::::::: গল্প :::::::
বৃষ্টি মেয়েটির ভিষন প্রিয়। সকাল কিংবা দুপুর কিংবা হউকনা মধ্যরাত, আকাশে মেঘের গর্জন শুনলেই সে উতলা হয়ে উঠে। মনের মধ্যে লুকিয়ে থাকা মেঘ গুলো জড়ো হতে থাকে আকাশের সাথে পাল্লা দিয়ে। একসময় আকাশের মেঘ তার মনের মেঘের সাথে মিতালী করে নেমে আসে ধরণীতে। ভিতরে মেয়েটির শুনশান নিরবতা ভাঙ্গা উথাল পাথাল হৃদয় ভাঙ্গা মেঘের উষ্ণ বারি। আর বাহিরে বহিছে মেঘের আড়ি ভাঙ্গা গগন বিদারী ভুবন ভাসানিয়া বৃষ্টি।
এককালে পৃথিবীর বড়ই বৃষ্টিহীন ছিল। তবে তৃষ্ণা ছিলনা। মেঘদল সেনাপতি আদেশের অপেক্ষায় থেকে মেঘেরা অলস হয়ে পরেছে সেই কবে থেকে। কবে তাদের যৌবন আসে কবে তা মুছে যায় কে তার হিসেব রাখে। পৃথিবী ডাকেনা তাইতো মেঘদলের মনে কষ্টের সীমা ছিলনা। অতপর পৃথিবীর বিষ বৃক্ষ ফুড়ে একটি মেয়ের জন্ম হলো। মেয়েটি ক্রমে বড় হতে লাগল। একসময় সে হামাগুড়ি থেকে দাড়াতে শিখে। সে হাটতেও শিখে যায়। দৌড়ায় পাড়ার এ মাথা থেকে ওমাথা। সে চঞ্চল, সে উদ্দাম, সে মুক্তি বিহঙ্গ, উড়ে চলে গাছে শাখে শাখে। মাটি ফুড়ে তুলে আনে মৃত্তিকামতি। শতদল শত চঞ্চল মেঘদলের সাথে বোহেমিয়ান উদ্দাম মাতামাতি।
রি রি পড়ে গেল মেঠো পথে, কলসিকাখে মুখড়া রমনীদের কলকাকলীতে ভরা নদীর ঘাটে, কালসিটে দাগ পড়ে গেল সভ্যতার শ্বেত শুভ্র চাদরে। পাড়ার উঠতি নওজোয়ানেরা দায়িত্ব না নিলে সমাজ কলুষিত হয়ে দুগর্ন্ধ ছড়াতে শুরু করবে। এখনই বৃষ্টি চাই। নেমে এস মেঘদল অঝোরে বৃষ্টি নামাও। কর্ষনে প্রবৃত্ত হও। জল দান করো। মেয়েটির যৌবন আসার আগেই তার যাবতীয় কুলষ ধুয়ে মুছে সাফ করে দাও।
নড়ে চড়ে বসে আকাশ রাজা। আদেশর কাছে মাথা নত করে দন্ডায়মান মেঘদল সেনাপতি। আঙ্গুলি হেলনে আর চোখের ইশারায় নেমে এলো ধরনীতে। বাশবৃক্ষ ঘন শীতল বনে প্রথম বৃষ্টি নামে। সবুজে ভরা চিড়ল পাতা থেকে চিপড়ে পড়া শেষ বিন্দু দিয়ে ধুয়ে ধুয়ে পুত পবিত্র হয়ে মেয়েটি। এরপর থেকে প্রতিদিন একটি মেয়ের জন্ম হয়। প্রতিদিন বড় হয় আর তাই আজও প্রতিদিন বৃষ্টি হয়।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:৩৯