প্রথম পর্বের লিঙ্কঃ Click This Link
দেশটার নাম ইটালি। আর শহরটার নাম ব্রেসিয়া। শহরটা সুন্দর, আল্পস পাহাড়ের একেবারে নিচেই। দেখার মত অনেক কিছু আসে এইখানে । রোমান সভ্যতার নিদর্শন আসে, ক্যাথেড্রেল আসে, একটা দুর্গ ও আসে। আমি অবশ্য শিউর না, জীবনেও তো যাই নাই। পইড়া পইড়া জানসি আরকি। তয় পেলেন পাগলা মানুষের জন্য একটা জিনিষ সিউর আসে, যেইটা হইল, এক ইটালিয়ান ব্যাডার বাড়ী। ব্যাডার নাম ফ্রেঞ্চেস্কো লানা দে তারজি (Francesco Lana de Terzi)। ইনি বিরাট বিদ্যান লুক। উনি আসিলেন এই শহরের ফিজিক্স আর ম্যাথম্যাটিকস এর প্রফেসর । ইনার গল্প দিয়াই আজকের পর্ব শুরু করতাসি কারন ইনারে বলা হয় “এরোনেটিক্স এর বাপ”।
সন ১৬৭০। জনাব ফ্রেঞ্চেস্কোর বয়স তহন ৩৯ বছর। উনি একটা বই প্রকাশ করলেন যার নাম “Prodomo” । এই বইয়ে একটা চ্যাপ্টারে উনি প্রথম “ফ্লাইং শিপ” এর ব্যাপারে লেখেন। এইটা ছিল ওটোভন গেরিক (Otto von Guericke) এর “মাগডেবারগ গোলক” (Magdeburg hemispheres) এর উপর ভিত্তি কইরা “ফ্লাইং শিপ” এর একটা থিউরিটিকাল ধারনা। এরর মাস...গুলক... হুয়াট?? কিরুম পেস পুস লাইগা গেল তাই না? আইচ্চা আরেক্টু ভাইঙ্গা কই।
১৬৫৪ সালে জার্মান বৈজ্ঞানিক ওটোভন গেরিক, ভেকুয়াম পাম্প ডিজাইন করেন। এই পাম্প তো আর পেড্রোলো পাম্প না যে পানি নিয়ে ভাবনা, আর না না বইলা পাম্প মাতায় লয়া নাচা নাচি করব। তাই এইডার কাম কাইজ দেহানির লাইগা উনি তামা দিয়া দুই পিস গুল্লা গুল্লা জিনিষ বানায়ালান। বস্তুর উপ্রে এটমস্ফেরিক চাপ বুজানির লাইগা এই দুই তামার গুল্লা গুল্লা জিনিষ আর ভেকুয়াম পাম্পটা ব্যবহার হইত।
উনি দেখাইলেন যে এই দুই গুল্লারে এক সাথ কইরা পাম্প টা দিয়া তাগো ভিত্রের বাতাস বাইর কইরা নিলে কেউ আর জিন্দিগিতে এই গুল্লা গুল্লা রে আলাদা করতে পারব না। এই গুল্লারেই তিনি নাম দিসিলেন “মাগডেবারগ গোলক”। মাগডেবারগ জার্মানির একটা শহর, এইডা আসিল ওটোভন গেরিক এর হোমটাউন।
ফ্রেঞ্চেস্কো তার “ফ্লাইং মেশিন” ডিজাইনে এই “মাগডেবারগ গোলক” ব্যবহার করলেন। তিনি একটা নৌকার মত জিনিষ তৈরি করলেন যার মাস্তুল পাঁচ টা। চাইর কুনায় চাইড্ডা আর মাঝখানে একটা। চাইর কুনার চাইট্টায় লাগাইলেন একটা কইরা “মাগডেবারগ গোলক” আর মাঝখানের টায় লাগাইলেন একটা নৌকার পাল। লাগাইলেন মানে ডিজাইনে দেহাইলেন আরকি। বাস্তবে এই “ফ্লাইং মেশিন” তিনি তৈরি কইরা যাইতে পারেন নাই, কারন তহনকার আমলে পাতলা কপার শিট তৈরি করা যাইত না। ওগো তো আর আমাগো মত ধোলাইখাল আসিল না, ওই জন্য আরকি।
যাউকগা, ফ্রেঞ্চেস্কো দে লানার “ফ্লাইং মেশিন” এর কাম করনের পদ্ধতি খুবি সিম্পল আসিল। উনি ভাবসিলেন ফাস্ট এ ওই গুল্লা গুলার ভিত্রেত্তে ভেকুয়াম পাম্প দিয়া বাতাস বাইর কইরা নিতে হইব। তাইলে বেপারটা হইব পানির তলে টেনিস বলের মত। বল্ডা যেরুম পুট কইরা উপ্রে আয়া পরে, সেরম বাতাসেও “মাগডেবারগ গোলক” গুলা অমনে উপ্রে উঠব। আর উপ্রে উঠার পর পালে বাতাস লাগ্লে “ফ্লাইং শিপ” এ বয়া মাইনষে গান গাইব “নাউ ছারিয়া দে, পাল উরাইয়া দে...”।
ফ্রেঞ্চেস্কো দে লানার আরেকটা পরিচয় অনেকেই জানে না সেইটা হইল উনি ব্রেইলির ও আগে ১৬৭০ সালেই অন্ধ দের পড়তে পারার অক্ষর আবিষ্কার কইরা গেসেন। কইলে হয়ত বিয়াদ্দপি হইব কিন্তু আমি পইড়া যদ্দুর বুঝসি, লুইস ব্রেইলি ১৮২১ সালে আইসা ফ্রেঞ্চেস্কো দে লানা এর আবিষ্কার টারেই ইম্প্রোভাইজ করসেন। কিন্তু সেই গল্প অন্য লাইনের। তাই ফিরা আসি উড়তে শেখায়।
ফ্রেঞ্চেস্কো দে লানা তার “ফ্লাইং শিপ” এর ব্যাপারে লেখাটার শেষে যে নোট যুক্ত কইরা গেসেন তা পড়লে একটা চমকায়া উঠার মত কথা পাওন যায়। উনি আসিলেন একজন Jesuit অর্থাৎ Society of Jesus নামে একটা ক্যথলিক গ্রুপ এর মেম্বার। ঈশ্বর এর সেবক হিসাবে তাই তিনি লিখা গেসেন
“God will never allow that such a machine be built…because everybody realizes that no city would be safe from raids…iron weights, fireballs and bombs could be hurled from a great height".
আজকের দিনের সুপারসনিক ফাইটার জেট আর লং রেঞ্জ বোম্বার গুলার কথা চিন্তা করলে কোন মিল খুইজা পান কি?
আমি ভাবসিলাম আজকের পর্বেই বেলুন আবিষ্কার লয়া লিখুম কিন্তু এখন মনে হইতাসে ওইটা আল্লায় বাচাইলে ৩য় পর্বে লিখি, তাইলে হাত খুইলা লিখতারুম আর আপ্নেগো ও ইনফরমেশন অভার ফ্লো হইব না। আর আমি দি প্রাউড আইলশা, এই পর্ব শেষ করার একটা উসিলা পায়া যামু ... মু হা হা ।
আশা করি এই লেখা গুলা পইড়া আপ্নেও ঠিক অতটাই মজা পাইতাসেন যতটা আমি এইগুলা নিয়া লিখতে পাইরা পাইতাসি। লেখা সম্পর্কে যে কোন মতামত পড়ের লেখা গুলা রে আরো ভাল করতে আমারে সাহায্য করবে।
এতক্ষণ কষ্ট কইরা পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ। আপনাদের উড়তে শেখা শুভ হোক।
এই পর্বের তথ্য সুত্রঃ
ফ্রাঞ্চেস্কো লানা
Click This Link
অটো ভন গেরিক
http://en.wikipedia.org/wiki/Otto_von_Guericke
মাসডেরবারগ গোলক
Click This Link
লুইস ব্রেইলি
http://en.wikipedia.org/wiki/Louis_Braille