হে বালিকা,
মাত্র কিছুদিন হলো তুমি এ পৃথিবীতে এসেছো।
আজ তোমার মধ্যে প্রাণের চাঞ্চল্য।
না দেখাকে দেখার, না জানাকে জানার তুমুল আগ্রহ।
এখনই সময়, দেখে নাও এ পৃথিবী।
কারন সামনে তোমাকে হয়ে থাকতে হবে চিরবন্দী।
হে কিশোরী,
এতোদিন হাসতে হাসতে দিন কাটালে।
আজ তুমি বয়ঃসন্ধিতে।
বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষন বৃদ্ধি পাওয়াই স্বাভাবিক।
মনে নানান চিন্তা-ভাবনা জন্ম নেওয়াই স্বাভাবিক।
কিন্তু সাবধান,
গন্ডির বাহিরে বের হলে ওরা তোমায় দিবে গর্দান।
আর তোমাকে ভূষিত করবে নষ্টা উপাধিতে।
হে যুবতী,
এখন তুমি অনেকটা বুঝতে শিখেছো।
হয়তো নিজের ছোট্ট দুনিয়ায় বেশ থাকতে শিখে গিয়েছো।
দেখেছো অনেক দুঃস্বপ্ন, দেখেছো এ সমাজের ভয়ঙ্কর সব বাস্তবতা।
তোমার মনে আজ প্রতিবাদ করার তীব্র ইচ্ছা।
তোমার প্রতি হওয়া অন্যায়গুলো সবাইকে জোর গলায় জানানোর ইচ্ছা।
গলা ছেড়ে গান গাওয়ার ইচ্ছা,
যৌবনটাকে উপভোগ করার ইচ্ছা।
কিন্তু এসব করার আগে তোমার সমাজের কথা একটিবার ভেবো।
ওদের অত্যাচার তুমি সইতে পারবে না।
ওরা মুহূর্তের মধ্যে তোমার চরিত্রকে করে দিবে কলঙ্কিত।
অতঃপর হে নারী,
আজ তুমি সংসারী হয়েছো।
ছোট ছোট নিষ্পাপ সন্তানের জননী হয়েছো।
যাদের মুখের দিকে তাকিয়ে তুমি যেকোন কাজ নির্দ্বিধায় করে যাবে,
শুধুমাত্র তাদের একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ দেওয়ার জন্য।
বেরিয়ে পড় ঘর ছেড়ে রাস্তায়,
এখান থেকে সেখানে অবিরাম ছোটাছুটি।
প্রতিদিন অসংখ্য হায়নাদের কামুক দৃষ্টি,
অতঃপর ঘরে ফেরা এবং একটি দীর্ঘ নিঃশ্বাস।
কিন্তু হায়!!
লোকে তোমাকে এরপরও বেশ্যা বলবে।
কারন তুমি যে গন্ডির বাহিরে।
করেছো ঘোর অপরাধ।
আর এ অপরাধের শাস্তি স্বরূপ লুটে নেওয়া হবে তোমার ইজ্জত।
জ্বলজ্বল করবে হায়নাদের চোখ,
চলবে পাশবিক নির্যাতন।
এ সমাজ থাকবে নির্বাক,
আর আমি শিশ্নধারী হওয়াতে লজ্জায় কুপোকাত।
এই আধুনিক যুগেও বাংলাদেশে নারীদের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি খুব একটা বদলায় নি।
এখনও আমরা নারীদের অবজ্ঞার চোখে দেখি। স্বাধীনচেতা নারী দেখলে তাদের স্বস্তা/নষ্টা/খা**/মা* ইত্যাদি অপবাদ দেই। গ্রামাঞ্চলে তো নারীদের আরো খারাপ দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা হয়। নারী যেন আমাদের জন্য শুধু ভোগের বস্তু।আজ পথেঘাটে চোখ দিয়ে ধর্ষন করা হচ্ছে নারীদের। পাবলিক বাসে বা যেকোন জায়গায় ইচ্ছাকৃত ভাবে ভুল করে নারীর পশ্চাতদেশে/বুকে হাত দিতে কেউ কেউ মরিয়া হয়ে ওঠে। স্ত্রীর প্রতি পাশবিক নির্যাতন করা হয়। তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে সঙ্গম করা হয়। বিভিন্ন বাসায় কাজের মেয়েদের প্রতি অকথ্য নির্যাতন চালানো হয়। খুনতী দিয়ে ছ্যাঁক দেওয়া হয় তাদের গোপনাঙ্গে। দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে ধর্ষন, নারী নির্যাতন ইত্যাদি জঘন্য অপরাধ। প্রতিদিন পত্রিকা খুললেই ধর্ষনের খবর পাওয়া যাবে নিশ্চিত।
সংক্ষেপে বলা চলে আজ কোথাও কোন নারী নিরাপদ নয়। মানুষের নৈতিকতা মিশে গিয়েছে মাটির সঙ্গে। সেই দিন মনে হয় আর খুবএকটা বেশি দূরে নয় যে দিন মেয়েও তার পিতার নিকট আসতে ভয় পাবে। তার পিতার থেকে দূরে দূরে থাকবে।
তাই আসুন আমরা আমাদের নিজেদের মন-মানসিকতার পরিবর্তন করে সকল প্রকার নারী নির্যাতন রোধে তীব্র প্রতিবাদ গড়ে তুলি।