somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্পঃ ডিঙ্গি নৌকা ( ২য় কিস্তি)

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ডিঙ্গি নৌকা (প্রথম কিস্তি)

।।৩।।
নদর আলি মেনোকার দিকে একটু খানি আগায়া দুই হাত তার দুই কাধে রাখে। মেনোকা এক হাতে ব্লাউজের সামনের একটা বোতাম খুলে, অন্য হাতে পিছনের ফিতা খুইলা দেয়। নদর আলী ডাইন হাত আলগোছে মেনোকার বাম বুকের উপর নাইমা আসে। মেনোকার কাজলে কালো করা গাঢ় চোখের দিকে চোখ পড়ে নদর আলীর। তার নাক নদর আলীর চোয়াল বরাবর, চোখ উপরের দিকে, চতুর্পাশে কালো ঘন জঙ্গলের মাঝখান থিকা একটা জ্বল জ্বলে সাদা চোখ নদর আলীর দিকে তাকায়া রইছে। মনে হয় যেন জাত গোখড়া, বিষাক্ত পাণখ সাপের ফনা। এখনই ছোপ মাইরা নদরের জীবন নাশ কইরা দিবে।
এমনে চাইয়া রইছো কেন? ছোপ মারা নিহি
কটকটা লাল রংয়ের লিপস্টিক মাখা মোটা ঠোট নইড়া উঠে। আমি ছোপ মারিনা। বিষ নামাই।
তাই নিহি। তুমি কি অহন আমার বিষ নামাইবা?
বিষ থাকলে নামামু, বিষ আছি নিহি?
নাই মানে। তোমার কথা মনে হইলেই কেমুন জানি লাগে। দিন শেষ অইয়া হাইঞ্চা আসলেতো আমার সারা শরীর বিষে কালা অইয়া উঠে।
আমিতো বিষ নামানির লাইগ্যাই বইয়া থাকি। বিষ নামায়া তোমারে শীতল কইরা দিমু নদর আলী।
এরপর কন্ঠ ক্রমশ নিচু হইয়া আসে নদর আলীর। নিচু কন্ঠে ফিস ফিস কইরা কথা চলে। নদর আলীর মুখ মেনোকার কপাল ছোয়। তারপর নাক পার হইয়া ঠোঁটে আইসা একটু থামে। দুইয়ের মাঝে লিপস্টিকের মাখামাখি হয়া যায়। নদর আলী বাম হাতের পিঠ দিয়া নিজের ঠোট মুছে। ডাইন হাত তখনও মেনোকার বাম বুকের উপর ঘুরা ঘুরি করতাছে। মেনোকা মাথা উপরে উঠায়া সহজ কইরা দেয়। নদর আলীর ঠোট দখিনা ঝিরি ঝিরি বাতাসের মতন ধীরে ধীরে থুতুনি পার হইয়া বুকের ভাঁজে আইসা আরেক দফা থামে। ব্লাউজের একটা বোতাম খুলার পরে, পরের বোতামটায় হাত দিয়া আবারও থামে। স্বশব্দে বুকের ভাজের মইধ্যে চুম্বন বসায় নদর আলী। একটা ঝাকুনি খেলে মেনোকার শরীরে, নদর আলী টের পায়। ডাইন হাত আইসা পরের বোতাম খুইলা দিলে মুখটা এইবার নাক সমেত দুই চুড়ার মাঝামাঝি ঢুইকা পড়ে। দুই হাত দিয়া চাপ দিতেই নদর আলীর দুই গালে নরম তুলতুলে মাখনের স্পর্শ লাগে। ধুপ আর সস্তা প্রসাধনী মিলমিশা কড়া গন্ধের সাথে শঙখিনীর শরীরের জল আর তামাটে গন্ধে মাতাল হইয়া উঠে নদর আলী। তারপর শ্বাসের শব্দ বাড়তে থাকে। মেনোকা একটু বাকা হইয়া পিছন দিকে আধা শোয়া হয়, নদর আলী ততক্ষনে টান টান করা পেটের অংশ দেইখা অস্তির হয়া উঠে।

আইজ এতো অস্থির কেনে নদর আলী?
মেনোকার কথায় ছেদ পরে তার। আরো কাছে আইনা ঝাপটাইয়া ধরে। সেইটা তুমি বুঝতে পারোনা মেনোকা।
আমার পারা না পারা দিয়া কি আসে যায়?
একটু দম নেয় মেনোকা। নদর আলীর চোখের দিকে তাকায় - আইজ আমার এনাম কই?
আরে চিন্তা করো কেন? এনাম তো দিমুই। এনামের লাগি এতো অস্থির ক্যান?
এনামের জন্যেইতো শইল্যের মইধ্যে বিষ ধরি নদর। লুটপাটের জন্যি শইল্যের কপাট খুইল্যা দিই। এনামি ছাড়া কেমনে হইবো?
এতো ভাবো ক্যন মেনোকা। খাড়াও এখনি দিতাছি।
মুখে কোন কথা কয়না মেনোকা। ডান হাত সটান কইরা নদর আলীর সামনে মেইলা ধরে।
নদর আলী শার্টের বোতাম শার্টটা খুইলা এক পাশে রাখে। পকেট থিকা একটা কড়কড়ে পাচশ টাকার নোট বাহির কইরা মেনোকার বুকে গুইজা দেয়। নদর আলী ততক্ষনে তার দুই পায়ের মাঝখানে বইসা রইছে। মেনোকার ঘাঘড়া উইঠা গেছে হাটু ছাড়ায়া উপরের দিকে। ঘাঘড়া একবারে কোমড়ের কাছে আইসা জমা হইয়া রইছে,উরতের শেষ অব্দি দেখা যাইতেছে। নদর আলী লুঙ্গির গিট ধইরা এক টানে খুইলা পাশে রাখে। মেনোকা নদর আলীর উলঙ্গ শরীরের দিকে তাকায় উপর থেইকা নিচ পর্যন্ত।
বুকের ভিতর থিকা নোটটা বাহির কইরা ভাজ খুলে মেনোকা।,” আর কই”
আর কিয়ের?
হেদিন যে তোমার বন্ধুরে আনলা তার এনাম তো দেও নাই।
আর তুমি হেই কথা অহনো মনে রাখছো। ওই আমার পরানের দোস্ত। তোমার মতন অমুন জিনিসের ভাগ ওরে না দিয়া পারন যায়?
ভাগ দিসো ভাল কথা। কিন্তু এনাম দিবানা। তোমি তো খালি তোমারটাই দেও। ওভার টাইমডা কেডায় দিবো?
আরে রাখো হইবো হইবো। এমন সময় পার থিকা ডাক আসে,নদর

মেনোকা জিগায় ওইডা কেডা?
আর কেডা আমার বন্ধু। ও আইজও আইছে তোমারে নিয়া জলে ভাসান দিবার চায়।
আইজও কি মাগনা নিবা?
আর কি সব কথা কও। আমি তোমারে সকলের চাইতে বেশী এনাম দেই। তুমি আমার লগে এমুন করো ক্যান?

একটা লম্বা দীর্ঘ শ্বাস আসে। নদরের মনের কথাটা মেনোকা এতক্ষনে ঠিক বুঝতে পারে। নদর তার নিয়মিত খরিদ্দার। গত দুই মাস যাবত সে তার নৌকায় আসে। এতদিন বিভিন্ন নৌকায় ঘুরলেও মেনোকার কাছে আইসা তার মন বইসা পরে। সে ঠিক করছে সে তার কাছেই আসবে। তাই মেনোকারে বইলা দিছে সে যেন অন্য কাউরে নৌকায় না নেয়। সে কথা রাখছে যে দিন নদর আসে সেদিন সে আর কাউরে নেয় না। বাহিরের বাতি নিভায়া রাখে। নদর রাতভর নৌকায় থাকে। তার জন্য একটু বেশী এনাম দিতে হয় নদরের। এইটা নিয়া কারোই কোন অভিযোগ নাই। কয়েক দিন ধইরা মাঝে মইধ্যেই নদর সাথে কইরা তার এক বন্ধুরে নিয়া আসে কিন্তু মেনোকারে বাড়তি কোন টাকা দেয়না, দিতে রাজিও হয়না। আইজও সে এই কাজই করছে। মেনোকা বুঝতে পারে নদর এইটাই করবে। এইটা করতেই থাকবে। আইজ যখন আরেক জনকে সাথে নিয়া আসছে তখন তার মাথায় অন্য বুদ্ধি খেইলা গেল।

মেনোকা জানে তার সাথে তর্ক বির্তক গায়ের জোরে কোন কিছুতেই পারবেনা। নদর আলীরা সংখ্যায় অনেক। তিতাসের বুক জুইড়া ওরা মাছ ধরার জাল পাতে। সেই পাতা জালে মাছের সাথে সাথে মেনোকারা ধরা পড়ে। ঝামেলা হইলে বাইদা নৌকা গুলারে তাড়ায়া দিবে। তাই তারা কখনো কোন খদ্দেরের সাথে ঝগড়া বিবাদে যায়না। তাতে এইটা মনে করার কোন কারন নাই যে তারা নিজের ক্ষতি নিয়া খুশি থাকে। ওরা ওদের হিসাব আদায় কইরা লয় কড়া গন্ডায়। মেনোকা নতুন হিসাবের খাতায় নাম লেখায়।
তোমার জন্যি একটা বালা খবর আছে নদর।
নদর আলী চমকাইয়া উঠে। কি?
হাটুর উপর থিকা ঘাঘড়া নামাইয়া একটু উইঠা বসে মেনোকা। ব্লাউজের দুই বোতাম এখনো খোলা। দুই স্তনের আধাটা অংশ এখনো দেখা যাইতেছে। চুলের খোপা থেইকা বাশের কাঠি ছাড়াইয়া মাথাটা একবার দুলুনি দিতেই তার ঘন কালো চুল চারিদিকে ছড়াইয়া পড়ছে। পিঠ ছড়ানো ঘন কালো চুল একেবারে সিংহের কেশরের মত ফুইলা উঠছে। চুল থিকা শ্যম্পুর গন্ধটা ধক কইরা নদরের নাকে আইসা লাগে।
কি বালা খবর কইবানা?
আরে কমু কমু। ঠোটের কোনায় রহস্যময় আধা আধা দুস্ট হাসি।
হোন। আমাগো বহরে নতুন একটা মাইয়া কামে লাগছে।
কি কও?
হ। এই কয়েকদিন হইলো? তার বয়স আমার চাইতেও কম। তুমি চাইলে আইজ তারে আনবার পারি।
হাছা কইতাছো।
হারিকেনের উল্টা দিকের আলোতে নদরের চেহারা ঠিক ভালো মতন দেখা যাইতেছেনা ঠিকই কিন্তু তার চোখের মইধ্যে একটা চরম লিপ্সা ফুইটা উঠছে এই সে বুঝতে পারে।
তুমি কইলে আনবার পারি।
তারে এনাম দেয়া লাগবোনা?
একবারের জন্য তারে একশ ট্যকা দিলেই চলবো। নতুন মাইয়াতো চক্কর বক্কর কিছুই বুঝেনা। একশো টেকা নাই?
আছে আছে। যাও নিয়া আসো।
তাইলে লুঙ্গি পড়ো। নৌকা ভাসান দিতাছি।
নদর আলি অতক্ষনে ঘাইমা গেছে। দক্ষিনের পর্দা সরাইয়া দিতেই ঝিরি ঝিরি বাতাসের পরিমানটা বাড়ছে। তিতাসের জল ধোয়া বাতাস। শরীর যতটা জুড়ায় পরান তার চাইতে বেশী জুড়ায়। মেনোকা নদরের শার্টটা আগায়া দেয়। নিজ হাতে নিজের ব্লাউজ বোতাম দুইটা আটকায়া একটু নিচের দিকে টাইনা দেয়। ব্লাউজের উপর দিয়ে হাত ঢুকাইয়া বুকের অবস্থানটা ঠিক কইরা নেয়। ছইয়ের পর্দা ঠেইলা বাইরে আইসা দাড়ায়।
তোমার বন্ধুরে নিবানা।
নিতাম?
আইচ্ছা থাক। নতুন ছেড়িটারে নিয়া আসি। তোমারে নতুন ছেড়ির লগে দিয়া আমি তোমার বন্ধুরে সময় দিমুনে।
আইচ্ছা
তয় এইবার কিন্তু এনাম দিতে ভুল কইরোনা।
আরে না না
তোমার জন্যি নতুন ছেড়ি আইনা দিমু। আমারে আবার ভুইলা যাইওয়না কিন্তু।
কি যে কও শঙ্খিনী? তুমি চাইলেতো তোমারে নৌকা থিকা ছাড়ায়া নিয়া যাইতাম।
তাইলে নিয়া চলো। (চলবে)

( আর এক কিস্তিতে শেষ হবে)
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৪৫
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাসান মাহমুদ গর্ত থেকে বের হয়েছে

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১২


যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাংলা টেলিভিশন চ্যানেল হাসান মাহমুদের সাক্ষাৎকার প্রচার করেছে। আমি ভাবতেও পারি নাই উনি এতো তারাতারি গর্ত থেকে বের হয়ে আসবে। এই লোকের কথা শুনলে আমার গায়ের লোম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দারিদ্রতা দূরীকরণে যাকাতের তাৎপর্য কতটুকু?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১৮



দরিদ্র দূরীকরণে যাকাতের কোনো ভূমিকা নেই।
যাকাত দিয়ে দারিদ্রতা দূর করা যায় না। যাকাত বহু বছর আগের সিস্টেম। এই সিস্টেম আজকের আধুনিক যুগে কাজ করবে না। বিশ্ব অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখস্তান.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

শেখস্তান.....

বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের বিয়ের খাওয়া

লিখেছেন প্রামানিক, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৮


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

১৯৬৮ সালের ঘটনা। বর আমার দূর সম্পর্কের ফুফাতো ভাই। নাম মোঃ মোফাত আলী। তার বিয়েটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। বাবা ছিলেন সেই বিয়ের মাতব্বর।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপি-আওয়ামী লীগের মধ্যে মৈত্রী হতে পারে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০০


২০০১ সাল থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত আওয়ামী লীগের ওপর যে নির্যাতন চালিয়েছে, গত ১৫ বছরে (২০০৯-২০২৪) আওয়ামী লীগ সুদে-আসলে সব উসুল করে নিয়েছে। গত ৫ আগস্ট পতন হয়েছে আওয়ামী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×