আমি লেখক হতে চাই। এই বাক্যটি নিজেকে অনেকবার বুঝিয়েছি। কিন্তু কেন যেন মন আমার কিছুতেই সায় দেয় না। সারাক্ষন বলে তুই পারবি না। তারপরও আমি জীবনে দুইবার লেখক হয়েছিলাম। হাসলেন, তাই না! এর মানে লেখালেখির ভাব ধরেছিলাম। আমার এক বন্ধু ছিল জাত লেখক। যেন লেখালেখির জন্যই তার জন্ম। সে যা লিখতে চায় তাই লিখে ফেলে। সেটা পড়ে মানুষ আবার হাসেও। আমার তখন গা জ্বালা করত। আমি কেন পারি না? তবে আমি লিখতে পারি অনেক কিছুই। গল্প, কবিতা, গান, উপন্যাস, নাটক - এমন কিছু নাই যা আমি লিখি নাই। তবে সবসময় তা মনে মনেই করেছি। কলম ধরলেই সেই সাজানো কথাগুলো যেন গুবলেট হয়ে যায়। আমার মনের বাসনা পূর্ণ করার জন্য, বন্ধুটি তার একটি লেখা আমার নামে চালিয়ে দেবার প্রস্তাবও দিয়েছিল। আপনিই বলুন, এই অপমান কি আমার মত মানুষ মেনে নিতে পারবে? মনের দুঃখে এ যাত্রায় লেখালেখিই ছেড়ে দিলাম।
দ্বিতীয় পর্বটি ছিল আরো ভয়ংকর। বন্ধুটি যখন পড়াশুনার জন্য দেশের বাইরে চলে গেল, ভাবলাম ফাঁকা মাঠে গোল দেবার এইতো সুযোগ। তার মত করে অনেক কিছু লিখলাম। কিন্তু একটিও পাঠানোর সাহস হল না কোথাও। ততদিনে লেখক ’সাকিব ফেরদৌস’-এর জায়গাটায় হয়ত অন্য কেউ দখল করে নিয়েছে ভেবে দ্বিতীয়বারের মত আমার লেখক সত্ত্বার মৃত্যু হয়। ওদিকে আমার বন্ধুটি তার লেখালেখি দিয়ে ব্লগে ব্লগে ঝড় তুলছে। কুড়ি-পঞ্চাশেক কমেন্টস্ নিত্য তার লেখার পিছে লেজুড় হয়ে ঝুলে থাকে। তবে এখন আমি আর এগুলো নিয়ে ভাবি না।
এখন আমি সুশীল মানব। আমি এখনও লিখি। কিন্তু গল্প, কবিতা বা উপন্যাস নয়। কম্পিউটার প্রোগ্রামের হাজার হাজার লাইন রচনা করা আমার নিত্য কর্ম। নিজের অজান্তাই আমি একজন আধুনিক লেখক। আমার বন্ধুটি আজ আমার লেখার ভাষা বুঝে না হয়তো। এটাও জানে না আজ ব্লগে তার লেখার গতি বাড়ে আমাদের মত লেখকদের ছোট ছোট রচনায়। এ রচনার রচইতাকে হয়তো কেউ চেনে না। কিন্তু আমাদের লেখার কল্যাণেই আজ ভার্চুয়াল জগতে তোমাদের এত সহজ বিচরন।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জুন, ২০১৫ রাত ৮:৩৪