somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পরকীয়ার বলি শিশু

২২ শে মার্চ, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



সমপ্রতি সমাজে পরকীয়ার জন্য মায়ের সহযোগিতায় শিশুরা বলি হচ্ছে। এখন মায়ের কাছেও শিশুরা আর নিরাপদ নয়। এ ব্যাপারটি ভাবাচ্ছে। প্রতিটি মানুষেরই নিজের পছন্দ-অপছন্দ আছে। আছে রম্নচিবোধ। বেঁচে থাকার ধরন। কিন্তু এ রম্নচিবোধ ও ধরন যদি কারো মৃত্যুর কারণ হয় তখনই তা চিনত্দার বিষয় হয়ে যায়। বিবাহিত জীবনে স্বামী বা স্ত্রী যদি অন্য কোনো বিপরীত লিঙ্গের ব্যক্তির সঙ্গে শারীরিক সমর্্পক গড়ে তোলে তখন সংসারে নিয়মানুযায়ী অশানত্দি দেখা দেয়। স্ত্রী বা স্বামীর সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্ক বর্তমান রেখে অন্য ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্ক অটুট রাখতে গিয়ে তখন যাকে যাকে পথের বাধা মনে হয় তাকেই সরিয়ে ফেলার চিনত্দা মাথায় চলে আসে। এখানে একটি ঘটনা তুলে ধরা হলো_ 'গত ৩ জানুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিঁড়িঘর থেকে মৃত উদ্ধার করা হয় শিশু রিয়াকে (৩)। ৮ জানুয়ারি মেয়ের খুনের বর্ণনা দিতে গিয়ে মা রোজিনা আক্তার জানান, সুলতানকে বিয়ে করার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় মেয়ে রিয়া। প্রেমিক সুলতান তাকে শর্ত দেয় 'একা চলে এলে সে বিয়ে করবে'। এরপর দুজন মিলে পরিকল্পনা করে। ঘটনার দিন রোজিনা হাসপাতালে ডাক্তারের রম্নমে ঢুকলে সুলতান রিয়াকে নিয়ে চলে যায়। এবং হাসপাতালের সিঁড়িঘরে রিয়াকে রম্নমাল দিয়ে চেপে ধরে হত্যা করে। রোজিনা (২৫) তাবলিগ জামায়েতের সঙ্গে যুক্ত। এ সূত্রে এলাকার এক ভাবির সঙ্গে তার সুসমর্্পক ছিল। পরে ওই ভাবির মাধ্যমে সুলতানের সঙ্গে রোজিনার পরিচয় হয়। পরিচয়ের একপর্যায়ে প্রণয় হয়। কিন্তু সুলতান অবিবাহিত হওয়ায় সনত্দানসহ বিবাহিত রোজিনাকে বিয়ে করা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেয়। বড় মেয়ের বয়স বেশি বলে তাকে ছেড়ে এলেও ছোট মেয়েকে ছেড়ে আসা সম্ভব নয় বলে দুজনে মিলে হত্যার পরিকল্পনা করে।' আমাদের সমাজে এ ধরনের ঘটনা কেন ঘটছে এবং এটাকে কীভাবে দূর করা যায় এ সম্পর্কে কথা বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মাসুদা এম রাশেদ চৌধুরী ও ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। নাজমা খাতুন এবং বাংলাদেশ ব্যাংক কলোনি উচ্চ আদর্শ বিদ্যালয়ের (ফরিদাবাদ) প্রধান শিৰক। নিচে তাদের বক্তব্য তুলে ধরা হলো। নাজমা খাতুন সহযোগী অধ্যাপক ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি মনোবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এটা শুধু সাইকোলজিক্যাল ব্যাপার নয়_ এর সঙ্গে পারিবারিক হিস্টোরিক্যাল ব্যাপারও জড়িত রয়েছে। বিয়ের পর স্বামী কীভাবে তার স্ত্রীকে গ্রহণ করে এটা খুবই একটা গুরম্নত্বপূর্ণ বিষয়। এরপর তাদের মধ্যে কেমন সম্পর্ক গড়ে ওঠে তার ওপরও নির্ভর করে পরবর্তী জীবন। স্ত্রীর প্রতি স্বামীর অবহেলা, অযত্ন আসত্দে আসত্দে নারীকে অন্যদিকে ধাবিত করে। যখন কোনো নারী নিজ পরিবারে অবহেলা বা কথায় কথায় হেয় প্রতিপন্ন হয় সে ৰেত্রে বিবাহিত নারীটি অন্য পুরম্নষের দিকে ঝুঁকে যেতে পারে। অবহেলার শিকার যারা তাদের মধ্যে নানা মানসিক অসুস্থতা জন্ম নেয়। তবে এ কারণগুলো খুবই সাধারণ কারণ। একেক ঘটনার পেছনে একেক পারিবারিক কারণ কাজ করে। অধ্যাপক মাসুদা এম রাশেদ চৌধুরী সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মা হওয়াটা সবার জন্য সমান নয়। এরকম ঘটনা সাধারণত ৩০ বছরের নিচে যাদের বয়স তাদের ৰেত্রে বেশি ঘটে। আমাদের সমাজে পারিবারিক বন্ধনটা আসত্দে আসত্দে কমে যাচ্ছে। দেখা যায় বিয়ের পর স্বামীর সঙ্গে কোনো কারণে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে না। তাদের মধ্যে ভালোবাসা না থাকায় সেই নারী অন্য পুরম্নষের দিকে আকৃষ্ট হচ্ছে। বিয়ের পর অপ্রত্যাশিতভাবে সনত্দান চলে আসায় সে সনত্দানের প্রতি মায়ের কোনো মমতা জন্মায় না। তখন সে সনত্দানকে মা নিজের চলার পথের বাধা মনে করে। প্রচণ্ড আত্মকেন্দ্রিক মা নিজেকে ছাড়া কিছুই ভাবতে পারে না। এখন 'আমার' চেয়ে 'আমি' শব্দটি বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে। আগে একান্নবর্তী পরিবার ছিল। এখন তা নেই। ফলে এটারও একটা প্রভাব রয়েছে। বৃটেনে ডিভোর্সের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় সে দেশের সরকার ঘরে ঘরে গিয়ে পরিবার না ভাঙার জন্য কাউন্সিলিং করেছে। আমাদের দেশেও এ ধরনের নৃশংস ঘটনা কমানোর জন্য কাউন্সিলিং করা যেতে পারে। মোসত্দফা কামাল প্রধান শিৰক বাংলাদেশ ব্যাংক কলোনি উচ্চ বিদ্যালয় সমাজে ভোগবাদী দর্শন, সামাজিক অস্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক সমস্যা ও পাশ্চাত্য সংস্কৃতির প্রভাবে এরকম ঘটনা ঘটছে। জৈবিক তাড়নাগুলোর ৰেত্রে শিৰিত/অশিৰিত সবাই একই আচরণ করে। তাই সব শ্রেণীর মানুষের মধ্যে এ ধরনের আচরণ করতে দেখা যায়। তবে নিম্ন শ্রেণীর লোকদের কথা সহজেই মিডিয়াতে প্রকাশ পায়। তাই আমরা জানতে পারি। আমাদের শিৰার কারিকুলামে মূল্যবোধ ও নৈতিকতা অনত্দর্ভুক্ত করা উচিত। তবে একক পরিবারও পরকীয়ার জন্য অনেকটা দায়ী। একই স্কুলের ইংরেজি শিৰক মো. শহীদুল হক বলেন, আমরা সনত্দানকে ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার বানাই কিন্তু একজন মানুষ হলো কিনা তার খবর নিই না। শিৰার প্রত্যেক বিভাগে মানবিকতা, মূল্যবোধের ওপর জোর দেয়া উচিত।

০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

এখানে সেরা ইগো কার?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪






ব্লগারদের মাঝে কাদের ইগো জনিত সমস্যা আছে? ইগোককে আঘাত লাগলে কেউ কেউ আদিম রোমান শিল্ড ব্যবহার করে,নাহয় পুতিনের মত প্রটেকটেড বুলেটপ্রুফ গাড়ি ব্যবহার করে।ইগো আপনাকে কোথায় নিয়ে গিয়েছে, টের পেয়েছেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবং আপনারা যারা কবিতা শুনতে জানেন না।

লিখেছেন চারাগাছ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮

‘August is the cruelest month’ বিশ্বখ্যাত কবি টিএস এলিয়টের কালজয়ী কাব্যগ্রন্থ ‘The Westland’-র এ অমোঘ বাণী যে বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এমন করে এক অনিবার্য নিয়তির মতো সত্য হয়ে উঠবে, তা বাঙালি... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মার্কিন নির্বাচনে এবার থাকছে বাংলা ব্যালট পেপার

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:২৪


আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাংলার উজ্জ্বল উপস্থিতি। একমাত্র এশীয় ভাষা হিসাবে ব্যালট পেপারে স্থান করে নিল বাংলা।সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর খবর অনুযায়ী, নিউ ইয়র্ক প্রদেশের ব্যালট পেপারে অন্য ভাষার সঙ্গে রয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×