দামিনী মারা গেছে এই জন্য পুরা ভারতে কত হইচই হচ্ছে। হ্যা দিল্লীর দামিনীর জন্য আমারও মন খুব খারাপ ছিল ২ দিন। দামিনীর লাশ সোনিয়া গান্ধী নিজে এয়ারপোর্ট থেকে গ্রহন করেছেন। দামিনীর প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে দিল্লীতে 31 Night উপলক্ষে বাণিজ্যিক অনুষ্ঠান গুলিও বাতিল করা হয়েছে। পুরা ভারত জুড়ে দামিনীর জন্য কত শোক সম্মানের বহিঃপ্রকাশই না ঘটছে। কিন্তু দিল্লীর এই দামিনীর মত ভারতের কাশ্মিরে হাজার হাজার মুসলিম নারী তো ভারতীয় সেনাবাহিনীর হাতে প্রতিনিয়ত ধর্ষিত হচ্ছে। কাশ্মীরে প্রায়ই অনেক মুসলিম মেয়ের উলঙ্গ লাশ ঝর্ণা বা ঝিল বা ঝিলম নদীর পাশে পাওয়া যায়। এমনকি অরুন্ধতি রায় পর্যন্ত বেশ কয়েক বছর আগে ভারতের সেনাবাহিনী কর্তৃক কাশ্মীরের মুসলিম মেয়েদের কে গন ধর্ষনের প্রতিবাদে কলম ধরেছিলেন। অরুন্ধতি রায়ের এই নিবন্ধ গুলি বাংলাদেশে প্রথম আলো ও যুগান্তর পত্রিকাও অনুবাদ করে ছাপিয়েছিল। এমনকি অরুন্ধতি রায় কাশ্মীরের স্বাধীনতার দাবি পর্যন্ত তুলেছিলেন যার জন্য অরুন্ধতি রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলাও হয়েছিল। কাশ্মীর হচ্ছে এই পৃথিবীর সবচেয়ে ঘন সামরিক বাহিনী অধ্যুষিত এলাকা। খোদ কাশ্মীরের মত এত সেনাবাহিনী পৃথিবীর আর কোন Civil এলাকায় নেই। কিন্তু কাশ্মীরের মেয়েরা শুধুমাত্র মুসলমান বলেই ভারতের সরকার এই মুসলিম মেয়েদের কে ভারতের সামরিক বাহিনীর সেবাদাসীতে পরিণত করেছে। শুধু কাশ্মীর কেন এই ২০০২ সালেও তো গুজরাটের মূখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বেও ৩০০০ এর মত মুসলিম মেয়েকে গণধর্ষন করে তারপর আগুণে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। জীবিত মেয়েদের কে আগুণে পুড়িয়ে মারা এটা হিন্দুদের একটা পবিত্র ধর্মীয় রীতি। হিন্দু ধর্ম মতে স্বামী মারা গেলে তার স্ত্রীকেও স্বামীর সাথে একসাথে চিতার আগুণে পুড়তে হয়। এই ২০০২ সালে গুজরাটের ৩০০০ এর মত মুসলিম মেয়েকে গণধর্ষন করে তারপর আগুণে পুড়িয়ে মেরে হিন্দুরা প্রাচীন সতীদাহ প্রথার একটা আধুনিক সংস্করন উদ্বোধন করলো। বলেন সীতারাম কি জয়! আসলে ভারতের জনগন নারী ধর্ষনকারী ব্যক্তিদের কে খুব পছন্দ করে। তা না নরেন্দ্র মোদী আবার কিভাবে ৩য় বারের মত মূখ্যমন্ত্রী হয়? মেরেছিল। গুজরাটের মূখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দাঙ্গার সময় বলেছিল - “ ৩ দিন তোমরা যা ইচ্ছা করতে পারবে। কোন সমস্যা নাই। “গুজরাটের মূখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ডাকে সাড়া দিয়ে গুজরাটের মন্দিরের বড় বড় ব্রাক্ষণ পুরাহিত রাও এক যোগে মুসলিম মেয়েদের কে গন ধর্ষন করা শুরু করেছিল।
গুজরাটে এই নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে উগ্রবাদী হিন্দুদের অপকর্মের কিছু চিত্র আপনারা প্রথম আলো পত্রিকার এই লিংক এ ক্লিক করলেই জানতে পারবেন
তাছাড়া গুজরাটের দাঙ্গায় শিবসেনা বজরঙ্গী এই সব হিন্দুত্ত্ব বাদী দলের অপকর্মের বিস্তারিত চিত্র পাবেন এই ওয়েবসাইট
আমরা মুসলমানরা একটানা ৮০০ বছর ভারত শাসন করেছি। কোনদিনও কোন মুসলিম শাসক একটা হিন্দুকেও হত্যা করেনি, কোন হিন্দু মেয়েকেও আমরা লাঞ্জিত করি নি, বরং মুহাম্মদ বিন কাসিম নিম্ন বর্ণের হিন্দু মেয়েদের কে ব্রাক্ষণদের লালসার হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন। যার কারনে নিম্ন বর্ণের হিন্দু মেয়েরা মুহাম্মদ বিন কাসিমের মূর্তি বানিয়ে পূজা শুরু করেছিল। [ তথ্যসূত্রঃ আল বেরুনীর ভারত তত্ত্ব ] আমরা মুসলমানরা চাইলে আজকে ভারতে একটা হিন্দুই থাকত না। আর এই প্রতিদান আমাদের কে খুব উত্তম ভাবে দেয়া হল গুজরাটে ৩০০০ মত মুসলিম মেয়েকে ধর্ষন করে আগুনে পুড়িয়ে কয়লা করার মাধ্যমে। খুব অবাক লাগে গুজরাটের জনগন কি অন্ধ হয়ে গেল যে নরেন্দ্র মোদীকে আবার মূখ্যমন্ত্রী হিসাবে নিয়োগ দিল ? এমনকি নরেন্দ্র মোদীকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবেও নিয়োগ দেবার দাবি উঠেছে। গুজরাটের প্রতিটা হিন্দু এখন নরেন্দ্র মোদী হতে চাচ্ছে।
মুসলমানদের দীর্ঘ ৮০০ বছরের শাসনামলে রাজপুত মারাঠা এরকম অনেক কট্টরপন্থী হিন্দু গোষ্ঠী মুসলমানদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল। কিন্তু কখনোই কোন হিন্দু ঐতিহাসিক দেখাতে পারবেনা যে কোন মুসলিম শাসক একটা হিন্দু মেয়েকেও ধর্ষন করেছিল। ভারত আমরাও শাসন করেছি আর এখন কংগ্রেস ও বিজেপিরাও শাসন করছে। আমাদের শাসনামলে আমরা মন্দিরের সেবাদাসী প্রথা উচ্ছেদ করে নিম্ন বর্ণের হিন্দু মেয়েদের কে ব্রাক্ষণদের লালসার হাত থেকে বাচিয়েছিলাম কিন্তু আজকে ৬০ টা বছর ধরে ভারতীয় সেনাবাহিনী কাশ্মীরের মুসলিম মেয়েদের প্রতি কি নির্যাতন টাই না করছে। আজকে দামিনী যদি কোন হিন্দু মেয়ে না হয়ে কোন কাশ্মীরের মুসলিম পরিবারের মেয়ে হত তাইলে বলা হত দামিনী আল কায়েদা লস্করে তৈয়বার সদস্য। দামিনী অবশ্যই কোন জংগী দলের সাথে জড়িত, তা না হলে এত গভীর রাতে দামিনী বাসে উঠেছিল কেন, নিশ্চয়ই দামিনী বাসে বোমা মারতে উঠেছিল। জঙ্গী দামিনীকে ধর্ষন করা ঠিকই হয়েছে। অথবা দেখা যেত শুধু কাশ্মীরের মুসলিম পরিবারের মেয়ে হবার কারনেই দামিনীর ধর্ষনের ঘটনাটা ভারতীয় প্রচার মাধ্যম এড়িয়ে গেছে।
আপনি যদি দিল্লীর মেডিক্যাল পড়ুয়া দামিনীকে ধর্ষনকারী ঐ মানুষ রুপী পশুদের কে জিজ্ঞাস করেন যে কার কাছ থেকে তোমরা একটি মেডিক্যাল পড়ুয়া ছাত্রীকে বাসের ভিতর গন ধর্ষন করার সাহস পেল ? তাইলে ঐ পশুরা অবশ্যই বলত- “ আমরা গন ধর্ষন করা শিখেছি গুজরাটে ৩য় বারের মত নির্বাচিত মূখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছ থেকে। যেখানে একজন মূখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্ত্বে গন ধর্ষন করা হয়, তারপর গন ধর্ষন করার পর ঐ মেয়ে গুলিকে আগুনে পুড়িয়ে কয়লা করে দেয়া হয়, আবার ঐ মূখ্যমন্ত্রী পর পর তিন বার নির্বাচিত হয় সেইখানে আমরা তো দামিনীকে খালি ধর্ষনই করেছি তাকে তো আর আমরা আগুনে পুড়ায়নি। “
ইসলামী আক্বীদা সংশোধনের জন্য আরো পড়তে পারেন
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বহু বিবাহ প্রসঙ্গে ইসলাম বিদ্বেষীদের সমালোচনার জবাব
আল্লাহ সুবহানাতায়ালার অস্তিত্ত্বের একটি বুদ্ধিবৃত্তিক প্রমান
পুরুষ জাতির বহু বিবাহ প্রথাকে ইসলামী শরীয়াহ আসলে কতটুকু সমর্থন করে
বনী কুরায়জা গোত্রের সকল পুরুষ ইহুদি হত্যা করা প্রসঙ্গে একটি পর্যালোচনা
ইসলামি শরীয়াহ কি কখনই দাস দাসী প্রথাকে সমর্থন করেছিল
স্টালিনের নৃশংসতার স্বীকার এক বাঙ্গালী বিপ্লবী
মাওসেতুং এর সময় চীনা মুসলমানদের দূর্দশতার কথা শুনুন