০৬ সেপ্টেম্বর ১৯৯৬ ইং সে দিন শুক্রবার বিকেলে টিভিতে বাংলা ছায়াছবি দেখছিলাম, খবরের বিরতীর সময় ঘরের বাহিরে এলাম কিন্তু খবরের গান বাজতেছে!! এতো তারাতারি খবর শেষ! জলদী ঘরে ফিরেই দেখি খবরে বলছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্রের মহা নায়ক আর নেই গলায় ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে তখন কেউ তা মানতে পারেনি (এখনো মানতে পারেনি)। মানুষ পৃথিবীতে আসে এবং চলে যায় এই প্রকৃতির নিয়ম কিন্তু কারো কারো চলে যাওয়া সহজে মানা যায় না ঠিক তেমনি ক্ষণজন্মা সালমান শাহ্ চলে যাওয়া ।
ফ্যাশনে সালমান শাহকে অনুসরণ করেছেন বলিউড!
দেশীয় চলচ্চিত্রের রাজপুত্র সালমান শাহ ছিলেন কেতাদুরস্ত তারকা। তিনি সময়কে ছাপিয়ে যাওয়া ফ্যাশনের সঙ্গে দর্শককে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন বলে মনে করা হয়। বড়পর্দায় ক্ষণজন্মা এই অভিনয়শিল্পী যেসব পোশাক-পরিচ্ছদে হাজির হয়েছিলেন, সেটাই হয়ে গিয়েছিলো সাধারণ তরুণদের ফ্যাশন।
* সালমান শাহ তার একটি ছবিতে কপাল ঢেকে রাখা ব্যান্ডেনা পরেছিলেন। ২০১৪ সালে ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার’ ছবিতে শাহরুখ খানও অবিকল সেভাবেই ব্যান্ডেনা ব্যবহার করেন।
* ১৯৯৫ সালে সালমান শাহ গলায় যেভাবে আরবীয় রুমাল প্যাঁচিয়েছিলেন, ২০১২ সালে এসে ‘এক থা টাইগার’ ছবিতে সালমান খান সেটা অনুসরণ করেছেন বলে দাবি ভক্তদের।
* ১৯৯৫ সালে পুলিশি পোশাক ও টুপিতে যে ধরনের রোদচশমা আর গোফ রেখেছিলেন সালমান শাহ, ২০১০ সালে মুক্তি পাওয়া ‘দাবাং’ ছবিতে প্রায় একই সাজে দর্শকদের সামনে আসেন সালমান খান।
* ২০১৩ সালে ‘ধুম থ্রি’ ছবিতে ও এর প্রচারণা অনুষ্ঠানগুলোতে আমির খান যে হ্যাট পরেছেন, তা সালমান শাহ পরতেন বলে মনে করিয়ে দিচ্ছেন ভক্তরা।
* ২০০৩ সালে ‘তেরে নাম’ ছবিতে বড় চুলে ঠোঁটের এক কোণে সিগারেট রেখে ঘাড় তাক করে সালমান খানের তাকানোকে সালমান শাহর মাধ্যমে অনুপ্রাণিত হিসেবে দেখা হচ্ছে।
* ভারতের ওপার বাংলার জনপ্রিয় অভিনেতা দেবও সালমান শাহকে অনুসরণ করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। সালমানের পরা একই রকম নকশার একটি কটি গত বছর ‘হিরোগিরি’ ছবির গানে অভিনয়ের জন্য পরেছিলেন দেব।
* শুধু বলিউড তারকারা নন, ঢালিউড সুপারস্টার শাকিব খানও সালমান শাহে অনুপ্রাণিত। ‘রানা পাগলা-দি মেন্টাল’ ছবির একটি দৃশ্যে সালমানের মতোই চুল ঝুঁটি করেছিলেন তিনি।
সালমান শাহ্ মাত্র ৪ বছরের ক্যারিয়ারে ২৭ টি ছবি করেছেন সালমান শাহ্ জীবিত অবস্থায় ১৮টি ছবি মুক্তি পায় এবং তার মৃত্যুর পর ৯ টি ছবি মুক্তি পায় এবং ৮টি টিভি নাটক করে ভক্তের মনে চিরকাল স্থান করে নিয়েছেন।
সালমান শাহ্ মৃত্যুর কিছুদিন পর আমি আর আমার বন্ধু নিটাব খাঁন সালমান শাহ্ এর ছবির নাম দিয়ে দুই জনে দুইটি কবিতা লিখি, আমার লেখা কবিতাটি হারিয়ে গেছে কিন্তু আমার বন্ধুর লেখা কবিতাটি আছে তাই সেই কবিতাটি শেয়ার করলাম।
সালমান শাহ্
-আবদুল্লাহ আল নিটাব খাঁন
ওগো মোর ‘আঞ্জুমান’ ‘তুমি আমার’ ‘প্রিয়জন’
দিয়েছ তুমি মোরে ‘স্নেহ’ রয়েছ এই ‘অন্তরে-অন্তরে’
তুমি মোর ‘সুজন সখি’ এই হৃদয়ে ‘শুধু তুমি’
তুমি ‘আশা ভালবাসা’ হয়েছি ‘প্রেম-পিয়সী’
হবে ‘মহা মিলন’ তোমার মা করিবে ‘কন্যাদান’
এই তো ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’ গড়বো দুজন ‘জীবন সংসার’
নেবে আমার ‘মায়ের অধিকার’ থাকবেনা ‘দেন মোহর’
চির দিন ‘তোমাকে চাই’ কিন্তু ‘স্বপ্নের নায়ক’
হৃদয়ে ‘স্বপ্নের পৃথিবী’ ছেড়ে চলে গিয়েছ তুমি
খুঁজে নিয়েছ ‘স্বপ্নের ঠিকানা’ হয়েছি আমি ‘বিক্ষোভ’ বিখারী
হলো না ‘এই ঘর এই সংসার’ চোখে ঝরছে ‘আনন্দ অশ্রু’
‘বুকের ভিতর আগুন’ হলোনা সেই ‘প্রেম যুদ্ধ’
হৃদয়ে শুরু হচ্ছে ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’
শোনেছি ‘সত্যের মৃত্যু নেই’ এক দিন তার ‘বিচার হবে’।
০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ইং
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:২৯