কিছুদিন আগে যখন কক্সবাজারের রামুতে বৌদ্ধ পল্লীতে আগুন দেয়া হল এই আগুন যে কারা লাগাল সরকার নিজে না ঐ এলাকার সাধারন জনগন এই প্রশ্নের উত্তর কিন্তু এখনো আমরা জানি না। আচ্ছা তাও কিছু বৌদ্ধ মন্দির ভাংচুর করা হয়েছে, কিছু বৌদ্ধ ভাই বোনদের ঘরে আগুন দেয়া হয়েছে তা তো আর অস্বীকার করা যাবে না। কিন্তু কোন বৌদ্ধ ধর্মালম্বীকে কি হত্যা করা হয়েছে ? এর উত্তর না। কোন বৌদ্ধ ধর্মালম্বীকে কি আহত করা হয়েছে ? এর উত্তর না । কোন বৌদ্ধ ধর্মালম্বী নারীকে কি ধর্ষন করা হয়েছে। এর উত্তর না।
আর যেইসব বৌদ্ধ মন্দির ও ঘর বাড়িতে আগুন দেয়া হয়েছে তারা কিন্তু ঠিকই ক্ষতিপূরন পেয়েছে। দেশের মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা রামুতে গিয়ে নিজ হাতে বৌদ্ধ দের ক্ষতি পূরন দিয়েছেন। আচ্ছা এখন আমরা দেখি রামু থেকে অনতিদূরে বার্মার আরাকানে রোহিঙ্গা মুসলমানদের কি অবস্থা।আরাকানে আজকে ৪০ বছর ধরে প্রায়ই যেটা হয় সেটা হল সুন্দর সুন্দর রোহিঙ্গা মুসলিম মেয়েদের কে বার্মার সেনাবাহিনী এসে ধরে নিয়ে যায়। ১ মাস ২ মাস এই এই সুন্দর সুন্দর রোহিঙ্গা মুসলিম কে তারা ভোগ দখল করে তারপর ইচ্ছা হলে তাদের কে হত্যা করে ফেলে বা অনেকে দয়া পরবশ হয়ে এই রোহিঙ্গা মেয়েদের কে নিজ গ্রামে দিয়ে যায়। সারা জীবন এই রোহিঙ্গা মেয়েরা একটা কলঙ্ক বয়ে নিয়ে বেড়ায়। এই যে আজকে ৪০ বছর ধরে বার্মার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা মেয়েদের কে ধর্ষন করছে তাদের কে ঘর থেকে প্রকাশ্যে উঠিয়ে নিয়ে সেনা বাহিনীর ক্যাম্পে নিয়ে এসে ভোগ দখল করছে এর কোন বিচার নাই। আর দাঙ্গার সময় রোহিঙ্গা মুসলমানদের কে বৌদ্ধ কর্তৃক হত্যা করা খুব স্বাভাবিক একটা ব্যাপার। রোহিঙ্গারা কার কাছে বিচার দিতে যাবে। বার্মায় কোন আইন আদালত কোর্ট কাচারী আছে নাকি ? মগের মুল্লুক এই শব্দ টা তো বার্মা থেকেই এসেছে। আজকে ৪০ বছর রোহিঙ্গারা কোন সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা সুবিধা পায় না, রোহিঙ্গা ছেলে মেয়েরা কোন সরকারী স্কুল কলেজে ভর্তি হতে পারে না। এর চেয়ে বেদনাদায়ক আর কি হতে পারে ?
যেইখানে রামুতে দেশের মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা চলে গিয়েছেন আর সেইখানে বার্মার সরকার বলছে জাতিসংঘ যেন রোহিঙ্গাদের ৩য় কোন দেশে পাঠিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করে। ছি
সত্যি কথা বলতে কি বার্মা এখন একটা ব্যর্থ রাষ্ট্র। বাংলাদেশ, ভারত ও শ্রীলংকার উচিত বার্মা দেশ টাকে আক্রমন করে নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে ফেলা। এই বার্মার সামরিক জান্তা ঐ দেশের সংখ্যালঘুদের জীবন যাত্রা কে ধব্বংস করে ফেলেছে।
বৌদ্ধরা যখনই রাষ্ট্র ক্ষমতা পায় তখনই নিজ দেশের জনগন ও সংখ্যা লঘুদের উপর অত্যাচার নির্যাতন শুরু করে। এটা এদের কে পুরানো খাসলত। যেমন কম্বোডিয়ায় ৭০ এর দশকে যখন পলপট ক্ষমতায় ছিল তখন এই পলপট সমাজতন্ত্রের নামে বিপ্লব করতে যেয়ে লাখ লাখ শহুরে কম্বোডিয়ান নাগরিকদের কে হত্যা করেছে। এই শহুরে নাগরিকদের দোষ ছিল এটাই যে উনারা পলপটের কথা মত শহর ছেড়ে গ্রামে গিয়ে কৃষিকাজ করতে রাজি হন নি। চীনের মাওসেতুং সাংস্কৃতিক বিপ্লবের নামে লাখ লাখ চীনা মুসলমান কে হত্যা করেছে। আর স্টালিন তো নিজের দেশের রুশ কমিউনিস্ট পার্টির নেতাদেরকেও হত্যা করতে ছাড়ে নি। স্টালিনের নৃশংসতার স্বীকার এক বাঙ্গালী বিপ্লবীর কথা এই লিংকে ক্লিক করে জানুন।
জুলাই মাসে যখন আরাকানে মুসলিম নির্যাতন শুরু হল তখন দেশের সকল ইসলামীক রাজনৈতিক দল গুলি যেমন জামায়াতে ইসলামী, চরমোনাইর পীরের ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, মুফতী আমিনীর ইসলামী ঐক্যজোট, হাফেজ্জী হুজুরের খেলাফত মজলিস এই সব দলের বড় বড় নেতারা বাংলাদেশের বড় বড় বৌদ্ধ ভিক্ষুদের কাছে ধর্না দিয়েছিল যেন উনারা কিছু বিবৃতি দেয় যেন বার্মার বৌদ্ধ নাগরিকরা যেন মুসলিম নিধনে আর অংশ গ্রহন না করে। কিন্তু এই বৌদ্ধ ভিক্ষুরা হিংসা ভরে একটা বিবৃতিও দেয় নাই। কিন্তু বাংলাদেশের বৌদ্ধ ভিক্ষুদের আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অনেক খ্যাতি আছে। উনারা যদি এখনও একটু এগিয়ে আসে কয়েকটা বিবৃতিও দেয় তাইলেও আশা করা যায় যে বার্মার আরাকানে মুসলিম নির্যাতন কিছুটা হলেও কমবে। কিন্তু আমরা মুসলমানরা কিন্তু ঠিকই রামুতে বৌদ্ধ পল্লীতে হামলার প্রতিবাদে মানব বন্ধন করছি। আসলে এই বৌদ্ধ ভিক্ষুদের মন তো হিংসায় ভরা। তারা পারলে আরো ইনিয়ে বিনিয়ে কান্নাকাটি করে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে একটু বেশি ক্ষতি পূরন আদায় করবে কিন্তু তাও নিজ ধর্ম্বালম্বীদের দোষ স্বীকার করে একটি বিবৃতিও দিবে না। এমনকি নেট ও Facebook জগতে কোন বৌদ্ধ ছেলে মেয়েদের কে আমি আরাকানে মুসলিম নির্যাতন এর প্রতিবাদে একটা Status ও দিতে দেখলাম না। এত নীচ বৌদ্ধদের মন মানসিকতা ছি। এদের জন্য এখন আমার ঘৃণা ছাড়া আর কিছু নাই।