্ম ভালো না, অন্যেরটা ভালো-
এ মন-মানসিকতা হলো নিজের সুন্দরী বউয়ের
দিকে না তাকিয়ে অন্যের অসুন্দরী বউ দেখে লালা
ফেলার মতো।
‘মিচকা শয়তান’ চেনেন? মুখে আল্লাহ-
রাসূলের নামে মধু, আর অন্তরে জঘন্য বিষ।
মা’বুদ সুবহানাল্লাহ তা’য়ালা বলে এমন ভাব
দেখাবেন, যেন তার চাইতে বড়ো আল্লাহ্ওয়ালা
আর কেউ নেই; অথচ তিনি ইসলাম আর
রাসূলের হাদিস নিয়ে অনর্গল ঠাট্টা-মশকরা
করবেন। তারে নাস্তিক হইতে কেউ বাধা দেয়
নাই, অনুরোধ করেছে ইসলাম নিয়া এমন
তামাশা না করার জন্য। ইডিয়টরা কোনোদিন
মানবতা বা মানবিকতা বোঝে না।
একজন ভালো মানুষ অন্য মানুষকে বকতে
পারেন না। অন্যকে দিনের পর দিন হেয়,
অপমান করতে পারেন না। জানেন তো,
আপনার আচরণ ও মুখের বচন শুধু আপনার
নিজের সৌজন্য ও শিক্ষাই প্রকাশ করে না,
আপনার পুরো পরিবারের শিক্ষা, এমনকি,
অন্য জাতির কাছে আপনার পুরা জাতিকেই
প্রতিনিধিত্ব করে।
সে-মানুষটি কখনো পরিবার থেকে ভালো শিক্ষা
পান নি, যার পরিবারেরই কোনো শিক্ষা নেই।
পরিবারের কেউ যদি কদু চুরি করে, মসজিদের
জুতা চুরি করে, অতএব গ্রামের মানুষের নিয়মিত
ঠেঙানি আর লাত্থিগুঁতা খেয়ে বড়ো হন, সেই
পরিবারের মানুষ অন্য মানুষকে সম্মান করার
মতো সুশিক্ষা লাভ করেন না।
একজন মানুষের আত্মসম্মান থাকলে কখনো
অন্যের সম্মান হানি করেন না, নিজের সম্মানও
বাঁচিয়ে চলেন। একজন ভালো মানুষ দিনের
পর দিন বহু মানুষের বকা খেয়ে টিকে
থাকতে পারেন না। বংশগতভাবে ছিঁচ্কে স্বভাবের
মানুষ, যারা বকা খেয়ে বেড়ে ওঠেন, তাদের পক্ষে
এটা খুব সহজাত হয়ে ওঠে।
একজন সাধুর শত শত শিস্য থাকেন; একজন
অসাধু ব্যক্তিরও থাকেন অগুনতি অনুসারী।
আপনাকে শুধু চিনতে হবে, কে সাধু, আর
অসাধু কোনজন – দয়া করে তারপর পীর ধরবেন।
২১ সেপ্টেম্বর ২০২০
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:০৩