১.
বাংলাদেশে তনু নামের একটা মেয়ের ধর্ষণ নিয়ে অনেক আলোচনা/বিতর্ক হচ্ছে। আলোচনাটা শুধু তার ধর্ষণ হওয়া নিয়ে বা প্রতিবাদ করা নিয়ে নয়; সে হিজাবী হয়েও কেন ধর্ষিতা হল তা নিয়ে। একপক্ষ অনেকদিন ধরে দাবি করে আসছিল হিজাব করলে ধর্ষণ হয় না। এবার কিছু লোক প্রশ্ন তুলছে হিজাব করেও কেন ধর্ষণ হল?! কিছু লোক আরো আগে বেড়ে বলছে হিজাব করেও যদি ধর্ষিতা হতে হয় তবে কেন হিজাব পড়তে হবে।
প্রথমেই আমাদের জানতে হবে হিজাব কি? হিজাব এমন এক পোষাক বা বেশভূষা যা একজন মেয়েকে ছেলেদের কাছে আকর্ষিত দেখায় না। এটা একটা রক্ষা কবচ। কিন্তু এই রক্ষাকবচ নিলেই ধর্ষণের মতো ব্যাপার থেকে মুক্ত হয়ে যাবে এমন ভাবাটা ভূল। ওনেকে নিরাপত্তার জন্য সাথে বন্দুক রাখেন। কিন্তু বন্দুক রাখলেই কি সে খুন হওয়া থেকে ১০০% নিশ্চিত হতে পারবে। নাহ, কখনোই নয়। এমন বিশ্বাস করা বোকামীই হবে। বন্দুক শুধু আপনার নিজেকে বাচানোর একটা কৌশল বা চেষ্টা হতে পারে। যার ফলে আপনি অন্য অনেকের থেকে বেশি নিজের হিফাযাত করতে পারবেন।
সোনার অনেক গয়না পড়ে ট্রেনে বা বাসে কি কেউ সফর করে? চুরি ডাকাতির ভয়ে করেনা। ব্যাগে নিয়ে যাই। চুরি ত তারপরেও হতে পারে। কিন্তু পড়ে থাকার থেকে ব্যাগে রিস্ক কম। পড়ে থাকলে সবার নজরে পড়বে এবং চুরির লোভ মাথায় উঠবে। এসব বাস্তব। কেউ অস্বীকার করলে সে কল্পনার বাসিন্দা। কেউ, হিজাব করলে ধর্ষিত হবে না এমনটা নয়, তবে হিজাব করলে অন্যদের থেকে অনেক বেশি সুরক্ষিত অনুভব করবে।
২.
ধর্ষন বা ইভ টিজ রুখার জন্য ইসলাম শুধু নারীদের পর্দার কথাই বলেনা। আর ইসলাম অনেক মতবাদের মতো শুধু সমস্যা বলে যায়না তার সাথে সমাধানের কথাও বলে, আর সেসব ঘটনা যাতে না হয় তার জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলে। ধর্ষন বা ইভ টিজ বা ব্যভিচার রুখার জন্য ইসলাম বলে –
ক. পুরুষদের দৃষ্টি সংযত রাখতে বলা হয়েছে। নারীদের দিকে তাকিয়ে থাকতে নিষেধ করা হয়েছে। লজ্জাস্থানের হেফাজাত অর্থাৎ স্ত্রী ব্যতিত অন্যের সাথে যৌন সম্বন্ধ রাখতে নিষেধ করা হয়েছে। [দ্রঃ সুরা নুর/৩০ আয়াত]
খ. নারীদের হিযাব বা শরীর ঢাকা পোষাক পড়তে বলা হয়েছে। আর এমন টাইট বা চাকচমকপূর্ণ পোষাক পড়তেও নিষেধ করা হয়েছে যা অন্যদের আকর্ষন করে। [দ্রঃ সুরা নুর/৩১ আয়াত]
গ. নারীদের একা ঘর থেকে বাইরে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। বাবা, ভাই বা মাহরাম কাউকে সাথে নিয়ে বাইরে যেতে বলা হয়েছে।
ঘ. যারা বিশ্বাসী তারা তো এসব মানবে কিন্তু যারা মানবে না এবং ধর্ষন করবে বা ইভ টিজ করবে তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র কঠোর ব্যবস্থা নেবে। যেমন ধর্ষন করলে মৃত্যুদন্ড দিবে।
এভাবে পুরুষ নারী এবং সরকারের সহযোগিতায় একটা সুসভ্য সমাজ তৈরি হবে। যেখানে না ধর্ষন হবে না ইভ টিজ। হলেও তা খুবই সামান্য পরিমাণে। এরকম ব্যবস্থা না নিয়ে কোন মতেই, কোন ভাবেই ধর্ষন বা শ্লীলতাহানী রুখা সম্ভব নয়। যেমন কড়া আইন করেও কি ভারতে ধর্ষন বন্ধ হয়েছে? বরং একটা রিপোর্ট মতে ধর্ষন ডবল হয়েছে। আল্লাহ আমাদের সৃষ্টি করেছেন তাই আল্লাহই ভালো জানেন আমাদের জন্য কোনটা ভালো। আল্লাহ বলেন, ‘তবে কি ওরা অজ্ঞ যুগের বিচার ব্যবস্থা কামনা করে? নিশ্চিত বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের জন্য আল্লাহ অপেক্ষা কে অধিকতর উত্তম মীমাংসাদাতা (বিধানকর্তা) আছে? [সুরা মাইদাহ/৫০]
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২১