ব্লগিং করেও যে একদিন সম্মানি পাওয়া যাবে, এবং সেই সম্মানির অংক যে বেশ মোটাসোটা হতে পারে, তা বছর কয়েক আগেও আমার ধারণার বাইরে ছিল। এ বছরের শুরুতে কাভা ভাইয়ের ফেইসবুক স্টেটাস দেখে আমি চমকে যাই এবং বেশ এক্সাইটেড হয়ে পড়ি। যুগপৎ মনের মধ্যে কিছুটা অভিমানও জেগে ওঠে- আমাকে এই বিশেষ খবরটি কোনো ব্লগার বা ফেইসবুক ফ্রেন্ড জানান নি বলে। কাভা ভাইয়ের সাথে আমি ফেইসবুকে কানেকটেড অনেক আগে থেকেই। তাঁর লেখারও আমি একজন সক্রিয় ভক্ত। ফেইসবুকে শুধু ‘লাইক’ দিয়েই ক্ষান্ত থাকি না, সময় পেলে বড়ো বড়ো কমেন্টও করে থাকি। আগে ব্লগে তাঁর পোস্ট নিয়মিত পড়তাম এবং বিশ্লেষণধর্মী কমেন্ট করতাম। রম্যরচনায় তাঁর অবস্থান এ দেশে প্রথম কাতারে, তা বলাই বাহুল্য। তিনি ভালো ছবি আঁকেন। ব্লগ থেকে তাঁর আঁকা ছবি নিয়ে ২০১৫ সালে আমার ‘অসম্পর্কের ঋণ’ কাব্যগ্রন্থের জন্য প্রচ্ছদ করি। মোবাইলেও তাঁর সাথে মাঝে মাঝেই কুশলাদি বিনিময় হয়। কাভা ভাইয়ের ব্যাপারে আমি এতগুলো কথা বললাম এটা বোঝানোর জন্য যে, তাঁর সাথে আমার হৃদ্যতা ও ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। কিন্তু গত বছর দুয়েক ধরে কোনো একটা কারণে আমি ব্লগে তেমন উপস্থিত ছিলাম না; তবে ফেইসবুকে মোটামুটি নিয়মিত ছিলাম। এ বছরের গোড়ার দিকে কাভা ভাই ফেইসবুকে স্টেটাস দেন যে, যাঁরা এখনো ব্লগিঙের টাকা সংগ্রহ করেন নি, তাঁরা যেন দ্রুত টাকা সংগ্রহ করে নেন। অন্যথায়, আসছে বন্যায় অবিতরণকৃত অর্থ বন্যার্তদের জন্য দান করা হবে। একই স্টেটাসে জানতে পারি যে, বিগত দুই বছর ধরে ব্লগিঙের জন্য সম্মানি দেয়া হচ্ছে; আর আমিও দুই বছর ধরেই ব্লগে অনিয়মিত ছিলাম। কাভা ভাইয়ের উপরই আমার অভিমানটা সবচেয়ে বেশি জমা হলো। তাঁর সাথে আমার এত সখ্যতা, তিনি কি একটা ছোট্ট মেসেজ আমার ইনবক্সে ফেলে দিতে পারতেন না- ‘ভাইয়া, আপনি টাকা নিচ্ছেন না কেন? নিবেন না? নাকি আপনার টাকা বেশি হইয়া গেছে বলে নিবেন না?’ মাহমুদ রহমান ভাই, প্রিয় কবি সেলিম আনোয়ার ভাই, দিশেহারা রাজপুত্র, বিদ্রোহী ভৃগু, সুমন কর, শায়মা, মাঈনুদ্দিন ভাই, আমার দেশি আপু জুন, অপর্ণা মম্ময়, আরজু মনি- এদের সবার সাথেই ফেইসবুকে আমার কানেকশন আছে; এবং ব্লগে এঁদের লেখার আমি একজন প্রথম শ্রেণির ভক্ত। আমি নিশ্চিত, তাঁরা সবাই সম্মানি পেয়েছেন; কারণ, তাঁদের সব লেখাই সম্মানি পাওয়ার মতো মানসম্মত। তাঁদের সাথেও আমার ঘনিষ্ঠতা এক কথায় তুঙ্গে। তাঁদের কারো কারো সাথে, বিশেষ করে মাহমুদ-০০৭ ভাইয়ের সাথে মোবাইলেও লম্বাচূড়া আলাপ-শালাপ হয়েছে, এবং গত দুই বছরে কম করে হলেও ৫ বার কথা হয়েছে। তিনি বা অন্য কেউই আমাকে ব্লগিঙের সম্মানির ব্যাপারটা জানান নি। এসব ভাবতে ভাবতে আমার একবার মনে হলো, হয়ত তাঁরা আমার প্রতি কিছুটা ঈর্ষান্বিত। ব্লগিং করে আমি কিছু সম্মানি পাই, আমার এই সম্মান প্রাপ্তি হয়ত তাঁরা সহ্য করতে পারছেন না, তাই ব্যাপারটা তাঁরা আমার কাছে গোপন রেখেছেন। কিন্তু সত্য কখনো চাপা থাকে না; আগুনকে ছাই দিয়ে ঢেকে রাখা যায় না। তাই ব্লগিঙের সম্মানির ব্যাপারটাও আমার কাছে আর গোপন থাকলো না।
খুব বিনয়ের সাথেই একদিন কাভা ভাইকে ইনবক্সে নক করলাম।
- জাদিদ ভাই, আছেন? (কাভা ভাইয়ের ছদ্ম নাম)।
তিনি সাথে সাথেই মেসেজ পড়েছেন, সেই নোটিফিকেশন মেসেজের নীচে দেখতে পেলাম; কিন্তু তিনি সাথে সাথেই জবাব না দিয়ে তার পরের দিন বিকেলের দিকে লিখলেন,
- ভাইয়া স্যরি, গোসলে ছিলাম। আছেন?
মনে মনে বিরক্ত হলাম। ডাহা মিথ্যা কথা। একদিন ধরে কেউ গোসল করে না। আমি মেসেজ দিয়েছিলাম আগের দিন, আর কাভা ভাই প্রায় একদিন পর বললেন তিনি গোসলে ছিলেন! আমি লিখলাম-
- সমস্যা নাই। একটা কথা জানার ছিল।
- কী কথা ভাইয়া?
- লজ্জা লাগছে বলতে।
- লজ্জা করবেন না। আমি বয়সে আপনার চাইতে অনেক ছোট্ট, যদিও বিয়ে করে ফেলেছি, আমার কাছে লজ্জা পাইবার কোনো কারণ নাই।
- সাহস দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ প্রিয় জাদিদ ভাই। জানতে চাইছিলাম কী, ব্লগিঙের সম্মানির ব্যাপারটা...... আমি এখনো জানি না আমি সম্মানি পাচ্ছি, নাকি পাচ্ছি না।
- ও আচ্ছা! আপনি তো ভাইয়া অবশ্যই পাবেন। আমার যদ্দূর মনে পড়ে, আপনার অনেকগুলো পোস্টই নির্বাচিত পাতায় ছিল। কিছু মনে করবেন না ভাইয়া, আপনি প্লিজ একটা মেইল করুন এই ই-মেইলে- jadid20030229@gmail.com ইমেইলটা সহজে মনে রাখার ফর্মুলা হলো ২০০৩ আমার জন্মসাল, ০২ হলো বছরের দ্বিতীয় মাস, অর্থাৎ ফেব্রুয়ারিতে আমার জন্ম, আর ২৯ হলো ফেব্রুয়ারির ২৯ তারিখ। অর্থাৎ ২০০৩ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারিতে আমার জন্ম। আর জাদিদ বানান তো আপনি জানেনই। জিমেইল। ব্যস। অটো রিপ্লাইয়ে আপনার সমস্ত দেনাপাওনা আপনাকে জানিয়ে দেয়া হবে।
কাভা ভাইয়ের সাথে কনভার্সেশন শেষ করে আমি মেইল করলাম ব্লগ অথোরিটির কাছে। ইনস্ট্যান্টলি আমার কাছে রিপ্লাই এলোঃ
- আপনাকে আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সম্মানির যাবতীয় তথ্যাদি জানিয়ে দেওয়া হবে। সামহোয়্যারইন ব্লগে ব্লগিং করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। ব্লগিং করুন, আমাদের সঙ্গেই থাকুন।
- সামহোয়্যারইন ব্লগ টিম
রাত একটার দিকে ঘুমোতে যাবার আগে মোবাইলে নোটিফিকেশন পেলাম- সামহোয়্যারইন ব্লগের মেইল। বেশ উত্তেজিত অবস্থায় মেইল ওপেন করে আনন্দে আত্মহারা হয়ে যাই। আমার অনুমানের চাইতে অনেক বেশি অংকের সম্মানি পাচ্ছি আমি। ২০১৫ সালে ৩২টি এবং ২০১৬ সালে ১২টি, দুই বছরে আমি মোট ৪৪টি পোস্ট পাবলিশ করেছি। এর মধ্যে ক’টি পোস্ট ‘নির্বাচিত’ হয়েছিল, তা আমার জানা নেই। ৪/৫টা পোস্ট হয়ত হতে পারে। প্রতি পোস্ট বাবদ আর কত টাকাই বা সম্মানি দিবে? এরা বনের মোষ তাড়িয়ে ঘরের মানুষ খাওয়াচ্ছেন, ব্লগারদের দেওয়ার মতো অত টাকা কোথায় পাবেন? অতএব, পোস্ট প্রতি সর্বোচ্চ ৫০ টাকা হলেই আমি খুশি। কিন্তু মেইল পড়ে আমি সত্যি সত্যিই বিস্মিত হলাম। আমার সর্বমোট ২৯টি পোস্ট নির্বাচিত হয়েছিল, এর মধ্যে একটা স্টিকি পোস্টও আছে। গল্প ১১টি, রম্য ৩টি, কবিতা ১২টি, আর্টিকেল ৩টি (একটি স্টিকি)। স্টিকি পোস্টের জন্য ৩৫০০ টাকা, প্রতি গল্পের জন্য ৩০০, রম্যের জন্য ৩৫০, প্রতি কবিতার জন্য ৪০০, আর্টিকেলের জন্য ৫০০, সর্বমোট ১৩,৬৫০ টাকা। আমি অভিভূত। কবিতার রেইট দেখে আমি চমৎকৃত হলাম। কবিতা যে গল্পের চাইতে অনেক উঁচু মানের একটা ক্লাসিক বস্তু, তা ব্লগ টিম বুঝতে পেরেছেন দেখে আমি খুব খুশি হলাম। এঁরা কবিতার উপর ভালো জ্ঞান রাখেন, তাঁদের সম্পর্কে আমার এই জ্ঞান হলো। তবে, আমার একটু খটকা লাগলো, টাকা দিবে তো? এসব আবার ভূঁয়া না তো? মেইলে অ্যাকাউন্ট নাম্বার দিতে বলেছে। আমি কনফিউশনে পড়ে যাই- অ্যাকাউন্ট নাম্বার হ্যাক করে আবার সব টাকা লুটে নিয়ে যায় যদি! অনেক চিন্তাভাবনা শেষে স্থির সিদ্ধান্ত নিই, কোনোরূপ জোচ্চুরি করলে তো কাভা ভাই আছেনই, অন্যসব ব্লগাররা গা ঢাকা দিতে পারলেও তিনি পারবেন না। তাঁকে দেড়লাখ ব্লগারের সবাই স্বনামে ও ছদ্মনামে চিনেন। তিনি পালাবেন কোথায়? দিলাম অ্যাকাউন্ট নাম্বার পাঠিয়ে। এরপর আমার অপেক্ষার পালা। অনেক কিছু ভাবতে থাকি। বাংলাদেশে সামহোয়্যারইন ব্লগ ইতিহাস সৃষ্টি করলো। ইতিহাসের প্রথম বাংলা ব্লগ। ইতিহাসের প্রথম ব্লগ যারা ব্লগিঙের জন্য সম্মানি দিচ্ছেন। জীবনে কোনো পত্রিকায় (নিজের পত্রিকা ছাড়া) কোনো লেখাই ছাপা হয় নি, পত্রিকা থেকে সম্মানি পাওয়া তো স্বপ্নের ব্যাপার। আর সামহোয়্যারইন ব্লগে ব্লগিং করে সম্মানি পেতে যাচ্ছি, তাও অংকটা পত্রিকার তুলনায় বেশ বড়োই বলা চলে। (আমার ‘সবুজ অঙ্গন’ পত্রিকায় লেখা ছাপা হলে একবার নিজের পকেট থেকে লেখা প্রতি ২০০ টাকা দিয়েছিলাম ) আমি বেশ চাঙ্গাভাব অনুভব করতে থাকি। এ টাকাটা দিয়ে কী করা যায়, তা ভাবতে থাকি। অনেকদিন হলো ‘সবুজ অঙ্গন’ বের করা হয় না টাকার অভাবে। ‘সবুজ অঙ্গন’-এর পেছনে টাকা খরচ করতে করতে আমি ফতুর হয়ে গেছি। একটা সংখ্যা বের করতে ১২-১৫ হাজার টাকার মতো লাগবে; ব্লগ থেকে যা পাচ্ছি তা দিয়ে বেশ ভালোভাবেই একটা সংখ্যা বের করা যাবে আশা করি। ব্লগ ও ফেইসবুকে তাহলে একটা ঘোষণা দিয়ে ফেলা যাক। ঘোষণাটা ড্রাফট করে রেখে দিলাম। একটু অপেক্ষা করি, টাকাটা আগে হাতে আসুক, বড়োজোর সপ্তাহখানেকের ব্যাপার।
এক সপ্তাহ পার হয়ে যায়। ২, ৩, এভাবে ৭ সপ্তাহ পার হয়ে গেলো। প্রতিদিন ৪/৫ বার করে অনলাইনে অ্যাকাউন্ট চেক করি- মাসিক স্যালারি ছাড়া আর কোনো ক্রেডিট নাই, শুধু ডেবিট আর ডেবিট। কাভা ভাইকে আরেক বার নক করে জিজ্ঞাসা করবো কিনা ভাবতে থাকি। কিন্তু লজ্জা করলো। ও, ইমেইলের রিপ্লাই পেয়ে কাভা ভাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে মেসেজ দিয়েছিলাম। তিনি একটা হাসির ‘ইমো’ দিয়ে রিপ্লাই দিয়েছিলেন। আমার বোধোদয় হয়। এসব কাহিনি তাহলে সত্য সত্যই ভূঁয়া! মাঝখানে একবার একজন ব্লগারের সাথে ইনবক্সে এ নিয়ে আলোচনা হয়। তিনি অবশ্য নতুন ব্লগার, তাঁর কোনো লেখা তখনো প্রথম পাতায় আসে না, কাজেই তিনি এ বিষয়ে বিস্তর জ্ঞান রাখেন না; তবে, তিনি এটাকে একটা ‘ফেইক প্রজেক্ট’ বলে অভিহিত করেন। কাভা ভাইয়ের প্রতি এবার আমার ক্ষোভের জন্ম হতে থাকে। আমার সাথে এরকম না করলেও পারতেন তিনি। আমি কারো সাথে কখনো ‘ফাতরামি’ করি না; কেউ আমার সাথে ফাতরামি করুক সেটাও আমি চাই না, এবং বরদাস্তও করি না; কাভা ভাইয়ের চরিত্রও এমন নয় যে, তিনি কারো সাথে ফাতরামি করবেন। তিনি চমৎকার রম্য লিখলেও তাঁর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ, তীক্ষ্ণ ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ তিনি, তবে তাঁর সূক্ষ্ম রসবোধ আমাকে মুগ্ধ ও চমৎকৃত করে। সেই তিনি আমার সাথে কোনোরূপ চালাকি বা ফাতরামি করবেন তা আমি কল্পনায়ও কল্পনা করি নি কোনোদিন। এ সুযোগে সবার জানা গল্পটি একটু বলে নিই। এক যুবকের ডিম বিক্রি করে মুরগি কেনা, মুরগি থেকে ছাগল, এরপর, গরু, গরু বেচে বিয়ে করার গল্প- বউ এসে বলবে, আসো, ভাত খাইয়া যাও, যুবক রেগে গিয়ে বলবে- নেহি খাওঙ্গে, অমনি মাথা থেকে ডিমের ঝাঁকি মাটিতে পড়ে গিয়ে সব ডিম ভেঙ্গে যায়। আমার স্বপ্নভঙ্গ হয়। গল্পের যুবকের মতো আমার ‘সবুজ অঙ্গন’ মাঠে মারা যায়। নিজেকে ধন্যবাদ দিই- ‘সবুজ অঙ্গন’ প্রকাশের ঘোষণা দিই নি বলে।
এর মাঝখানে আমি ইন্ডিয়ায় যাই। সেখানে প্রায় ৪ মাসের মতো থাকি। ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ ছিল না। দেশে ফিরে এসে ফেইসবুকে লগিন করি। হাজার হাজার নোটিফিকেশন, শত শত মেসেজ। ওগুলো চেক করার ধৈর্য থাকে না। ব্লগে লগিন করে কয়েকজনের পোস্টে কমেন্ট করি, আমিও একটা নতুন পোস্ট পাবলিশ করি।
আপনারা হয়ত এ খবরটা আন্দাজ করতে পেরেছেন অনেক আগে থেকেই। আমি বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে গেলাম। আমার উত্তেজনা ধরে রাখতে পারছি না। স্বপ্ন নয়, এটি সত্য। সিনেমায় এ অবস্থায় নিজের শরীরে চিমটি কেটে নিশ্চিত হয় যে এটা স্বপ্ন নয়, সত্য। অনলাইনে অ্যাকাউন্ট চেক করে ১৩,৬৫০ টাকা জমা হয়েছে দেখে আনন্দে বসা থেকে প্রায় দাঁড়িয়ে যাচ্ছিলাম। সত্য সত্যই ১৩,৬৫০ টাকা সামহোয়্যার ইন ব্লগ থেকে এসেছে তো! আমি বার বার চেক করি- Somewherein blog acct cheque no A8778654 হ্যাঁ, ইহা সত্য। আমি ইহাকে পাইয়াছি। আমি ইহাকে পাইয়াছি।
মানুষ সহজেই মানুষকে ভুল বুঝে থাকে। আমিও কাভা ভাইকে ভুল বুঝেছিলাম। ব্লগ অধিকর্ত্রী জানা আপুর উপরও খুব অভিমান হয়েছিল। নিজেকে ভর্ৎসনা করলাম মানুষ সম্পর্কে এরূপ নেগেটিভ ধারণা পোষণ করার জন্য। এবং নিজেকে সংশোধন করে নিব বলে মনে মনে পণ করলাম। তবে, টাকাটা ‘সবুজ অঙ্গন’-এর জন্য ব্যয় করার পরিকল্পনা বাদ দিতে হলো। একটা পত্রিকা বের করা বেশ কঠিন কাজ, যাঁরা করেছেন তাঁরা জানেন। আর আমার পত্রিকার সব কাজ আমি নিজে করি নিজের সন্তুষ্টির জন্য; নিজের মতো সাজিয়ে নিয়ে থাকি। কিন্তু বর্তমানে আমার এরূপ কাজ করার জন্য শক্তি ও ধৈর্য কোনোটাই নাই। তাহলে টাকাটা কি আমি খাওয়াদাওয়া করেই শেষ করে দিব? হ্যাঁ, খানাদানার পেছনেই শেষ করবো, তবে একা খাব না, নিশ্চিত। আগামী বইমেলায় একটা আনন্দমেলা করবো ব্লগারদের নিয়ে। এ টাকাটা সেই আনন্দমেলায় ঝালমুড়ি খাওয়ার জন্য রেখে দিলাম।
শেষমেষ কাভা ভাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি ব্লগিঙে তাঁর ঐতিহাসিক কর্মদক্ষতা ও অতুলনীয় অবদানের জন্য। জানা আপুকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি, ব্লগিঙের জন্য সম্মানি দেওয়ার ঐতিহাসিক নজির স্থাপন করার জন্য। আর যাঁরা ব্লগিং করে সম্মানি পেয়েছেন, তাঁদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি। যাঁরা পান নি, তাঁদের জন্যও শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল- আশা করি আগামীতে তাঁরা অবশ্যই পাবেন।
সবাই ভালো থাকুন। হ্যাপি ব্লগিং।
***
এবার গান শুনতে শুনতে নাচতে থাকুন।
বন্ধু যখন বউ লইয়া
আমার চোখের সামনে দিয়া
রঙ্গ করিয়া হাঁটিয়া যায়
তাগো দেখিয়া বুকটা আমার
কেনু ফাটিয়া যায়?
সোনা বন্ধু তুই আমারে করলি রে দিওয়ানা