১.
কোনো কোনো সময়, কোনো কোনো সঘন মুহূর্তে ভালোবাসা তীব্রতর হয়। যেমন, উন্মত্ত মৈথুনকালে, অথবা অর্গাজম শেষে; তখন দুমড়ে-মুচড়ে বুকের চামড়ায় তাকে লেপ্টে ফেলতে ইচ্ছে করে, কিংবা ইচ্ছে করে তার হৃৎপিণ্ডের ভেতর রক্তের দানায় দানায় মিশে যাই, হয়ে যাই নিঃশেষে একাকার। এমন কিছু ক্ষ্যাপাটে, বিমূর্ত আবেগের নামই হয়ত-বা প্রেম।
প্রেম স্বামী-স্ত্রীর নিয়মিত সঙ্গম নয়, সেটা শুধু জৈবিক চাহিদা পূরণ।
প্রেম খুব অসংজ্ঞেয়; প্রেম শুধু বোঝা যায়, বোধ করা যায়, ব্যাখ্যা করা যায় খুব অল্প।
২.
প্লেটোনিক প্রেমই প্রকৃত গভীর প্রেম। তোমার প্রেমে যেদিন যৌনাকাঙ্ক্ষা জাগ্রত হবে, প্রেমের অনিবর্চনীয় সুখ ও মাহাত্ম্য চিরতরে তিরোহিত হবে সেদিনই। সম্ভোগ তোমাকে বাহ্যিক শারীরিক সুখ দেয়। দীর্ঘস্থায়ী সুখ একমাত্র নিষ্কাম প্রেমেই সম্ভব।
যাকে অদৃশ্যে থেকে যুগ যুগ ভালোবেসেছ, তার সামনে যেয়ো না, তাকে হারাবে। কবিতার মতো যে মেয়েটি তোমাকে পাগলের মতো ভালোবাসে, তাকে ছুঁয়ে দিও না। সে তোমার ধ্যানের সামগ্রী। তাকে পূজোর আসনে বসিয়ে একাগ্রচিত্তে ধ্যান করো। ভোগে নয়, ধ্যানেই শান্তি।
৩.
স্নেহভরা মায়াময় একজোড়া পেলব চোখ, বিশুদ্ধ কচুরিফুলের মতো শুভ্র তার মন ও অবয়ব, সকল পাপ ও পঙ্কিলতার উর্ধ্বে সেই নারী, অনাঘ্রাত যূথিকার মতো সজীব এবং পবিত্র, যাকে কখনো ছুঁতে নেই, কেবল নিবিড় অন্তর্চোখে ঐশ্বর্যের সুখ নিতে হয়- এমন একটি মেয়েকে দেখলেই যে ভাবের উদয় হয়, তা হলো- ‘কবিতার মতো মেয়েটি’।
৪.
কবিতার মতো একটি মেয়ে নিয়ত অদৃশ্যে থেকে অঘোরে প্রেম দিয়ে যায়।
আমি তাকে ছুঁই নি, দেখি নি কোনোদিন
দূর থেকে তার হাসি ভেসে আসে, হাওয়ায় হাওয়ায় চুলের সুরভি
আমাকে নিপাতনে ভালোবাসে কবিতার মতো মনোরম মেয়েটি।
১ জানুয়ারি ২০১৫
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১১:১৭