এই যুদ্ধে জড়ানোটা ভারতের জন্য ভুল হয়ে থাকবে, পাকিস্তানের যা ক্ষতি হওয়ার তা গত এক দশকের বেশি সময় ধরে হয়ে আসছিলো, এখন পাকিস্তানের হারানোর কিছু নেই, অন্য দিকে যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হলে ভারত অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়বে! ভারত ভেঙ্গে কয়েকটি দেশে পরিণত হতে পারে। কিছু রাজ্যে বা কিছু ব্যক্তির অতি উৎসাহের কারণে ভোটের আগে মোদি সরকার যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লো, আগামীতে প্রমাণিত হবে এই যুদ্ধে জড়ানোটা অনেক বড় ভুল ছিলো!
১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট পাকিস্তান আর ১৫ আগস্ট ভারত নামের দুইটি দেশের জন্ম হয়। ১৯৭১ সালে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশের জন্ম। ১৯৪৭ সাল থাকেই ভারত পাকিস্তান যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে ।
কাশ্মীর যুদ্ধ- ১৯৪৭-৪৮ সালে কাশ্মীর যুদ্ধে প্রথম ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ সংঘটিত হয়। একে কাশ্মীর যুদ্ধ বলা হয়ে থাকে। কারণ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘটিত প্রথম যুদ্ধ মূলত কাশ্মীর সমস্যাকে কেন্দ্র করে হয়েছিল। তখন জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি হয়েছিল। সে সময়ে জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যকে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিভক্ত করে। ভারত জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ লাভ করে, পাকিস্তান আজাদ কাশ্মীর ও গিলগিত-বালতিস্তান অঞ্চল দুটির ওপর নিয়ন্ত্রণ লাভ করে।
কচ্ছ যুদ্ধ: ১৯৫৬ সালে দ্বন্দ্বটির সূচনা হয়। পরে ১৯৬৫ সালের জানুয়ারিতে পাকিস্তানি সীমান্তরক্ষীরা ভারত নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে পাহারা দিতে শুরু করে। ১৯৬৫ সালের ৮ এপ্রিল উভয় দেশই ‘কচ্ছ’ অঞ্চলে একে অপরের সীমান্ত চৌকির ওপর আক্রমণ চালায়। প্রথমে শুধু উভয় দেশের সীমান্ত পুলিশরা এ সংঘর্ষে জড়িত হয়। পরে খুব দ্রুত উভয় দেশের সশস্ত্রবাহিনীও জড়িয়ে পড়ে। ১৯৬৫ সালের জুনে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হ্যারল্ড উইলসন দেশ দু’টিকে সংঘর্ষ বন্ধ করতে রাজি করান। তিনি বিরোধটির নিষ্পত্তির জন্য ট্রাইব্যুনাল গঠন করেন। ১৯৬৮ সালে ট্রাইব্যুনালের রায়ে পাকিস্তান দাবিকৃত ৩,৫০০ বর্গ কিলোমিটারের মধ্যে ৩৫০ বর্গ কিলোমিটার ভূমি লাভ করে।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ- ১৯৭১ আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রথম থেকেই ভারত সহযোগীতা করে যাচ্ছিলেন ৩রা ডিসেম্বর যখন পাকিস্তানী বিমান বাহিনী ভারতের আকাশে এসে ভারতে হামলা করে তখনই ভারত সরাসরি যুদ্ধে জড়ায়। ৬ ডিসেম্বর থেকে বাংলাদেশ বাহিনী এবং ভারতীয় মিত্র বাহিনী এক সাথে যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করে, ১৬ ই ডিসেম্বর বাংলাদেশের স্বাধীনতা মধ্যে দিয়ে যুদ্ধ থামে।
কার্গিল যুদ্ধ: ১৯৯৯ সালের মে-জুলাই মাসে কাশ্মীরের কার্গিল জেলায় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ সংঘটিত হয়। পাকিস্তানি ফৌজ ও কাশ্মীরি বিচ্ছিন্নতাবাদীরা উভয় রাষ্ট্রের মধ্যে ডি ফ্যাক্টো সীমান্তরেখা হিসেবে পরিচিত নিয়ন্ত্রণ রেখা বা লাইন অব কন্ট্রোল পেরিয়ে ভারতে ঢুকে পড়লে এ যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে ওঠে। যুদ্ধ চলাকালীন ও যুদ্ধের পরে পাকিস্তান এ যুদ্ধের দায় সম্পূর্ণ কাশ্মীরি স্বাধীনতাপন্থী জঙ্গিদের ওপর চাপিয়ে দেয়। তবে ফেলে যাওয়া তথ্য-প্রমাণ এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ও সেনাপ্রধানের বিবৃতি থেকে স্পষ্ট জানা যায়, পাকিস্তানের আধাসামরিক বাহিনীও এ যুদ্ধের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিল। শেষে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক সমর্থনের সাহায্যে নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর পাকিস্তানকে ফৌজ প্রত্যাহারে বাধ্য করা হয়।
অতীতের সব গুলো যুদ্ধ থেকে এই দুইটি দেশের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি, প্রাণ হারানো ছাড়া তেমন বেশি কিছু অর্জন নেই বললেই চলে।
২৭ ফ্রেব্রুয়ারি ২০১৯
সূত্র-অনলাইন মিডিয়া
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১:৪২