পোস্টের উদ্দেশ্য:
বেশী কথা না বলে কাজের কথায় আসি। অনেকেই বলেন ধর্ষনের শীর্ষে থাকে আমেরিকা, সুইডেনের মতো দেশ যারা নারী স্বাধীনতার বিমূর্ত প্রতীক কিন্তু মুসলিম দেশ বিশেষ করে সৌদী আরব স হ মিডল ঈস্টের দেশগুলোতে ধর্ষনের পরিসংখ্যান হিসাব করলে তাদেরকে তলানীতে পাওয়া যায়। এই প্রশ্ন অনেকের মনেই জাগে এবং এজন্যই অনেকে শরীয়াহ আইনের মতো আইন কার্যকরের দাবী জানান। আজকে আমাদের আলোচনার উদ্দেশ্য হলো
১) সৌদী আরবের ধর্ষন সংক্রান্ত আইন সমূহ এবং নারী নির্যাতনের রকমফের
২) সৌদী আরবে নারীদের অধিকার এবং এই অধিকারের সাথে ধর্ষনের মতো অপরাধের বিচার চাইবার প্রবনতা
৩) উন্নত বিশ্বে ধর্ষন সংক্রান্ত সংজ্ঞা এবং তাদের আইন আর আইনী সমাধান পাবার সহজলভ্যতা
উপরের তিনটা বিষয়ে আলোচনা করে আমি দেখানোর চেষ্টা করবো আসলে ধর্ষন সম্পর্কে সবার কেন এমন ধারনা। এই পোস্টে ইসলামকে কটাক্ষ করার কোনো উদ্দেশ্য নেই কারন আমি নিজে ইসলাম ধর্মের অনুসারী। আর পোস্ট পড়ে বাকী যে যেভাবে ভাবেন সেটা তার নিজস্ব ব্যাপার। তথ্য সূত্রের ব্যাপারে যথসম্ভব আমি চেষ্টা করেছি প্রভাব মুক্ত এবং সঠিক তথ্যের সন্নিবেশ ঘটাতে। আশা করবো সবাই আলোচনাও করবেন সেভাবে।
সৌদী আরবের ধর্ষন সংক্রান্ত আইন
ধর্ষনের মতো চুরি, রাস্ট্রদ্রোহ, ধর্মান্তরীত, ব্যাভীচার, মদ খাওয়া, খুন এসব অপরাধ হুদুদ আইনের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত।সূত্র পড়তে এখানে ক্লিক করুন। বইটি আপনারা ফ্রিতে পড়তে পারবেন রেজিস্ট্রেশন করে নিলেই অনলাইনে। এই হুদুদ আইন ২০১৪ সালের পর্যন্ত ৫০ টা মুসলিম দেশের মধ্যে মোট ১৩ টি দেশ এর প্রচলন করেছে। সবার শেষে এর প্রচলন করেছে ব্রুনাই, ২০১৪ তে।
এখন আমাদের পোস্টের মূল আলোচনার বিষয় হলো ধর্ষন। তো কোনো নারী যদি ধর্ষিতা হন তাহলে তার এই ধর্ষনের অভিযোগ প্রমানের জন্য চার জন পুরুষ সাক্ষী যোগাড় করতে হবে। কোনো মেয়ে সাক্ষী গ্রহনযোগ্য নয়। যদি কোনো ধর্ষিতা ৪ জন পুরুষ সাক্ষী জোগাড় করতে না পারে তাহলে ঐ নারীকে জেনা বা অবৈধ যৌনসম্পর্ক বা ব্যাভিচারের অভিযোগে কমপক্ষে ৮০ দোররা প্রদান করে তার শাস্তি তৎক্ষনাৎ কার্যকর করা হবে।যারা সাক্ষী দেবেন তাদেরকে চার বার একই সাক্ষী একই ভাবে প্রদান করতে হবে। এর অন্যথা হলে সাক্ষীগনকে শাস্তি দেয়া হবে।সুত্র পড়তে এখানে ক্লিক করুন।
কোরান শরীফে এই ব্যাপারে যে আয়াতগুলো অবতীর্ন হইছে:
সূরা আন নূর, আয়াত ৪ থেকে ৬
৪)যারা সতী-সাধ্বী নারীর প্রতি অপবাদ আরোপ করে অতঃপর স্বপক্ষে চার জন পুরুষ সাক্ষী উপস্থিত করে না, তাদেরকে আশিটি বেত্রাঘাত করবে এবং কখনও তাদের সাক্ষ্য কবুল করবে না। এরাই না’ফারমান।
৫)কিন্তু যারা এরপর তওবা করে এবং সংশোধিত হয়, আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম মেহেরবান।
৬) এবং যারা তাদের স্ত্রীদের প্রতি অপবাদ আরোপ করে এবং তারা নিজেরা ছাড়া তাদের কোন সাক্ষী নেই, এরূপ ব্যক্তির সাক্ষ্য এভাবে হবে যে, সে আল্লাহর কসম খেয়ে চারবার সাক্ষ্য দেবে যে, সে অবশ্যই সত্যবাদী।
সূরা আত তাওবাহ (মদীনায় অবতীর্ণ), আয়াত সংখ্যা ৬৬
ছলনা কর না, তোমরা যে কাফের হয়ে গেছ ঈমান প্রকাশ করার পর। তোমাদের মধ্যে কোন কোন লোককে যদি আমি ক্ষমা করে দেইও, তবে অবশ্য কিছু লোককে আযাবও দেব। কারণ, তারা ছিল গোনাহগার।
সূরা নাহল (মক্কায় অবতীর্ণ), আয়াত সংখ্যা ১০৬
যার উপর জবরদস্তি করা হয় এবং তার অন্তর বিশ্বাসে অটল থাকে সে ব্যতীত যে কেউ বিশ্বাসী হওয়ার পর আল্লাহতে অবিশ্বাসী হয় এবং কুফরীর জন্য মন উম্মুক্ত করে দেয় তাদের উপর আপতিত হবে আল্লাহর গযব এবং তাদের জন্যে রয়েছে শাস্তি।
এখন কথা হলো ডিএনএ টেস্ট করলেই তো প্রমান করা যায় যে অভিযুক্ত ব্যাক্তি দোষী কিনা। হুদুদ আইনে ডিএনএ পরীক্ষার কোনো গুরুত্ব নেই। এর কারন হলো আগে এই প্রযুক্তি ছিলো না আর শরীয়া আইনের বড় বড় আলেমরা এখনও মনে করেন যে নারীদের বেগানা পুরুষের সামনে একা যাবার কোনো উপায় নেই। যেহেতু সে একা ঐ বেগানা পুরুষের সাথে এক রুমে অবস্থান করেছে সেহেতু উক্ত ধর্ষিতার তাতে সম্মতি ছিলো। সৌদি আরবে এই ডিএনএ পরীক্ষার কোনো ভূমিকা না থাকলেও (হুদুদ আইনে এর কোনো সুযোগ নেই: সুত্র ১,২), মালয়েশিয়াতে ডিএনএ এবং নারী যদি গর্ভবতী হয়ে পড়ে তাহলে এটাকে পরোক্ষ আলামত হিসেবে আদালত আমলে নেবে। নারী গর্ভবতী হলে বাচ্চা জন্ম দেবার পর মাকে এবং পুরুষকে উভয়কেই ব্যাভিচারের দায়ে দু বছরের জেল বা জরিমানা বা উভয় শাস্তিতে দন্ডিত করা হয় (Section 498 of the Penal Code)।
আর যদি ধর্ষিতা অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ধর্ষনের অভিযোগ প্রমান করতে পারে তাহলে তাকে দোররা বা মৃত্যুদন্ড প্রদান করা হবে। কিন্তু যদি ধর্ষিতা অভিযুক্তকে ধর্ষনের আগে সাঙ্গ দেয়, তাহলে মৃত্যুদন্ড রহিত করে উভয়কে দোররা মারার বিধান আছে।
ইসলামী শরীয়াহ আইন জানতে এই বইটি আপনারা ফ্রীতে অনলাইনে পড়তে পারেন।
সৌদী আরবে নারী নির্যাতনের রকমফের এবং পরিসংখ্যানের শুভংকরী ফাঁক:
সৌদী আরবে বিবাহ পরবর্তী স্বামী কর্তৃক জোরপূর্বক যৌনাচারকে ধর্ষন হিসেবে ধরা হয় না। এছাড়া ২০১৩ সালের আগ পর্যন্ত স্বামী কর্তৃক স্ত্রী, বা গৃহকর্ত্রী বা গৃহকর্মী, শিশুদের ওপর শারীরিক বা মানসিক নির্যাতনকে কোনো ধর্তব্যের মতো ধরা হতো না। কিন্তু ২০১৩ সালে অব্যাহত আন্তর্জাতিক চাপ এবং আরব বসন্তের ভয়ে তারা একটা বিল পাশ করে যেখানে গৃহস্থালী এসব শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন সম্পর্কে পুলিশ কেস করা যাবে।
তবে এই আইনেরও ফাঁক ফোকড় আছে। স্ত্রীকে কিভাবে পেটানো যায় সে বিষয়ে বিভিন্ন গাইড লাইন দিয়ে প্রায় প্রতিদিনই মুত্তাওয়া আর মোল্লারা সরকারী টেলিভিশনে নানা টক শোর আয়োজন করে। তেমনি একটা টকশো আপনারা দেখতে পারেন যেখানে আপনারা গাইড লাইন পাবেন আপনার আপনাদের স্ত্রীদেরকে কিভাবে এবং কোন ছল ছুতোয় পেটাতে পারবেন। ২০১৩ সালের আগ পর্যন্ত মানসিক নির্যাতন বৈধ ছিলো দেশে। তার ভিডিও পাবেন ২০১১ সালে করা এক ইসলামী স্কলারের।
এখন প্রশ্ন আসে যেখানে ধর্ষিত হলে ৪ জন সাক্ষীকে ধর্ষিতাকেই যোগাড় করতে হবে আর যদি যোগাড় করাও যায় তাহলে সেই সাক্ষীকে ৪ বার কনফেশন দিতে হবে তাহলে তার পক্ষে কতটা সম্ভব? আর যদি প্রমানিত না করতে পারে তার জন্য অপেক্ষা করবে উল্টো সাজা। নীচের ভিডিও দেখুন:
আর সৌদী আরবে এই নিয়মের ফাঁক দিয়ে যে প্রায় প্রতিটা নারীই কম বেশী ধর্ষন বা যৌন নিগ্রহের শিকার তার তথ্য পাবেন আলজাজিরার এই ভিডিওতে:
আবার কিছু দিন আগে এক ইসলামিক স্কলার যিনি কিনা শরীয়াহ আইন সম্পাদনকারী মোল্লাদের মধ্যে একজন তিনি তার ৫ বছরের মেয়েকে সন্দেহের বশে আক্রোশের মুখে ধর্ষন করে এবং পরে তার লাশ টুকরো টুকরো করে। কিন্তু ব্লাড মানি দিয়ে মৃত্যুদন্ড থেকে বেচে যায়। আমি সংবাদের কোনো লিংক না দিয়ে সেই ভিডিওটিই দিচ্ছি, কারন এতে শরীয়াহ আইনের বর্বরতা ফুটে উঠবে খুব ভালো করে।
মাত্র ৩১ লক্ষ জনসংখ্যার মুসলিম দেশটিতে এসব ঘটনাগুলো খুব কমই জনসম্মুখে বা রাস্ট্র নিয়ন্ত্রিত পত্র পত্রিকায় প্রকাশ পায়। আর এসবের ভয়ের কারনেই যৌন হেনস্থা, অবমাননা বা ধর্ষনের কোনো ঘটনা সরকারী নীরিক্ষা বা পুলিশ কেসে আসে না। ধর্ষিত হলেও তাকেও চুপ করে থাকতে হয় সাক্ষী যোগাড় করতে না পারার ভয়ে। তবে যদি কোনো বিদেশী শ্রমিক বা নাগরিক এই অপকর্ম করে তাহলে তার আর রক্ষা নাই এবং তাকে সরাসরি লাইভ ভিডিও করে তার মৃত্যুদন্ড কার্যকর। তবে এক্ষেত্রে ভারতের নাগরিকদের জন্য শিথিল আছে। শিথিলতা হলো কোনো ভারতীয় নাগরিকের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ প্রমানিত হয় আদালতে তাহলে তা ভারতের পররাস্ট্রমন্ত্রনালয়কে জানাতে হবে। এবং তাকে ভারত সরকারের কাছে হস্তান্তর করতে হবে।
শরীয়াহ স্টাইলের নারী অধিকার
১) সৌদী আরবের রাজধানী রিয়াদের অনেক দোকানে নারীদের জন্য নো এন্ট্রি। এবং সেটা লিফলেট দিয়ে টাঙ্গিয়ে জানিয়ে দেয়া হয়।সূত্র
২) কোনো পুরুষ অভিভাবক ছাড়া ড্রাইভিং নিষিদ্ধ।
৩) চাকুরী করতে গেলে অভিভাবকের স্বাক্ষরস হ অনুমতি লাগবে।
৪) ঘরের বাইরে পুরুষ অভিভাবক ছাড়া বের হওয়া নিষিদ্ধ এমনকি ডাক্তারের কাছে যাওয়া অথবা শপিং করতে গেলেও। এই অভিভাবককে বলে মাহরাম। মাহরাম ছাড়া বের হলে যদি ধর্ষিতা হয়, তাহলে এক্ষেত্রে মেয়ের ধর্ষন হবার অভিযোগ খারিজ করে তাকে দোররা মারার বিধান আছে।
৫) বোরখা ছাড়া বাইরে যাওয়া নিষিদ্ধ।
৬) চাকুরী, ব্যাংক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পার্কে বেগানা পুরুষের সাথে নির্দিস্ট সময়ের বাইরে কথা বলা আইনত দন্ডনীয় আর যদি কোনো মোল্লার চোখে পড়েন তাহলে শরীয়াহ আইনের আওতায় নেয়া হয়। এই অপরাধ ব্যাভিচারের সমতুল্য।
৭) সৌদী আরবের মেয়েদের খেলা ধূলা নিষিদ্ধ না হলেও গত লন্ডন গেমসে নারীরা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করতে গেলে সেদেশের অধিকাংশ ইসলামিক স্কলাররা টাদের বেশ্যা বলে সম্বোধন করে।
৮) শপিং করতে গেলে ড্রেসিং রুমে জামা কাপড় পরিধান করে পরীক্ষা করতে পারবে না
৯) বার্বি পুতুল কেনা, আনসেন্সরড ফ্যাশন ম্যাগাজিন পড়া, গোরস্থানে নারীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ
১০) স্বামী কর্তৃক ধর্ষিত হলে সেটা কোনো অপরাধের মধ্যে পড়ে না। কাতিফ নামের ১৮ বছরের মেয়েকে কিডন্যাপ করে গনধর্ষনের পরও তাকে ৯০ টা দোররা খেতে হয় শুধু মাত্র মেহরাম ছারা ঘর থেকে বের হবার জন্য। এরকম ঘটনার শিকার হলে কে করবে যৌন নিগ্রহ বা ধর্ষনের বিরুদ্ধে কেস?
সুত্র পেতে এখানে ক্লিক করুন।
উন্নত পশ্চিমা বিশ্বে ধর্ষনের উদাহরন এবং শাস্তি:
উন্নত বিশ্বগুলোতে ধর্ষন, যৌন নিগ্রহ, লিঙ্গ বৈষম্য ইত্যাদীর সাজা একেকরকম হলেও এগুলোর সংজ্ঞা প্রায় একই। ১৯৫১ সালে আন্তর্জাতিক শ্রম সংগঠন (ILO) দ্বারা প্রণিত খসড়ায় বলা হয় নারী পুরুষ নির্বিশেষে সকলকে সমপরিমান কাজ এবং সমমজুরী দিতে হবে। এর ৭ বছর পর লিঙ্গ বৈষম্যের ওপর একটা কনভেনশন হয় যেখানে লিঙ্গ বৈষম্যের আওতায় আনা হয় যখন কোনো শ্রমিককে নিযুক্ত করা হবে, তার প্রশিক্ষন ইত্যাদির ওপর। সেখানে বলা হয় কোনো নারীকে কর্মক্ষেত্রে যদি কোনো কলিগ যৌন উত্তেজক কথা, ছবি, ইঙ্গিত অথবা অবমাননাকারী কটুক্তি বা গোপনাঙ্গ নিয়ে বিদ্রুপ, আচরন করা হয় তাহলে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এমনকি তার অনুমতি ব্যাতিরেকে তার শরীরের যেকোনো অংশে বা গোপনাঙ্গ স্পর্শ করা হয় সেটাও যৌননিগ্রহের মধ্যে পড়ে। যুক্তরাস্ট্র সাথে সাথেই এসব নীতিমালা মেনে আইন প্রনয়ন করে ফেলে। এর কয়েক দশক পর শুধু কর্মক্ষেত্রেই নয় সাধারন নাগরিক জীবনেও এই নিয়মের প্রতিফলন ঘটানো হয়।
পশ্চিমা দেশের প্রায় সবগুলো দেশের আইনেই বলা হয় কর্মক্ষেত্রের বাইরে বা ভিতরে এরকম যৌন নিগ্রহের শিকার হলে তাকে তৎক্ষনাৎ আইনের আওতায় নেয়া হবে এবং সাক্ষী হিসেবে যেকেউ প্রাপ্ত বয়স্ক বা কিশোরের সাক্ষীও গ্রহনযোগ্য।
অস্ট্রেলিয় এই আইনের রিফর্মেশন জানতে এখানে ক্লিক করুন।
সুইডেনের মতো নারীবাদী দেশে ১৪ বছরের মেয়েকে সেক্সুয়াল কনসেন্ট দেয়া হলেও তার কিছু শর্ত আছে:
শর্তগুলো হলো:
১) যৌনতার সম্পর্ক হবে পারস্পরিক মতে ভিত্তিতে এবং সমবয়সীদের সাথে। ১৮ বছরের ওপরে গেলে সেটা ধর্ষন বলে চিহ্নিত হবে সেখানে মেয়েটির অনুমতি থাকুক কি না থাকুক।
২) ১৮ বছর বা তার ওপরে যদি মৌখিক অনুমতি নেয়ার যৌন সংসর্গে যায় এবং তা শেষ হবার পর সে নারী অভিযোগ করে তার এই যৌন অভিজ্ঞতা তার অনুমতি ব্যাতিরেকেই, তাহলে ডিএনএ টেস্টই যথেষ্ট এই ধর্ষন অভিযোগে অভিযুক্ত হবার জন্য। তাই বলা হয়ে থাকে যদি কোনো অপরিচিত মেয়ের সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতেই হয়, কাগজে কলমে সাইন নিয়ে করাটাই নিরাপদ।
৩) যৌন নিগ্রহ এবং ধর্ষনের সংজ্ঞা একজন বিবাহিত নারীর জন্য খাটে প্রবলভাবে। যদি তার স্বামী অনুমতি ব্যাতিরেকে তার সাথে যৌন সঙ্গম করে বা করার চেষ্টা করে বা তাকে মানসিকভাবে অত্যচার করে তাহলে সেই স্বামীও এই সাজা থেকে মুক্তি পাবে না।
সুইডেনের এসব নিয়ম জানতে পত্রিকার এই আর্টিক্যালটা পড়তে পারেন গুগল ট্রান্সলেট করে। আর আইনের খুটিনাটি জানতে এই লিংক।
আর পুরো নরডিক অন্ঞ্চলে নারীর বিরুদ্ধে অপরাধ নিয়ে একটা সুন্দর সার্ভে আছেযেখানে ধারনা পাওয়া যাবে মুসলিম দেশে যেগুলোকে খুব সাধারন প্যারামিটার হিসেবে সেগুলো উন্নত বিশ্বে ধর্ষনের সমকক্ষ ধরা হয়।
ধর্ষনের ব্যাপারে আমেরিকার এফবিআই যে সংজ্ঞা দেয় :"Penetration, no matter how slight, of the vagina or anus with any body part or object, or oral penetration by a sex organ of another person, without the consent of the victim."[
যেহেতু পশ্চিমা বিশ্বে মিডিয়া স্বাধীন এবং সবার জন্য আইনের প্রয়োগ সমান ও আইনী সুবিধা পাবার অধিকার আছে, সেহেতু সামান্য মুখের কথাতেই এরা যৌন নিগ্রহের কেস করে ফেলে যা ধর্ষনেরই অন্তর্ভূক্ত। ঠিক এই কারনেই এসব দেশে ধর্ষনের রেকর্ড খুব বেশী এবং যদি আমরা খেয়াল করি এসব কেসের মীমাংসা প্রায় ৯৫ থেকে ৯৯% শতাংশের কাছাকাছি।
সুইডেনের ব্যাপারটা মোটামোটি ইকোনমিস্ট বেশভালোই ব্যাখ্যা করেছে।
আর এসব কারনেই সুইডেন, আমেরিকার মতো উন্নত দেশের ধর্ষনের পরিমান বেশী রেকর্ড করা হয়।
এখন যদি ধর্ষনের সংজ্ঞা আর বিচারিক ব্যাবস্থায় ন্যায়বিচারের এমন দুস্প্রাপ্যতার সম্ভাবনা বেশী থাকে তাহলে তো সে দেশে আসল ধর্ষনের সংখ্যা কখনোই প্রকাশ পাবে না।
আপনার কি মনে হয়?
আপনি কি এমন শরীয়াহ আইন চান এদেশে?
সুত্র:
১) I Hasan (2011), The Conflict Within Islam: Expressing Religion Through Politics, ISBN 978-1462083015, p. 92
২)A. bin Mohd Noor, & A.B. bin Ibrahim (2012), The Rights of a Rape Victim in Islamic Law, IIUM Law Journal, 16(1), pp. 65-83
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই মার্চ, ২০১৯ ভোর ৫:১৬