
1737 খৃষ্টাব্দে জন্মেছিলেন এবং মৃত্যু হয়েছিল ১৭৯৪-এ। ইংরেজ সরকার তাদের রাজনৈতিক প্রয়োজনে একটি ঐতিহাসিক শ্রেণী সৃষ্টি করতে চেয়েছিল এবং কর্মকাণ্ড এমন ছিল যেন তারাই নিয়েছিল সারা পৃথিবীর প্রাচীন ইতিহাস লেখার এজেন্সি। ইনিও ইংরেজ প্রচারিত সেইরকম একজন বড় মাপের ঐতিহাসিক। তাঁর সৃষ্ট অনেক ইতিহাসের মধ্যে যেটাকে বিশ্ববিখ্যাত বলে চালানো হয় সেটি হচ্ছে – Decline and Fall of the Roman Empire
লর্ড কর্ণওয়ালিশ Charles Lord Cornwallis (31 December 1738 – 5 October 1805)

জন্মগ্রহণ করেন ১৭৩৮ সালে। ভারতের গভর্নর জেনারেল হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেছিলেন ১৭৮৬তে। ১৭৯৩ এ তিনি করেছিলেন ‘চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত’ প্রথার প্রচলন। ঐ সর্বনেশে প্রথা জমির প্রকৃত মালিককে বঞ্চিত করে নিষ্ঠুরভাবে তার পরিবর্তে জমির নতুন মালিক হয়ে বসেন রাজা মহারাজা বাবু সমাজের বিরাট এক সুবিধাভোগী দল। তাঁর শাসনামলেই হয়েছিল মহীশুর যুদ্ধ। বুদ্ধি ও যোগ্যতায় তিনি আর একবার ভারতের গভর্নর জেনারেল পদে নিযুক্ত হয়েছিলেন ১৮০৪ খৃষ্টাব্দে। ১৮০৫ খৃষ্টাব্দে হয়েছিল তাঁর পরলোকগমন।
Sir William Jones (28 September 1746 – 27 April 1794)

১৭৪৬ এ জন্মগ্রহণ করেন। ১৭৮৩ তে তিনি হয়েছিলেন সুপ্রীম কোর্টের বিচারক। পূর্বে হেস্টিংসের আমলে কলকাতায় যে এশিয়াটিক সোসাইটির কথা বলা হয়েছে তার জন্মদাতা এই জোন্স সাহেব। ভারতে একটি হিন্দু বুদ্ধিজীবি তাবেদার শ্রেণী তৈরি করতে এবং হিন্দু মুসলমান মিলেমিশে গড়ে ওঠা সংস্কৃতিকে সম্পূর্ণ পৃথক করে দিতে পৃথিবীর ‘প্রাচীনতম’ ‘হিন্দুজাতি’, ‘হিন্দু সংস্কৃতি, ‘বেদ’, ‘বেদান্ত’, ‘গীতা’, ‘উপনিষদ’, ‘সংস্কৃত’, ‘ব্রাহ্মী’, ‘প্রাকৃত’, ‘ল্যাটিন’, ‘অবহাট্টা’ প্রভৃতি নান ভাষার গবেষণাগার এবং সেই সঙ্গে প্রাচীন যুগের পুঁথি, ‘তালপত্র’, ‘মুদ্রা’, ‘শিলালিপি’ প্রভৃতি ‘সংরক্ষণের’র জন্য তৈরি করা হয়েছিল এক বিরাট চক্রান্তপূর্ণ কারখানা- যেটির নাম এশিয়াটিক সোসাইটি। এই এশিয়াটিক সোসাইটি তৈরি হয়েছিল কলকাতায়, কিন্তু এটা ছিল লন্ডনের মূল কেন্দ্রের শাখা মাত্র। এই এশিয়াটিক সোসাইটি তৈরি হয়েছিল কলকাতায়, কিন্তু এটি ছিল লন্ডনের মূল কেন্দ্রের শাখা মাত্র। এই এশিয়াটিক সোসাইটি নামাক ‘কারখানা’টি এক উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কমিটির হাতে ছিল। তাতে প্রথম দিকে কোন ভারতীয় সদস্য ছিলেন না, কেননা সেই সময় এমন অনেক কিছু ‘সৃষ্টি’ করা হচ্ছিল যা ভারতীয়দের সম্মুখে হলে চক্রান্ত প্রকাশ হবার সম্ভাবনা ছিল। এই এশিয়াটিক সোসাইটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন ঐ ভদ্রলোক মিস্টার উইলিয়াম জোনস। ঐ পদটিতে আজীবন অধিষ্ঠিত ছিলেন তিনি। তিনিই প্রথম প্রকাশ্যে ভারতবর্ষে ইংরেজদের মধ্যে সংস্কৃত ভাষা নিয়ে গবেষণা করার অনুশীলন অথবা প্রহসন সৃষ্টি করেন। তিনি ভারতের ‘তথা পৃথিবীর’ নানা প্রান্ত হতে তাঁদের নির্ধারিত পণ্ডিতদের কাছ থেকে পাওয়া ও সৃষ্টি করা সত্য, অর্ধসত্য ও অসত্য অনেক তথ্যাদি সংগ্রহ করিয়েছিলেন বিরাট পরিকল্পনার মাধ্যমে। তারপর বিচারপতি মিঃ জোন্স নিজেও ঐতিহাসিক সেজে বসলেন রাতারাতি। এবং রচনা করলেন এক গ্রন্থ যাতে ভারতের চাপা পড়া সভ্যতা, চাপা পড়া ভাষা, চাপা পড়া সংস্কৃতি এবং চাপা পড়া অনেক ইতিহাস উপড়ে নিয়ে এলেন একেবারে পাতাল থেকে। গ্রন্থটির নাম দিলেন এশিয়াটিক রিসার্চেস (Asiatic Researches)। তাতে দেখানো হল ভারতীয় হিন্দুদের ছিল পরিপুষ্ট ও পরিপূর্ণ স্বতন্ত্র ভাষা , ছিল প্রাচীন কলেজ, ইউনিভার্সিটি, ছিল রাজাদের উন্নতমানের রাজনীতি, ছিল তাঁদের বিজ্ঞানময় শিল্প, ছিল সর্বোন্নত সঙ্গীত সাধনা, ছিল উন্নতমানের বাদ্যযন্ত্র ও নৃত্য প্রণালী, ছিল উঁচুমানের নাট্য সংস্থা আর সবচেয়ে শ্রেষ্ঠতম আকর্ষণ ছিল ভারতীয় সার্বজনীন ধর্ম ও বিশ্বসেরা দর্শন। ভারতের উদীয়মান ভদ্র ‘বাবু’ সমাজের অবাক বিষ্ময়ে ভেবে সিদ্ধান্ত নিতে অসুবিধে হয়নি যে, ভগবানকে ধন্যবাদ! তাদের সব-ই ছিল। এখন কিছুই নেই। সব নষ্ট করে দিয়েছে বিদেশিরা বা মুসলমানেরা। স্যার জোন্স ও তাঁর দলবল অনেক আকুল ব্যাকুল হয়ে ‘হিন্দু’ জাতির হিতার্থে বড় শ্রম করে পুনরুদ্ধার করেছেন তাদের হারিয়ে যাওয়া সবকিছু! কয়েকটি সংস্কৃত গ্রন্থ ইংরেজিতে অনুবাদ করে উদ্ভুত উদীয়মান সমাজের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন তিনি। যেমন ‘শকুন্তলা’, ‘ গীত গবিন্দ’, ‘হিতোপদেশ’ প্রভৃতি।
এদের চিনে রাখুন,একদিন এরাই আপনাদের ছিঁড়ে-খুঁড়ে খেয়েছিল (প্রথম পর্ব )
এদের চিনে রাখুন,একদিন এরাই আপনাদের ছিঁড়ে-খুড়ে খেয়েছিল (দ্বিতীয় পর্ব )
এদের চিনে রাখুন,একদিন এরাই আপনাদের ছিঁড়ে-খুঁড়ে খেয়েছিল (তৃতীয় পর্ব )
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই এপ্রিল, ২০১১ রাত ১০:২৬