আগের পর্ব : এই পর্বে আলাপ করা হইছে মদিনায় হিজরত করার পর বাতেনে নাখলায় সংঘটিত সাহাবী মুহাজীর সাহাবীদের কর্তৃক নিরস্ত্র কোরাইশ ব্যাবসায়ীদেরকে লুট করে তাদের হত্যা এবং বন্দী করা এবং পরে একটি আয়াত দিয়ে কিভাবে সেই হত্যা ও লুটকে জায়েজ করা হয়েছে তার তফসীর নিয়ে বিষদ আলোচনা করা হয়েছে।
আজকে একটা খবর পড়লাম। দিকে দিকে ইসলামবিদ্বেষ বাড়ছে। শুধু বিধর্মীদের মধ্যেই নয়, মুসলমানদের মধ্যেও নাস্তিকতার হার বাড়ছে। এখন নাস্তিকতার হার নির্নয় করার মতো মাপকাঠি যদিও এখন খুজে পাওয়া যায় নি তবে যতদিন ইসলামের নাম জঙ্গীবাদ অব্যাহত থাকবে ততদিন ইসলামত্যাগের পরিমান বাড়বে। একটা সাধারন উদাহরন বলি আগে মসজিদে গেলে একটা জামাতের সারিও হতো না। এখন অনেকগুলো হচ্ছে। খুশি হবার কিছু নাই, জনসংখ্যা বাড়ছে। আর যারা নামাজ পড়তে আসছেন খোঁজ নিয়ে দেখেন তারা কুন ধান্ধা নিয়া নামাজে আসছে। যাই হোক আলোচনা শুরু করি।
সূরা আল ইমরান (মদীনায় অবতীর্ণ), আয়াত সংখ্যা ৫৬
"অতএব যারা কাফের হয়েছে, তাদেরকে আমি কঠিন শাস্তি দেবো দুনিয়াতে এবং আখেরাতে-তাদের কোন সাহায্যকারী নেই। "
ইসলামের সমালোচনাকারীরা এই আয়াতকে দেখিয়ে বলেন মুসলমান ভিন্ন সবাইকে আল্লাহ কঠিন শাস্তি দেবেন এবং আখেরাতে খবর আছে। কিন্তু এটা আসলে ভুল ধারনা এই আয়াত সম্পর্কে। এই আয়াতের পূর্ববর্তি আয়াত গুলোর দিকে খেয়াল করি:"আর স্মরণ কর, যখন আল্লাহ বলবেন, হে ঈসা! আমি তোমাকে নিয়ে নেবো এবং তোমাকে নিজের দিকে তুলে নিবো-কাফেরদের থেকে তোমাকে পবিত্র করে দেবো। আর যারা তোমার অনুগত রয়েছে তাদেরকে কিয়ামতের দিন পর্যন্ত যারা অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করে তাদের উপর জয়ী করে রাখবো। বস্তুতঃ তোমাদের সবাইকে আমার কাছেই ফিরে আসতে হবে। তখন যে বিষয়ে তোমরা বিবাদ করতে, আমি তোমাদের মধ্যে তার ফয়সালা করে দেবো। "
এই আয়াতের সঠিক তাফসীর করতে হলে ৫৫ থেকে ৫৮ আয়াত গুলো পড়তে হবে এবং এই আয়াত টি সম্পূর্নই হযরত ঈসা আঃ কে নিয়েই যেখানে মূলত আল্লাহ বলতে চেয়েছেন তিনি যাকে ইচ্ছে যখন খুশি তাকে যেমন পুনরুজ্জীবিত করতে পারেন আবার যে কাউকে উঠিয়ে নিতে পারেন।যদিও অনেক তফসীর কারী মনে করেন হযরত ঈসা আঃ কে দিনের প্রথম তিন ভাগ বা সাত ভাগে মৃত হিসেবে রেখে দেন তারপর তাকে পুনরুজ্জীবিত করেন। কিন্তু এই আয়াতে وَفِّي এই শব্দটা নিয়ে নানা অনুবাদকের নানা মত। তবে অধিকাংশ মনে করেন উঠায়া নেয়া বা ঘুম পাড়িয়ে রাখা হবে কারন কোরানের অন্যান্য জায়গায় এই শব্দটা ঘুম পাড়ানির ক্ষেত্রে ব্যাবহ্রত হইছে। যাই হোক, ইস্যু এটা না। ইস্যু হলো এই আয়াতগুলোর মূল অর্থ হলো "তাদের অবিশ্বাসের কারনে এবং হযরত মরিয়ম আঃ এর উপর বড় অপবাদ দেয়ার ফলে এবং এই কারনে যে টারা বলে- আমরা মারিয়ামের সন্তান ঈসা মাসীহকে হত্যা করেছি অথচ তারা তাকে হত্যাও করেনি এবং শূলেও চড়ায়নি বরং তাদের জন্য তার প্রতিরূপ সৃষ্টি করা হয়েছিলো। তারা নিশ্চিতরূপে তাকে হত্যা করেনি" এ পর্যন্ত। বরং আল্লাহ তাকে তার নিকট উঠিয়ে নিয়েছেন এবং তিনি মহাপরাক্রমশালী, বিজ্ঞানময়। আহলে কিতাবের প্রত্যেকেই তার মৃত্যুর পূর্বে তার ওপর ঈমান আনবে এবং সে কিয়ামতের দিন তাদের উপর সাক্ষী হবে। সে সময় আহলে কিতাব তার উপর ঈমান আনবে কেননা , না তিনি জিজিয়া কর গ্রহন করবেন , না ইসলাম ছাড়া অন্য কিছু সমর্থন করবেন।
আর ৫৬ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে যেসব ইয়াহূদী হযরত ঈসা আঃ কে অবিশ্বাস করেছিলো এবং যেসব খ্রীষ্টান তার সম্পর্কে অশোভনীয় কথা বলেছিলো, দুনিয়ায় তাদেরকে হত্যা ও বন্দী করা হয়েছে এবং তাদের ধন মাল ও সম্রাজ্য ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। এভাবে তাদের উপর পার্থিব শাস্তি নেমে এসেছে। আর পরকালে তাদের ওপর যে শাস্তি নির্ধারিত রয়েছে সেগুলো নিয়েও তাদের ভাবা উচিত। তার মানে এই আয়াতটি ঘটে যাওয়া ঘটনা সমূহের বর্ননা মাত্র।
এখন আপনারাই মিলিয়ে দেখেন এই আয়াতের প্রেক্ষাপট আর ইসলাম বিদ্বেষীদের দাবী করা কথাগুলোর সাথে কতটুকু মেলে।
সূরা আল ইমরান (মদীনায় অবতীর্ণ), আয়াত সংখ্যা ১৫১
"খুব শীঘ্রই আমি কাফেরদের মনে ভীতির সঞ্চার করবো। কারণ, ওরা আল্লাহর সাথে অংশীদার সাব্যস্ত করে যে সম্পর্কে কোন সনদ অবতীর্ণ করা হয়নি। আর ওদের ঠিকানা হলো দোযখের আগুন। বস্তুতঃ জালেমদের ঠিকানা অত্যন্ত নিকৃষ্ট। "
এই আয়াতের ব্যাপারেও ইসলামবিরোধীরা আগের বক্তব্য তুলে ধরে ইসলাম ধর্মকে অসহিষ্ণু ধর্ম হিসেবে প্রমান করতে চায়। তাহলে আসুন আমরা এর তাফসীর গুলো জানি। এই আয়াতের পরিপূর্ন তাফসীর পেতে হলে ১৪৯ হতে ১৫৩ নম্বর আয়াতগুলোর অর্থ পড়তে পারেন যেটার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন। এর তাফসীর হলো আল্লাহ তা'আলা স্বীয় বান্দাদেরকে কাফির ও মুনাফিকদের কথা মান্য করতে নিষেধ করেছেন এবং বলেছেন "যদি তোমরা তাদের কথা মত চল তবে তোমরা ইহকাল ও পরকালে লাঞ্চিত ও অপমানিত হবে। তাদের চাহিদা তো এই যে তারা তোমাদেরকে দ্বীন ইসলাম হতে ফিরিয়ে দেয়"। আসলে এই আয়াতের প্রাক্ষাপট ব্যাখ্যা করার জন্য উহুদের যুদ্ধের প্রথম দিনের কথা বলা যেতে পারে। যেখানে কাফেরদের সংখ্যা ছিলো প্রায় তিন হাজার। নবিজী সাঃ কিছু তীরন্দাজদের পাহাড়ের ওপর উঠিয়ে বলেন যে ওখান থেকে কোনোমতে না নড়তে। যদি তারা হারতে থাকে তাহলে কাফেররা যাতে মোটেও পেছনের রাস্তা দিয়ে প্রবেশ করতে না পারে। আবার যদি জয়যুক্ত হয় তবুও যে তারা পিছু না হটে এবং এই অবস্থান ত্যাগ না করে। তো প্রথম দিনের যুদ্ধে কাফেররা পরাস্ত হয়ে পেছনে হটতে থাকে। তখন গনীমতের মাল দেখে তীরন্দাজদের একটা বড় অংশ নবি সাঃ নির্দেশ অমান্য করে এবং স্থান ত্যাগ করে। ওদিকে পিছুহটা কাফেরের দল পাহাড়ের ওপর খালি দেখতে পেয়ে দ্বিগুন শক্তি নিয়ে আক্রমন করে এবং পাহাড়ের ওপর দাড়িয়ে থাকা বাকি তীর্ন্দাজ শহীদ হয়। তাদের আক্রমনে নবীজি সাঃ লুটিয়ে পড়ে এবং মুখমন্ডল রক্তাক্ত হয়ে যায়। তখন তা দেখে মুসলমান যোদ্ধাগনের হুশ ফেরে এবং গনিমতের মাল থেকে মনোযোগ হটিয়ে নবিজী সাঃ এর ওপর ঝাপিয়ে পড়ে। এর আসল কথা হলো নিজেদের ভীরুতা ও নবিজী সাঃ এর নির্দেশ অমান্য করলে নিশ্চিৎ বিজয়কেও তিনি পরাজয়ে রূপান্তর করতে পারেন। কিন্তু এর পরেও আল্লাহ তা' আলা তাদেরকে ক্ষমা করেছেন কারন তিনি জানটেন তাদের সংখ্যা ও আসবাবপত্র খুবই ন গন্য। এভাবে কিছু মর্যাদা সম্পন্ন ব্যাক্তিকে শাহাদাত দানের পর তিনি স্বীয় পরীক্ষা উঠিয়ে নেন এবং অবশিষ্টকে ক্ষমা করে দান। আল্লাহ তা আলা বিশ্বাসী লোকদেরকে ক্ষমা করে দেন। এই যুদ্ধেই হযরত হামযা রাঃ এর পেট কেটে তার কলিজা হিন্দা নিয়ে যায় এবং নৃত্যরত অবস্থায় কাচা ভক্ষন করে।
যাই হোক এই হলো এর প্রেক্ষাপট। আপনারা আরো যারা ডিটেলস জানতে চান তারা উহুদের যুদ্ধ নিয়ে পড়ালেখা করলেই এই যুদ্ধ করাইশদের নৃশংসতা নিয়ে জানতে পারবেন।
সূরা আন নিসা (মদীনায় অবতীর্ণ), আয়াত সংখ্যা ৭৪-৭৬
"কাজেই আল্লাহর কাছে যারা পার্থিব জীবনকে আখেরাতের পরিবর্তে বিক্রি করে দেয় তাদের জেহাদ করাই কর্তব্য। বস্তুতঃ যারা আল্লাহর রাহে লড়াই করে এবং অতঃপর মৃত্যুবরণ করে কিংবা বিজয় অর্জন করে, আমি তাদেরকে মহাপুণ্য দান করব। আর তোমাদের কি হল যে, তেমারা আল্লাহর রাহে লড়াই করছ না দুর্বল সেই পুরুষ, নারী ও শিশুদের পক্ষে, যারা বলে, হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদিগকে এই জনপদ থেকে নিষ্কৃতি দান কর; এখানকার অধিবাসীরা যে, অত্যাচারী! আর তোমার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য পক্ষালম্বনকারী নির্ধারণ করে দাও এবং তোমার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য সাহায্যকারী নির্ধারণ করে দাও। যারা ঈমানদার তারা যে, জেহাদ করে আল্লাহর রাহেই। পক্ষান্তরে যারা কাফের তারা লড়াই করে শয়তানের পক্ষে সুতরাং তোমরা জেহাদ করতে থাক শয়তানের পক্ষালম্বনকারীদের বিরুদ্ধে, (দেখবে) শয়তানের চক্রান্ত একান্তই দুর্বল।"
সূরা আন নিসা (মদীনায় অবতীর্ণ), আয়াত সংখ্যা ৮৯
"তারা চায় যে, তারা যেমন কাফের, তোমরাও তেমনি কাফের হয়ে যাও, যাতে তোমরা এবং তারা সব সমান হয়ে যাও। অতএব, তাদের মধ্যে কাউকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না, যে পর্যন্ত না তারা আল্লাহর পথে হিজরত করে চলে আসে। অতঃপর যদি তারা বিমুখ হয়, তবে তাদেরকে পাকড়াও কর এবং যেখানে পাও হত্যা কর। তাদের মধ্যে কাউকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না এবং সাহায্যকারী বানিও না। "
সূরা আন নিসা (মদীনায় অবতীর্ণ), আয়াত সংখ্যা ৯৫
"গৃহে উপবিষ্ট মুসলমান-যাদের কোন সঙ্গত ওযর নেই এবং ঐ মুসলমান যারা জান ও মাল দ্বারা আল্লাহর পথে জেহাদ করে,-সমান নয়। যারা জান ও মাল দ্বারা জেহাদ করে, আল্লাহ তাদের পদমর্যাদা বাড়িয়ে দিয়েছেন গৃহে উপবিষ্টদের তুলনায় এবং প্রত্যেকের সাথেই আল্লাহ কল্যাণের ওয়াদা করেছেন। আল্লাহ মুজাহেদীনকে উপবিষ্টদের উপর মহান প্রতিদানে শ্রেষ্ঠ করেছেন। "
সূরা আন নিসার উপরোক্ত আয়াতগুলো দেখিয়ে বলা হয় যে শান্তিকামী মুসলমানদেরকেও সশস্ত্র জিহাদে যাবার কথা বলেছে।একানে নাকি একমাত্র প্রতিবন্ধি লোকদেরকেই সশস্ত্র জিহাদের থেকে বাদ দিয়ে সবাইকেই জিহাদে যেতে বাধ্য করা হয়। আর এসব আয়াত শুধু ইসলামবিরোধীরাই নয়, আইএসআইএস এবং তালেবানরা যখন কোনো গ্রাম বা শহর দখল করে তখন ওখানকার যুবক সবাইকে ধরে জিহাদে যেতে বাধ্য করে নতুবা খুন করে। কিন্তু এসব আয়াতের তফসীর এটা নয়।
প্রথমত আল্লাহ নির্দেশ দেন যে সেসময় যখন মুনাফিকরা সদা ষড়যন্ত্রে ব্যাস্ত এবং তারা আসলে ইসলামের বিরুদ্ধেই কাজ করে যাচ্ছিলো, তখন সবাইকে নিজেদের আত্মরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহন করতে বলেছেন। তারা যেন সবসময় নিজেদের সাথে প্রয়োজনীয় যুদ্ধাস্ত্র সাথে রাখে এবং যুদ্ধ সাজে সজ্জিত থাকে যাতে কাফেররা আক্রমন করলে স হজে জয়যুক্ত হতে না পারে। ছোট ছোট সৈন্যদলে বিভক্ত হয়ে বা সম্মিলিত ভাবে যেকোনোভাবেই হোক আহবান পাওয়ামাত্র যুদ্ধে যেতে পারে সেটার কথা বলা হয়েছে।মুজাহিদ রাঃ ও আরও কয়েকজন ইসলামী স্কলারের মতে মুনাফিক নেতাদের প্রধান আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই ইবনে সালূলের কার্যকলাপের দিকে ইঙ্গিত করে তার বয়াপারে সতর্কত থাকটে বলেছেন। তারা সব সময় এমনটাই ভাব করে যে আল্লাহর হেকমটের জন্য মুসলমানরা যদি কোনো কারনে শত্রুদের সাথে যুদ্ধ করে পরাজিত হয় এবং ক্ষতির সম্মুখিন হয় তখন তারা ঘরে বসে বুক ফুলিয়ে স্বীয় বুদ্ধির ওপর মোছে তাও দিতে থাকবে এবং গৌরব বোধ করবে। কিন্তু তারা বোঝে না যে যারা যুদ্ধে গেছেন তারা যে পরিমান পূন্য কামালো এর চেয়ে বেশী লাভবান আর কি হতে পারে। পরে যখন যুদ্ধে বিজয়ী হয়ে তারা বিভিন্ন গনিমতে মাল আর গৌোরব নিয়ে ফিরে আসে তখন তারা অবশ্য পরে আফসোস করে।
আল্লাহ তা'আলা মুমিনদেরকে তার পথে জিহাদের উদ্বুদ্ধ করছেন। তিনি তাদেরকে বলছেন-'গুটি কয়েক দুর্বল ও অস হায় লোক মক্কায় রয়ে গেছে যাদের মধ্যে নারী ও শিশুরাও রয়েছে। মক্কায় অবস্থান তাদের জন্যে অস হনীয় হয়ে উঠেছে। তাদের উপর কাফিরেরা নানা প্রকার উৎপীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে। সুতরাং তোমরা তাদেরকে মুক্ত করে আন। তারাা আল্লাহ তা'আলার নিকট প্রার্থনা জানাচ্ছে -' হে আল্লাহ! আমাদেরকে আপনি এ অত্যাচরীদের গ্রাম হতে অর্থাৎ মক্কা হতে বহির্গত করুন।
স হীহ বুখারী শরীফে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাঃ হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন,'আমি এবং আমার আম্মাও ঐ দুর্বলদের অন্তর্ভূক্ত ছিলাম।' এরপর আল্লাহ পাক বলেন:'মুমিন গণ আল্লাহ তা'আলার আদেশ পালন ও তার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্য যুদ্ধ করে থাকে। পক্ষান্তরে কাফিরেরা শয়তানের আনুগত্যের উদ্দেশ্যে যুদ্ধ করে। সুতরাং মুসলামানদের উচিত যে, টারা যেন আল্লাহ তা'আলার শত্রু ও শয়তানের বন্ধুদের বিরুদ্ধে প্রাণপণে যুদ্ধ করে এবং বিশ্বাস রাখে যে, শয়তানের কলাকৌশল সম্পূর্নরুপে বৃথায় পর্যবসিত হবে।
এরপরের আয়াতগুলো অবতীর্ন হয়েছিলো উহুদের যুদ্ধের যময় কোরাইশদের ৩ হাজার সৈন্যের বিপরীতে মুসলমানরা ছিলো প্রায় ১ হাজার। এমতাবস্থায় মুনাফিক প্রধান আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই ইবনে সালূল ৩০০ লোক নিয়ে পিছু হটে চলে যায়। ফলে মুসলমানরা তখন সংখ্যায় হয় ৭০০। এমন সময় অনেকেই বলেন এদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা হোক অনেকে বলেন যারা আমাদের মতই কলেমা পড়েছে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবো শুধু এ কারনে যে তারা হিজরত করেনি বা তাদের মটো ঘর বাড়ি ছাড়েনি? কিভাবে তাদের রাক্ত ও মাল হালাল করতে পারি।
এভাবে আলোচনা চলতে থাকলে একসময় তারা মতানৈক্যে পৌছে কিন্তু নবি সাঃ কোনো তখনও বলেননি। এ সময় এই আয়াত অবতীর্ন হয়। আল্লাহ তা আলা বলেন," তাডের অন্তরে তোমাদের প্রতি এত শত্রুতা রয়েছে তখন তোমাদেরকে নিষেধ করা হচ্ছে যে, যে পর্যন্ত তারা হিজরত না করছে সে পর্যন্ত তোমরা তাদের নিজের মনে করো না যে তারা তোমাদের বন্ধু ও সাহায্যকারী। বরং তারা নিজেরা এর যোগ্য যে নিয়মিতভাবে তাদের সাথে যুদ্ধ করা হবে। অতঃপর ওদের মধ্যে হতে ঐ লোকদেরকে পৃথক করা হচ্ছে যারা কোনো এমন সম্প্রদায়ের আশ্য়ে চলে যায় যাদের সঙ্গে মুসলমনাদের সন্ধি ও চুক্তি রয়েছে। তখন তাদের সন্ধিযুক্ত সম্প্রদায়ের মতোই হবে। যদিও পরে হুদায়বিয়ার চুক্তি অনুযায়ী যে কেউ চুক্তি করে মুসলমানদের কাচে সাহায্য প্রার্থনা করতো। কিন্তু পরে সূরা তওবার ৫ নম্বর আয়াতের পবিত্র মাসে যুদ্ধের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আয়াত অবতীর্ন হলে এই আয়াত সমূহ র হিত হয়ে যায়।
যাই হোক, মুনাফিকদের দ্বিমুখী আচরনের কারনেই এই ৮৯ থেকে ৯১ আয়াত অবতীর্ন হয়। এরপরের ৯৫ ও ৯৬ নম্বর আয়াত অবতীর্ন হয় স হীহ বুখারীর বর্ননায় হযরত বারা' রাঃ বলেন যে যখন এ আয়াতের প্রাথমিক শব্দগুলো অবতীর্ন হয়- গৃহে উপবিষ্টগণ ও ধর্মযোদ্ধাগন সমান নয় (যারা বিনা ওযরে গৃহে উপবিষ্ট থাকে)' তখন রাসুলুল্লাহ সাঃ হযরত যায়েদ রাঃ কে ডেকে নিচ্ছিলেন এমন সময়ে হযরত উম্মে মাকতূম রাঃ উপস্থিত হন এবং বলেন,' হে আল্লাহর রাসূল সাঃ! আমি তো অন্ধ।' যাই হোক এই আয়াত দ্বারা বদরের যুদ্ধে অংশগ্রহনকারী এবং যুদ্ধে অনুপস্থিতকারীদেরকে বুঝানো হয়েছে বদরের যুদ্ধের সময় হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে জাহাশ রাঃ এবং হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উম্মে মাতূম রাঃ কে এই আয়াতের মাধ্যমে অবকাশ দেয়া হয়।যার অন্ধ খোড়া রুগ্ন ইত্যাদি কিন্তু যুদ্ধে শরীক হতে ইচ্ছুক তাদেরকে মুজাহিদের মর্যাদা দেয়া হয়। এরপর আরো বলা হয় মদিনাবাসী প্রায় সকলেই একই মর্যাদায় অন্তর্ভূক্ত যদিও তারা ঘরেই থাকে। এই জন্য জিহাদকে ফরযে আইন নয়, ফরযে কিফায়া। তার মানে জিহাদে সবাইকে যেতেই হবে এমন কোনো কথা নাই, একটা গোত্রের কিছু সংখ্যক লোক করলে বাকিদের ওপর ওটা করা হয়ে যায়।
কিন্তু আধুনিক সময়ে আমরা দেখি জঙ্গিরা প্রায় জোর করেই জিহাদের নামে জঙ্গি দলভুক্ত করে এবং নীরিহ মানুষের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালায় রহিত আয়াত দেখিয়ে
তাফসীরের জন্য এই লিংক ফলো করতে পারেন
আজ এ পর্যন্তই.....
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জুলাই, ২০১৬ রাত ১২:২৮