somewhere in... blog

উড়তে শেখা : বাংলায় এভিয়েশন এর ইতিহাস : পর্ব ২

০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



প্রথম পর্বের লিঙ্কঃ Click This Link

দেশটার নাম ইটালি। আর শহরটার নাম ব্রেসিয়া। শহরটা সুন্দর, আল্পস পাহাড়ের একেবারে নিচেই। দেখার মত অনেক কিছু আসে এইখানে । রোমান সভ্যতার নিদর্শন আসে, ক্যাথেড্রেল আসে, একটা দুর্গ ও আসে। আমি অবশ্য শিউর না, জীবনেও তো যাই নাই। পইড়া পইড়া জানসি আরকি। তয় পেলেন পাগলা মানুষের জন্য একটা জিনিষ সিউর আসে, যেইটা হইল, এক ইটালিয়ান ব্যাডার বাড়ী। ব্যাডার নাম ফ্রেঞ্চেস্কো লানা দে তারজি (Francesco Lana de Terzi)। ইনি বিরাট বিদ্যান লুক। উনি আসিলেন এই শহরের ফিজিক্স আর ম্যাথম্যাটিকস এর প্রফেসর । ইনার গল্প দিয়াই আজকের পর্ব শুরু করতাসি কারন ইনারে বলা হয় “এরোনেটিক্স এর বাপ”।



সন ১৬৭০। জনাব ফ্রেঞ্চেস্কোর বয়স তহন ৩৯ বছর। উনি একটা বই প্রকাশ করলেন যার নাম “Prodomo” । এই বইয়ে একটা চ্যাপ্টারে উনি প্রথম “ফ্লাইং শিপ” এর ব্যাপারে লেখেন। এইটা ছিল ওটোভন গেরিক (Otto von Guericke) এর “মাগডেবারগ গোলক” (Magdeburg hemispheres) এর উপর ভিত্তি কইরা “ফ্লাইং শিপ” এর একটা থিউরিটিকাল ধারনা। এরর মাস...গুলক... হুয়াট?? কিরুম পেস পুস লাইগা গেল তাই না? আইচ্চা আরেক্টু ভাইঙ্গা কই।

১৬৫৪ সালে জার্মান বৈজ্ঞানিক ওটোভন গেরিক, ভেকুয়াম পাম্প ডিজাইন করেন। এই পাম্প তো আর পেড্রোলো পাম্প না যে পানি নিয়ে ভাবনা, আর না না বইলা পাম্প মাতায় লয়া নাচা নাচি করব। তাই এইডার কাম কাইজ দেহানির লাইগা উনি তামা দিয়া দুই পিস গুল্লা গুল্লা জিনিষ বানায়ালান। বস্তুর উপ্রে এটমস্ফেরিক চাপ বুজানির লাইগা এই দুই তামার গুল্লা গুল্লা জিনিষ আর ভেকুয়াম পাম্পটা ব্যবহার হইত।



উনি দেখাইলেন যে এই দুই গুল্লারে এক সাথ কইরা পাম্প টা দিয়া তাগো ভিত্রের বাতাস বাইর কইরা নিলে কেউ আর জিন্দিগিতে এই গুল্লা গুল্লা রে আলাদা করতে পারব না। এই গুল্লারেই তিনি নাম দিসিলেন “মাগডেবারগ গোলক”। মাগডেবারগ জার্মানির একটা শহর, এইডা আসিল ওটোভন গেরিক এর হোমটাউন।

ফ্রেঞ্চেস্কো তার “ফ্লাইং মেশিন” ডিজাইনে এই “মাগডেবারগ গোলক” ব্যবহার করলেন। তিনি একটা নৌকার মত জিনিষ তৈরি করলেন যার মাস্তুল পাঁচ টা। চাইর কুনায় চাইড্ডা আর মাঝখানে একটা। চাইর কুনার চাইট্টায় লাগাইলেন একটা কইরা “মাগডেবারগ গোলক” আর মাঝখানের টায় লাগাইলেন একটা নৌকার পাল। লাগাইলেন মানে ডিজাইনে দেহাইলেন আরকি। বাস্তবে এই “ফ্লাইং মেশিন” তিনি তৈরি কইরা যাইতে পারেন নাই, কারন তহনকার আমলে পাতলা কপার শিট তৈরি করা যাইত না। ওগো তো আর আমাগো মত ধোলাইখাল আসিল না, ওই জন্য আরকি।



যাউকগা, ফ্রেঞ্চেস্কো দে লানার “ফ্লাইং মেশিন” এর কাম করনের পদ্ধতি খুবি সিম্পল আসিল। উনি ভাবসিলেন ফাস্ট এ ওই গুল্লা গুলার ভিত্রেত্তে ভেকুয়াম পাম্প দিয়া বাতাস বাইর কইরা নিতে হইব। তাইলে বেপারটা হইব পানির তলে টেনিস বলের মত। বল্ডা যেরুম পুট কইরা উপ্রে আয়া পরে, সেরম বাতাসেও “মাগডেবারগ গোলক” গুলা অমনে উপ্রে উঠব। আর উপ্রে উঠার পর পালে বাতাস লাগ্লে “ফ্লাইং শিপ” এ বয়া মাইনষে গান গাইব “নাউ ছারিয়া দে, পাল উরাইয়া দে...”।

ফ্রেঞ্চেস্কো দে লানার আরেকটা পরিচয় অনেকেই জানে না সেইটা হইল উনি ব্রেইলির ও আগে ১৬৭০ সালেই অন্ধ দের পড়তে পারার অক্ষর আবিষ্কার কইরা গেসেন। কইলে হয়ত বিয়াদ্দপি হইব কিন্তু আমি পইড়া যদ্দুর বুঝসি, লুইস ব্রেইলি ১৮২১ সালে আইসা ফ্রেঞ্চেস্কো দে লানা এর আবিষ্কার টারেই ইম্প্রোভাইজ করসেন। কিন্তু সেই গল্প অন্য লাইনের। তাই ফিরা আসি উড়তে শেখায়।

ফ্রেঞ্চেস্কো দে লানা তার “ফ্লাইং শিপ” এর ব্যাপারে লেখাটার শেষে যে নোট যুক্ত কইরা গেসেন তা পড়লে একটা চমকায়া উঠার মত কথা পাওন যায়। উনি আসিলেন একজন Jesuit অর্থাৎ Society of Jesus নামে একটা ক্যথলিক গ্রুপ এর মেম্বার। ঈশ্বর এর সেবক হিসাবে তাই তিনি লিখা গেসেন

“God will never allow that such a machine be built…because everybody realizes that no city would be safe from raids…iron weights, fireballs and bombs could be hurled from a great height".

আজকের দিনের সুপারসনিক ফাইটার জেট আর লং রেঞ্জ বোম্বার গুলার কথা চিন্তা করলে কোন মিল খুইজা পান কি?

আমি ভাবসিলাম আজকের পর্বেই বেলুন আবিষ্কার লয়া লিখুম কিন্তু এখন মনে হইতাসে ওইটা আল্লায় বাচাইলে ৩য় পর্বে লিখি, তাইলে হাত খুইলা লিখতারুম আর আপ্নেগো ও ইনফরমেশন অভার ফ্লো হইব না। আর আমি দি প্রাউড আইলশা, এই পর্ব শেষ করার একটা উসিলা পায়া যামু ... মু হা হা ।

আশা করি এই লেখা গুলা পইড়া আপ্নেও ঠিক অতটাই মজা পাইতাসেন যতটা আমি এইগুলা নিয়া লিখতে পাইরা পাইতাসি। লেখা সম্পর্কে যে কোন মতামত পড়ের লেখা গুলা রে আরো ভাল করতে আমারে সাহায্য করবে।

এতক্ষণ কষ্ট কইরা পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ। আপনাদের উড়তে শেখা শুভ হোক।

এই পর্বের তথ্য সুত্রঃ

ফ্রাঞ্চেস্কো লানা
Click This Link

অটো ভন গেরিক
http://en.wikipedia.org/wiki/Otto_von_Guericke

মাসডেরবারগ গোলক
Click This Link

লুইস ব্রেইলি
http://en.wikipedia.org/wiki/Louis_Braille
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১২:২১
৪৫৬ বার পঠিত
১২টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

চাঁদ গাজীর ব্যান তুলে নিন/ ব্লগ কর্তৃপক্ষ ‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ২৩ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:৫৩




আমি যদি গাজী’ ভাইয়ের যায়গায় হতাম জিবনেও সামু’তে লেখার জন্য ফিরে আসতাম না।
হয় বিকল্প কোন প্লাটফর্ম করে নিতাম নিজের জন্য। অথবা বাঁশের কেল্লার মত কোথাও লিখতাম।
নিচে ব্লগার মিররডডল-এর করা পুরো... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টারের মতো প্রতিষ্ঠানের উচিত তাদের অবস্থান পুনর্মূল্যায়ন করা এবং বাংলাদেশকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া।

লিখেছেন জ্যাকেল , ২৩ শে নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৫

বাংলাদেশে গণমাধ্যমের ভূমিকা বরাবরই সংবেদনশীল এবং গুরুত্বপূর্ণ। একটি গণতান্ত্রিক সমাজে গণমাধ্যমের কাজ হলো সত্য প্রকাশ, জনমতের প্রতিনিধিত্ব এবং গণতন্ত্রকে সুরক্ষা দেওয়া। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন মহলে অভিযোগ উঠেছে যে, বাংলাদেশের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার সাজিদ কমেন্ট অফ রাখায় এখানে লিখছি (সাময়িক)

লিখেছেন মিরোরডডল , ২৩ শে নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:০৫


সাজিদের বিদায় পোষ্ট দেখলাম, কমেন্ট সেকশন বন্ধ রাখায় ভাবলাম এখানেই লিখে যাই।

জানিনা কি বলবো, হয়তো এটাই দেখা বাকি ছিলো।
চলে যাবার কারণ জানিনা কিন্তু অনুমান করতে পারছি।
Man! you shouldn't leave.

ব্লগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখ হাসিনা রাজনৈতিক নিপীড়নের শিকার হতে যাচ্ছেন?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৩ শে নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:৫৭


আজকাল মানুষ চেনা বড্ড কঠিন হয়ে পড়ছে। কে কোন উদ্দেশ্য নিয়ে কার পক্ষে দাঁড়াচ্ছে তা বুঝা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। রাজনীতিতে এই কথা আরো বেশি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কখনো বিদায় বলতে নাই

লিখেছেন ডার্ক ম্যান, ২৩ শে নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫



ব্লগে কিছুদিন ধরে অনিয়মিত হওয়ায় কখন কি ঘটে জানি না।
কিছুক্ষণ আগে মিররডলের একটা পোস্টে জানতে পারলাম , ব্লগার আমি সাজিদ ঘোষণা দিয়ে ব্লগ ছেড়েছেন । তার সাথে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×